Blog

  • গরুর মাংস ব্যবসায়ীদের যে কঠোর নির্দেশনা দিলো প্রশাসন

    গরুর মাংস ব্যবসায়ীদের যে কঠোর নির্দেশনা দিলো প্রশাসন

    গরুর মাংস ব্যবসায়ীদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন।

    নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেয়া বার্তায় চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন জানায়, যারা মাংস বিক্রির লাইসেন্স গ্রহণ করবে তাদের বাধ্যতামূলক ব্যবসা করতে হবে অন্যথায় লাইসেন্স বাতিল করা হবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গরুর মাংস বাধ্যতামূলক হাটে থাকতে হবে এবং হাটের মাঝেই গরু জবাই করতে হবে।

    নির্দেশনায় আরও বলা হয়, মাংসের নামে অবাঞ্ছিত কিছু বিক্রি করা যাবে না। ক্ষুদ্র ক্রেতাদের আগে প্রাধান্য দিতে হবে। নিম্নে ২৫০ গ্রাম মাংসও বিক্রি করতে হবে।

    পশু চিকিৎসক বা প্রাণী বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির কাছ থেকে জবাইয়ের পূর্বে গরুর স্বাস্থ্যসম্মত অনুমোদনপত্র গ্রহণ নিতে হবে। মাংস প্রশাসনের বেঁধে দেয়া মূল্যে বিক্রি করতে হবে। পরিবেশের সুরক্ষা রেখে নির্দিষ্ট জায়গায় গরুর উচ্ছিষ্ট অংশ ফেলতে হবে। এ ছাড়া সব ধরনের ক্রেতাদের সাথে শালীন আচরণ করতে হবে।

    উপরোক্ত বিষয়গুলো অমান্য করলে আইনানুগভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে উপজেলা প্রশাসন।

    এ বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন ও গরুর মাংস বিক্রেতা সমিতি বৃহস্পতিবার ( ২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এক সভায় মিলিত হয়। উক্ত সভায় নতুন নির্দেশনা মেনে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়।

    চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের নজরে রাখা হবে। আইন না মানলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

  • প্রথমবারের মতো ভারত ইস্যুতে বিপরীতমুখী অবস্থানে ট্রাম্প ও মাস্ক, যা জানা গেল

    প্রথমবারের মতো ভারত ইস্যুতে বিপরীতমুখী অবস্থানে ট্রাম্প ও মাস্ক, যা জানা গেল

    মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের পর বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা ভারতে উৎপাদন এবং ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছে। এ খবরে ভারতীয়দের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিলেও বিষয়টি ভালোভাবে নেননি গোদ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মতে, টেসলা যদি ভারতে কারখানা চালু করে, তবে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ‘অন্যায়’ হবে।

    ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেখানে ভারতের ওপর সমহারে শুল্ক আরোপের কথা বলছেন, সেখানে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইলন মাস্ক ভারতে টেসলার উৎপাদন প্ল্যান্ট ও শোরুম খোলার পরিকল্পনা করছেন। এ কারণেই ট্রাম্পের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি টেলিভিশন শো-তে ট্রাম্প বলেন, ‘টেসলা যদি ভারতে কারখানা বানায়, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অন্যায় হবে।’ তার মতে, ভারতে গাড়ি বিক্রি করা প্রায় অসম্ভব, কারণ দেশটি আমদানিকৃত গাড়ির ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করে।

    ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘বিশ্বের প্রতিটি দেশ আমাদের কাছ থেকে সুবিধা নেয় এবং শুল্ক দিয়ে তা নিশ্চিত করে। বিশেষ করে ভারতের বাজারে গাড়ি বিক্রি প্রায় অসম্ভব তাদের শুল্ক ব্যবস্থার কারণে।’ তিনি তার নতুন বাণিজ্য নীতিতে ‘প্রতিশোধমূলক শুল্ক’ আরোপের পরিকল্পনা করছেন, যার আওতায় আমেরিকান পণ্যের ওপর শুল্ক বসালে যুক্তরাষ্ট্রও সেই দেশের পণ্যের ওপর একই হারে শুল্ক আরোপ করবে।

    ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘যদি আমি বলি ২৫ শতাংশ শুল্ক, সবাই বলবে, ‘ওহ, এটা ভয়ানক।’ তাই এখন আমি আর তা বলি না। আমি শুধু বলি, তারা যা নেবে, আমরাও তাই নেব। জানেন এতে কী হয়? তারা থেমে যায়।’

    অন্যদিকে, টেসলা শিগগিরই ভারতের বাজারে প্রবেশের পরিকল্পনা করছে। ব্লুমবার্গ ও এনডিটিভির তথ্য অনুযায়ী, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি লিংকডইনে ১৩টি শূন্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে গ্রাহকসেবা ও ব্যাকএন্ড সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পদ উল্লেখযোগ্য। মুম্বাই ও দিল্লিতে সার্ভিস টেকনিশিয়ান ও উপদেষ্টাসহ পাঁচটি পদে নিয়োগ দেয়া হবে, আর মুম্বাইয়ে কাস্টমার এনগেজমেন্ট ম্যানেজার ও ডেলিভারি অপারেশনস স্পেশালিস্টের মতো কিছু পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।

    টেসলা ও ভারত সরকারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চললেও উচ্চ শুল্কের কারণে প্রতিষ্ঠানটি এতদিন দেশটির বাজারে ঢুকতে পারেনি। তবে ভারত সরকার সম্প্রতি ৪০ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি মূল্যের বিলাসবহুল গাড়ির ওপর মৌলিক কাস্টমস শুল্ক ১১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭০ শতাংশ করেছে।

    কয়েক বছর ধরেই ভারতের বাজারে ঢুকার পরিকল্পনা করছিল টেসলা। এজন্য প্রতিষ্ঠানটি ২০০-৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। প্রতিষ্ঠানটি এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিল, তারা ভারতের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) তৈরি করতে চায়, যার দাম হবে মাত্র ২৫-৩০ লাখ রুপি। পাশাপাশি, ভারতের আশপাশের দেশগুলোতে গাড়ি রপ্তানির পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে।

  • সম্মেলন ঘিরে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত বিএনপি নেতার মৃত্যু, আটক ৩

    সম্মেলন ঘিরে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত বিএনপি নেতার মৃত্যু, আটক ৩

    বাগেরহাটের কচুয়ায় ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত বিএনপি নেতা শওকত হোসেন (৫০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি।

    এর আগে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি কচুয়া উপজেলার ধোপাখালি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে দেপাড়া বাজার এলাকায় নিজ দলীয় দুই পক্ষের সংঘর্ষে শওকত হোসেন গুরুতর আহত হন। এ সময় ধোপাখালি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী ও নিহতের ভাই মো. লিয়াকত হোসেনসহ অন্তত ১৫ জন গুরুতর আহত হন। আহত শওকতকে প্রথমে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল, পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

    পরবর্তীতে হামলার ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী মো. লিয়াকত হোসেন বাদী হয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আফজাল হাওলাদারসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৫০-৬০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। তবে এখন পর্যন্ত এই মামলায় কাউকে আটক করেনি পুলিশ।

    নিহত শওকত হোসেন কচুয়া উপজেলার ছিটাবাড়ি গ্রামের ইমান উদ্দিন শেখের ছেলে। তিনি ধোপাখালি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

    বিএনপি নেতা শওকত হোসেনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দেপাড়া বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপির নেতাকর্মী ও নিহতের স্বজনরা। বিক্ষুব্ধ জনতা হামলাকারী আফজাল গ্রুপের সদস্য হায়দার আলীর গ্রামের বাড়ি ঘেরাও করে রাখলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত সেখানে পৌঁছে হায়দারকে আটক করে।

    এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দেপাড়া বাজারে বিএনপির নেতাকর্মীদের অবস্থান রয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আতঙ্কে বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। পরে দেপাড়া বাজার থেকে সদর থানা পুলিশ বিএনপির আরও দুইজনকে আটক করেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম ও পরিচয় জানানো হয়নি।

    নিহত বিএনপি নেতা শওকত হোসেনের ভাই লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আফজাল হাওলাদারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার ভাই গুরুতর আহত হন এবং দীর্ঘ ৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’

    কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। কচুয়া, বাগেরহাট সদর থানা পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে রয়েছে। পরিস্থিতি এখনো পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আফজাল গ্রুপের সদস্য হায়দার আলীকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। বাগেরহাট সদর থানা পুলিশ আরও দুইজনকে আটক করেছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।

  • ১ মার্চ প্রথম রোজা হলে ৩৩ বছর পর ঘটতে যাচ্ছে ‘বিরল’ ঘটনা

    ১ মার্চ প্রথম রোজা হলে ৩৩ বছর পর ঘটতে যাচ্ছে ‘বিরল’ ঘটনা

    আগামী শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পবিত্র রমজানের চাঁদ দেখার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ওইদিন সন্ধ্যায় আকাশে নতুন চাঁদের দেখা মিললে পরের দিন শনিবার (১ মার্চ) সেসব দেশে পালিত হবে প্রথম রোজা।

    আর এমনটি হলেই মধ্যপ্রাচ্য ও ইসলামিক বিশ্বের কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ করবেন- চন্দ্র ও সৌর মাস একসঙ্গে শুরু হওয়ার ‘বিরল’ ঘটনা। যেটি প্রতি ৩৩ বছর পর পর মাত্র একবার ঘটে থাকে। মানে এবার আরবি বর্ষপঞ্জিকার রমজান মাসের প্রথমদিন আর ইংরেজি বর্ষপঞ্জিকার মার্চ মাসের প্রথমদিন একই দিনে হবে। অর্থাৎ দুটি পঞ্জিকার নতুন মাসের প্রথম দিনটি একসঙ্গে শুরু হবে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

    সৌদির জেদ্দার জ্যোতির্বিদ্যা সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মাজেদ আবু জাহরা বলেছেন, ‘এটি এমন একটি ঘটনা যেটি প্রত্যেক ৩৩ বছর পর একবার হয়। এটি যে কোনো মাসেই হতে পারে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘সৌর ও চন্দ্রচক্রের মধ্যে যে জটিল পারস্পরিক ক্রিয়া রয়েছে এটি তারই একটি স্বাক্ষ্য।’

    সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর ঘূর্ণনের হিসাব করে সৌর বর্ষপঞ্জিকার দিন গণনা করা হয়। এতে লিপ ইয়ারের (অধিবর্ষ) বছরটি হয় ৩৬৬ দিনের। আর সাধারণ বছরগুলো হয় ৩৬৫ দিনের। কিন্তু চন্দ্রবর্ষপঞ্জিকা গণনা করা হয় চাঁদের পর্যায় অথবা চন্দ্রচক্রের ভিত্তিতে। আর এ কারণে রমজান মাস প্রতি বছর ইংরেজি বর্ষপঞ্জিকার ভিন্ন ভিন্ন দিন এবং মাসে শুরু হয়।

  • ‘চিৎকারের আওয়াজ পাচ্ছিলাম, কিছুই করার ছিল না’- বাসে ডাকাতি ও ‘ধর্ষণ’ বিষয়ে যাত্রীরা

    ‘চিৎকারের আওয়াজ পাচ্ছিলাম, কিছুই করার ছিল না’- বাসে ডাকাতি ও ‘ধর্ষণ’ বিষয়ে যাত্রীরা

    ঢাকা-রাজশাহী রুটে মধ্যরাতে ডাকাতির শিকার হওয়া বাসটি প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতদের দখলে ছিল। এ সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন বাসটিতে থাকা যাত্রীরা।

    এই ঘটনায় যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে নাটোর পুলিশ ওই বাসের চালক, চালকের সহকারী ও সুপারভাইজারকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছে। সেখান থেকে তারা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

    গত সোমবার (১৭ই ফেব্রুয়ারি) রাতে যেসব যাত্রী বাসটিতে ছিলেন, তাদের মধ্যে দুইজনের সাথে কথা বলেছে বিবিসি বাংলা। তারা অভিযোগ করছেন, বাসটিতে অন্তত একজনকে ধর্ষণ করা হয়েছে সেই রাতে।

    বাসটি যেহেতু চলমান অবস্থায় ছিল, তাই এই ঘটনায় একাধিক স্থানের নাম উঠে আসছে। সেগুলোর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো, নাটোরের বড়াইগ্রাম ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানা।

    ২২ বছর বয়সী সোহাগ হাসান পেশায় ব্যবসায়ী। তার বাড়ি বড়াইগ্রামেই। ব্যবসার কাজে এই গ্রামেরই ওমর আলী এবং তিনি একসাথে ঢাকায় গিয়েছিলেন।

    সেদিন কাজ শেষ করতে দেরি হয়ে গেলে তাড়াহুড়ো করে তারা ওই বাসেই উঠে পড়েন।

    তিনি বলছিলেন, গাড়ি যাত্রী বোঝাই থাকলেও গাড়ির চালক ও তার সহযোগীরা আরও সাত-আটজনকে মাঝপথে গাড়িতে তুলে এবং তারপর গাড়ির চালকের আসনে তাদেরই একজন বসে পড়ে।

    ওই দলের বাকিরা তখন যাত্রীদের কাছে চলে আসে এবং গলায় চাকু ধরে। তারা বাসের আলো জ্বালাতে নিষেধ করেছিলো, বলছিলেন তিনি।

    “আর সবচেয়ে বড় কথা, সবার সামনে ওরা চাকু নিয়ে দাঁড়ায়ে ছিল। পাঁচ-ছয়জনকে ছুরিও মারে ওরা। এই ভয়ে কেউ কোনও কথা বলেনি। সবার মাথা নিচু করে ছিল। ওরা বলছিলো, চোখ বন্ধ কইরা থাকবি। তাকাইলে কানা করে দিবো,” তিনি যোগ করেন।

    সোহাগ হাসান ও ওমর আলীর কাছে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা ছিল। ডাকাতরা চাইলে তারা শুরুতে ২০ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু গাড়ির চালক-সহযোগীরা ডাকাতদেরকে “দেখিয়ে দেয়” যে তাদের কাছে আরও টাকা আছে, দাবি মি. হাসানের।

    “আমি টাকা দিতে চাইনি বলে ওরা আমায় নিচে ফেলে আমার বুকের ওপর পাড়া দিয়ে রাখছে, টাকা না দেওয়া পর্যন্ত। আর ওরা বাস থেকে না নামা পর্যন্ত আমায় নিচেই রাখছে।”

    এসময় তারা কথা বলতে পারছিলেন না, মাথা উঁচু করতে পারছিলেন না, চোখ খুলতে পারছিলেন না। শুধুই বাসের দুই নারী যাত্রীর চিৎকার আর কান্নার আওয়াজ শুনছিলেন।

    “ওই দুইজনের সিট ছিল বাসের মাঝামাঝি। তাদের মাঝে একজন হিন্দু, তার সাথে তার স্বামীও ছিলেন,” বলছিলেন মি. হাসান।

    ডাকাতরা প্রথমে ওই নারীর কাছে যা যা ছিল, সব নিয়ে নেয়।

    “এরপর চিকন করে একজন ছেলে আমাদের সামনেই ওই মহিলাকে টানতে টানতে জোর করে পেছনের সিটে নিয়ে চলে যায়। ওর স্বামী বাধা দিতে গেলে স্বামীকে অনেক মারধর করে,” বলেন সোহাগ হাসান।

    “এরা যে পরিমাণ… উনি ধর্ষণেরও শিকার হয়েছে। পিছে নিয়ে গেলে উনি অনেক চিৎকার করছিলো। ওদিকে আমাদের যেতে দিচ্ছিলো না। আমরা শুধু চিৎকারের আওয়াজ পাচ্ছিলাম। জোরে জোরে কাঁদতেছিলো। কিন্তু ওখানে আমাদের কিছুই করার ছিল না।”

    একটু থেমে তিনি আরও বলেন, “ধর্ষণ না করলে কেউ এ্ররকম চিৎকার করবে না।”

    গুড় ব্যবসায়ী ৭৩ বছর বয়সী মজনু আকন্দও সেদিন ওই বাসে ছিলেন। তিনিও বলেন, “ওই রাতে আমরা যে চিল্লাচিল্লি শুনছি… তাতে মা-বোনের ইজ্জতের…গাড়ির ভেতরে আমাদের কোনও ভাষা ছিল না। ওনাদের মানসম্মানের ক্ষতি করছে, ধস্তাধস্তি করছে।”

    তিনিও বলছিলেন যে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন দুইজন নারী। একজনের বয়স ছিল আনুমানিক ২০ বছর, আরেকজনের ২৫-৩০ বছর।

    ওই দুই নারী থানায় “ধর্ষণের অভিযোগ করছে কি না জানি না” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গাড়ির মাঝে দুইজন যে নির্যাতিত হইছে, সেটা আমরা জানি।”

    দ্বিতীয় যে নারীর কথা বলা হচ্ছে, তার বিষয়ে সোহাগ হাসান বলেন, “আরেকজন মহিলা, ২৫-৩০ বছর বয়স হবে। ওনার সবকিছুই নিয়ে নিছে। উনি আমাদের দুই সিট সামনে ছিল। আমাদের তাকাইতে দিচ্ছিলো না। ওনার গায়ের বিভিন্ন জায়গায় হাত দিচ্ছিলো। আমরা যখন বারবার প্রতিবাদ করতে যাচ্ছি, তখন আমাদের মারতে চেষ্টা করে…পেছনে শুধু হিন্দু মেয়েটাকেই নিয়ে যায়। আর ওনার সাথে সিটের ওখানে বসেই জোরজবরদস্তি করে।”

    ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে
    পুলিশ এবং ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের সেই বাসের যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টায় বাসটিস গাবতলী থেকে ঢাকা ছেড়ে আসে।

    ছাড়ার সময় বাসটি যাত্রীতে ভরপুর ছিল। ওইদিন যারা ওই বাসে ভ্রমণ করেছিলেন, তাদের দুইজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সেদিন বাসে ৬০-৬৫ জন যাত্রী ছিল।

    অর্থাৎ, সিটের তুলনায় যাত্রীদের সংখ্যা বেশি ছিল। ফলে অনেকেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।

    কিন্তু বড়াইগ্রাম থানার পুলিশ বলছে, বাসটি ৩০-৪০ জন যাত্রী নিয়ে রওনা দিয়েছিলো সেদিন।

    বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বিবিসিকে বলেন, “দুইটার দিকে গাজীপুর বা টাঙ্গাইল থেকে গাড়িতে ডাকাত গাড়িতে উঠে। যাত্রীদের কাছ থেকে তারা সব নিয়ে নেয়। পরে ভোর পাঁচটার দিকে কোথাও নেমে যায়, টাঙ্গাইল বা গাজীপুরে।”

    ডাকাতরা বাস থেকে নেমে গেলে ১৮ই ফেব্রুয়ারি ভোর ছয়টার দিকে যাত্রীরা মির্জাপুর থানায় গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করে আড়াইটার দিকে বড়াইগ্রামে আসেন বলেও তিনি জানান।

    “যাত্রীরা বাস আটক করে বলে যে ড্রাইভার-হেল্পাররা জড়িত এই ঘটনায়। তাদের যাত্রীদেরকে ওদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পরে আমরা গিয়ে ওদের আটক করি,” বলেন তিনি।

    এই ঘটনায় তারা মামলা নেয়া হয়নি উল্লেখ করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তারা যাত্রীদেরকে মির্জাপুর বা টাঙ্গাইল বা গাজীপুরে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ ঘটনা সেখানে ঘটেছে।

    এদিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় বাসটি এলে সাত-আটজনের ডাকাত দল গাড়িতে উঠে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেয়। মির্জাপুর সীমানায় এটা ঘটেনি। আর এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।”

    ডাকাতরা ডাকাতি শেষে নন্দন পার্কের পাশে এসে নেমে যায় বলেও তিনি জানান।

    যাত্রীদের কাছে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো যে ‘ডাকাতরা’ কোথা থেকে উঠেছিলো বাসে। তারা সুনির্দিষ্ট কোনও উত্তর দিতে পারেনি। কারণ তখন অন্ধকারে স্থান বোঝা যাচ্ছিলো না।

    তবে যাত্রীদের বর্ণনায়, বাসটি প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা ডাকাতদের দখলে ছিল এবং এই সময়ের মাঝে ডাকাতরা বাসটিকে বারবার ঘুরাতে থাকে। পরে রাত সাড়ে তিনটা নাগাদ সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে বাস থেকে নেমে যায় ডাকাতরা।

    এদিকে যাত্রীরা বলছেন, সেদিন রাতে ওই বাসে অন্তত একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বড়াইগ্রাম ও মির্জাপুর, দুই থানার ওসি-ই বলছেন যে তারা এমন কিছু জানেন না।

    বড়াইগ্রামের ওসি সিরাজুল ইসলাম বিবিসিকে বলেন, “ধর্ষণের কোনও বিষয় আমি পাইনি। এরকম কোনও ঘটনা আমায় কেউ বলেনি বা আমি সাক্ষী পাইনি।”

    আর মি. ইসলামকে উদ্ধৃত করে মির্জাপুরের ওসির ভাষ্য, “ধর্ষণের বিষয়ে অনেকে বলছেন। কিন্তু এ বিষয়ে কিছু জানা নাই আমার। বড়াইগ্রামের ওসি বলেছেন, এই ধরনের কিছু ঘটেনি।”

    পুলিশের সাথে প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায় অমিল
    বড়াইগ্রামের পুলিশ যদিও বলছে যে ধর্ষণের বিষয়ে তারা কিছুই জানে না, কেউ কিছু বলেনি।

    কিন্তু মজনু আকন্দ ও সোহাগ হাসান, দু’জনেই বলছেন যে ওই নারীরা সবার সাথে বড়াইগ্রামেই নেমেছিলো এবং পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছিলো।

    সোহাগ হাসানের ভাষায়, “উনি (হিন্দু নারী) বাস থেকে নামার পর ওনার কান্নাকাটি দেখে আমরা সবাই ভেঙে পড়ি। উনি পুলিশের সামনে মান-সম্মানের পরোয়া না করে যতটুকু বলা যায়, বলছে। থানায় যা বলেছিলো… আর ভেঙে বলার দরকার নাই, আমরা তো কিছুটা বুঝি…।”

    “ওই দুই নারী বড়াইগ্রামেই নেমে পুলিশের কাছে মুখে মুখে জবানবন্দি দিয়ে অন্য বাসে করে নিজ নিজ বাসায় চলে গেছে। মেয়ে দুইটা আমার ফোন থেকে বাসায়ও কল দিছিলো। কিন্তু ওইদিন আমার ফোন থেকে ৪০ জনের বেশি কল দিছে,” বলছিলেন তিনি।

    অনেকে একই দিনে ফোন করায় এবং তার ফোনের ডিসপ্লে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি নাম্বার দু’টো চিহ্নিত করতে পারছেন না বলেও জানান।

    “পুরো বাসে আমার এই একটা ফোন-ই শুধু বাঁচছিলো। আমায় যখন ওরা নিচে ফেলে, ফোনটা আমার পিঠের নিচে পড়ে গেছিল, নিতে পারে নাই তাই।”

    পরে ডাকাতরা নেমে যাওয়ার পর তিনি প্রথম তারা মামাকে কল দিয়ে ঘটনা সম্বন্ধে জানান এবং বাসকে বড়াইগ্রাম পর্যন্ত এনে পুলিশে ধরিয়ে দেন, এমনটা বলছিলেন মি. হাসান।

    এদিকে স্থানীয় সাংবাদিক হালিম খান যাত্রীদের বরাতে বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “যাত্রীরা বলছে যে দুইজন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। নারী যাত্রী যারা ছিল, সবাই শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে। যেভাবে যৌন হয়রানির ঘটনাগুলো হয়, তা হয়েছে। এটা বলা যায়।”

    “কিন্তু ধর্ষণের ব্যাপারে তারা বলছে যে পেছনের দিকে দু’জন নারীকে ধর্ষণ করা হয়… ওই নারীদেরকে তো পাওয়া যায়নি। হয়তো তারা পথে নেমে গিয়েছে। এটার তো ডকুমেন্টারি কিছু নাই। তবে শ্লীলতাহানি হয়েছে ভয়াবহ। সরাসরি ধর্ষণের কথা বলতে পারছি না, কারণ ভিকটিমও পাওয়া যায়নি। পুলিশ রেকর্ডেও তা উল্লেখ নাই,” যোগ করেন তিনি।

    বাসের চালক, সহযোগী ও সুপারভাইজারকে ৫৪ ধারায় আটক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “থানায় একটা রেফারেন্স করেছে। কারণ কোনও ভিকটিম যদি মামলা করে, তাহলে এই রেকর্ড সেই মামলার সাপোর্টে কাজ করবে। পুলিশ বলছে, মামলা হবে গাজীপুর বা টাঙ্গাইলে।”

    বুধবার সন্ধ্যায় আটককৃতরা জামিন পেয়েছে বলে জানা গেছে।

  • ইমামের খাটের নিচে কিশোরী​​​​​​​, এলাকাজুড়ে তুলকালাম

    ইমামের খাটের নিচে কিশোরী​​​​​​​, এলাকাজুড়ে তুলকালাম

    বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক এ প্রবনতা সমাজের একাধিক শ্রেনীতে ছড়িয়ে পড়েছে। যার মধ্যে যুক্ত হয়েছে, মসজিদের এক লেবাসধারী স্থানীয় মসজিদের ইমাম।

    টাঙ্গাইলের মিয়াপুরে ১৬ বছর বয়সী মাদ্রাসা ছাত্রী প্রেমে জড়িয়েছেন ইমামের। উক্ত কিশোরী স্থানীয় একটি মাদ্রাসার দশম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থী। সম্পর্কের শুরু গোপনে, যা এক বছর ধরে চলে। কিশোরী জানান, উক্ত ইমামের সাথে তার ভালোবাসার সম্পর্ক, যা বিয়ের সম্পর্ককে অতিক্রম করে।

    এমন অনৈতিক সম্পর্ক জানার পর গ্রাম জুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ইমামকে মসজিদ থেকে বরখাস্তের দাবী তুলে গ্রামবাসী। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দ্বায়িত্ব নেয়।
    পুলিশ ইমামের ঘড়ে তল্লাশি চালানোর সময়, তার খাটের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় এই কিশোরীকে।

  • মাওয়া ঘাটে ট্রলারে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, কারাগারে ৩

    মাওয়া ঘাটে ট্রলারে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, কারাগারে ৩

    মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পুরাতন মাওয়া ফেরিঘাট থেকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে ট্রলারে উঠেছিলেন এক গৃহবধূ (২২)। সেখানেই সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় করা মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পদ্মা সেতু উত্তর থানা পুলিশ। আদালতে ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

    গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

    গ্রেপ্তারেরা হলেন—মো. জামাল মোল্লা (২৩), ইয়ামিন মুন্সী (১৯) ও জব্বার শেখ (১৮)।

    পুলিশ জানায়, গত রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ওই গৃহবধূ তার স্বামীসহ পদ্মা সেতু (উত্তর) থানায় হাজির হয়ে চারজন যুবক কর্তৃক সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে মামলা করা হয় এবং আসামি গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু করে।

    পরদিন সোমবার পদ্মা নদীর পাড় থেকে আসামি জামাল মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতে অপর দুই আসামি ইয়ামিন ও জব্বারকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

    মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামিরা জানান, ভুক্তভোগী গৃহবধূ পুরাতন মাওয়া ফেরিঘাট থেকে তার স্বামীর বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে ঘাটে নৌকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় আসামি আবু বকর সিদ্দিক ও জামাল মোল্লা তাকে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ট্রলারে নেন। পথিমধ্যে অপর দুই আসামি ইয়ামিন ও জব্বারও ট্রলারে ওঠেন। আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নদীপথে নির্জনতার সুযোগে ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে জনমানবহীন পদ্মা নদীর ডোমরাখালী চরে নিয়ে চারজন মিলে ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে আসামিরা মাওয়া পুরাতন কোস্টগার্ড স্টেশনের পাশে ভুক্তভোগী নারীকে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ট্রলার থেকে নামিয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দিয়ে দ্রুত চলে যান।

    মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার আরও জানান, অভিযুক্ত তিনজনই আদালতে অপরাধ স্বীকার করে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ঘটনায় ব্যবহৃত নৌকা এবং আলামত হিসেবে একটি জিও ব্যাগ জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং তার ব্যবহৃত জামা-কাপড় জব্দ করা হয়েছে।

    মামলার তদন্ত কার্যক্রম ও পলাতক আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

  • ছাত্রদলের সভাপতির পদ পেলেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা

    ছাত্রদলের সভাপতির পদ পেলেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা

    নাটোরের সিংড়া উপজেলার কলম ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রদল। তবে এই কমিটিতে সম্প্রতি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে সভাপতি করায় ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম মো. শাকিল হোসেন। তিনি কলম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের উপ-ক্রীড়া সম্পাদক পদে রয়েছেন।
    শাকিল হোসেন ছাত্রলীগের পদে থাকার একটি অফিসিয়াল প্যাডের কপি গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে এসেছে। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে তার উপস্থিতির ছবিও বিষয়টি ঘিরে বিতর্ক আরও বাড়িয়েছে। এ ঘটনায় সিংড়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা।

    এদিকে, কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা মুনছের আলীর বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত গেঞ্জি পরা একটি ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

    বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে, কলম ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. শাকিল হোসেন বলেন, “আমার এলাকার একজন ছাত্রলীগের নেতা ছিল, সে কমিটিতে আমার নাম দিয়েছিল। বিষয়টি আমি জানতাম না। বিগত সময়ে এলাকাভিত্তিক রাজনীতির কারণে ছাত্রলীগের একটি প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম। সেখানকার একটি ছবিই এখন ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি আমি অস্বীকার করছি না। তবে আমরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, এটা এলাকার সবাই জানে।”

    এ বিষয়ে নাটোর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি কামরুল ইসলাম বলেন, “কলম ডিগ্রি কলেজের বিষয়টি আংশিকভাবে ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেছি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।”
    এই ঘটনায় জেলা ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

  • ‘শিবিরের ওয়ার্ড সভাপতিকে কুপিয়েছে ছাত্রদল’

    ‘শিবিরের ওয়ার্ড সভাপতিকে কুপিয়েছে ছাত্রদল’

    গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রদল কর্মীরা। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ডে এই ঘটনা ঘটে।

    স্থানীয় সূত্র জানায়, আলিম দ্বিতীয় বর্ষের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বিকে (১৯) একই মাদ্রাসার আলিম-১ম বর্ষের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্তী ও ছাত্রদল কর্মী ভূইয়া মামুন গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ডের পাশের বাশপট্টিতে ডেকে নিয়ে যান।

    সেখানে আগে থেকেই ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী অবস্থান করছিলেন। ফজলে রাব্বি পৌঁছানোর পর তারা লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।

    বৃহস্পতিবার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম জানান, মিল্লাতের যে শিক্ষার্থীর ওপর হামলা হয়েছে তিনি শিবির নেতা।

    সাদিক কায়েম তার পোস্টে বলেন, ‘কুয়েট থেকে চোখ ফেরাতে সিলেটের ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে অব্যাহত মিথ্যাচারের পর এবার তামিরুল মিল্লাতে শিবিরের ওয়ার্ড সভাপতিকে কুপিয়েছে ছাত্রদল!’

    তিনি বলেন, ‘সিলেট এমসি কলেজের ঘটনায় আমাদের সুস্পষ্ট অবস্থান ছিল তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কিন্তু সে ঘটনাকে রাজনৈতিক টুল হিসেবে ব্যবহার করে ছাত্রশিবিরকে ডিহিউম্যানাইজ করে হত্যাযোগ্য করার অপপ্রয়াস পরিলক্ষিত হয়েছে।’

    সাদিক বলেন, ‘কুয়েটের ঘটনায় শিবিরকে দায় দিতে না পারার বদলা নিতেই কি মিথ্যাচার? নাকি “শিবির কোপানো জায়েজ” আমলের জন্যই দিনব্যাপী গ্রাউন্ড তৈরি? আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’

    তিনি অবিলম্বে সিলেটের ঘটনায় এবং তামিরুল মিল্লাতে ছাত্রশিবির সভাপতির ওপর ন্যক্কারজনক হামলায় দায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

    একই সাথে ফ্যাসিবাদী কায়দায় নোংরা রাজনৈতিক খেলা বন্ধের জন্য ছাত্রসংগঠনগুলোকে আহ্বান জানান ঢাবি শিবিরের সাবেক এ নেতা।

  • আজ রাত ৮টা থেকে বন্ধ থাকবে রাজধানীর যেসব সড়ক

    আজ রাত ৮টা থেকে বন্ধ থাকবে রাজধানীর যেসব সড়ক

    রাজধানীর বেশ কয়েকটি সড়কে আজ রাত ৮টা থেকে চলাচলে নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

    বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

    বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সর্বসাধারণকে কিছু রুট অনুসরণের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

    রুটগুলো হলো- পলাশী ক্রসিং-ভাস্কর্য ক্রসিং-জগন্নাথ হল ক্রসিং হয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রবেশ এবং শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রোমনা ক্রসিং-দোয়েল চত্বর হয়ে প্রস্থান। শাহবাগ ক্রসিং, নীলক্ষেত ক্রসিং, শহিদুল্লাহ হল ক্রসিং, চানখারপুল ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং এবং বকশীবাজার ক্রসিং এ ডাইভারশন থাকবে।

    আগামীকাল শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নে্ওয়া হয়েছে বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

    আজ এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, রাজধানীর ৭টি পয়েন্ট ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ থাকবে এবং আমরা এ ব্যারিকেড দিব আজ রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে।
    ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, এবার তিন ধাপে ফুল দেয়া হবে। রাত ১২টা ১ থেকে ১২টা ৪০ পর্যন্ত ভিভিআইপি ও ভিআইপিরা ফুল দেবেন। ভোগান্তি এড়াতে ওই সময় সাধারণ মানুষকে না আসার জন্য অনুরোধ করছি।

    ১২টা ৪০ মিনিটে জনসাধারণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশী গেট উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।