Blog

  • পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন উপদেষ্টা: নাহিদ ইসলাম

    পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন উপদেষ্টা: নাহিদ ইসলাম

    অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আসছে বদল। কিছুদিনের মধ্যেই নিজেসহ উপদেষ্টা পরিষদে থাকা শিক্ষার্থীরা পদ ছাড়তে পারেন বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। আর চলতি মাসের শেষের দিকেই ঘোষণা আসছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের। দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটা জানিয়েছেন তথ‍্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

    কোটা বাতিল আন্দোলন থেকে সরকার পতনের ঘোষণা। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন। এরইমধ্যে চলে গেছে ছয় মাসের বেশি সময়।

    দেশ পুনর্গঠনে ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে সেপ্টেম্বরে শিক্ষার্থীরা গঠন করেন জাতীয় নাগরিক কমিটি। তাদের পক্ষ থেকেই গঠিত হচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল। আর, এই নতুন দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসছে এ মাসেই।

    তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা জানান, দলের কার্যক্রমে যোগ দিতে তিনিসহ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন কয়েকদিনের মধ্যেই।

    তিনি বলেন, ছাত্রদের নেতৃত্বে একটা নতুন রাজনৈতিক দলের পরিকল্পনা বা আলোচনা রয়েছে। সে দলে অংশগ্রহণ করতে হলে সরকারে থেকে সেটি সম্ভব নয়। সেই দলে আমি যদি যেতে চাই তাহলে সরকার থেকে আমি পদত্যাগ করবো।

    তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা চিন্তাভাবনা করছি। আমি ব্যক্তিগতভাবেও চিন্তাভাবনা করছি। যদি মনে করি, সরকারের থেকে আমার মাঠে যাওয়া, জনগণের সঙ্গে কাজ করা বেশি জরুরি। মনে হয় আমি সরকার ছেড়ে দেব এবং সে দলের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবো।

    চলতি মাসেই বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা আসছে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, আর কয়েকদিনের ভেতরে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সবাই জানতে পারবেন।

    এছাড়া নির্বাচনের আগেই বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করায় সরকারের সঙ্গে দূরত্ব কমেছে বলেও মনে করেন নাহিদ ইসলাম।

  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা সাদ্দাম হোসেন সহ গ্রেফতার ১৭!

    নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা সাদ্দাম হোসেন সহ গ্রেফতার ১৭!

    কুড়িগ্রামে পুলিশের বিশেষ অভিযান “অপারেশন ডেভিল হান্ট” পরিচালিত হয়েছে। এ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন স্থান থেকে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান।

    শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে গ্রেপ্তারকৃতদের কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়।

    গ্রেপ্তারদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতাও রয়েছেন গ্রেপ্তারদের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাদ্দাম হোসেন জীবন নামের একজন নেতা রয়েছেন। তিনি রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রলীগ সদস্য বলে জানা গেছে।

    অভিযানের উদ্দেশ্য ও পুলিশের বক্তব্য পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, দেশব্যাপী অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী, পরিকল্পনাকারী ও তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার, পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের লক্ষ্যে কুড়িগ্রাম জেলায় এই বিশেষ অভিযান চালানো হয়।

    কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ও ডিবি ওসি মো. বজলার রহমান জানিয়েছেন, অভিযান চলমান রয়েছে এবং জেলার সব থানায় একযোগে অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনা করা হয়েছে।

    সারাদেশে চলমান বিশেষ অভিযানউল্লেখ্য, “অপারেশন ডেভিল হান্ট” নামে এই অভিযান সারা দেশে একযোগে পরিচালিত হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে প্রশাসন কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে।

    এতে কুড়িগ্রাম জেলায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী, পরিকল্পনাকারী ও সহযোগী ১৭জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রৌমারী উপজেলার রৌমারী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আব্দুর রউফ (৪০), সাধারণ সম্পাদক মো. ছফিয়ার রহমান (৪৫), রৌমারী দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য মো. সাদ্দাম হোসেন জীবন, চর রাজিবপুর উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম (৪০),

    রাজারহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আশীষ কুমার সরকার, রাজারহাট টগরাইহাট মুজিব সৈনিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. জিয়াউর রহমান (২২), ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, ভূরুঙ্গামারী আন্ধারীঝার ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আরিফুল ইসলাম (২৫), নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুল হক (৪০),

    রায়গঞ্জ ইউনিয়নের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সদস্য মো. শাহাদৎ হোসেন (২৯), উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুর রহমান (৫৩), ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রী শেখ রায়হান পল্লব (২০), ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. গোলাম ওয়াদুদ (৫৫), কুড়িগ্রাম সদরের বেলগাছা ইউনিয়ন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. আ. রহিম ওরফে মেহেদী হাসান নয়ন (২৭),

    চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও চিলমারী রমনা ইউনিয়ন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. নুর ই-এলাহী তুহিন (৫০), নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সদস্য মো. সামিউল ইসলাম ওরফে সাগর মিয়া (২৬) ও রমনা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সদস্য মো. জাকিউল ইসলাম (৩২)।

  • বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার: এবার ভারতীয় মিডিয়ার মুখে ছাই দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প!

    বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার: এবার ভারতীয় মিডিয়ার মুখে ছাই দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প!

    ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়া গত ছয় মাস ধরে দাবি করে আসছিল যে, বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ক্ষমতার পতনের পেছনে বাইডেন প্রশাসনের ডিপ স্টেটের হাত ছিল।

    তবে বাইডেনকে নির্বাচনে পরাজিত করে ক্ষমতায় আসা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের মুখে স্বীকার করেন যে, বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনাতে মার্কিন ডিপ স্টেট বা গোপন শক্তির কোনো ভূমিকা ছিল না।

    ওয়াশিংটন সফররত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাতে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে এই বিষয়টি উঠে আসে।

    বৈঠকের সময়, বাংলাদেশে অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং সরকারের পট পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপ স্টেট বা অদৃশ্য শক্তির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। এর উত্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে জানান, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনে মার্কিন কোনো ভূমিকা ছিল না।

    ওই প্রশ্নোত্তর পর্বে ভারতীয় সাংবাদিককে বলতে শোনা যায়:

    “মিস্টার প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ইস্যুতে আপনি কি বলতে চান? কারণ আমরা দেখেছি কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনের সময় দেশটির শাসন পরিবর্তনে জড়িত ছিল- এটি স্পষ্ট। আর তারপর মোহাম্মদ ইউনুস জুনিয়র সরোসের সাথেও দেখা করে। সুতরাং বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার মতামত কি?”

    এই প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “না, আমাদের স্টেটের এখানে কোন ভূমিকা ছিল না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টি নিয়ে বহুদিন ধরে কাজ করছেন। আসলে আমি পড়েছি, এটা নিয়ে শত শত বছর ধরে কাজ করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিষয়টি আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উপরই ছেড়ে দেবো।” পাশেই বসা নরেন্দ্র মোদীর দিকে ইঙ্গিত করে ট্রাম্প এসব বলেন।

    তবে ট্রাম্পের ইঙ্গিতের পরেও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদী কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন বিষয় নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন।

    এ ঘটনার পর, বাংলাদেশকে নিয়ে অপপ্রচারে মেতে ওঠে ভারতের বিভিন্ন মিডিয়া। তাদের মিসলিডিং শিরোনামগুলো ইন্টারনেটে ভাইরাল হতে থাকে, যেগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল—‘বাংলাদেশ ইস্যু ভারতের উপরে ছাড়লেন ট্রাম্প।’

    এ ধরনের বিভ্রান্তিকর শিরোনামে কিছু দেশীয় মিডিয়াও প্রভাবিত হয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। তবে পরে কিছু দেশীয় মিডিয়া নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছে।

  • আঘাত না করেও আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ, প্রশংসায় ভাসছেন পুলিশ সদস্য

    আঘাত না করেও আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ, প্রশংসায় ভাসছেন পুলিশ সদস্য

    যেকোনো আন্দোলন দমনে বলপ্রয়োগের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সাধারণত লাঠিচার্জ করতে দেখা যায় পুলিশের সদস্যদের। একদিকে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করলে যেমন সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, অন্যদিকে বলপ্রয়োগের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় তাদের। তবে, এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে দেখা গেলে এক পুলিশ সদস্যকে।

    সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল এক ভিডিওতে দেখা গেছে, কোনও রকম আঘাত ছাড়াই আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছেন ওই পুলিশ সদস্য। নাম জানা না গেলেও এ ঘটনায় তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ অনেকে।

    প্রশংসাকারীরা বলছেন, এটাই হওয়া উচিত পুলিশিং। এভাবেই তাদের মানুষের মন জয় করা উচিত।

    ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে হাতে থাকা লাঠি দিয়ে সড়কের ওপরে আঘাত করছেন বাংলাদেশ পুলিশের ওই সদস্য। কখনো আবার বিদ্যুতের খুঁটিতে শব্দ তৈরি করে হুঁশিয়ার করছেন শৃঙ্খলাভঙ্গ না করতে। এতেই সেখান থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।

    সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিডিওটি শেয়ার করে শাহাদাত হোসেন নামের একজন লিখেছেন, ‘এ পুলিশ ভাই দেখিয়ে দিলেন। বর্তমান সরকারের কাছে অনুরোধ তাকে বের করে পুরস্কৃত করুন।’

    জুবায়ের জুয়েল রানা নামে একজন ফেসবুক ওই পুলিশ সদস্যের ভিডিওটি শেয়ার করেন এবং ক্যাপশনে লেখেন, ‘এইটা বেস্ট পুলিশিং ছিলো।’ তার পোস্টের কমেন্টে কাজী হাকিম নামে একজন লিখেছেন, ‘আশা করি এইভাবে সকল পুলিশেরই পরিবর্তন আসবে। সামনের থেকে মানুষ পুলিশের উপর নির্ভরশীল ও বিশ্বাস গ্রহণযোগ্যতা ফিরে পাবে। এই ভাইয়ের প্রতি রইল আন্তরিক অভিনন্দন ও ভালোবাসা আল্লাহ তাকে দীর্ঘ হায়াত দান করুক।’

    হিমেল চাকমা লিখেছেন, ‘লাঠি আর বডির সংস্পর্শ ছাড়া কীভাবে মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে হয় এ পুলিশ ভাই দেখিয়ে দিলেন।’

    ইতোমধ্যে হিমেল চাকমার ওই পোস্ট নিজের ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘এই পুলিশ ভাইটাকে অনেক ভালোবাসা।’

  • ৫০ বছর বয়সে জবির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তাওহিদুর

    ৫০ বছর বয়সে জবির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তাওহিদুর

    জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন নওগাঁর মো. তাওহিদুর রহমান তাকু (৫০)।

    শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের চতুর্থ তলার মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ৪১৮ নম্বর কক্ষে পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। শিক্ষার যে কোনো বয়স নেই সেটাই প্রমাণ করলেন তিনি।

    পরীক্ষা শুরুর আগে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার তীব্র বাসনা নিয়েই একের পর এক ভর্তিপরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে যাচ্ছি। আমি আমার চেষ্টা অব্যাহত রাখব।

    তিনি আরও বলেন, আমি ১৯৮৯ সালে অসুস্থ হয়ে পড়ি। তারপর দীর্ঘদিন অসুস্থতার মধ্যেই কাটাতে হয়েছে আমাকে। এখনও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারিনি। ২০১৪/১৫ সাল নাগাদ মোটামুটি সুস্থ হলে আমি আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাই। সুস্থ হওয়ার পর আমি ২০১৬ সালে পরীক্ষা দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু পরে আর দিতে পারিনি। পরে ২০১৯ সালে থেকে আবার পড়াশোনা শুরু করি। ভর্তি পরীক্ষার কাগজগুলো আমি নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তুলেছি এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছি।

    এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, আজ কলা অনুষদে এ রকমের একজন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে আমি শুনেছি। তিনি গতকালও পরীক্ষা দিয়েছেন। তার এ চেষ্টাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কোনো অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন নাকি তা আমরা খতিয়ে দেখব।

    তিনি এনায়েতপুর দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল ও গইরা তেঁতুলদিয়া দাখিল মাদরাসা নঁওগা থেকে আলিম পাস করেছেন।

  • হাসিনার রাজনীতির ক*ফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিল জাতিসংঘ

    হাসিনার রাজনীতির ক*ফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিল জাতিসংঘ

    জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালানো শেখ হাসিনা দেশের রাজনীতিতে আগেই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছেন। এবার তার রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিল জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তদন্ত প্রতিবেদন।

    বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় হাসিনার সরকার ও তার দলের নৃশংসতার চিত্র তুলে ধরেছে জাতিসংঘ। যেখানে তারা বলেছে, জুলাই-আগস্টে অভ্যুত্থান চলাকালে ১৪ শতাধিক মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ক্ষমতায় টিকে থাকতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও আওয়ামী লীগ নৃশংসতা চালিয়েছে। আর এই হত্যাযজ্ঞে সমন্বয়ের ভূমিকায় ছিলেন খোদ শেখ হাসিনাই।

    জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদন নিয়ে খবর প্রচার করেছে বিবিসি, এএফপি, সিএনএন, রয়টার্স, আল জাজিরা, টাইমস অব ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যম। এ নিয়ে দেশ ছাড়িয়ে গোটা বৈশ্বিক রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ‘হাসিনার সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটিয়েছে’- এমন তথ্য বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এমনকি শিশুসহ নিরীহ নাগরিকদের হত্যায় জড়িত অপরাধীরা যেন দায়মুক্তি না পায়, সে বিষয়টিতে জাতিসংঘ জোর দেওয়ায় খোদ আওয়ামী লীগেই নানা ধরনের হিসাব-নিকাশ তৈরি হয়েছে।

    রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ দিনের লুটপাট, গুম-খুন, বিশেষ করে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনাই তার নিজের ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির কবর রচনা করেছিলেন। গদি টেকাতে শেষ পর্যন্ত নৃশংসতার চূড়ান্ত রূপ দেখিয়েছিলেন তিনি। যদিও জনরোষে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এবার হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিল জাতিসংঘ। জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন শেখ হাসিনার ‘রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক’ ঠুকে দিয়েছে।

    জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের সময়টায় দেশি-বিদেশি সাংবাদিক এবং বহু বছর বন্দি ছিলেন এমন কয়েকজন ভুক্তভোগীকে নিয়ে হাসিনা সরকারের গোপন টর্চার সেল কুখ্যাত ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তারা হাসিনার বন্দিশালার ভয়াবহ স্মৃতিচিহ্ন প্রত্যক্ষ করেন। বন্দিরা স্মৃতিচারণ করেন তাদের লোমহর্ষক সেসব দিন।

    জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের দিন আয়নাঘরের আলামত সামনে আসায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে হাসিনার আওয়ামী লীগও। বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরে ‘সুযোগের অপেক্ষায়’ ঘাপটি মেরে থাকা তার দোসররাও পড়েছে চাপের মুখে।

    বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদন, গোপন বন্দিশালার চিত্র দেশের জনগণের মনে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে যেমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তারা পড়েছেন ইমেজ সংকটে, যার পরিণতিতে তাদের সমর্থনও কমবে মারাত্মকভাবে। তাছাড়া আগে থেকেই জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় জড়িতদের বিচার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে জোরালো দাবি উঠেছে। ফলে, এটা অনুমেয় যে আগামী দিনগুলোয় শেখ হাসিনার রাজনীতিতে ফেরা প্রায় পুরোপুরি অসম্ভব। নৃশংসতায় অভিযুক্ত ফ্যাসিস্ট দল আওয়ামী লীগেরও রাজনীতিতে ফেরা অত্যন্ত কঠিন হবে।

    হত্যাকাণ্ডের শিকার ১৪শ’ মানুষ, সমন্বয়ে ছিলেন খোদ হাসিনা

    জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতায় টিকে থাকতে ছাত্র-জনতার ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন সেসময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গ, সহযোগী সংগঠনসহ মাঠে থাকা সব বাহিনী বলপ্রয়োগ করেছে। আন্দোলনের সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি), গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) মতো গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আন্দোলনকারীদের সহিংস কায়দায় দমনে সরাসরি জড়িত থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। গোয়েন্দা বাহিনীগুলো শিশুসহ নিরীহ নাগরিকদের নির্বিচারে আটক, গুম, নির্যাতন, তথ্য বের করা বা স্বীকারোক্তি আদায়ের নামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল।

    জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টে ১ হাজার ৪০০ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো সামরিক অস্ত্র ও শটগানের গুলিতে মারা যান। হাজারো ছাত্র-জনতা গুরুতর ও চিরতরে আহত হয়েছেন। ১১ হাজার সাতশর বেশি মানুষকে র‍্যাব ও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। নিহতদের মধ্যে ১১৮ জনই শিশু।

    পুলিশসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী শিশুদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে টার্গেট কিলিং, ইচ্ছা করে পঙ্গু করা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, অমানুষিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন কায়দায় বলপ্রয়োগ করেছে। আন্দোলনের শুরুতে নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সদস্যরা নারী ও মেয়েদের ওপর হামলা করেছে– এগুলো যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ছিল। এগুলোকে প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বলছে জাতিসংঘ। নিরস্ত্র নাগরিকের ওপর এসকেএস, টাইপ-৫৬ ও বিডি-০৮ বন্দুক দিয়ে ৭.৬২ এমএম গুলি চালানোরও প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল।

    প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল উচ্চ আদালতের সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে। তবে এর মূল কারণ ছিল আরও গভীরে—ধ্বংসাত্মক, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি ও শাসন ব্যবস্থার ফলে সৃষ্টি হওয়া অর্থনৈতিক বৈষম্য।

    জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রচ্ছদে স্থান পায় হাসিনার পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারানো সেই আলোচিত গোলাম নাফিজের ছবির স্কেচ, যেটি তুলেছিলেন ফটোসাংবাদিক জীবন আহমেদ। সেই ছবিতে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ নাফিজের নিথর দেহ পড়ে আছে রিকশার পাদানিতে। তার মাথা রিকশার বাইরে ঝুলন্ত প্রায়। মুখ আকাশের দিকে। রিকশাচালক তাকে উত্তাল সড়ক থেকে নিয়ে যাচ্ছেন।

    এই স্কেচসহ প্রতিবেদনের চুম্বকাংশ জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) ফেসবুক পেজে প্রকাশ পেয়েছে, যা আরও আবেদন তৈরি করেছে বিশ্ব মহলে।

    অপরাধীদের দেশে ফেরানোর পথ বাতলে দিলেন জাতিসংঘ দূত

    জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। প্যানেল সদস্য হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান ররি মাঙ্গোভেন, মানবাধিকার কর্মকর্তা জ্যোৎস্না পৌদ্যাল ও প্রধান মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি।

    এসময় ভলকার তুর্ক বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় অভিযুক্তরা যেন দায়মুক্তি না পায়। এই অভিযুক্তদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।

    তিনি এসময় বিদেশে পলাতক অপরাধীদের দেশে ফেরানোরও উপায় বাতলে দেন। তুর্ক বলেন, যদি অপরাধী দেশের বাইরে থাকে, তখন ‘ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন’ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে যে দেশে অপরাধী অবস্থান করছে তাদের গুরুতর মানবাধিকার লঙঘনের অপরাধের বিচার করতে সম্মত হতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিসি) এ বিষয়ে তদন্তের জন্য বলতে পারে।

    বিশ্বমিডিয়ায় হাসিনা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবর

    জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর এ নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে খবর প্রকাশ হয় বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি, সিএনএন, আল জাজিরা, টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ প্রায় সব আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।

    এর মধ্যে বেশিরভাগই হাসিনার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা সামনে নিয়ে আসে। বিবিসির শিরোনাম ছিল—‘বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের দমন-পীড়ন মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটে থাকতে পারে: জাতিসংঘ’; আল জাজিরার শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশের বিগত সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী হতে পারে, এমনটি বলছে জাতিসংঘ। ’ রয়টার্সের প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়— ‘বাংলাদেশে বিক্ষোভ দমন অভিযানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবেদন দিয়েছে জাতিসংঘ। ’

    বিশ্বমিডিয়ার সুবাদে হাসিনার নৃশংসতার খবর দ্রুত এবং ব্যাপক পরিসরে বৈশ্বিক মহলে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে শিশু, নারীসহ নিরীহ লোকদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র প্রয়োগের নিন্দা জানায় মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।

    জাতিসংঘের প্রতিবেদন হাসিনার নৃশংসতার বৈশ্বিক দলিল

    বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি কোনো রাজনৈতিক দল বা সরকারের প্রচলিত প্রতিবেদন নয়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংস্থার পর্যবেক্ষণ, যা হাসিনার সরকারের নৃশংসতার বৈশ্বিক দলিল হয়ে থাকবে। গোটা বিশ্বই বাংলাদেশের সেই অভ্যুত্থানকালের ঘটনাকে এই পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে দেখবে।

    এরই মধ্যে ইউনিসেফের মতো সংস্থা জাতিসংঘের সেই প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে বিবৃতি দিয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট আজমপুরে একটি ১২ বছর বয়সী বালক অন্তত এক ডজন মরদেহের সাক্ষী। সে ‘বৃষ্টির মতো’ পুলিশের গুলি চালানোর বর্ণনা দিয়েছে। এই ঘটনাগুলো অবশ্যই আমাদের সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলবে। ইউনিসেফ বাংলাদেশ শিশুদের সঙ্গে ‘আর কখনো এমনটি যেন না ঘটে’ তা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানিয়েছে।

    হাসিনার রাজনীতির শেষ, আওয়ামী লীগের পথচলাও কঠিন

    রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের ভাষ্যে, জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন সরকারপ্রধান ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকে যেমন অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করালো, তেমনি কঠিন করে ফেললো আওয়ামী লীগেরও পথচলা। এখন আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে হলে তাদের অভ্যুত্থানকালীন ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ এবং অভিযুক্তদের পেছনে ঝেড়ে ফেলা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

    এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বাংলানিউজকে বলেন, আমার মনে হয়, এটা আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য একটা বড় রকমের ‌‘সেট ব্যাক’ হয়ে গেল। এটা বড় রকমের এভিডেন্স হয়ে গেল। এই রিপোর্টটা আন্তর্জাতিক মহলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যখন এটাকে দেখবে সরকারপ্রধান বা অন্যান্য অর্গানাইজেশনের যারা প্রধান আছেন তারা খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। অতীতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন, আরও প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। ফলে শেখ হাসিনার জন্যও এই বিষয়টি পজিটিভ কিছু আনবে না। তার জন্য বিষয়টি আইনগতভাবে বা রাজনৈতিকভাবে কোনো রকম সুবিধাজনক অবস্থান করবে না।

    সাহাব এনাম আরও বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের যে ভূমিকাটা ছিল সেটার বিষয়ে এখানে যথেষ্ট ডকুমেন্টশন, তথ্য-উপাত্ত, প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। যে কারণে আওয়ামী লীগের বর্তমান রাজনীতিতে ফিরে আসাটা কঠিন হয়ে গেছে।

    আয়নাঘরের আলামতে ঘৃণা-বিস্ময়

    এদিকে, জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের দিন হাসিনার সরকারের গোপন বন্দিশালা বা আয়নাঘরের নানা আলামত সামনে আসায় শুধু বাংলাদেশে নয়, পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতেও বিস্ময় ছড়িয়েছে, বাড়ছে দলটির বিষয়ে ঘৃণাও।

    জাতিসংঘের প্রতিবেদন এবং কুখ্যাত আয়নাঘর নামে পরিচিত শেখ হাসিনা সরকারের গোপন টর্চার সেল নিয়ে আবেগঘন একটি লম্বা ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন ভারতীয় সাংবাদিক অর্ক দেব। তার পোস্টে লেখা হয়েছে, যখন আয়নাঘরের ছবি ভিডিও সামনে আসছে আমরা কি এরকম হয়েই থাকে বলে মানবতা বিরোধী ফ্যাসিস্ট প্রকল্পকে বৈধতা দেব? আমার সন্তান প্রাণপ্রিয়, কিন্তু অন্যের সন্তানের সঙ্গে এমনটা হতেই পারে? দ্বিচারিতা নয় তো এই ভাবনা? আমার তাৎক্ষণিক ঘৃণার চোটে আসলে ইউএপিএর মতো দাসত্ব শৃঙ্খলকেও আমি মান্যতা দিয়ে ফেলছি? এভাবে কত ছিদ্র আটকানো সম্ভব হবে? জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, জুলাই আগস্টে শিশুদের টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, বাহিনীর অস্ত্রে মৃত ১৪০০, তার মধ্যে শিশু ১১৮। বলা হচ্ছে, অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ হাসিনার নির্দেশেই। ওএইচসএইচআর ১২৭ পাতার রিপোর্টে র‍্যাব, এনটিএমসিকে বিলুপ্ত করার সুপারিশও করেছে। প্রশ্ন হলো, কত মুখ ঘুরিয়ে থাকব? আমি অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ হবে? জাতিসংঘকেও এবার বলব বায়াসড?

    আয়নাঘর ঘুরে এসে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা, জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ফেসবুকে লেখেন, আমরা গুম এবং আয়নাঘরে বিনা বিচারে বন্দিদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবোই। আমরা এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্মাণ করতে চাই যেখানে আর কখনো কোনোদিন বাংলাদেশের মাটিতে এমন ঘৃণ্য রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি না হয়।

    আয়নাঘর নিয়ে সাদিকুর রহমান খান নামে একজনের একটি পোস্ট শেয়ার করে হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে লিখেছেন, হয় আওয়ামী লীগ থাকবে না-হয় আমরা থাকবো।

    আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নৃশংসতার কথা তুলে ধরে দলটিকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুকে লেখা হয়েছে, লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আর কোনো যদি-কিন্তু নয়।

  • সর্বজনীন পেনশন বন্ধ হচ্ছে না, সুবিধা নিয়ে যা জানা গেল

    সর্বজনীন পেনশন বন্ধ হচ্ছে না, সুবিধা নিয়ে যা জানা গেল

    পতিত আওয়ামী স্বৈরশাসনামলে চালু হওয়া সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি নিয়ে চিন্তায় গ্রাহকরা। এ পর্যন্ত প্রায় পৌনে ৪ লাখ মানুষ যুক্ত আছেন এই কর্মসূচিতে। দেশ ছেড়ে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে এই কর্মসূচির গ্রাহকরা সর্বজনীন পেনশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছিলেন।

    তবে বন্ধ হচ্ছে না সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি।

    বরং এই কর্মসূচির গতি বাড়াতে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
    অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, সর্বজনীন পেনশন বন্ধে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। দেশের একটি গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা।

    তিনি বলেন, ‘দেশে সামাজিক নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষার প্রশ্নে এ কর্মসূচির প্রয়োজন রয়েছে।

    এটি বন্ধ বা বাতিল করার কোনো পরিকল্পনা নেই। প্রচলিত স্কিমগুলোর বিষয়ে আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যারা নিবন্ধিত হয়েছেন বা ভবিষ্যতে যুক্ত হবেন, তাদের কী করে আরো বেশি আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয় তা দেখা হচ্ছে।’
    যদিও এর আগে বিষয়টি নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছে সংশ্লিষ্টরা।

    সেখান থেকেও গ্রাহকদের পেনশন কর্মসূচি বন্ধ না হওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। ১৪ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পরিষদের একটি সভা হয়। গ্রাহকের মনের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য পেনশন কর্তৃপক্ষ যেন কাজ করে যায় তা বলা হয় সেই সভায়। সেই সাথে গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য “প্রয়োজনীয় পরিবর্তনও” নিতে বলা হয়েছিল।
    সর্বজনীন পেনশন মেলার আয়োজন করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

    জেলা, উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা ও সেমিনারের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি পেনশন কর্মসূচি নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হবে। সরকার পরিবর্তন হোক বা পরিস্থিতি যা-ই হোক, জনস্বার্থে এই কর্মসূচি বহাল থাকবে বলেও বার্তা থাকবে গ্রাহকদের জন্য।
    ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট ‘সমতা’, ‘সুরক্ষা’, ‘প্রগতি’ ও ‘প্রবাস’—এই চারটি স্কিমের নিবন্ধনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এর কার্যক্রম শুরু হয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ও প্রবাসে থাকা নাগরিকদের মধ্যে মোট তিন লাখ ৭৩ হাজার ৩০৬ জন এই কর্মসূচিতে নিবন্ধিত হয়েছেন। তবে নতুন যুক্ত হওয়া নাগরিকের সংখ্যা খুবই কম।

    পেনশন তহবিলে তাদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৭ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ এই অর্থ সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করেছে, যার ফলে মুনাফাসহ তহবিলের মোট পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৪ কোটি টাকা।

  • শিক্ষককে রড দিয়ে মারতে আসা যুবক পা ধরে ক্ষমা চাইলেন

    শিক্ষককে রড দিয়ে মারতে আসা যুবক পা ধরে ক্ষমা চাইলেন

    গাড়িতে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ সিদ্দিকীকে রড দিয়ে মারতে তেড়ে আসেন ইনজামামুল হক নামের স্থানীয় এক যুবক।

    ঘটনার পর মুসলেকা দিয়ে ওই শিক্ষকের পা ধরে ক্ষমা চান ইনজামামুল। ক্ষমা চাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তাকে জালালাবাদ থানার সোপর্দ করা হয়।

    গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

    প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীদের বরাতে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে ক্যাম্পাস থেকে গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছিলেন লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ সিদ্দিকী। এ সময় সিলেট-সুনামগঞ্জ রোডে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ইনজামামুল হকের গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। ধাক্কা লাগার সঙ্গে সঙ্গে ইনজামামুল গালিগালাজ করতে করতে গাড়ি থেকে রড নিয়ে বের হন। তখন অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীকে মারতে তেড়ে যান তিনি। এ সময় অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীর ড্রাইভার ইনজামামুলকে থামানোর চেষ্টা করলে ইনজামামুল চিৎকার শুরু করেন।

    প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মেইন গেটের সামনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছে দেখে আমরা উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করতে যাই। এক পর্যায়ে ওই ছেলে খবর দিয়ে ৪ জন মহিলাসহ ১৫-২০ জন স্থানীয়কে নিয়ে আসেন। তারা এসেই আমাদের গালিগালাজ করতে করতে উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ধাক্কাধাক্কি ও মারধর করেন বলে অভিযোগ পাই। তখন আমাদের শিক্ষার্থীরা জড়ো হলে তারা (স্থানীয়রা) নিরাপত্তা দিতে ওই ছেলেকে একটা দোকানে আটকে রাখেন।

    এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে জড়ো হন। অপরদিকে এলাকাবাসীরাও লোকজন জড়ো করেন। তখন এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েক দফায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

    এরপর ঘটনার সমাধান করতে প্রক্টরিয়াল বাড়ির সদস্যদের এবং পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় ইনজামামুলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়। পরে নিজের দোষ স্বীকার করে মুসলেকা দিয়ে অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীর পা ধরে ক্ষমা চান ইনজামামুল হক। এরপর তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

    এ বিষয়ে শাবিপ্রবির প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘ছেলেটি তার ভুল বুঝতে পেরে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলরের সাক্ষীতে সে মুসলেকা দিয়ে অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীর পা ধরে ক্ষমা চেয়েছে। আমরা তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি, পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা নিবে।’

    সিলেট জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশীদ বলেন, ‘রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককের গাড়ির সঙ্গে ইনজামামুল হক নামের এক যুবকের গাড়ির ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ঝামেল তৈরি হলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন যুবকটি পা ধরে মাফ চান এবং মুসলেকা দেন। ঘটনাটি সেখানে সমাধান করা হয়। এরপর আমাদের হাতে তাকে সোপর্দ করা হলে আমরা তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।’

    উল্লেখ্য, ইনজামামুল হক সিলেট টুকেরবাজার এলাকার হায়দারপুর গ্রামের মৃত এ কে এম তারেক কালামের ছেলে।

  • আওয়ামী লীগ বর্তমানে বিজেপির বাংলাদেশি শাখা: অর্ক ভাদুড়ি

    আওয়ামী লীগ বর্তমানে বিজেপির বাংলাদেশি শাখা: অর্ক ভাদুড়ি

    ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির বাংলাদেশি শাখা বলে মন্তব্য করেছেন কলকাতা এবং লন্ডনভিত্তিক সাংবাদিক, গবেষক, অ্যাক্টিভিস্ট অর্ক ভাদুড়ি।

    শুক্রবার দুপুরে নিজের ফেসবুক ওয়ালে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন। তার স্ট্যাটাসটি ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। অর্কর পোস্টটি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলমও তার ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন।

    অর্ক ভাদুড়ির স্ট্যাটাসটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

    “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমেরিকায় গিয়েছেন।তাকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শাখা ‘ওয়েলকাম নরেন্দ্র মোদি’ লেখা ব্যানার নিয়ে জমায়েত করেছে। আওয়ামী ছাত্রলীগের অফিসিয়াল পেজ এই ভিডিও শেয়ার করেছে। ছাত্রলীগের পোস্টটি কমেন্ট সেকশনে শেয়ার করছি। ভিডিওর ডানদিকে ব্যানারটি দেখা যাবে।

    বিজেপি এবং আওয়ামী লীগ এখন আর আলাদা দুটি দল নয়। আওয়ামী লীগ বর্তমানে বিজেপির বাংলাদেশি শাখা। সেই কারণেই মোদিকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার হাতে আমেরিকায় জমায়েত করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতা ভারতে আছেন। আওয়ামী লীগের আইটি সেলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ভারতে এসে আরএসএস-এর শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন। করতেই পারেন। এগুলি তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।

    প্রশ্ন হলো, বিজেপির সিস্টার কনসার্ন হিসাবে ক্রিয়াশীল আওয়ামী লীগ কি আদৌ বাংলাদেশের রাজনীতিতে কামব্যাক করতে পারবে? সম্ভবত নয়। ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আছে, ক্ষোভ আরও বাড়বে। কিন্তু তার সুফল আওয়ামী লীগ ঘরে তুলবে না, তুলবে অন্য রাজনৈতিক শক্তি।

    জুলাই-আগস্টের সহিংসতা নিয়ে শেখ হাসিনাকে দায়ী করে রাষ্ট্রসংঘের (জাতিসংঘ) রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের বিপদ আরও বেড়েছে। কিংবদন্তি আওয়ামী লীগ নেতা, মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিনের পুত্র সোহেল তাজ এ বিষয়ে যে পোস্ট করেছেন, কমেন্ট সেকশনে সেটি শেয়ার করলাম। এই দুরবস্থায়, খোলাখুলি নরেন্দ্র মোদির পক্ষে ব্যানার নিয়ে মিছিল করে আদৌ বিচক্ষণতার পরিচয় দিচ্ছে আওয়ামী লীগ?”

  • শেখ রেহানার বিঘার পর বিঘা জমি, দখল করেছেন কবরস্থানও

    শেখ রেহানার বিঘার পর বিঘা জমি, দখল করেছেন কবরস্থানও

    ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ঘেষা তেলির চালা এলাকায় ৯ বিঘা জমির উপর সুবিশাল বাংলোকে হাসিনা-রেহানার বাংলো নামেই চিনেন। এই এলাকায় রয়েছে শাঁন দিয়ে বাঁধানো পুকুর ঘাট, বাগান, খেলার মাঠ, সুইমিংপুল, আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি ও হাঁটার রাস্তা।

    স্থানীয়রা জানান, এখানে প্রায়ই ঘুরতে আসতেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাদের সন্তানেরা। কাটাতেন অবসর সময়। ৫ই আগস্টের পর এই বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয়, করা হয় লুটপাট। এখন পুরো জায়গাটি উন্মুক্ত। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কানাইয়া এলাকায় আরেকটি সুবিশাল বাগানবাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। যার নামকরণ করা হয়েছে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিমের নামে ‘টিউলিপ টেরিটোরি’।

    এটির মালিক শেখ রেহানার স্বামী শফিক সিদ্দিক। এই বাগানবাড়িতে রয়েছে ডুপ্লেক্স বাড়ি, কয়েকটি টিনের ঘর বিশাল একটি পুকুর ও সুবিশাল বাগান। এতেও রয়েছে ভাঙচুরের চিহ্ন। তবে এ বাগানবাড়ির একাংশ নিজেদের বলে দাবি করছেন কেউ কেউ।

    কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের সম্পত্তি দখল করে এগুলো তৈরি হয়েছে। এমনকি বাদ যায়নি কবরস্থানও। এমন আরো দুইটি সুবিশাল বাংলোর খোঁজ পাওয়া গেছে গাজীপুরে।

    সূত্রঃ https://youtu.be/K6ARAT7ymY0?si=oz1aV5J2BElkd9oc