আবদুস সাত্তার, যিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পরিবারের ঘনিষ্ঠ এবং তার প্রতিবেশী, সম্প্রতি বিএনপিতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার সম্পর্ক ছিল কাদের মির্জার হেলমেট বাহিনীসহ বিভিন্ন শক্তিশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে।
আবদুস সাত্তার, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ এবং জেলা বিএনপির সদ্য নির্বাচিত সদস্য সচিব হারুনুর রশীদ আজাদের সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণে বিষয়টি দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই সম্পর্কের মাধ্যমে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়, এবং অনেক নেতাকর্মী এই বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্ট হন। তারা প্রশ্ন তুলছেন, কীভাবে একজন রাজনৈতিক নেতা, যিনি এতদিন ক্ষমতাসীন দলের অংশ ছিলেন, এখন বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন।
তবে সাত্তার তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিরুদ্ধে পাল্টা দাবি করেছেন। তিনি জানান, আওয়ামী লীগে থাকা বা বিএনপিতে আসার সিদ্ধান্ত তার ব্যক্তিগত ছিল, এবং তিনি ছাত্রদল থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন। তিনি দাবি করেন যে, তার উপর নানা ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ উঠছে যা তার রাজনৈতিক কর্মজীবনকে অকারণে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এদিকে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদার জানান, সাত্তারকে বিএনপিতে নিয়ে আসা নিয়ে কিছু নেতাদের সম্পৃক্ততা ছিল, তবে তার সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি জানান, কয়েকটি মিটিং থেকে সাত্তারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং এমনকি তাকে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচির মধ্যে থেকেও বের করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার প্রভাব ও উপস্থিতির কারণে কিছু নেতাকর্মী অসন্তুষ্ট হয়েছেন।
সদ্য ঘোষিত জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুনুর রশীদ আজাদ এবং অন্যান্য নেতাদের মন্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি, তবে এসব ঘটনাবলীতে বিএনপির ভেতরে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ এই বিষয়ে বলেন, সাত্তার যদি বিএনপিতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন, তবে তাদের মধ্যে আগে সুরাহা হওয়া উচিত ছিল। তিনি জানান, সাত্তার তার সঙ্গে একটি ওয়াজ মাহফিলের দাওয়াত দেওয়ার জন্য ঢাকায় এসে ছবি তুলেছেন, কিন্তু সেই ছবি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেছেন, তৃণমূলের নেতাদের মনোভাব এবং এলাকায় সাত্তারের উপস্থিতি যদি এর আগে স্পষ্টভাবে সমাধান করা হতো, তাহলে এখন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।
এদিকে, কোম্পানীগঞ্জে রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে, এবং সাত্তারকে নিয়ে একাধিক মিশ্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হয়েছে।