Category: bangla

  • জাতীয় নয় গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার ছাত্রদের নতুন দল!

    জাতীয় নয় গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার ছাত্রদের নতুন দল!

    ২৪ এর অভূতপূর্ব ঘটনায়, বাংলাদেশ ছাত্র জনতার নেতৃত্বে স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্তির পর, বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। ঠিক সে প্রত্যাশাকে ধারণ করে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে নানা কর্মসূচি ও জনমত তৈরিতে কাজ করছে জাতীয় নাগরিক কমিটি প্ল্যাটফর্মটির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করা তরুণ নেতারা।

    তারা বলছেন, পূর্বের সকল মতাদর্শিক বিভাজনের ইতি টানতে চান। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্রদের সামনে রেখেই নতুন দল গোছানোর কথা জানান নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সার্জিস আলম। তিনি আশা করেন, তারুণ্য নির্ভর এই দল রাজনীতিতে পুরনোদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

    সার্জিস বলেন, “রাজনৈতিক দলটি আগে আসবে, এরপরে এই রাজনৈতিক দলের নাম বাংলাদেশের প্রত্যন্ত প্রত্যেকটি জায়গায় যাবে। তখন মানুষ এই নাম নিয়ে আলোচনা করবে। আমরা বিশ্বাস করি, অন্য রাজনৈতিক দলগুলো পাঁচ যুগে যা করেছে, এই রাজনৈতিক দল তরুণদের নেতৃত্বে যেটা আসতে যাচ্ছে, আগামী এক যুগে তাদেরকে স্পর্শ শুধু করবে না, তাদেরকে ছাড়িয়ে যাবে।”

    তরুণদের সমন্বয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে চলছে নানামুখী আলোচনা। নেতা নির্বাচনে বিতর্ক উঠলেও সেটিকে দলের গণতান্ত্রিক চর্চা হিসেবেই দেখছেন সংগঠনটির মুখপাত্র। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, “এ ধরনের একটা মাইল প্রতিযোগিতাকে আমরা বরঞ্চ মনে করি যে এটা দল গঠনের জন্য এবং দলের ডেমোক্রেসিকে স্টাবলিশ রাখার জন্য ভালো। নাহিদ ইসলাম একদম সুনির্দিষ্টভাবে চলে আসছেন, এরকম কোন সিদ্ধান্ত আমাদের হয়নি। কে বা কারা বিভিন্ন পোস্টে বসবেন, এটা শুধু সদস্য সচিবের ক্ষেত্রে নয়, এখানে প্রত্যেকটা পোস্টের ক্ষেত্রে আমরা আসলে সকলের কাছ থেকে মতামতটা নেওয়ার চেষ্টা করব।”

    দল গঠনের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে উল্লেখ করে নিজেদের নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা বলেন সংগঠনটির সদস্য সচিব। তিনি জানান, গণপরিষদ নির্বাচন নিয়ে কাজ করবে নতুন দল। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায়, এটি একটি নির্বাচনী জোটও হতে পারে। সদস্য সচিব আক্তার হোসেন বলেন, “নতুন একটি সংবিধানের প্রেক্ষাপটে এবং সে সংবিধানকে কার্যত প্রণয়নের দায়িত্ব যে গণপরিষদের হাতে, সেই গণপরিষদ নির্বাচনের কথা আমরা বলছি। যদি গণপরিষদ নির্বাচন হয়, তার জন্য আমরা আমাদের যোগ্য প্রার্থী যারা আছে, তাদেরকে আমরা খুঁজে বের করব। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, এমন অনেক মানুষজনকে আমাদের রাজনৈতিক জোটও হতে পারে।”

    দেশের গণতন্ত্র বিকাশের স্বার্থে ছাত্রদের দলের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন নতুন দলের আদর্শিক ভিত্তি তৈরি করতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে ছাত্রদের বিকল্প নেতৃত্ব তৈরির পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।

    রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডঃ আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, “এই বিপ্লবের সফলতার জন্য ছাত্রদের নিরন্তর উপস্থিতি, নিরন্তর প্রেসার, নিরন্তর উপদেশনা এবং অবস্থান দরকার। প্রয়োজন তৃণমূল থেকে একেবারে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত লিডারশিপের মানে বিকল্প লিডারশিপের অবস্থান তৈরি করা। এটা খুবই কঠিন ব্যাপার। একটা রাজনৈতিক দলকে তার আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি গোছাতে অনেক সময় লাগে। এটা তো এরকম না যে, ‘ফাইয়াকুন’ মানে বললাম আর হয়ে গেল।”

    সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার যে লড়াই শুরু হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে, সেটি এখনো অধরা রয়ে গেলেও, নতুন দলের মাধ্যমে সকল স্তরে সাম্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করার কথা জানান তরুণ নেতারা।

  • ‘ভারতের প্রেসক্রিপশনে আল্লামা সাঈদীকে হত্যা করা হয়েছে’

    ‘ভারতের প্রেসক্রিপশনে আল্লামা সাঈদীকে হত্যা করা হয়েছে’

    আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পুত্র ও জিয়ানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ বিন সাঈদী বলেছেন, ‘২০১০ সালের ২৯ জুন আল্লামা সাঈদীকে খুনি হাসিনা সম্পূর্ণ বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার করেছে।

    যখন তাকে গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল যুদ্ধাপরাধ নয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলা। যে মানুষটি ৫২ বছর বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ৫০ টি দেশ ঘুরে মানুষকে কোরআনের দাওয়াত দিয়েছেন, যে মানুষের মুখে কোরআন শুনে পৃথিবীতে প্রায় ১ হাজারের অধিক বিধর্মী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন সেই মানুষটি নাকি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন।

    এই আঘাতের মিথ্যা হাস্যকর মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে ১৩ টি বছর রেখেছিলেন।

    সাক্ষীদের ক্ষেত্রে আপনারা জানেন, মামলার সাক্ষীদেরকে ঢাকার সেফহাউজ নামক একটি জায়গায় দিনের পর দিন ট্রেনিং দিয়ে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হতো।’
    তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কারাগারে আব্বার সঙ্গে প্রতি মাসে ১ বার করে সাক্ষাতের সুযোগ পেতাম। ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট যখন আব্বাকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার ২৬ দিন আগে আমরা আব্বার সঙ্গে দেখা করেছিলাম। আর ৪ দিনপর আব্বার সঙ্গে আমাদের দেখা হওয়ার কথা ছিল।

    আরও পড়ুনঃ খুলে দেয়া হলো কাপ্তাই বাঁধের গেট
    কিন্ত একজন সুস্থ্য মানুষকে কারগার থেকে নিয়ে এসে পরিকল্পিতভাবে ভারতের প্রেসক্রিপশনে হত্যা করা হয়েছে।’

    তিনি বলেন, ‘যখন আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে আসা হয় আমি তখন হাসপাতালে অবস্থান করছিলাম, আমি অসংখ্যবার তাদের কাছে অনুরোধ করেছি আমার সঙ্গে একটিবারের জন্য দেখা করার জন্য। কিন্তু তারা আমার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। কারণ আমার সঙ্গে যদি দেখা করতে দেওয়া হতো তাহলে যারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আল্লামা সাঈদীকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে সেটা ধরা পড়ে যেতো।

    আমি যদি দেখা করতে পারতাম তাহলে আমার পিতা নিশ্চয়ই আমাকে বলতেন আমার বুকে কোন ব্যাথা নেই আমাকে তারা পরিকল্পিতভাবে হাসপাতালে এনেছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যাবে বিধায় তারা আমাকে আব্বার সঙ্গে এক মুহুর্তের জন্য দেখা করতে দেয়নি.

    আরও পড়ুনঃ ৬ বছরের এক শিশুর সন্ধানে ১২০০ জন
    উপজেলা পরিষদের সাবেক এই চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘আল্লামা সাঈদীসহ ইসলামী আন্দোলনের কোন নেতৃবৃন্দের কোন অপরাধ ছিল না। তাদের একটি মাত্র অপরাধ ছিল-তারা শুধুমাত্র স্বপ্রশংসিত আল্লাহর প্রশংসা করেছিল, আল্লাহর সার্বভৌমত্ব কায়েমের রাজনীতি বাংলাদেশে করেছিল এটাই তাদের অপরাধ। আল্লামা সাঈদীকে যারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে সেই খুনি হাসিনার বিচার আমরা চাই।

    আমরা বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাই খুনি হাসিনাকে ভারত থেকে ধরে এনে বাংলাদেশে প্রকাশ্যে ওই ট্রাইব্যুনালের সামনে ফাঁসি দিতে হবে। আমরা আল্লামা সাঈদীসহ ইসলামী আন্দোলনের সকল আলেম হত্যার বিচার চাই।’
    ১৬ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) রাতে মিরসরাই উপজেলার ৯ নম্বর মিরসরাই সদর ইউনিয়নের পূর্ব কিসমত জাফরাবাদ রহমাতুল্লিল আলামীন ইসলামিক একাডেমি ও হেফজখানার উদ্যোগে তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পুত্র ও জিয়ানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ বিন সাঈদী এসব কথা বলেন।

    আরও পড়ুনঃ মরদেহ কিমা করে ১০০ গ্রামের প্যাকেট করা হয়, নৃশংস হত্যার পুরো বর্ণনা
    রহমাতুল্লিল আলামীন ইসলামিক একাডেমি ও হেফজখানা মাঠে আয়োজিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিল ব্যবসায়ী আনোয়ারুল আজিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাহেরখালী আহমদিয়া হাবিবিয়া গণিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল্ল্যাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় এবং রহমাতুল্লিল আলামীন ইসলামিক একাডেমি ও হেফজখানার পৃষ্ঠপোষক মোহাম্মদ রেজাউল মোস্তফা চৌধুরীর সার্বিক তত্বাবধানে প্রধান ওয়ায়েজ ছিলেন নরসিংদী জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদরাসার সাবেক প্রধান মুহাদ্দিস মাওলানা মুফতি কাজী ইব্রাহীম।

    বিশেষ ওয়ায়েজিন হিসেবে ছিলেন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও কোরআন গবেষক এডভোকেট গাজী এনামুল হক, চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর মৌসুমী আবাসিক এলাকা জামে মসজিদের খতিব অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন।

    প্রধান বক্তা ছিলেন, শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক আলা উদ্দিন শিকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, মিরসরাই উপজেলা জামায়াতের আমীর নুরুল কবির, ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এডভোকেট সাইফুর রহমান।

  • সহযোদ্ধা নাহিদকে বলেছি ক্ষমতার চেয়ার ছেড়ে জনতার চেয়ারে এসে দায়িত্ব নিতে: সারজিস

    সহযোদ্ধা নাহিদকে বলেছি ক্ষমতার চেয়ার ছেড়ে জনতার চেয়ারে এসে দায়িত্ব নিতে: সারজিস

    জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হচ্ছে নতুন দল গঠন করা।’

    আজ রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা বলেন, ‘আপনাদের অনেক প্রত্যাশা। এই প্রত্যাশা পূরণ যদি আমরা না করতে পারি দিনশেষে আমাদের সঙ্গে অতীতের কোনো পার্থক্য পাওয়া যাবে না।’

    তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে বাংলাদেশে একটি গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। খুনি হাসিনা ভয়ে লেজ গুটিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কিন্তু এই খুনি হাসিনা এবং তার কিছু সুবিধাভোগী দালাল দেশের বাইরে থেকে উসকানি দিচ্ছে।’

    সারজিস বলেন, ‘সারাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে অনেকে রাজনীতি করছেন। আপনাদের এখন নেতা চেনার সময় এসেছে। কঠিন সময়ে কোন নেতাকে পেয়েছেন, আর কোন নেতা আত্মগোপনে থেকে কিংবা দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সুবিধা আদায় করেছেন। বিগত ১৬ বছরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনেক নেতা ছিল যাদের আপনারা খুঁজে পাননি, কিন্তু তারা নতুন করে বিভিন্ন রূপে বাংলাদেশে এসে আপনার মাথায় হাত বুলাচ্ছে। সময়মতো এরা আবারও আপনাদের ফেলে পালিয়ে যাবে।’

    ‘এই বাংলাদেশে চাঁদাবাজি ছিল, চাঁদাবাজি হচ্ছে, সিন্ডিকেট ছিল, সিন্ডিকেট হচ্ছে। এই সোনারগাঁয়ে আগে যে দখলদারিত্ব ছিল তার চেয়ে এখন বেশি হয়। এগুলো বন্ধ করতে চাইলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।

    এই ছাত্রনেতা আরও বলেন, ‘আপনাদের আশপাশ থেকে আমাদের কাছে অসংখ্য খবর আসে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, যারা ফ্যাসিস্টবিরোধী লড়াইয়ে ছিল, কিন্তু এখন বিভিন্ন সুবিধা, টাকা ও ক্ষমতা আসায় ওই খুনিদেরকেই প্রশ্রয় দিচ্ছে। আমাদের কাছে অভিযোগ আসে, বিভিন্ন থানার কতিপয় পুলিশ কিংবা বিভিন্ন আদালতের কতিপয় বিচারক এখনো খুনিদের বিভিন্ন কিছুর বিনিময়ে প্রশ্রয় দিচ্ছে।’

    আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা ও স্বচ্ছ নির্বাচন হতে হবে। এতে কোনো রাজনৈতিক দল যদি ৩০০ আসনও পায়, আর কেউ যদি কিছু না পায়, তাতেও আমাদের আপত্তি থাকবে না। কিন্তু এই অভ্যুত্থানের আকাঙ্খাকে সামনে রেখে নির্বাচন হতে হবে। যদি এই নির্বাচনকে সামনে রেখে যেকোনো শক্তি, পক্ষ বা গোষ্ঠী বিন্দুমাত্র ক্ষমতার অপব্যবহার করার চিন্তা করে, কোনো নির্বাচনী কেন্দ্র প্রভাবিত করার চেষ্টা করে, তাহলে ওই কেন্দ্রটিই হবে আরেকটি অভ্যুত্থানের ক্ষেত্র।’

    অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক দল শুধু শিক্ষার্থী নয়, সকল ধর্ম, মত, বয়স ও শ্রেণির মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বলেও জানান তিনি।

    সারজিস বলেন, ‘আমাদের এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হচ্ছে নতুন দল গঠন করা। নতুন দলে অভ্যুত্থানের অন্যতম সহযোদ্ধা নাহিদ ইসলামকে আমরা আমাদের জায়গা থেকে জানিয়েছি, ওই ক্ষমতার চেয়ার থেকে জনতার চেয়ারে এসে গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব নেওয়ার জন্য। কিন্তু আপনাদের স্পষ্ট করে বলি, মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় এমন অনেক মহল রয়েছে যারা আমাদের মধ্যে বিভাজন ঘটানোর জন্য বিভিন্ন পদের বিপরীতে বিভিন্নজনকে বসিয়ে বিভিন্ন রকমের তথ্য বা নিউজ ছড়াচ্ছেন।’

    ‘আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু দল ও দেশের প্রশ্নে আমাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র বিভেদ হবে না। কোনো পদ আমাদের আগামীর বাংলাদেশের পথ চলাকে নির্ধারণ করবে না। বাংলাদেশে অনেক রাজনৈতিক দল ছিল, কিন্তু খুনি হাসিনা এই ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।

    ‘ছাত্র-জনতা ক্ষমতামুখী না’ বলে মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘ক্ষমতামুখী হলে ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতা যদি সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিত, তাহলে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের তার বিপক্ষে কথা বলার মতো স্পর্ধা ছিল না।’

    তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমরা ওই ৫ আগস্ট বিজয় নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলেছি। এই অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে যত অংশীদার ছিল সবার সঙ্গে কথা বলে, তাদের মতামতের ভিত্তিতে এই উপদেষ্টামণ্ডলী হয়েছে। এখনো আমরা ক্ষমতাকে না জনতাকে গুরুত্ব দিচ্ছি।’

    জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সোনারগাঁ উপজেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য তুহিন মাহমুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সোনারগাঁয়ের সংগঠক শাকিল সাইফুল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত শাকিল আহম্মেদ, শহীদ মেহেদী হাসানের পিতা সানাউল্লাহ ও শহীদ ইমরান হোসেনে মাতা কোহিনুর আক্তার।

  • পুড়িয়ে দেওয়া হলো আবু সাঈদের ফেস্টুন, জামায়াতের অফিসে হামলা-ভাঙচুর

    পুড়িয়ে দেওয়া হলো আবু সাঈদের ফেস্টুন, জামায়াতের অফিসে হামলা-ভাঙচুর

    পাবনার হেমায়েতপুরে স্থানীয় জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, গুলি ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। জামায়াত নেতাসহ স্থানীয়দের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এসময় শহীদ আবু সাঈদ ও জাহিদুল ইসলামের ফেস্টুন পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

    রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পাবনা সদর থানায় এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

    এর আগে গতকাল শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে হেমায়েতপুরের কুমারগাড়ী এলাকার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড জামায়াতের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

    অভিযুক্তরা হলো- মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, পাবনা সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নয়নামতির মৌসির মৌলবীর ছেলে মাহমুদুল হাসান, পাবনা জেলা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও আফুরিয়া গ্রামের আলম হোসেনের ছেলে আবির হোসেন, চক পৈলানপুর মোড়ের আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. রানা, তানজিল ওরফের টুকাই তানজিল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার আসামি উজ্জ্বল হোসেন, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমান বিএনপি নেতা রফিক হোসেন।

    এদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলীর বিরুদ্ধে সদর থানায় মাদক ও গরু ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে।

    অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ১০টার দিকে মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে আনুমানিক ২৫/৩০ জন অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী পিস্তল, বন্দুক, রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে। একটি মুদিখানা দোকান ভাঙচুর করে লুটপাট করে। অটোরিকশার গ্যারেজ ভাঙচুরও করে। পাশে থাকা একটি মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ করিমসহ বেশ কয়েকটি স্থানীয় লোকজনের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিহত শহীদ আবু সাঈদ ও জাহিদুল ইসলামের ফেস্টুন পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

    ভুক্তভোগী জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ করিম অভিযোগ করে বলেন, পাবনা সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বুলালের আশ্রয় প্রশ্রয়ে মালিগাছা ও হেমায়েতপুরসহ বেশ কিছু জায়গায় ৫ আগস্টের পর থেকে ইয়াকুব আলী, মাহমুদুল হাসান, আবির হোসেনসহ বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা দখলদারিত্ব, আধিপত্য বিস্তার ও সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। এই নেতার নির্দেশে আধিপত্য বিস্তার ও নিজেদের শক্তি জানান দিতে আমাদের অফিসে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক গুলি করেছে। এসব সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

    অভিযুক্ত ইয়াকুব আলী বলেন, এ ঘটনায় আমি মোটেও অবগত নয়। যখন এ ঘটনা ঘটে তখন থানার ওসি সাহেবের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দেই। এর বেশি কিছু নয়।

    পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, জমিজমা নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি ঝগড়া চলে আসছিল। গতকাল রাতে দোকান ও অফিস ভাঙচুর করেছে। ওসি স্যারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার প্রতিবেদন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে ওখানে গুলির কোনো তথ্য আমরা পাইনি।

  • বিতর্কিত সেই ইমামকে গু’লি করে হ’ত্যা

    বিতর্কিত সেই ইমামকে গু’লি করে হ’ত্যা

    বিশ্বের প্রথম সমকামী ইমাম হিসেবে পরিচিত মুহসিন হেনড্রিকসকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ।

    গতকাল শনিবার পূর্ব কেপটাউনের কেবেরহা শহরের বেথেলসডর্প এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তিনি সমকামী ও অন্য প্রান্তিক মুসলিমদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে পরিচিত একটি মসজিদ পরিচালনা করতেন।

    স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, হেনড্রিকস নিজের গাড়িতে কোথাও যাচ্ছিলেন।

    এ সময় অন্য একটি গাড়ি এসে পথ আটকে দেয়। এরপর মুখ ঢাকা দুজন বন্দুকধারী গাড়ি থেকে নেমে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গুলির পর হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে গাড়ির চালক খেয়াল করেন, পেছনের আসনে বসে থাকা মুহসিন হেনড্রিকস নিহত হয়েছেন।

    এই হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশ নিশ্চিত করেছে, এটি টার্গেট কিলিং। তবে হত্যার উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয়। পাশাপাশি তথ্য দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে ইস্টার্ন কেপ পুলিশ।

    জানা যায়, ১৯৯৬ সালে প্রকাশ্যে সমকামী হিসেবে পরিচিত হওয়ার পর থেকে হেনড্রিকস এলজিবিটিকিউ-মুসলিমদের অধিকার নিয়ে কাজ করে আসছিলেন।

    এর ঠিক দুই বছর পর ১৯৯৮ সালে তিনি নিজ শহরে সমকামী মুসলিমদের জন্য বৈঠকের আয়োজন শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে তাদের ধর্মীয় নেতা বা ‘ইমাম’ হিসেবে স্বীকৃতি পান।

    ২০২২ সালে গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আমার গ্যারেজ খুলে সেখানে কার্পেট বিছিয়ে সবাইকে চা পান করতে ও কথা বলার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম।’

    মুহসিন হেনড্রিকসক একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একসময় আরবি ভাষার শিক্ষক এবং একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতেন। ২৯ বছর বয়সে তিনি প্রথম তার মায়ের কাছে নিজের সমকামী পরিচয় প্রকাশ করেন।

    তিনি এক নারীকে বিয়ে করেন এবং তাদের একটি সন্তানও ছিল। বিয়ের আট বছর পর বিবাহবিচ্ছেদ করে তিনি সবার কাছে নিজের সমকামী পরিচয় প্রকাশ করেন।

  • ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে প্রেম, অপহরণ ও ধর্ষণ; অতঃপর…

    ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে প্রেম, অপহরণ ও ধর্ষণ; অতঃপর…

    বরগুনার আমতলীতে এক হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে নিজের নাম ও ধর্ম গোপন করে এক মুসলিম তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ এবং পরে শাখা সিঁদুর পড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।

    আজ রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভূক্তভোগী ওই তরুণী বাদী হয়ে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তিন জনকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।

    ট্রাইবুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম লাইলাতুল ফেরদৌস মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

    মামলার আসামিরা হলেন, আমতলী উপজেলার কড়ইতলা হাড়িপাড়া গ্রামের উত্তম পাইকের ছেলে দিপু পাইক, তার বন্ধু গৌতম পাইক ও বিমল হাওলাদার।

    মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. রঞ্জুয়ারা শিপু।

    মামলা সূত্রে জানা যায়, আমতলীর মুসলিম পরিবারের এক তরুণীর সাথে দিপু পাইকের মুঠোফোনে পরিচয় হয়। ওই সময় দিপু পাইক নিজেকে মুসলিম পরিবারের অনিক নামে পরিচয় দেন। দু’জনের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক চলাকালে অনিক ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

    তরুণী পারিবারিকভাবে বিয়েতে রাজি আছে বলে প্রেমিক অনিককে জানান। কিন্তু অনিক তরুণীর প্রস্তাব নাকচ করে নিজেরাই বিয়ে করবেন বলে জানান। ভূক্তভোগী ওই তরুণী প্রেমিক অনিকের প্রস্তাবে রাজি না হলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়।

    এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারি সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে ওই তরুণী নিজ বাড়ির সামনের রাস্তায় গেলে অনিকসহ আরো দুই যুবক একটি (মাহেন্দ্রা) গাড়িতে জোরপূর্বক তাকে তুলে অপহরণ করে প্রথমে বরিশাল নিয়ে যায়।

    সেখান থেকে ঢাকার হেমায়েতপুর নিয়ে যায়।
    সেখানে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আসামি দিপু পাইক তার দুই বন্ধুর সহায়তায় একাধিকবার ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। পরে খুনের ভয় দেখিয়ে মাথায় সিঁদুর ও হাতে শাখা পড়িয়ে দেয়। এমনকি দিপু ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

    ভূক্তভোগী ওই তরুণী বলেন, আমি সুযোগ পেয়ে আমার চাচাতো বোনকে সকল ঘটনা জানালে পরে তারা এসে আমাকে উদ্ধার করে।

    এ বিষয়ে জানতে আসামি দিপুর ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

    আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত আদালতের আদেশ হাতে পাইনি। আদেশ হাতে পেলে আসামিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করব।

  • নি’ষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হেলাল গ্রে’প্তার

    নি’ষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হেলাল গ্রে’প্তার

    নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও পাবনার চাটমোহর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিনকে (৪৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

    রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাটমোহর পৌর সদরের ছোট শালিকা মহল্লার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

    গ্রেপ্তারকৃত হেলাল উদ্দিন ছোট শালিকা মহল্লার মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।

    চাটমোহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নয়ন কুমার সরকার বলেন, হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। সেই মামলার আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাবনা ডিবি পুলিশের সহায়তায় চাটমোহর থানা পুলিশ এ অভিযান পরিচালনা করে।

    তিনি আরো জানান, থানা হেফাজতে হেলাল উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

    তার বিরুদ্ধে আরো কিছু অভিযোগের তথ্য যাচাই বাছাই চলছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

  • নারীরাই ধরিয়ে দিলেন নেত্রীকে, অতঃপর…

    নারীরাই ধরিয়ে দিলেন নেত্রীকে, অতঃপর…

    চট্টগ্রামে কানিজ ফাতেমা লিমা নামে এক নেত্রীকে ধরে পুলিশে দিয়েছেন একদল নারী। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় জিপিওর সামনে এ ঘটনা ঘটে।

    কানিজ ফাতেমা লিমা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি (ঘাদানিক) চট্টগ্রাম জেলা শাখার সহ-ম‌হিলা বিষয়ক সম্পাদক বলে জানা গেছে।

    থানা সূত্র জানায়, আপাতত তিনি থানা হেফাজতে রয়েছেন। যাচাই-বাছাই শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুল করিম কালবেলাকে জানান, কানিজ ফাতেমা লিমা নামে একজনকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেত্রী থানায় এনেছেন। তিনি ৭১-এর ঘাতক দালাল নির্মূল ক‌মি‌টি চট্টগ্রাম জেলা কা‌মি‌টির সহ-ম‌হিলা বিষয়ক সম্পাদক বলে জানতে পেরেছি। বর্তমানে তিনি আমাদের থানা হেফাজতে রয়েছেন।

  • আটক ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়াতে গেলেন জবির ২ ছাত্রদল নেতা

    আটক ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়াতে গেলেন জবির ২ ছাত্রদল নেতা

    ক্যাম্পাস এলাকায় আড্ডা দিতে এসে রাজা হাওলাদার নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রদলের ২ নেতার বিরুদ্ধে। আজ রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কে এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ওই নেতাসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়।

    রাজা হাওলাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের কর্মী। তিনি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজীর ঘনিষ্ঠ কর্মী বলে জানা যায়। এদিকে ছাত্রদলের দুই নেতা হলেন, তৌহিদ চৌধুরী ও বাবলি আক্তার। তারা দুজনই ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।

    প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ রবিবার পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের ভেতরে রাজা হাওলাদার তার বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দেয়ার সময় জবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার অনুসারীরা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এমন সময় ছাত্রদল নেতা তৌহিদ ও বাবলি এসে রাজা হাওলাদারকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে জবি শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার অনুসারীদের সাথে তৌহিদ ও বাবলির কথা-কাটাকাটি হয়। পরে সুজন মোল্লার অনুসারীরা তৌহিদকে ফ্যাসিবাদের দোসরকে সাফাই গাওয়ার অভিযোগ করে কথা কাটাকাটি করে। পরবর্তীতে রাজা হালদারের নামে বড় কোন অভিযোগ না পাওয়া গেলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

    এ ছাড়াও শাখা ছাত্রদলের যুগ্ন আহ্বায়ক তৌহিদ চৌধুরীর বাড়ি ও ছাত্রলীগ কর্মীর বাড়ি একই জেলা ভোলাতে। এদিকে ছাত্রদল নেতার দাবি, পার্কের ভেতরে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে খোঁজ নিতে যান তারা। তবে ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়াতে যাননি বলে জানান তিনি।

    এ বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বাবলি আক্তার বলেন, ‘আমি এবং তৌহিদসহ আমরা দুইজন জানতে গিয়েছিলাম কেন তাকে আটক করা হয়েছে। আমি খবর পেয়েছিলাম ভিক্টোরিয়া পার্কে মারামারি হচ্ছে। পরে আমি সেখানে যাই।’

    এ বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তৌহিদ চৌধুরী বলেন, ‘আমার নামে একটি বিভ্রান্তিকর পোস্ট ছড়ানো হচ্ছে। আজকে ক্যাম্পাসে আমাদের একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ছিল। সেখান থাকা অবস্থায় জানতে পারি ভিক্টোরিয়া পার্কে মারামারি হচ্ছে। পরে জানতে পারি তারা সুজন মোল্লার ছেলে। আমি সেখানে গিয়ে জানতে পারি পারি রাজ নামে ছেলেটিকে ধরা হয়েছে। আমি যখন নিশ্চিত হই সে ছাত্রলীগ করতো তখন সাথে সাথে আমি সরে আসি। একদল আমাকে এবং আমার সঙ্গীদের বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে।’

    জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসের পাশে পাটুয়াটুলিতে থাকলেও ঘটনাস্থলে ছিলাম না। পরে আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তৌহিদ এবং অন্যরা ভেবেছিলো সেখানে ছাত্রদলের কোন ঝামেলা হচ্ছে। পরে যখন তারা জানতে পারে ছাত্রলীগ কর্মী সেখানে আছে, তারা সাথে সাথে সেখান থেকে চলে আসে।’

  • জামাতের নিবন্ধন ফিরে পেতে দেরি হচ্ছে কেন নেপত্য কি.?

    জামাতের নিবন্ধন ফিরে পেতে দেরি হচ্ছে কেন নেপত্য কি.?

    পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে। যার ফলে ২০১৮ সালে তারা নির্বাচন করেছে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে। ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে তারা অংশ নেয়নি। দলীয়ভাবে জাতীয় নির্বাচন করতে হলে তাদের নিবন্ধন ফেরত পেতে হবে, প্রতীক ফেরত পেতে হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখনও কেন জামায়াতে ইসলামী তাদের নিবন্ধন ফেরত পায়নি, এতে অনেকে অবাক হয়েছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জামায়াতের অনেক নেতাকর্মী।

    কয়েকটি সূত্র জানায়, আইনগত কিছু জটিলতা ও কৌশলের কারণে এখনও জামায়াত তার নিবন্ধন ফেরত পায়নি। জাতীয় নির্বাচন নাকি স্থানীয় নির্বাচন কোনটি আগে হবে, তার ওপর নির্ভর করছে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার লড়াই। জামায়াত স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার কথা বলেছে। কেননা এ ক্ষেত্রে দলীয় প্রতীক থাকবে না। নিবন্ধনেরও প্রয়োজন হবে না। তবে বিএনপি চায় আগে জাতীয় নির্বাচন হোক। এখন অন্তর্বর্তী সরকার কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটার ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু।

    জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, জামায়াত নেতারা আশা করছেন, আইনের লড়াই চালিয়ে যাবেন তারা, শিগগিরই নিবন্ধন পেয়ে যাবেন। একইসঙ্গে তারা নিবন্ধন ও স্থানীয় নির্বাচনের জন্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবেন। নিবন্ধনের ব্যাপারটি যেহেতু আইনগত বিষয়, সেহেতেু জামায়াত আদালতেও লড়াই চালিয়ে যাবে।

    সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে দেশের সব কটি কার্যালয় কার্যত সিলগালা করে রাখা হয়েছিল। জামায়াত একমাত্র দল, যে দলের নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। দুঃখের বিষয়, ফ্যাসিবাদ আপাতত বিদায় নিয়েছে, কিন্তু আমরা নিবন্ধনটা এখনো ফিরে পাইনি। নিবন্ধনের জন্য এখনো আদালতে লড়াই করতে হচ্ছে। এটা বাংলাদেশের জন্য লজ্জার বিষয়। অন্যায়ের কাছে, ফ্যাসিবাদের কাছে মাথা নত না করার কারণে কেড়ে নেওয়া নিবন্ধনটা ফ্যাসিবাদের পরিবর্তনের সঙ্গে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।’

    জানা যায়, ২০১৩ সালের ১ অগাস্ট বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের বেঞ্চ এক রিটের রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে। ওই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন ওই বছরের ৫ অগাস্ট খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

    হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। তাতে এ দলটির দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ ওই আপিল খারিজ করে দেয়।

    ঐতিহাসিক ৫ অগস্ট গণবিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন শেখ হাসিনা। তার আগে ১ অগস্ট জামায়াত ও তাদের ছাত্র শাখা ছাত্রশিবিরকে সন্ত্রাস যোগের কারণ দেখিয়ে নিষিদ্ধ করেছিল তৎকালীন সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর জাময়াতের আবেদনে সেই নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়। এবার নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পেলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকারও ফিরে পাবে ২০০১-০৬ সময়ে বিএনপির সঙ্গে সরকারে থাকা দলটি।

    জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘নিবন্ধনের বিষয়ে আমরা আইনি পথেই এগোব। আশা করি, আদালতে আমরা সুবিচার পাব।’