Blog

  • রাশিয়ায় মানবপাচার: ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত বাংলাদেশি যুবক নিহত

    রাশিয়ায় মানবপাচার: ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত বাংলাদেশি যুবক নিহত

    নাটোরের সিংড়া উপজেলার হুলহুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির ও তার দুলাভাই রহমত আলী সংসারের সচ্ছলতা আর সন্তানদের ভবিষ্যতের আশায় রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে দালালের খপ্পরে পড়ে চাকরির নামে অংশ নিতে হয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে। এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন হুমায়ুন কবির। আর দুলাভাই রহমত আলী ফিরতে চান দেশে।

    ছেলের মৃত্যু আর জামাইকে ফিরে পেতে কেঁদেই চলেছেন কারীমুন বেগম। ২৬ জানুয়ারি রাতে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে তিনি বিলাপ করে চলেছেন। তার দাবি, অন্তত ছেলের মরদেহ যেন তিনি শেষবারের মতো দেখতে পারেন।

    জানা যায়, হুমায়ুন কবির (২৮) ও জামাতা রহমত আলী (৪০) দালালদের প্রতারণার শিকার হন। প্রতি মাসে আড়াই লাখ টাকা বেতনের লোভ দেখিয়ে তাদের পরিবার ১৮ লাখ টাকা খরচ করে গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার ড্রিম হোম ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রাশিয়ায় পাঠায়। প্রথমে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব, তারপর টুরিস্ট ভিসায় রাশিয়ায় নেয়া হয়। সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের বাধ্য করা হয় যুদ্ধে অংশ নিতে।

    তিন মাসের মাথায় আসে নির্মম সংবাদ। ২৬ জানুয়ারি ড্রোন হামলায় মৃত্যু হয় হুমায়ুন কবিরের। স্বামীকে হারিয়ে এক বছরের মেয়ে প্রীতিকে নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন হুমায়ুনের স্ত্রী তারা বেগম। তিনি দালালদের শাস্তি দাবি করেছেন।

    হুমায়ুনের বড় বোন মেঘনা বেগম জানান, চলতি মাসের ২০ তারিখে হুমায়ুন ও রহমত জানান তাদের সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধে পাঠানো হয়েছে। এরপর ২৬ জানুয়ারি রহমত জানায় হুমায়ুনের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা সরকারের কাছে মরদেহ ফেরত আনার দাবি জানান।

    হুমায়ুনের বন্ধু মাহমুদ জানান, দালালের খপ্পরে পড়ে তার পরিবারের সর্বনাশ হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও সরকার যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখে, এমনটাই প্রত্যাশা তার।

    ঢাকার ড্রিম হোম ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস লিমিটেড কোম্পানিতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা অফিস বন্ধ করে পালিয়েছে। স্থানীয় দালালদের ফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে।

    স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণ সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে। হুলহুলিয়া গ্রাম উন্নয়ন পরিষদের সহ-সভাপতি শাকিল আহম্মেদ তপু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের প্রতিশ্রুতি দেন।

    সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলাম জানান, তিনি এ বিষয়ে অবগত নন, তবে দ্রুত খোঁজ নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

    পরিবার ও স্থানীয়রা দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, হুমায়ুন কবিরের মরদেহ ফেরত আনা এবং রহমত আলীকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।

  • ছেলে সন্তানের জন্ম দিলেন গুলিবিদ্ধ সেই নারী

    ছেলে সন্তানের জন্ম দিলেন গুলিবিদ্ধ সেই নারী

    ছেলে সন্তানের জন্ম দিলেন গুলিবিদ্ধ সেই নারী
    মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদীতে গোলাগুলিতে দুইজন নিহতের ঘটনার জেরে ধরে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে বাড়িতে ঢুকে গুলিবর্ষণে আহত ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী পিংকি আক্তার (১৯) ছেলে সন্তানের মা হয়েছেন। বর্তমানে মা ও ছেলে সুস্থ রয়েছেন।

    গুলিবিদ্ধ নারীর ভাই দেওয়ান মো. শামীম বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মুন্সীগঞ্জ আধুনিক হাসপাতালে আমার বোন একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেছে। ছেলে এবং আমার বোন দু-জনই সুস্থ আছে বলেও জানান তিনি।

    ওই নারীর স্বামী মো. সম্রাট জানান, শুক্রবার বিকেলে শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তার স্ত্রী।

    আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আধারা ইউনিয়নের কালিরচর গ্রামে গুলিবিদ্ধ হন পিংকি আক্তার। তিনি ৯ মাসের অন্তসংত্ত্বা ছিলেন। শুক্রবারের আগেই তার ডেলিভারির তারিখ দিয়েছিলেন চিকিৎসক। কিন্তু ডেলিভারির তারিখের দিনেই তাকে গুলি করা হয়।

    জানা গেছে, একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি কিবরিয়া মিজি ও কানা জহিরের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।

    আহত নারীর মা নুরজাহান বেগম অভিযোগ করে জানান, বৃহস্পতিবার মেঘনা নদীতে গোলাগুলিতে দুইজন নিহতের ঘটনার জের ধরে সকালে কিবরিয়া পক্ষের আমার ছেলে রাজু সরকারের বাড়িতে হামলা চালায় স্থানীয় কানা জহিরের ভাই শাহিন বেপারি ও তার লোকজন। এসময় অতর্কিত গুলিতে আহত হন আমার মেয়ে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা পিংকি।

    আহত নারী পিংকি আক্তার বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে ওদের ঝগড়া। আজ (শুক্রবার) তাকে ধাওয়া করে পেছন পেছন আসে শাহিন ও তার লোকজন। এসময় আমাকে দরজার সামনে পেয়ে গুলি করে দেয়। গুলিটি আমার ডান পাশের কোমড়ের নিচে পায়ে ঢুকে অপরদিক থেকে বের হয়ে যায়। এতে আমি ও আমার সদ্য ভূমিষ্ট সন্তান কোনো রকমে প্রাণে রক্ষা পাই।

    গুলির অভিযোগ অস্বীকার করে জহির ইসলাম ওরফে কানা জহির বলেন, কিবরিয়া মিজির কাছ থেকে বালু ব্যবসার টাকা এনে এলাকায় ভাগবাটোয়ারা করছিল পিংকির বাবা শাহজাহান সরকার। এ নিয়ে এলাকায় বিতর্কের সৃষ্টি হলে নিজেরাই গুলির নাটক সাজিয়েছে।

    মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ পিংকির স্বামী মো. সম্রাট বাদী হয়ে কানা জহির ও তার ভাইসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও সাত-আটজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এখনও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি তবে চেষ্টা চলছে।

    প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতে মেঘনা নদীতে মুন্সীগঞ্জ-চাঁদপুর সীমান্তে কিবরিয়া মিজি ও কানা জহির গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হন মুন্সীগঞ্জ সদরের আধারা ইউনিয়নের ভাষানচর এলাকার কামাল ফকিরের ছেলে রাসেল ফকির (৩৩) ও চাঁদপুরের মতলব থানার তুহিন (২৯)।

  • বাংলাদেশ নিয়ে যে আশা ভারতের

    বাংলাদেশ নিয়ে যে আশা ভারতের

    ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলোর প্রতি বাংলাদেশের যথাযথ শ্রদ্ধাবোধ থাকবে বলে আশা করছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

    শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ মন্তব্য করেন।

    চলতি মাসের মাঝামাঝি নয়াদিল্লিতে বিএসএফ-বিজিবির মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক প্রসঙ্গে মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা আশা করি পারস্পরিক সব কটি চুক্তির প্রতি বাংলাদেশের শ্রদ্ধা থাকবে কারণ এগুলো দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের ভিত্তি।’

    তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে কাঠামোগত সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করে, এমন সব চুক্তির প্রতিই সম্মান রাখা হবে বলে আশা করি।’

    সীমান্ত ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে কিছু চুক্তি ‘অসম’—বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর এমন মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আগামী ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ডিজি পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্ত-সম্পর্কিত সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।’

    ‘এই চুক্তিগুলো ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সীমান্তে পারস্পরিক নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও অবকাঠামো তৈরিতে সহায়তা করে,’ বলেন তিনি।

    সম্প্রতি পাকিস্তানি সামরিক প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা আশপাশের সবগুলো বিষয়ে আমরা সর্বদা কড়া নজর রাখি এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিই।’

  • আওয়ামী লীগতো নিষিদ্ধ দল অলরেডি আছেই,নতুন করে নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন নেই:আমান আজমী

    আওয়ামী লীগতো নিষিদ্ধ দল অলরেডি আছেই,নতুন করে নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন নেই:আমান আজমী

    জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির, প্রয়াত গোলাম আজমের ছেলে, সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আজমী তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আওয়ামী লীগ তো আগে থেকেই নিষিদ্ধ দল, তাই নতুন করে তাদের নিষিদ্ধ করার কোনো দরকার নেই।

    তিনি লিখেছেন, “শেখ সাহেব ‘গণতন্ত্র’ ও ‘জনগণ’-এর দোহাই দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে নির্বিচারে জনগণকে হত্যা করেছেন এবং ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগসহ সকল রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে বাকশাল কায়েম করেছিলেন। শেখ সাহেব নিজেই তো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে গেছেন। ‘আওয়ামী লীগ তো নিষিদ্ধ দল অলরেডি আছেই’। কাজেই, নতুন করে আবার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার তো কোনো প্রয়োজনই নেই।”

    উল্লেখ্য, আবদুল্লাহিল আমান আজমী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। তিনি জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির, প্রয়াত অধ্যাপক গোলাম আজমের মেঝো ছেলে। তিনি ২০১৬ সালে গুমের শিকার হন এবং রাখা হয় আয়নাঘরে। অসহযোগ আন্দোলন (২০২৪)-এর মাধ্যমে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে, পরের দিন ৬ আগস্ট তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

  • ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের মেয়েকে বিয়ে করলেন সারজিস!

    ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের মেয়েকে বিয়ে করলেন সারজিস!

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিয়ে করেছেন। তবে কোথায় বিয়ে করেছেন? প্রথমে তা জানা না গেলেও বরগুনায় তিনি বিয়ে করছেন— এমন পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

    শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের এক পোস্টে সারজিস আলমের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এরপরই সারজিস বরগুনায় বিয়ে করেছেন লিখে পোস্ট দিতে থাকেন বরগুনার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

    সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একাধিক পোস্ট থেকে জানা যায়, সারজিস আলম বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. লুৎফর রহমানের বড় মেয়ে রাইতাকে বিয়ে করেছেন।

    মো. লুৎফর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র। তিনি বরগুনা সদর উপজেলার ২ নম্বর গৌরীচন্না ইউনিয়নে লাকুরতলা নামক এলাকার বাসিন্দা। তবে পেশাগত কারণে বর্তমানে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন।

    এ বিষয়ে জানতে অ্যাডভোকেট মো. লুৎফর রহমানের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও এখন পর্যন্ত কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

  • যৌথ বাহিনীর হাতে যুবদল নেতার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের প্রতিবাদ

    যৌথ বাহিনীর হাতে যুবদল নেতার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের প্রতিবাদ

    যৌথ বাহিনীর হাতে যুবদল নেতার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের প্রতিবাদ

    গত ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কুমিল্লায় তৌহিদুল ইসলাম (৪০) নামে এক যুবদল নেতাকে যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে বাড়ি থেকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে অসুস্থ অবস্থায় পুলিশি পাহারায় হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, নিহত তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ছিল না। নিহত তৌহিদুল ইসলামের শরীরে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা ইঙ্গিত করে যে তাকে আটক অবস্থায় নির্যাতন করা হয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

    শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।

    নেতৃবৃন্দ বলেন, “একটি সভ্য দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হলো নাগরিকদের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাদের মৌলিক ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ করা। কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট স্বৈরশাসনের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করতে গিয়ে হাজার হাজার নিরীহ ও নিরপরাধ নাগরিককে অকথ্য নির্যাতনের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করেছে। যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের এই হত্যাকাণ্ড সেই নির্মম হত্যাযজ্ঞেরই পুনরাবৃত্তি।”

    নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদের পতনের পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আচরণে আশানুরূপ পরিবর্তন আসেনি। সনি। দুই সহস্রাধিক শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরতন্ত্রের অবসানের পরও নতুন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জনমনে অনাস্থা ও ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে, পাশাপাশি অভ্যুত্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।”

    নেতৃবৃন্দ বিচারবহির্ভূত এই হত্যাকাণ্ডের যথাযথ তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। একই সঙ্গে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আর কোনো নাগরিক যেন জুলুমের শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

  • ১৬ বছর কারাভোগের পর বাড়ি ফিরেছেন সিপাহি শহিদুল

    ১৬ বছর কারাভোগের পর বাড়ি ফিরেছেন সিপাহি শহিদুল

    ১৬ বছর কারাভোগের পর বাড়ি ফিরেছেন সিপাহি শহিদুল
    দীর্ঘ ১৬ বছর কারাগারে থাকার পর বাড়ি ফিরেছেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার শহিদুল ইসলাম। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় জেল হয় তার। গত ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। শহিদুল শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতল ইউনিয়নের আরজিপারাসলাই গ্রামের আলতাফ আলীর (৭৫) ছেলে।

    ২০০৯ সালে ঘরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, ঘাড়ে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের দায় নিয়ে লন্ডভন্ড শহিদুলের জীবন। বিচারে সাজা নিয়ে জেলহাজতে বন্দি শহিদুল। ছাড়া পান গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি)। বাড়ি ফিরে দেখেন, তার স্ত্রীর গর্ভে থাকা সেই সন্তান এখন কিশোরী। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন একমাএ আদরের ছোট ভাই সাজু। ছোট বোনের বিয়ে হয়েছে। নিজেরও বয়স বেড়েছ, কমেছে শরীর ও মনের জোর। জীবনের ১৬টি বছর নিঃসঙ্গ কাটিয়েছেন তার স্ত্রী শিল্পী খাতুন।

    দীর্ঘদিন পর মা-বাবা, ভাই-বোনদের কাছে পেলেও হতাশা কাটছে না শহিদুলের। বন্দি দশা থেকে বেরিয়ে পৃথিবীর সবকিছুই এখন তার চোখে নতুন। এরি মধ্যে কিভাবে কাটাবেন বাকিটা জীবন সেই দুশ্চিন্তা ঘিরে ধরেছে সদ্য জেল থেকে মুক্তি পাওয়া শহিদুলকে।

    ২০০৯ সালে বাংলাদেশ রাইফেল সপ্তাহ উপলক্ষে পিলখানায় অবস্থান করছিলেন সিপাহি শহিদুলসহ তার গ্রুপ। তিনি বলেন, দরবার মহলে সংঘটিত হয় পিলখানা হত্যাকাণ্ড। কিন্তু আমরা যেখানে অবস্থান করছিলাম সেটি প্রায় হাফ কিলোমিটার দূরে। আমারা সৈনিক ব্যারাকের ৫ তলায় অবস্থান করছিলাম। ২৫ তারিখে হঠাৎ গোলাগুলি শব্দ শুনতে পাই। আমরা বিল্ডিংয়ে অবস্থান করছিলাম। ২৬ তারিখ যখন দেখলাম সবাই পিলখানা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। বুঝলাম এখানে থাকা সম্ভব হবে না, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করছে। তখন আমিও ২৬ তারিখ বিকেল ৫টায় পিলখানা থেকে বেরিয়ে বাড়ি চলে যাই।

    পরে সরকার যখন সার্কুলার দিয়ে জানায়, নিজ নিজ ইউনিটে যোগ দিতে। তখন আবারও পিলখানায় যোগ দিলে আমাদেরকে ধাপে ধাপে জেলহাজতে নিতে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই থেকেই ঘর ছাড়া আমি।

    বাড়িতে রেখে যাওয়া এক মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, গর্ভের সন্তানকে আঁকড়ে বাঁচা স্বপ্ন দেখেন। শিল্পী খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এসব বলতে গেলে কান্না চলে আসে। সেদিন একটু আগে আমার স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়। তিনি আমাকে জানান, প্যারেড শেষ করে বাড়ি ফিরবেন। পুঁইশাক ও ছোট মাছ রান্না করতে বলেছিলেন। বাজার থেকে শাকসবজি কিনে নিয়ে এসে রান্না করতে যাব তখনই টিভিতে দেখি পিলখানার খবর। তখন তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পারিনি। পরে দু’দিন পর বাসায় ফিরে আসেন তিনি। কিছু দিন পরে সরকারি নির্দেশে যখন পিলখানায় নিজ ইউনিটে যোগ যোগদান করেন তখন তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

    দীর্ঘ ১৬ বছরে শিল্পী খাতুনকে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। স্বামী জেলে যাওয়ার ৯ মাস পরেই জন্ম নেন ফুটফুটে কন্যা সন্তান। সন্তানের মায়ায় নিজেকে জড়িয়ে সন্তানকে লালন-পালন করার চিন্তা থেকেই যুক্ত হন আনন্দ স্কুল নামক প্রতিষ্ঠানে। বিধিবাম স্কুলটি ছিল স্বল্পমেয়াদী। যে কারণে আবারও হতাশায় পড়েন শিল্পী খাতুন। সন্তানের খরচ জেল হাজতে স্বামীর খরচসহ পরিবারের খরচ চালাতে না পেরে দ্বারস্থ হন ভাইদের কাছে। বাবার বাড়ির সম্পত্তি বিক্রির টাকা নিয়ে সংসার চালান শিল্পী খাতুন। এরপর দিন গড়িয়ে মাস, মাস গড়িয়ে বছর, বছর গড়িয়ে যুগ অতিবাহিত হয়ে যায়।

    এদিকে গর্ভধারিনী মা জহুরা বেগম (৬৫) ও বাবা আলতাফ আলী (৭৫) অপেক্ষার পালা ফুরিয়ে এসেছে। প্রবীণ এই বৃদ্ধার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছেলে বাড়ি ফেরায় খুব ভালো লাগছে বাবা। বুকের ধন বুকে ফিরে আসছে। দীর্ঘদিন বুকে পাথর নিয়ে বেঁচেছিলাম। ছেলে একবার হলেও বাড়ি আসবে এ আসায় ছিলাম।

    অপরদিকে বাবার অনেক গল্প গুনেছে ইসরাত জাহান সৌমিকা (১৫)। কিন্তু বাবার সাক্ষাৎ পেয়েছে ১৬ বছর পর। সৌমিকা বলে, দীর্ঘ সময় পর আমি আমার বাবাকে কাছে পেয়েছি। জন্মের পর থেকে আমার কখনো বাবাকে ছুয়ে দেখা হয়নি। স্কুলে সবাই আমাকে জিজ্ঞেস করতো, তোর বাবা কেন জেলে? আমি উওর দিতে পারিনি। স্থায়ীভাবে মামলা বাতিল করে আমার বাবাকে চাকরি ফিরিয়ে দিলে, আমি সবাইকে বুক ফুলিয়ে বলতে পারব আমার বাবা নির্দোষ।

    শহিদুলের সমবয়সী ফুফাতো ভাই হারুন বলেন, তার একটা মেয়ে সন্তান হইছে কিন্তু মেয়ে যে বাবাকে দেখবে সেই সুযোগ এর আগে সুযোগ হয়নি। তার বাবা-মা বৃদ্ধ, ছোট ভাই ক্যান্সারে মারা গেছে। তাদের পরিবারে ২ মেয়ে আছে। শহিদুল তো একেবারে হতাশ। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। না আছে টাকা, না আছে করে খাওয়ার মতো কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

    শহিদুল বলেন, পিলখানা হত্যা মামলার বিচার চলাকালীন আমাদেরকে জেলে পাঠানো হয়। কিন্তু যাদেরকে পরে বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে নিয়ে আসে তাদেরকে অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। কাউকে গুম করেছে, কাউকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। সবশেষ যাদের মাধ্যমে ১৬ বছর পর ফিরে আসতে পেরেছি তাদেরকে প্রতি কৃতজ্ঞতা।

  • সামনে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত : সাংবাদিক ইলিয়াস

    সামনে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত : সাংবাদিক ইলিয়াস

    অনলাইন এক্টিভিটিস ও প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন দেশবাসীকে সতর্ক করে আজ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছে,
    তার লেখা স্ট্যাটাস টি হুবাহু তুলে ধরা হলো..

    তিনি লিখেন, সামনে ১০ নম্বর ম’হাবি’পদ সংকেত!!!!
    -_-_–_-_-_-
    একটা ‘১৫ মিনিটসের প্রোগ্রাম করতে অনেক কষ্ট হয়৷ ৫ তারিখের পর চাইলে অনেক ধান্দায় যুক্ত হতে পারতাম৷ ২-৪ লাখ সাবসক্রাইবারের চ্যানেল দিয়ে মানুষকে ব্লাকমেইল করে অনেকে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছে৷ আমারও টাকা পয়সার সমস্যা হতো না কিন্তু সেটা না করে দেশের জন্যে কাজ করতে চেয়েছি৷

    ৫ তারিখের পরপর প্রথম আলো-ডেইলী স্টার কিভাবে আলেমদের ধরে জ’ঙ্গি বানাতো সেই প্রমান দিয়েছি৷ পিলখানার ঘটনাকে কিভাবে প্রথম আলো আর ডেইলি স্টার জঙ্গি তকমা দিয়েছে সেটা দেখিয়েছি তারপর একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার নিয়ে কিভাবে প্রথম আলো জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছে সেটার প্রমাণ দিয়েছি৷ পরিকল্পনা ছিলো এক এক করে হলি আর্টিজানসহ দেশের সবকটা জঙ্গি হামলার আসল রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করবো৷ কিন্তু সেটার আর প্রয়োজন মনে করছিনা৷ কারন এতসব প্রমান দেখানোর পরেও প্রথম আলো ডেইলি স্টারের বি’রুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি৷

    আরও পড়ুনঃ ছাত্র সংবাদে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত লেখা, যা বললেন লেখক
    উল্টো প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সব রাজনৈতিক দলের ( জামায়ত-বিএনপিসহ ছোট বড় কুকুরের ছানারা) গিয়ে মতিউরের পা চেটে এসেছে৷ মাহফুজ আনাম ও মতিউরদের ষ’ড়যন্ত্রের বিচার না করার ফল এই দেশের মানুষ খুব শীগ্রই ভোগ করবে৷ কিছু আলামত শুরু হয়েছে৷ এরইমধ্যে ভারতের প্রেসক্রিপশনে প্রথম আলো নতুন ধরনের জ’ঙ্গি নাটক সাজানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে৷ বিভিন্ন জায়গায় তৌ’হিদী জনতার ব্যানারে নায়িকা, মডেল কিংবা নারী ফুটবলারদের বি’রুদ্ধে উ’দ্যেশ্য প্রনোদিতভাবে নারী বি’দ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে৷ হঠাৎ করেই কালেমা লেখা কালো পতাকা নিয়ে বের হওয়া লোকজনের উদয় হয়েছে!

    আরও পড়ুনঃ বিএনপিকে নিয়ে মাসুদ সাঈদীর পোস্ট ভাইরাল মাসুদ সাঈদী।
    শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলে রাখলাম, এসব ঘটনার মূলে গেলে দেখা যাবে প্রতিটিতেই ভারতের হাত রয়েছে৷ তাদের মুল টার্গেট হলো এই দেশকে সাম্প্রদায়িক একটা কালার দেয়া৷ আপনারা হয়তো মনে করছেন এটা এতো গুরুত্বের কি হলো? প্রথম আলো ডেইলি স্টারের এসব নিউজ এরইমধ্যে পশ্চিমা কূটনীতিকদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে৷ হাসিনা ছাড়া এই দেশ আ’ফগান হয়ে যাবে এটা বুঝাতেই ভারতের এসব পুরাতন কৌ’শল৷ সামনে এরকম হরেক রকমের নাটক দেখার জন্যে অপেক্ষা করুন৷ ভুলে যেয়েন না,

    এই প্রথম আলো- ডেইলি স্টারের এসব সংবাদের কারনেই তারেক রহমান এখনও আমেরিকায় নিষিদ্ধ৷ যাকে তারা ভিসা দেয় না তাকে প্রধানমন্ত্রী হতে সমর্থন দেবে কিনা সেটা অবশ্যই ভাববার বিষয়৷ আর জামায়াত ইসলাম যে ভারতের ঝুলানো মুলা দেখে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে সেটাতো দিবাস্বপ্ন বা স্বপ্নদোষও বলতে পারেন৷ বিএনপি-জামায়াতের বাইরে কিছু একটার জন্যেই প্রথম আলো-ডেইলী স্টারের এতো ষড়যন্ত্র৷

    আরও পড়ুনঃ এবার ইলিয়াস হোসেনের শোতে আসছেন রাশেদ চৌধুরী
    অতএব, প্রথম আলো ডেইলী স্টার নামক ভারতীয় গো’য়েন্দা সংস্থার অফিস এদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করতে না পারলে কোনদিনও এদেশের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখা সম্ভব হবে না৷
    এখন সিদ্ধান্ত আপনাদের৷ যারা চোখ কান বন্ধ করে মনে করছেন ক্ষমতায় চলে এসেছেন তাদেরকে শুধু এতটুকুই বলবো, ক্ষমতায় আসবেন কিনা জানি না তবে আপনাদের আগে আবারও আওয়ামিলীগ ক্ষ’মতায় আসে কিনা সেই চিন্তা করেন৷

  • এনামুল হক বিজয়ের দেশত‍্যাগে নিষেধাজ্ঞা

    এনামুল হক বিজয়ের দেশত‍্যাগে নিষেধাজ্ঞা

    অভিযোগ এখনো প্রমাণিত হয়নি। তবে এনামুল হক বিজয়কে ঘিরে স্পট ফিক্সিংয়ের নানা অভিযোগ উঠেছে।

    তাই আপাতত তাকে দেশত‍্যাগের অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টি ইমিগ্রেশনকে জানানো হয়েছে। এবারের বিপিএলে শুরু থেকেই স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ওঠে।

    নিয়ত তা বেড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটার এনামুল হককে যেন দেশ ছাড়তে না দেওয়া হয়।

  • পানির বদলে দেওয়া হয় প্রস্রাব, চার তলা থেকে ফেলে ১৩ টুকরো করা হয় পা

    পানির বদলে দেওয়া হয় প্রস্রাব, চার তলা থেকে ফেলে ১৩ টুকরো করা হয় পা

    ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১৫ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রলীগের নির্যাতনের ঘটনা নতুন করে আলোচনায় এসেছে। এ নিয়ে একে একে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা মুখ খুলছেন। তেমনই একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৮-২০০৯ সেশনের শিক্ষার্থী মো. রাকিবুল ইসলাম। পাশাপাশি তিনি ছিলেন সেই সময়কার হল শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি।

    ২০১৩ সালে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই শিক্ষার্থীকে ছাত্রশিবির সন্দেহে বেধড়ক মারধর করেন। শুধু তাই নয়, বেধড়ক মারধর করে ফেলে দেওয়া হয় হলের চারতলা থেকে। এ ঘটনায় তার দুই পা ভেঙে ১৩ টুকরা হয়েছিল। সেমময় ছাত্রলীগের নির্যাতনের মাত্রা এতো বেশি ছিল যে, নির্যাতনের পর পানির পিপাসা লাগলে তিনি পানি চাইলে তারা তাদের প্রস্রাব বোতলে করে নিয়ে এসে বলে, ‘এই নে পানি না প্রস্রাব খা।’ সেই নির্যাতনে পঙ্গুত্ব বরণ করা এই শিক্ষার্থী ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন। ছাত্রলীগের নির্যাতনে পঙ্গু হওয়া শরীরটা নিয়ে দিগ্‌বিদিক ছুটে বেড়াচ্ছি। দেশে ও দেশের বাইরে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি কিন্তু কোন সমাধান হয়নি।

    ২০১৩ সালের এই ঘটনার বিস্তারিত লেখে ফেসবুকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নৃশংসতা, স্বপ্ন ও পঙ্গুত্ব’ একটি পোস্ট দেন ভুক্তভোগী রাকিবুল। পরে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তিনি।

    ঘটনা কিভাবে শুরু সেই কথা উল্লেখ করে পোস্টের শুরুতে রাকিবুল লেখেন, ২০১৩ সালের ১০ ফ্রেব্রুয়ারি, আসর নামাজের পর আনুমানিক বিকাল ৫টার সময় আমি মুহসীন হলে নিজ রুমে (৫৫৫ নম্বর) পড়াশোনা করছিলাম। হঠাৎ হেলাল উদ্দিন সুমন আমার রুমে আসে এবং জানায় যে, গোলাম রসুল বিপ্লব আমাকে তার রুমে (৪৬২ নম্বর) ডেকেছে। সুমন আমার জুনিয়র হওয়া সত্ত্বেও তার কথার মধ্যে বেয়াদবি ও উগ্রতা ছিল। আমি রুম থেকে বের হওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলাম। ইতোমধ্যে মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে আবু জাহিদ রিপন, জাহিদুল ইসলাম, আহসান হাবিব রানা ও হেলাল উদ্দিন সুমন আমার রুমে আসে। ওরা সবাই মিলে আমাকে রুম থেকে টেনেহিঁচড়ে ৪৬২নং রুমে নিয়ে যায়।

    এ ঘটনায় জড়িত যেসব ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নাম এসেছে

    ‘‘সেখানে আমি জহিরুল ইসলাম ওরফে সরকার জহির রায়হান ও দেওয়ান বদরুল হাসান তুষারদের দেখতে পাই। আবু জাহিদ রিপন আমার মোবাইল নিয়ে বলে, তুই তো শিবির করিস। এই বলে সে আমার মোবাইল চেক করে। এরপর বলে যে, তুই তো হলের সভাপতি। তুই অনেক চালাক। সেজন্য তোর মোবাইল এ কিছু নাই। একথা বলার পরই আবু জাহিদ রিপন আমাকে থাপ্পড় ও ঘুসি মারা শুরু করে। সাথে সাথে মেহেদী হাসান, গোলাম রসুল বিপ্লব, জাহিদুল ইসলাম, আহসান হাবিব রানা ও হেলাল উদ্দিন সুমন আমার উপর বর্বর ও হিংস্রভাবে ঝাপিয়ে পড়ে ও আমার মুখে, বুকে ও পিঠে লাথি মারতে শুরু করে।’’

    এসময় অমানবিক কায়দায় ছাত্রলীগ নির্যাতন শুরু করে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, তারা আমার উপর অত্যাচার শুরু করে। আমি ফ্লোরে পড়ে গেলে ওরা রুমে থাকা লাঠি, রড, লোহার পাইপ, ব্যায়াম সামগ্রী বের করে আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত অনবরত পিটাতে থাকে। আমাকে মারায় নেতৃত্ব দিচ্ছিল মেহেদী হাসান, গোলাম রসুল বিপ্লব, আবু জাহিদ রিপন ও জাহিদুল ইসলাম। তাদের অত্যাচারে পিপাসার্ত ও দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে আমি পানি চাইলে ওরা তাদের প্রস্রাব বোতলে করে নিয়ে এসে বলে, এই নে পানি না প্রস্রাব খা।

    ‘‘ধারাবাহিকভাবে মেরে ক্লান্ত হয়ে গেলে ওরা আমাকে ৪ তলার ৪৬২ নম্বর রুমের জানালা দিয়ে নিচে ফেলে দেয় (উল্লেখ্য রুমের জানালায় কোন গ্রিল ছিল না)। উপর থেকে পড়ে আমার দুই পা ভেঙে ১৩ টুকরা হয়ে যায়। আমার দুটো পা মাটিতে দেবে যায়। আহত অবস্থায় আমি ওদের দৃষ্টি এড়িয়ে কোনোরকম হাঁটতে হাঁটতে (হাঁটুতে ও হাতে ভর করে) রেজিস্ট্রার ভবনের কাছে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাড়ির নিচে আশ্রয় নেই (উল্লেখ্য ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে শাহবাগ মোড়ে শুরু হয়ে অব্যাহত থাকা গণজাগরণ মঞ্চের কারণে ক্যাম্পাসে কোন রিকশা বা যানবাহন ছিল না)। মেহেদী হাসান, গোলাম রসুল বিপ্লব, আবু জাহিদ রিপন, দেওয়ান বদরুল হাসান তুষার ও জাহিদুল ইসলাম আমার খোঁজ পেয়ে দ্রুত রেজিস্ট্রার ভবনে আসে এবং ওখান থেকে আমাকে টেনেহিঁচড়ে বস্তার মত করে রিকশায় তুলে ফের হলে নিয়ে যায়।’’

    হলের হাউজ টিউটররা ঘটনার সময় বাঁধা দিলে তাদের সঙ্গেও ছাত্রলীগ খারাপ আচরণ করে তিনি বলেন, হলের হাউজ টিউটরবৃন্দ বাঁধা প্রদান করলে তারা তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। ওরা আমাকে আবার ৪৬২ নম্বর রুমে নিয়ে যায়। সেখানে রানা, মেহেদী, রিপন, বিপ্লব ও জাহিদ আমাকে আবার মারতে শুরু করে। পরবর্তীতে ওরা আমাকে ধরে হল প্রোভোস্ট এর রুমে নিয়ে যায়। নিয়ে যাওয়ার সময় সিঁড়ির সাথে আমার মাথা বাড়ি দেয়। আমার সেন্স কিছুটা কার্যকর হওয়ার কারণে হাত দিয়ে তখন রক্ষা পাই। সেখানে রানা, মেহেদী, রিপন, বিপ্লব ও জাহিদদের সাথে এবি সিদ্দিক রাহাত যোগ দেয় এবং লাঠি-রড দিয়ে আমার মাথায়, পিঠে, বুকেসহ সমস্ত শরীরে আঘাত করে। রাহাত আমার বুকের ওপর উঠে দাঁড়িয়ে গালিগালাজ করে। এশার আজান দেয়া পর্যন্ত সবাই মিলে এভাবে নির্যাতন করতে থাকে। আমি তো ভেবেছিলাম এ জীবনের হয়ত আর বাবা-মাকে দেখতে পারব না।

    ‘‘পরিবারের সদস্য ও ভাই-বোনদের মুখগুলো বারবার আমার চোখে ভাসতে ছিল। এ কেমন নির্যাতন। ওরা আমাকে প্রথম পর্যায়ে মেরে রুমের জানালা দিয়ে ফেলে দিলো। তখনই তো আমি পঙ্গু প্রায়। ভেবেছিলাম এ যাত্রায় হয়ত বেঁচে যাব। একটা ছেলেকে পঙ্গু করেও ওরা ছাড়লো না।আবার হলে এনে ইচ্ছামতো মারল। বিশ্বাস করেন, আমার শরীরটা আর নিতে পারছিল না।’’

    এ ঘটনার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আমরা অভিভাবক ভাবি। অথচ দেখেন তারা আমার সাথে কেমন আচরণ করল! হল প্রভোস্ট আলী আক্কাস ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর এ এম আমজাদ আমার নির্যাতনের খবর পাওয়া সত্ত্বেও আমি ও অন্য দুই ভিকটিমদের বাঁচাতে তারা কোন ব্যবস্থা নেয় নি। বরং ওদের নির্বিঘ্নে নির্যাতনের সুযোগ করে দিয়েছে। ওরা নিযার্তন করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পুলিশ ডেকে পুলিশের গাড়িতে আমাকে তুলে দেয়। তখন পুলিশ আমার অবস্থা বেশি একটা ভালো না দেখে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে। সেখানে পরীক্ষা করে দেখা যায় আমার উভয় পা বিভিন্ন স্থানে ভেঙে ১৩ টুকরা হয়ে গিয়েছে। এতটা নির্যাতনের পরেও ওদের অত্যাচার ও জীবন নাশের হুমকির কারণে আমি পরবর্তীতে একাডেমিক ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারিনি।

    ‘‘আমার নির্যাতিত হওয়ার খবর পেয়ে আমার আম্মা ফিরোজা বেগম ও দুলাভাই জাকির হোসেন খান আমাকে ছাড়ানোর জন্য প্রক্টর এ এম আমজাদ এর কাছে যায়। সে তখন বলে যে, এই ছেলে অনেক বড় নেতা তাকে ছাড়া হবে না। আমার মা ও ভাইদের সাথে প্রক্টর আমজাদ অনেক খারাপ ব্যবহার করে। ওদের অত্যাচারে আমি মানসিক ভারসাম্য প্রায় হারিয়ে ফেলেছিলাম। অদ্যাবধি আমি ওদের আঘাতের ফলে শারীরিক ক্ষতি বয়ে বেড়াচ্ছি।’’

    এ ঘটনার পর পঙ্গুত্ববরণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওদের নির্যাতনে পঙ্গু হয়ে আমি আমার সন্তানকে কোলে নিতে পারি না। দুনিয়াতে বাবা হিসেবে এর চেয়ে বড় কষ্ট কি হতে পারে বলেন। ওরা আমার সন্তানের হক কেড়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, আমি এখনো কোনোকিছু ঠিকমতো ধরতে পারি না, ভালোভাবে দাঁড়িয়ে-বসে নামাজ পড়তে পারি না। সিঁড়িতে উঠতে কষ্ট হয়, কোন ধরনের চাপ নিতে পারি না, রোদে গেলে মাথা ও দাঁতে ভীষণ জ্বালাপোড়া করে, রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না, প্রায়ই ঘুমের মধ্যে ওইদিনের ভয়াবহ নির্যাতনের চিত্র আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়। প্রায়ই হঠাৎ বমি হতে থাকে এবং স্বাভাবিক চলাফেরা বা বসতে পারি না। মাথা থেকে পা পর্যন্ত সকল অঙ্গে প্রচুর পরিমাণে ব্যথা এবং কষ্ট অনুভব হয়।

    সবশেষে সবার কাছে দোয়া চেয়ে তিনি পোস্টে বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি কিন্তু কোন সমাধান হয়নি। এখনো ছাত্রলীগের নির্যাতনে পঙ্গু হওয়া শরীরটা নিয়ে দিগ্‌বিদিক ছুটে বেড়াচ্ছি। এই আশায় যে আমি ভালোভাবে দাঁড়িয়ে-বসে নামাজ পড়তে পারব ও আমার সন্তানকে একটু ভালো করে কোলে নিতে পারব। সমাজে একটু স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারব। জানি না মহান মনিব তার আশ-শাফি (রোগ নিরাময়কারী) নামের উসিলায় আমার প্রতি রহম করবেন কি না।