Blog

  • পুলিশ পেটানো সেই আসামি খুন করল স্ত্রীকে

    পুলিশ পেটানো সেই আসামি খুন করল স্ত্রীকে

    বগুড়ায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় পলাতক আসামি রোহান ব্যাপারী এবার ছুরিকাঘাতে স্ত্রী ববি আক্তারকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

    রোববার (২৫ মে) রাত ১১টার দিকে শহরের নুরানি মোড় এলাকার একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

    পরে স্ত্রীকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর রোহান সেখান থেকে পালিয়ে যান।

    ববি আক্তারের স্বজন জানান, সাত বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের পর তাদের বিয়ে হয়। তাদের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে।

    জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল রাতে বগুড়া শহরের কালীতলা এলাকায় রোহান ও তার কিশোর গ্যাংয়ের কয়েকজন সদস্য মদ্যপ অবস্থায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধর করেন। সম্প্রতি বেলী নামের এক নারীর সঙ্গে রোহানের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্ত্রী ববি ওই সম্পর্কে বাধা দিলে দুজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। রোববার রাতে ঝগড়ার একপর্যায়ে রোহান ধারালো ছুরি দিয়ে স্ত্রীর বুক ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করেন।

    বগুড়ার সদর থানার ওসি হাসান বাসির কালবেলাকে জানান, ববির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর রোহানের বাবা রবিউল ব্যাপারী ও মা পপি আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

  • নিহত মাদ্রাসা শিক্ষককে যেভাবে ‘সন্ত্রাসী’ বানাল ভারতীয় মিডিয়া

    নিহত মাদ্রাসা শিক্ষককে যেভাবে ‘সন্ত্রাসী’ বানাল ভারতীয় মিডিয়া

    কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এরই মধ্যে আরেকটি যুদ্ধও চলছে—তা হলো তথ্যের যুদ্ধ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মূলধারার অনেক সংবাদমাধ্যমেও ছড়িয়েছে বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খবর।

    তারই এক করুণ উদাহরণ কাশ্মীরের পুঞ্চ শহরের বাসিন্দা এবং সম্মানিত মাদ্রাসা শিক্ষক মোহাম্মদ ইকবাল। ৭ মে সকালে সীমান্তবর্তী এলাকায় গোলাগুলির সময় নিহত হন মোহাম্মদ ইকবাল। পুঞ্চের জিয়া-উল-উলূম মাদ্রাসায় দুই দশকেরও বেশি সময় শিক্ষকতা করতেন তিনি।

    পরিবারের সদস্যরা জানালেন, নিহত হওয়ার আগেই রাতভর পাকিস্তান ও আজাদ কাশ্মীর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। তারই ধারাবাহিকতায় পরদিন সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনায় ইকবাল নিহত হন।

    তবে ইকবালের মৃত্যুর পর পরিবার যখন শোক ও দাফন-কাফনে ব্যস্ত, তখন কিছু ভারতীয় টিভি চ্যানেল তাকে সন্ত্রাসী বলে চিহ্নিত করে বিভ্রান্তিকর প্রচার শুরু করে। ভাই ফারুক আহমেদ বলেন, আমার ভাই একজন নিরীহ শিক্ষক ছিলেন। তারা তার দাড়ি-টুপি দেখে তাকে সন্ত্রাসী বলেছে। আমরা তাকে হারিয়েছি, তার ওপর মিডিয়া অপমান করেছে—এটা আমাদের ক্ষতে লবণ ছিটানোর মতো।

    জি নিউজ, এবিপি, নিউজ ১৮-এর মতো ভারতের নামি কিছু চ্যানেল দাবি করে যে ইকবাল ‘পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে ভারতীয় অভিযানে নিহত হয়েছেন।’ এমনকি তার ছবি ব্যবহার করে দাবি করা হয়, তিনি পাকিস্তানভিত্তিক একটি জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ছিলেন।

    পরিবার তখনও জানত না যে মিডিয়ায় কী প্রচার চলছে। হঠাৎ এক আত্মীয় হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভিডিও পাঠান, যেখানে দেখা যায়—একটি চ্যানেল দাবি করছে, ভারতীয় সেনারা একজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে, আর স্ক্রিনে দেখানো হচ্ছে ইকবালের ছবি।

    এই অপপ্রচারে ক্ষুব্ধ ইকবালের ভাই বলেন, আমরা তো কাশ্মীরেই থাকি, আমাদের পরিবার বহু প্রজন্ম ধরে পুঞ্চে বসবাস করছে। তারা কীভাবে বলে যে আমার ভাই পাকিস্তানে থাকত?

    ভারতের সংবাদমাধ্যমে এই গুজব এত দ্রুত ছড়ায় যে, পরদিন—৮ মে—পুঞ্চ জেলা পুলিশ বাধ্য হয় একটি স্পষ্ট বিবৃতি দিতে। বিবৃতিতে জানানো হয়, মাওলানা মোহাম্মদ ইকবাল সীমান্তে গোলাবর্ষণে নিহত হয়েছেন। তিনি একজন সম্মানিত ধর্মীয় শিক্ষক ছিলেন এবং তার কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে কোনো সংযোগ নেই। পুঞ্চ পুলিশ এই মিথ্যা প্রচারের তীব্র নিন্দা জানায়।

    তবে এরপরও বেশির ভাগ টিভি চ্যানেল এই ভুলের জন্য ক্ষমা চায়নি। শুধু নিউজ১৮ পরিবারটির কাছে ভুল তথ্য প্রচারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। অন্য কেউ কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।

    এ ঘটনা শুধু একটি পরিবারের ক্ষোভ আর অপমানের বহিঃপ্রকাশ নয়—এটি ভারতীয় মিডিয়ার দায়িত্বজ্ঞানহীনতার নগ্ন উদাহরণ। নিউজলন্ড্রি-র সম্পাদক মনীষা পাণ্ডে বলেন, রেটিংয়ের প্রতিযোগিতায় পড়েই মিডিয়াগুলো যাচাই না করেই খবর ছড়িয়ে দিচ্ছে—যেটা অত্যন্ত ভয়ংকর। একজন নিরীহ নাগরিক, বিশেষ করে মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে এমন মিথ্যা রটানো মানবিকতার চরম অবমাননা।

    কাশ্মীর পরিস্থিতি জটিল, সেনা সংঘর্ষ চলছেই—কিন্তু সেই সঙ্গে যদি তথ্য যুদ্ধেও নিরীহরা প্রতিনিয়ত অপমানের শিকার হয়, তবে তা শুধু সাংবাদিকতার ব্যর্থতাই নয়, এক ধরনের নীরব সহিংসতাও বটে।

    সূত্র : বিবিসি

  • বিচারপতি মানিক মারা গেছেন

    বিচারপতি মানিক মারা গেছেন

    বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুল হুদা মানিক (৮২) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রোববার রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকায় ইব্রাহীম মেমোরিয়াল কার্ডিয়াক হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ইন্তেকাল করেন।

    সোমবার (২৬ মে) জোহরবাদ গোপালগঞ্জ কোর্ট মসজিদ প্রাঙ্গণে শামসুল হুদা মানিকের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাদ আছর রাবেয়া খাতুন হাফিজিয়া মাদ্রাসার মাঠে মরহুমের দ্বিতীয় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়, এতে অসংখ্য মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

    জানাজা শেষে মরদেহ টুঙ্গিপাড়ার গিমাডাঙ্গা গ্রামে পৈতৃক বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সন্তান ও স্বজনরা শেষবারের মতো তাকে বিদায় জানান। পরে পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।

    মৃত্যুকালে তিনি দুই কন্যা, এক ছেলে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলাজুড়ে ও বিচার বিভাগে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

    বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী বিচারপতি শামসুল হুদা মানিক ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন সংগঠক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ’৮০-এর দশকে দীর্ঘদিন তিনি পর্যায়ক্রমে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন।

    ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে অবসর গ্রহণের পরে তিনি দীর্ঘদিন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

  • তিন মাস দেশেই ছিলেন কাদের, এবং যে ফন্দি আঁটছিলেন ফেরার

    তিন মাস দেশেই ছিলেন কাদের, এবং যে ফন্দি আঁটছিলেন ফেরার

    ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের ফেলে পরিবারের লোকদের নিয়ে পালিয়ে যান ভারতে। ক্ষমতায় থাকাকালে যেসব কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন, তাদের দলের দুঃসময়ে পাশে পাননি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

    চরম দুঃসময়ে যেসব নেতা দলীয় কর্মীদের পাশে ছিলেন না, তাদের মধ্যে অন্যতম আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গণ-অভ্যুত্থানের দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও তিনি টুঁ শব্দটি পর্যন্ত করেননি। ছিলেন আড়ালে। অথচ আগে প্রায় প্রতিদিনই বিরোধী দলকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিতেন তিনি।

    আরও পড়ুনঃ দুর্বৃত্তরা মেরে ফেললো ৩ হাজারের বেশি কবর খোঁড়া মনু মিয়ার ঘোড়াটি
    সম্প্রতি ওবায়দুল কাদের মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়ালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের এক সাক্ষাৎকার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, ৫ আগস্টের পর কতদিন দেশে ছিলেন এবং দেশে থাকা অবস্থায় কীভাবে রাজনীতিতে ফেরার পাঁয়তারা করছিলেন।

    নতুন মামলায় গ্রেফতার সালমান, আনিসুল ও পলকসহ ৭ জন
    এক বাথরুমে স্ত্রীসহ ৫ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিলেন ওবায়দুল কাদের
    যা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি বাংলাদেশেই ছিলাম তিন মাসের মতো। আমার একটা উদ্দেশ্য ছিল-ওখান থেকে কিছু করা যায় কিনা। কিছু একটা করা যায় কিনা। সংগঠিত করা যায় কিনা। বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিক অসন্তোষ, কর্মচারীদের অসন্তোষ। প্রতিদিনই এগুলো লক্ষ্য করতাম। ক্ষোভগুলো তখন রাস্তায় নেমে আসছিল। বিশেষ করে গার্মেন্টস। সে সময় ভাবলাম-এদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু করা যায় কিনা। এই চিন্তাতেই তিন মাস পেরিয়ে গেল।

    আরও পড়ুনঃ দত্তক এনে মার্কেট লিখে দিয়েছিলেন, সেই ছেলে পিটিয়ে মারল মাকে
    সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এরপর একে একে সবাই অ্যারেস্ট হচ্ছি। আমি তো নেত্রীর পরের, তখনই ২১২টা খুনের মামলায় আমি আসামি হয়ে গেছি। এ অবস্থায় অনেকে বলল, আবার এখান থেকেও অনেক অনুরোধ যাচ্ছিল আমি যেন সতর্কভাবে এদিকে চলে আসি। এভাবেই চিন্তা করলাম যে, আমার বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। অনেকগুলো ওষুধ খেতে হয়। আমি ধরা পড়লে ওষুধ খাওয়াবে কে?। তারপর অনেক কিছু ভাবনা-চিন্তা করে….।’

  • সেদিন আমার বেঁচে থাকার কথা ছিল না, সাক্ষাৎকারে যা বললেন ওবায়দুল কাদের

    সেদিন আমার বেঁচে থাকার কথা ছিল না, সাক্ষাৎকারে যা বললেন ওবায়দুল কাদের

    ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়ালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ৫ আগস্ট তার জীবনের এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, এক সময় তিনি মৃত্যুর একেবারে কাছাকাছি ছিলেন, এবং ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। তিনি বলেন, “আমি খুবই ভাগ্যবান, সেদিন আমার বেঁচে থাকার কথা ছিল না। মৃত্যু থেকে ফিরে এসেছি।”

    ঘটনাটি ঘটেছিল তার নিজ সংসদ এলাকায়। তিনি জানান, ওই সময় পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যে, তিনি নিজের বাসা ছেড়ে পাশের একটি বাসায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। চারদিক থেকে মিছিল আসছিল, এবং মূলত তা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন কেন্দ্রিক হলেও তা ছড়িয়ে পড়ে তার সংসদ এলাকাতেও। হঠাৎ করেই পরিস্থিতি লুটপাটে রূপ নেয়।

    তিনি বলেন, “আমার নিজের বাসায় লুটপাট চালানো হয়। আশ্রয় নেওয়া বাসায়ও হামলা হয়, যদিও সেখানে আমি আছি তা তারা জানত না।” বাসার ভেতর লোকজন ঢুকে পড়ে, ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু করে। তখন তিনি ও তার স্ত্রী মিলে বাথরুমে লুকিয়ে পড়েন এবং প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সেখানেই অবস্থান করেন।

    এক পর্যায়ে হামলাকারীরা বাথরুমের ভেতরেও ঢোকার চেষ্টা করে। তার স্ত্রী তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং বলেন তিনি (স্ত্রী) অসুস্থ। তবে শেষ পর্যন্ত সাত-আটজন যুবক জোরপূর্বক বাথরুমে প্রবেশ করে। তখনই তারা সাধারণ সম্পাদককে দেখে ফেলেন। কেউ একজন চিৎকার করে বলে ওঠে, “আপনি এখনো আছেন?” কিন্তু আচমকা পরিবেশ পাল্টে যায়। কিছু যুবক তার ছবি তোলা শুরু করে, কেউ সেলফি নেয়, কারণ তারা তাকে চিনতে পারে।

    এরপর দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে হামলাকারীরা। একদল চেয়েছিল তাকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিতে, অন্যদল চেয়েছিল জনতার হাতে সোপর্দ করতে। তিনি বলেন, “মানসিকভাবে আমি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলাম।”

    তিনি আরও জানান, পরে হামলাকারীদের মধ্য থেকেই দুজন যুবক তাকে এবং তার স্ত্রীকে একটি খালি ট্যাক্সিতে তুলে দেন। তারা আশপাশের লোকজনকে জানায়, “চাচা-চাচি অসুস্থ, হাসপাতালে নিচ্ছি।” এভাবেই তারা নিরাপদে তাকে সেখান থেকে বের করে আনে এবং অনেক দূরের একটি স্থানে পৌঁছে দেয়।

    শেষে তিনি বলেন, “তারা যখন বাথরুমে ঢুকেছিল, ভাবতেই পারেনি আমি বেঁচে থাকব। কিন্তু আমার ভাগ্য ছিল , আমি বেঁচে যাই।”

    এই ঘটনাটি তার জীবনের এক দুঃস্বপ্নের মতো। রিপোর্ট অনুযায়ী, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল এবং এটি নিছক রাজনৈতিক বিক্ষোভ ছিল না, বরং অনেকটাই পরিকল্পিত সহিংসতা ও লুটপাটের আকার ধারণ করেছিল।

  • বিমানে বউয়ের সাথে ঝগড়া করে মার খেলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট

    বিমানে বউয়ের সাথে ঝগড়া করে মার খেলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট

    বউয়ের সাথে ঝগড়া করে পার পেয়েছে এমন নর পাওয়া হয়তো পৃথিবীতে দুর্লভ। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরনের সাথে। ভিয়েতনাম সফরের শুরুতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রী ব্রিজিট ম্যাকরনের মধ্যে বাধে ঝগড়া, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

    ভিডিওতে দেখা যায়, প্রেসিডেন্টিয়াল বিমানের দরজা দিয়ে ম্যাকরনকে দেখা যাচ্ছে। হঠাৎ ব্রিজিট দ্রুত হাত উঠিয়ে প্রেসিডেন্টের মুখের দিকে একটি ধাক্কা-সদৃশ আচরণ করেন। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই স্ত্রী ব্রিজিটের হাত সবার নজরে আসে। এরপর হাত দুটি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের মুখের দিকে তুলে ধরেন।

    বউয়ের মার খেয়ে ম্যাকরনের বিস্মিত ভাব দেখান, পরে ক্যামেরার দিকে হাত নেড়ে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেন। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় তিনি স্ত্রীর হাত ধরার চেষ্টা করলে, ব্রিজিট স্পষ্টভাবে তা এড়িয়ে হ্যান্ডরেল ধরেন।

  • ইরানে হামলার মাধ্যমেই কি শুরু হতে যাচ্ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ?

    ইরানে হামলার মাধ্যমেই কি শুরু হতে যাচ্ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ?

    ইরানকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক অভিযান নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঘুরপাক খাচ্ছে একটাই প্রশ্ন— এই সংঘাত কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা ঘটাতে পারে?

    গত কয়েক মাস ধরেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ বিরাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, কূটনৈতিক সমাধানই একমাত্র পথ, কিন্তু ইসরায়েল প্রকাশ্যে বলেছে— সামরিক হামলাই ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র ধ্বংসের একমাত্র উপায়। অন্যদিকে, যেকোনো হামলার জবাব দিতে শতভাগ প্রস্তুতির কথা জানিয়ে চমকে দিয়েছে ইরান।

    বিশেষজ্ঞদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যে এখন এমন উত্তেজনা বিরাজ করছে, যা গত কয়েক বছরের মধ্যে নজিরবিহীন। ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা, তাদের মিত্র প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর সক্রিয়তা এবং পশ্চিমা প্রভাবের বিরুদ্ধে তেহরানের অবস্থান পুরো বিশ্বকে উদ্বেগে ফেলেছে।

    সম্প্রতি ইসরায়েলের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইরান পরমাণু বোমা তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে। এরই প্রেক্ষিতে পারস্য উপসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এটিকে তেহরানের প্রতি একপ্রকার সামরিক হুঁশিয়ারি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

    অন্যদিকে, ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের আক্রমণের জবাব দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনীর নির্দেশ পেলেই শুরু হবে পাল্টা হামলা। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ এজেন্সির ২৪ মে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।

    ইসরায়েলের যেকোনো সামরিক আগ্রাসনের জবাবে শুধু ইরান নয়, তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরাও সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

    এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রও বসে নেই। ইসরায়েলকে রক্ষার জন্য মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সামরিক ঘাঁটিতে প্রস্তুতি বাড়িয়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটও যুক্ত হতে পারে সংঘাতে। অন্যদিকে, ইরানের সঙ্গে কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণে চীন ও রাশিয়াও তেহরানের পাশে থাকতে পারে, এমনকি সামরিক সহায়তাও দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে করে সংঘাতটি শুধু মধ্যপ্রাচ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, ছড়িয়ে পড়তে পারে গোটা বিশ্বে।

    বিশ্বব্যাপী এই উত্তেজনার অন্যতম অর্থনৈতিক দিক হচ্ছে হরমুজ প্রণালী। পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরের সংযোগস্থল এই প্রণালীর মাধ্যমে বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ জ্বালানি তেল সরবরাহ হয়। ইরান যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তবে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি এমন হুমকি দিয়েছে আইআরজিসি।

    সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি হামলা চালালে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা হয়তো অবধারিত নয়, তবে এটি একটি বাস্তব ও ভয়াবহ ঝুঁকির সৃষ্টি করবে— যা বিশ্বকে ঠেলে দিতে পারে গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে।

  • তিন মাস দেশেই ছিলেন কাদের, শ্রমিক অসন্তোষে ফন্দি আঁটছিলেন ফেরার

    তিন মাস দেশেই ছিলেন কাদের, শ্রমিক অসন্তোষে ফন্দি আঁটছিলেন ফেরার

    ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের ফেলে পরিবারের লোকদের নিয়ে পালিয়ে যান ভারতে। ক্ষমতায় থাকাকালে যেসব কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন, তাদের দলের দুঃসময়ে পাশে পাননি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

    চরম দুঃসময়ে যেসব নেতা দলীয় কর্মীদের পাশে ছিলেন না, তাদের মধ্যে অন্যতম আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গণ-অভ্যুত্থানের দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও তিনি টুঁ শব্দটি পর্যন্ত করেননি। ছিলেন আড়ালে। অথচ আগে প্রায় প্রতিদিনই বিরোধী দলকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিতেন তিনি।

    সম্প্রতি ওবায়দুল কাদের মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়ালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের এক সাক্ষাৎকার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, ৫ আগস্টের পর কতদিন দেশে ছিলেন এবং দেশে থাকা অবস্থায় কীভাবে রাজনীতিতে ফেরার পাঁয়তারা করছিলেন।

    যা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি বাংলাদেশেই ছিলাম তিন মাসের মতো। আমার একটা উদ্দেশ্য ছিল-ওখান থেকে কিছু করা যায় কিনা। কিছু একটা করা যায় কিনা। সংগঠিত করা যায় কিনা। বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিক অসন্তোষ, কর্মচারীদের অসন্তোষ। প্রতিদিনই এগুলো লক্ষ্য করতাম। ক্ষোভগুলো তখন রাস্তায় নেমে আসছিল। বিশেষ করে গার্মেন্টস। সে সময় ভাবলাম-এদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু করা যায় কিনা। এই চিন্তাতেই তিন মাস পেরিয়ে গেল।

    সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এরপর একে একে সবাই অ্যারেস্ট হচ্ছি। আমি তো নেত্রীর পরের, তখনই ২১২টা খুনের মামলায় আমি আসামি হয়ে গেছি। এ অবস্থায় অনেকে বলল, আবার এখান থেকেও অনেক অনুরোধ যাচ্ছিল আমি যেন সতর্কভাবে এদিকে চলে আসি। এভাবেই চিন্তা করলাম যে, আমার বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। অনেকগুলো ওষুধ খেতে হয়। আমি ধরা পড়লে ওষুধ খাওয়াবে কে?। তারপর অনেক কিছু ভাবনা-চিন্তা করে….।’

  • সচিবালয়ে আন্দোলনকারীরা বিগত সরকারের সমর্থক

    সচিবালয়ে আন্দোলনকারীরা বিগত সরকারের সমর্থক

    সচিবালয়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তারা বিগত সরকারের সমর্থক বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। সোমবার সকালে চট্টগ্রামের ২ নম্বর গেট বিপ্লব উদ্যানে এক পথসভায় এ কথা বলেন তিনি।

    দ্বিতীয় দিনের মত জুলাই হত্যার বিচারের দাবিতে জনমত গড়তে পথসভার আয়োজন করে দলটি। সেখানে এনবিআরকে দুর্নীতির আঁতুড়ঘর বলে মন্তব্য করেন হাসনাত।

    তিনি আরও বলেন, সরকারি সংস্কার কাজে বাধা দিলে জনগণই তার বিকল্প খুঁজে নেবে।

    হাসনাত অভিযোগ করেন, এখন সচিবালয়ের যেসব কর্মকর্তারা আন্দোলন করছেন, তারাই ৫ আগস্টের আগে বিগত সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল।

    আরও পড়ুনঃ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে যে প্রতিক্রিয়া জানালো বিএনপি
    এ সময়, রাষ্ট্র সংস্কারে বাধা দেওয়া হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

    ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল করছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। সোমবার বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের বাদামতলায় এসে তারা জড়ো হন কর্মচারীরা। পরে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে তারা এই জমায়েত করেন।

    ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদনের প্রতিবাদে সচিবালয়ের ভেতরে গতকাল রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ-মিছিল করেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। তারা এই অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

    আরও পড়ুনঃ জানা গেল মেয়র হিসেবে কখন শপথ নিবেন ইশরাক
    এর আগে, গতকাল রোববার ২৫ মে সকাল ১০টায় সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর ও মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে এক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি পুরো সচিবালয় প্রদক্ষিণ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে এসে অবস্থান নেয়।

    জানা গেছে, সম্প্রতি সরকারি কর্মচারীদের দমন নিপীড়নের জন্য যে বিবর্তনমূলক ‘কালোআইন’ প্রণয়ন করেছে। সে আইন বাতিল করাসহ কর্মচারীদের রেশন ও সচিবালয় ভাতা চালুর দাবীতে এই বিক্ষোভ।

    আরও পড়ুনঃ জামায়াত আমিরের নেতৃত্বে যারা গেলেন যমুনায়
    বিক্ষোভে অংশ নেওয়ারা বলেন, কালাকানুন যুক্ত করে প্রণীত অধ্যাদেশ কেউ মানবে না। ১৯৭৯ সালের সরকারি চাকরির বিশেষ বিধান ইতোমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত বাতিল করেছেন। এই বাতিল বিধান পুনরুজ্জীবিত করার মানে নতুনভাবে বিতর্ক তৈরি করা। বর্তমান সরকার সেই কাজটিই করেছে। এর ফলে কর্মচারীদের অধিকার খর্ব হবে, তারা কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়বে। কাজেই এই অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে। অন্যথায় যে কোনো মূল্যে এটা প্রতিহত করা হবে। প্রয়োজনে তারা আইন মন্ত্রণালয়ের সব রুমে তালা দেবেন বলে ঘোষণা করেন।

  • স্ত্রীসহ বাথরুমে ৫ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিলেন ওবায়দুল কাদের, পালালেন যেভাবে

    স্ত্রীসহ বাথরুমে ৫ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিলেন ওবায়দুল কাদের, পালালেন যেভাবে

    ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয় আওয়ামী সরকারের। গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালান ক্ষমাতচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দেশ ছাড়েন আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ওই দিন তার বাঁচার কথা ছিল না বলে জানিয়েছেন।

    তার ভাষ্যমতে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের দিন ৫ ঘণ্টা এক বাথরুমে স্ত্রীসহ লুকিয়ে ছিলেন তিনি। সেদিন বেঁচে থাকাটা পরম সৌভাগ্যের বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

    সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়ালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের এক সাক্ষাৎকার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানেই তিনি ওই দিনের ঘটনা বর্ণনা করেন।

    ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, অমল সরকারকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন ওবায়দুল কাদের। তবে কালের কণ্ঠের পক্ষ থেকে সেই সাক্ষাৎকারের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
    ওই ভিডিওতে দেখা যায় ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি খুবই ভাগ্যবান, সেদিন আমার বেঁচে থাকার কথা ছিল না। মৃত্যু থেকে অনেক কাছে ছিলাম।

    আরও পড়ুনঃ ঈদে বিকাশের পক্ষ থেকে ৭৫০০ টাকা বোনাস দেওয়ার খবর কি সত্য?
    আমারই সংসদ এলাকার আমার নিজের বাসাকে এড়িয়ে পার্শ্ববর্তী আরেকটা বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। তখন চারদিক থেকে মিছিল আসছিল। এটা আসলে ছিল প্রধানমন্ত্রীর (সাবেক) গণভবন কেন্দ্রিক।
    তিনি বলেন, আমি যে বাসাটায় ছিলাম, তারা সে বাসাতেও হামলা করে। তারা জানত না, যে সেখানে আমি আছি।

    আমার বাসা তারা ‘লুটপাট’ করেছে, কিন্তু যে বাসায় আমি গিয়ে আশ্রয় নিলাম, সেখানে হামলা করবে আমি ভাবতে পারিনি। দেখলাম অনেক লোকজন ঢুকে পড়েছে। তারা ভাঙচুর ও ‘লুটপাট’ করতে থাকে। আমি আমার স্ত্রীসহ বাথরুমে লুকিয়ে ছিলাম। অনেকক্ষণ ছিলাম, প্রায় ৫ ঘণ্টা। তারপর একটা পর্যায়ে তারা বাথরুমে ভেতরেও কমোড-বেসিন এগুলো ‘লুটপাট’ করেছে।
    ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার স্ত্রী তখন বাথরুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বারবার বলছিলেন যে আমি অসুস্থ, যাতে করে তাদের প্রবেশ ঠেকানো যায়। কিন্তু তারা জোরপূর্বক ভেতরে ঢোকার হুমকি দিতে থাকে, বাথরুমে কী আছে তা লুট করতে চায়। এই অবস্থায় আমার স্ত্রী আমাকে জিজ্ঞাসা করে, কী করব? আমি বললাম, দরজা খুলে দাও।

    আরও পড়ুনঃ সচিবালয় অভিমুখে ইশরাক সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা
    এরপর ৭-৮ জন যুবক ভেতরে ঢোকে, এবং তারা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে আচরণ করতে থাকে। হঠাৎ তারা আমার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘নেত্রী তো চলে গেলেন, আপনি যাননি কেন?’ আমি তখন কিছু বলতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু এর মাঝেই তারা আচরণ পাল্টে ফেলে। কেউ একজন বলে, ‘আপনার ছবি তুলব’, তারপর শুরু হয় ছবি তোলা, কেউ কেউ সেলফিও নেয়। ধারণা করি, এদের মধ্যে অনেকেই আমাকে চিনতো।

    তিনি জানান, ঠিক কী কারণে প্রথমে তাদের মধ্যে এত আক্রমণাত্মক মনোভাব ছিল, আর কেন হঠাৎ করে সেই আচরণ শীতল হয়ে গেল- তা তিনি বুঝে উঠতে পারেননি। আচমকাই তারা ঠান্ডা মাথায় কথা বলা শুরু করে। তাদের মধ্যেই একটা গ্রুপ তখন চাইছিল তাকে রাস্তায় নামিয়ে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিতে, আবার কেউ কেউ চেয়েছিল জনতার হাতে তুলে দিতে। এই পরিস্থিতি তার মনে গভীর চাপ ও মানসিক ভাঙন সৃষ্টি করে। এরপর তারা তাকে একটি শার্ট, লাল পতাকাসংবলিত ব্যাজ এবং মুখে কালো মাস্ক পরিয়ে সংসদ এলাকা থেকে গণভবন অভিমুখী বড় রাস্তায় হাঁটিয়ে নিয়ে যায়। হঠাৎ কোথা থেকে একটি খালি ট্যাক্সি বা ইজি বাইক এসে হাজির হয়- সেই মুহূর্তে রাস্তায় কোনো গাড়ি ছিল না। তিনি মনে করেন, এটি হয়তো তার ভাগ্যের বিষয় ছিল।

    আরও পড়ুনঃ সাতক্ষীরা কলেজ ছাত্রদলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা!
    এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই সেতুমন্ত্রী বলেন, তাদের মধ্যে দু’জন তাকে ও তার স্ত্রীকে সেই গাড়িতে তোলে এবং পথে যেতে যেতে চারপাশের চেকপোস্ট ও লোকজনকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘চাচা-চাচি অসুস্থ, হাসপাতালে নিচ্ছি, বিরক্ত করবেন না।’ এইভাবেই তারা তাকে অনেক দূরের একটি জায়গায় নিয়ে যায়।

    তিনি বলেন, ভাবতেও পারিনি যে যারা কয়েক মিনিট আগে বাথরুমে জোর করে ঢুকেছিল, তারাই আমাদের এভাবে রক্ষা করবে। সেদিন বেঁচে যাওয়া ছিল একেবারে অপ্রত্যাশিত। এটা ছিল পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।