Category: bangla

  • ডিসি আশরাফের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, জানা গেল নারীর পরিচয়

    ডিসি আশরাফের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, জানা গেল নারীর পরিচয়

    শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের আপত্তিকর কয়েকটি ছবি ও ভিডিও নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড়। বিষয়টি আরও নাটকীয় মোড় নেয় ভিডিওতে থাকা নারীর পরিচয় প্রকাশ পাওয়ার পর।

    জানা গেছে, ওই নারী (৩৬) টাঙ্গাইল সদরের বাসিন্দা এবং ডিসি আশরাফ উদ্দিনের শ্যালক মাজহারুল ইসলাম সংগ্রামের সাবেক স্ত্রী।

    অভিযোগে তিনি বলেন, ‘পারিবারিক সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে ডিসি আশরাফ আমার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি আমাকে স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স করান। এখন বিয়ের কথা বললে গালাগাল করছেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। তিনি আমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতনও করেছেন।

    অন্যদিকে, শনিবার রাতে এক গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন জানান, ‘সম্পর্কটি পারিবারিক ঘনিষ্ঠতার সূত্রে গড়ে উঠেছিল। কিন্তু পরে ওই নারী আমাকে ফাঁদে ফেলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। এরপর ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ দাবি করতে থাকেন। প্রতি মাসে তাকে টাকা দিতে হয়েছে, যার ব্যাংক লেনদেনের প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে।’

    তিনি আরও বলেন, ওই নারী তার স্বামীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করতে চাপ দেন।

    মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। তিনি ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের পরিচালক ছিলেন।

    এদিকে বিতর্কের প্রেক্ষিতে শনিবার (২১ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে মন্ত্রণালয়ে উপসচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

    সূত্র: আরটিভি

  • তুষারের সঙ্গে ভাইরাল ফোনকল নিজের বলে স্বীকার করে নিলেন এনসিপি নেত্রী

    তুষারের সঙ্গে ভাইরাল ফোনকল নিজের বলে স্বীকার করে নিলেন এনসিপি নেত্রী

    জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি নেতা সারোয়ার তুষারের সঙ্গে এক নারীর কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই অডিওতে নারী কণ্ঠটি এনসিপির এক নেত্রীর বলে দাবি করা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এর পর থেকে এনসিপির একাধিক নেত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ে।

    তবে তুষারের সঙ্গে ওই কথোপকথনটি নিজের বলে স্বীকার করেছেন এনসিপি নেত্রী নীলা ইস্রাফিল। তিনি বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘ এক পোস্টে এ কথা স্বীকার করেন। ওই পোস্টে তিনি জানান, ‘নেপালে যাওয়ার পর থেকে তুষার প্রায়ই ফোন করতো ও তার আলাপের ধরন পাল্টাতে থাকে। সে আমাকে বিভিন্নভাবে অ্যাপ্রোচ করতে থাকে— “তোমার ছবি দাও”, “তোমার ঠোঁট সুন্দর”, “তোমার স্লোগান, তোমার প্রতিবাদী কণ্ঠ আমাকে আকৃষ্ট করে।”

    তিনি আরও বলেন, ‘আমি তুষারকে এই ধরনের আলাপে সব সময়েই বিব্রতবোধ করেছি এবং তাকে আমাদের সম্পর্ক সাংগঠনিক ও ফর্মাল রাখতে অনুরোধ রেখেছি। যেহেতু বাংলাদেশের নতুন রাজনীতি, এনসিপি আমার জীবনের প্রধান অবলম্বন, আমি তুষারকে তার আগ্রাসী আচরণ সংযত রেখে, ফর্মালভাবে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখি। বাংলাদেশের অসংখ্য নারীকে ক্ষমতাবান পুরুষের সাথে এই ধরনের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হয়।’

    নীলা ইস্রাফিল ভাইরাল কথোপকথনের বিষয়ে বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখে এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি। রোজার সময় একদিন তুষার আমাকে অত্যন্ত আপত্তিকর একটি কথা বলে। ইতোপূর্বে সকল আলাপের সীমা ছাড়ানো এই আলাপে আমি বিব্রত বোধ করি এবং ওকে জানাই যে আমি আর কথা বলতে চাই না। কিন্তু তুষার আমাকে আলাপের জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে তুষার আমাকে জানায় ডিটেকটিভ পুলিশ বা ডিবি ওর সাথে কথা বলেছে, সেই বিষয়ে সে আমার সাথে আলাপ করতে চায়।’

    নীলা একটি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি উল্লেখ করে আরও লিখেন, ‘তুষার আমাকে ডিবির কথা বলেছে, তাই আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি নিশ্চয়ই আইনি, ডিবি ও পুলিশসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলাপ হতে পারে এবং আমার নিরাপত্তার জন্য হুমকির কোনো বিষয় থাকতে পারে—এই বিবেচনায় আমি আলাপটি রেকর্ড করি। প্রায় দেড় ঘণ্টার আলাপে ৪৭ মিনিট আমি রেকর্ড রাখি। তুষার আমাকে জানায়, ডিবি তাকে নীলা ইস্রাফিল সম্পর্কে জানতে চেয়েছে এবং সে ডিবিকে জানিয়েছে যে নীলা তার গার্লফ্রেন্ড—যা নিয়ে আমি তুষারকে প্রশ্ন করি। তাছাড়া আমরা তুষারের খারাপ প্রস্তাব নিয়েও আলাপ করি। আমি তাকে প্রশ্ন করি, আমার কোনো অ্যাটিটিউড, ব্যবহার বা আচরণে মনে হয়েছে আমাকে এই ধরনের প্রস্তাব করা যেতে পারে? তুষার আমাকে বিষয়টি ভুলে যেতে বলে।’

    সম্প্রতি বিষয়টি এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জানান উল্লেখ করে নীলা লিখেছেন, ‘কোরবানির দিন রাতে একটি অনুষ্ঠানে নাহিদের সাথে দেখা হয় এবং নাহিদকে বিষয়টি জানাই। নাহিদ আমাকে বিষয়টি দলীয় শৃঙ্খলার দিক থেকে ডিল করতে ও মহানগরে দায়িত্বে থাকা শাহরিয়ার ও নিজামকে বিষয়টি অবগত করতে বলে। যে দিন সন্ধ্যায় শাহরিয়ার ও নিজামকে আমি জানাই, তার পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জানতে পারি যে, অডিওটি কেটে সামাজিক মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়েছে এবং ভাইরাল হয়েছে। এরপর আমাকে নিয়ে যে মিডিয়া ট্রায়াল হয়, তাতে আমি দেখতে পেয়েছি, আমার নারী সহকর্মীরাও আমার পক্ষে দাঁড়ায় নাই।’

    সূত্র : বিডি২৪লাইভ

  • সারোয়ার তুষারের সঙ্গে যেভাবে পরিচয় সেই নারীর, যে কারণে অডিও ফাঁস

    সারোয়ার তুষারের সঙ্গে যেভাবে পরিচয় সেই নারীর, যে কারণে অডিও ফাঁস

    জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতা সারোয়ার তুষারের সঙ্গে এক নারীর কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই অডিওতে নারী কণ্ঠটি নিজের বলে দাবি করেছেন নীলা ইসরাফিল নামের এক তরুণী। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘ এক পোস্টে এ কথা স্বীকার করেন তিনি।

    এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন সারোয়ার তুষার।

    ওই পোস্টে তিনি ভাইরাল হওয়া অডিওর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তরুণীর নাম প্রকাশ না করে তাকে ‘ক’ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। একই সঙ্গে তরুণীর সঙ্গে পরিচয় ও অডিও ফাঁসের কারণ হিসেবে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন তিনি।
    পাঠকদের জন্য সারোয়ার তুষারের পোস্টটি হুবহু দেওয়া হলো :

    ‘যেকোনো ঘটনায় জড়িত সংশ্লিষ্ট উভয়পক্ষ যদি একই ধরনের ইন্টিগ্রিটি না দেখায়, তাহলে ঘটনার ফেয়ারনেস নষ্ট হয়। দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার এই, ঢাকার এলিট বাবলগুলোতে যারা মানবাধিকার, জাস্টিস ইত্যাদি নিয়ে প্রচণ্ড উচ্চকিত থাকেন, তারা খেয়াল করেন না কিভাবে তারা জাস্টিস অর্জন করতে গিয়ে নতুন করে ইনজাস্টিস করছেন, কিভাবে তাদের মানবাধিকার তোড়জোড়ের মধ্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।

    নিজের গোষ্ঠীকে জাস্টিফাই করতে উচিত-অনুচিত ন্যারেটিভ এস্টাবলিশ করতে যেমন তারা বদ্ধপরিকর; তদ্রুপ, নিজ গোষ্ঠীর বাইরে (যাদের ব্যাপারে তারা বৈরিভাবাপন্ন) কাউকে নাস্তানাবুদ ও ঘায়েল করতে এমনকি মিথ্যা প্রতিষ্ঠা করতেও তারা পিছপা হন না।’

    “সাম্প্রতিক সময়ে আমাকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ একটা হৈচৈ দেখা যাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমার চরিত্রের ব্যবচ্ছেদ করা এবং আমার সম্পর্কে রায় দেওয়া সংশ্লিষ্ট সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। এর আগে বছর চারেক আগে আমি একবার কাছাকাছি ধরনের ফেসবুক আদালতের তোপের মুখে পড়েছিলাম।

    তখন আমার সিদ্ধান্ত ছিল, যা-ই হোক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়ার বাজারে আমি ব্যক্তিগত কেচ্ছাকাহিনি নিয়ে চর্চা করব না৷ উপযুক্ত ফোরামে নিজের লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য জানাব। তাই করেছিলাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ সোশ্যাল মিডিয়া আক্রমণ তাতে থেমে থাকে নাই। আমি দীর্ঘ তিন বছর একটা প্রক্রিয়া মেনে প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম; অন্যদিকে আমার ব্যাপারে যা খুশি তাই মন্তব্য করা এবং আমাকে যেকোনো প্রকারে অপদস্থ করাকে অনেকেই নিজেদের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম-এর অংশ বানিয়ে ফেলেছিলেন। নীরব রক্তক্ষরণ সত্ত্বেও আমি সেসব ওভারলুক করে গেছি।

    কেউ যদি এখনো ওই ঘটনা জানতে আগ্রহী থাকেন, ফেসবুকে আদালত না বসিয়ে ‘লেইটস রিওপেন অল দ্য ডকুমেন্টস’।”
    ‘গত দুই দিন ধরে আবারও আমি মহামান্য ফেসবুক আদালতের ব্যাশিংয়ের শিকার হচ্ছি। আগের পোস্টে লিখেছি, আমি শতভাগ ত্রুটিমুক্ত মানুষ নই। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত জীবনের কোনো ঘটনাকে যখন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এবং আমার দলকে ঘায়েল করার লক্ষ্যে ব্যবহার করা হয়, তখন তা আর ন্যায্য থাকে না। পয়লা নম্বর প্রশ্ন হচ্ছে, আমার সাথে অপর এক ব্যক্তির ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করল কে বা কারা? এবং সেটা কীভাবে দেশের বাইরে থাকা অ্যাক্টিভিস্টদের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় কাঁটছাঁট করে পরিপ্রেক্ষিতহীনভাবে ভাইরাল করা হলো? এই কাজটা কার করা?’

    ‘ধরা যাক, সংশ্লিষ্ট অপর ব্যক্তির নাম “ক”। তাকে আমি চিনেছি, আপনাদের মতোই, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। শুরুতে তার পারিবারিক কোনো ঘটনা আমার নলেজে ছিল না। জাতীয় নাগরিক কমিটির অফিসে (তখনো এনসিপি আত্মপ্রকাশ করেনি) তিনি একদিন আসেন এবং আমার সাথে সামান্য কথা হয়। একদিন সন্ধ্যায় তিনি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আমাদের অফিসে আসেন। তখন শীতকাল। সম্ভবত ডিসেম্বর মাস। তার ভাষ্যমতে, প্রাক্তন স্বামী তাকে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করেছেন। শুরুতে আমি অফিসে ছিলাম না। তিনি নাকি অফিসে এসে আমাকে খুঁজেছেন। এমনকি লিফটের ১৫ তলা উঠতে উঠতে আমার কথা জিজ্ঞেস করেছেন। অফিসে যারা সে সময় উপস্থিত ছিলেন, তারা তাকে প্রাথমিক শুশ্রুষা দেন। কিছুক্ষণ পর অফিসে আমি আসি এবং যার পরামর্শ ছাড়া তিনি কোনো কাজ করেন না বলে ফেসবুকে জানিয়েছেন, সেই মানবাধিকার লেনিন ভাইও আসেন। জানাক থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসলে পুলিশি প্রটোকলে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সাথে আমাদের কমিটির আরো একজন পুরুষ ও নারী কর্মীও ছিলেন। গভীর রাত পর্যন্ত তাকে দুইটা হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে তারপর পুলিশ প্রটোকলসহই তাকে ধানমণ্ডির এক বাসায় পৌঁছে দেই। আমরা তাকে মামলা করতে পরামর্শ দেই, তিনি জানান তিনি মামলা করবেন না। যাক, সেটা তার ব্যাপার। ওই রাতেই আহত অবস্থায় এবং পরে আরেকদিন দেখা হলে তিনি আমাকে বলেন, তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে উচিত শিক্ষা দেব।’

    ‘খেয়াল করবেন, “ক” তার সর্বশেষ পোস্টে এই ঘটনাটার কথা উল্লেখ করেছেন ঠিকই; কিন্তু আমি ও জানাক যে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাকে পুলিশ প্রটোকল দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলাম, এই তথ্যটা তিনি বেমালুম চেপে গেছেন। মানবাধিকার লেনিন ভাই, শহিদুল আলম, সারা হোসেন সবার নামই আছে। কিন্তু ওই রাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী সারোয়ার তুষার ও মুশফিকুর জোহানের নাম নাই। বেশ!’

    ‘শহিদুল আলম ও সারা হোসেন তার জন্য ওই দিন কি করেছেন আমার জানা নাই। ‘তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে উচিত শিক্ষা দেব’ — তার এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলেছিলাম, আপনি শহিদুল আলম, রেহনুমা, সায়দিয়া গুলরুখ তাদেরকে ঘটনাটা জানান। তারা এসব ক্ষেত্রে বেশ হেল্পফুল। তখন “ক” আমাকে বলেছিলেন, তিনি সবার দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছেন, সবাই তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তার কোন কথা সত্য বা মিথ্যা আমার জানা নাই, কিন্তু তিনি এটাই বলেছিলেন।’

    ‘যাই হোক, সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনি অনেকগুলো মিথ্যাচার করেছেন। ভুল ও বিকৃত তথ্য দিয়েছেন। তিনি এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো নেত্রী নন। কেন্দ্রীয় বা মহানগর পর্যায়ে তিনি কোনো পদ হোল্ড করেন না। এমনকি তিনি এনসিপির সদস্যও নন। কাজেই তার সাথে আমার কোনো কথাবার্তা বা এক্সচেঞ্জের সাথে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক নাই; সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্কের কোনো হায়ারার্কিও নাই। এটা তিনিও জানেন। কিন্তু এখন গল্প সাজাতে গেলে যেভাবে বললে কাজ হবে, তিনি সেভাবে লিখেছেন বা তাকে সেভাবে লিখে দেয়া হয়েছে।’

    ‘তার কিছু বক্তব্য খেয়াল করা যাক : “মানবাধিকারকর্মী লেনিন ভাই আমাকে নেপাল পাঠিয়ে দেয়…” “ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি…” “নেপালে যাওয়ার পর থেকে তুষার প্রায়ই আমাকে ফোন করত ও তার আলাপের ধরন পাল্টাতে থাকে…” আমি তাকে প্রায়ই ফোন করতাম কি করতাম না সেটা পরের আলাপ। উল্লিখিত ৩ উদ্ধৃতি থেকে কী দেখা যাচ্ছে? তাকে মানবাধিকার ভাইজান নেপাল পাঠিয়ে দেন। কবে? এনসিপি আত্মপ্রকাশের পূর্বে। এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন তিনি দেশে এসেছেন। তার ভাষ্যমতে, তাকে আমি প্রায়ই ফোন করতাম তার নেপালে থাকা অবস্থায়। তখন তো এনসিপির আত্মপ্রকাশই ঘটে নাই। তাহলে “তাকে আমাদের সম্পর্ক সাংগঠনিক ও ফর্মাল রাখতে অনুরোধ রেখেছি….” এনসিপিই যখন গঠিত হয় নাই, তখন সম্পর্ক সাংগঠনিক ও ফর্মাল রাখতে বলার মানে কী?’

    ‘এনসিপি আত্মপ্রকাশ করে রমজানের ঠিক আগের দিন। এরপর পুরো রমজান মাসে এনসিপির কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। কে কোথায় কাজ করবে না করবে সে ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত তখনো আসেনি। ফলে আমার জানার কথা নয় “ক” এনসিপির কোথায় কাজ করতে চান। বা আদৌ চান কি না। ওই সময়ে আমি এনসিপির ২১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সবাইকেই ঠিকমতো চিনে উঠে পারি নাই। এ কথা বলার মানে হলো, রমজানের আগে, এমনকি রমজান মাসে তার সাথে আমার যতটুকুই যোগাযোগ হয়েছে, তা সাংগঠনিক দায়রা বা আওতার মধ্যে ঘটে নাই। ফলে তার সাথে আমার সাংগঠনিক সম্পর্ক দেখিয়ে ক্ষমতার যে হায়ারার্কি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা অমূলক।’

    ‘এবার আসি ফাঁসকৃত ভাইরাল অডিও সম্পর্কে। প্রথম অডিওতে, ওই বিশেষ শব্দটি আপনারা তার মুখেই শুনেছেন। আমি শুধু ব্যাখ্যা দিয়েছি মাত্র। না, না, ওই এক মুহূর্তে কথা দিয়ে আমাকে জাজ করো না, প্লিজ — এরকম ছিল আমার বক্তব্য। আসলে তিনিই খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শব্দটির কাছে আমাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কেন? সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ থাকে যে, তিনি যেহেতু কল রেকর্ড করার উদ্দেশ্যেই কলটি করেছেন, কাজেই কথাবার্তাকে একটা সুনির্দিষ্ট দিকে তিনিই নিয়ে গেছেন। এবং এটা ঘটেছে সম্পূর্ণ আমার অগোচরে। অর্থাৎ, আমি কথা বলেছি উইথ গুড ফেইথ; অন্যদিকে, তিনি কথা বলেছেন, কল রেকর্ড করে তা অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার মতলবে।’

    ‘খেয়াল করার মতো বিষয়, ওই অডিও কলটির পরিপ্রেক্ষিত আমলে না নিলে চলে না। তিনি আরো একটি চ্যাট স্ক্রিনশট অন্যদের কাছে চালান করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আমাদের মধ্যে ৩২ মিনিটের একটি ভিডিও কল হয়েছে। সেই ভিডিও কলের প্রসঙ্গ সম্পূর্ণ ইগ্নোর করে পরবর্তী ৪৭ মিনিটের অডিও কল সম্পর্কে কি কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়? নিতান্তই ব্যক্তিগত স্পেসে ধারাবাহিক আলাপচারিতায় করা একটি প্রস্তাব এখন পাবলিক স্পেসে আসায় অশোভন মনে হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ওই প্রশ্ন পর্যন্ত যাওয়ার একটি পরম্পরা আছে: ভিডিও কল>চ্যাটিং>অডিও কল। এই সিকোয়েন্স মার্ক করতে হবে। এমন কথা আমি না বললেই ভালো করতাম। আমার আরো সংযত হতে হবে। কিন্তু এখন আমার এই চরম চরিত্র হননের মুহূর্তে না বলে পারছি না, নারী-পুরুষ সম্পর্কে ক্ষমতার প্রশ্নটি এত সরল নয়। সম্মতি (কনসেন্ট; যা পুরুষ নারী কর্তৃক আদায় করে নেয় বলে অনুমান) ও বলপ্রয়োগ (কোয়ের্শন; যা নারীর অসম্মতিতে পুরুষ কর্তৃক প্রযুক্ত হয় বলে অনুমান) — এই দুই বাইনারির বাইরেও সিডাকশন তথা ফুসলানোর ক্ষমতাও যে এক ধরনের ক্ষমতা, নৃবিজ্ঞানী তালাল আসাদ সূত্রে এ কথা আমাদের অজানা নয়। অর্থাৎ, এই কনভার্সেশনের ক্ষেত্রে পরিপ্রেক্ষিত তথা উভয়পক্ষের যোগাযোগের ধারাবাহিকতা, ফুসলানো ইত্যাদিকে আমলে না নিলে ঘটনার সার্বিকতায় পৌঁছানো যায় না।’

    ‘“ক”-র সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টের কনশাস-আনকশাস মিলিয়ে যা ধরা পড়ে, যে সকল নাম তিনি নিয়েছেন, তাতেই তার নিয়ত অনেকটা খোলাসা হয়। আমার সাথে তার কথাবার্তার ব্যাপারে নাকি তিনি আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ডকে জানান। আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ড কি আমার বিচারক নাকি আদালত? তাকে কেন জানাতে হবে? কারণ কি এই যে, তিনি আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় নিয়মিতভাবে আদালত বসান? তারপর কি তার সাথে ফন্দি করেই আপনি কল রেকর্ড করেছেন এবং দেশের বাইরের অ্যাক্টিভিস্টদের কাছে পাচার করেছেন? প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক।’

    ‘রোজা ও রোজার আগের ঘটনা তিনি নাকি “সাংগঠনিক গোপনীয়তা রক্ষা করে” মীমাংসা করতে চেয়েছেন। কী কী পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন এই আড়াই মাসে? সংগঠনে কোনো লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন? কাউকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন? জানান নাই।
    রোজার প্রায় তিন মাস পর, আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রায়ালের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে, কোরবানি ঈদের রাতে এক সামাজিক দাওয়াতের প্রোগ্রামে এসে “ক” এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে মৌখিকভাবে আমার বিরুদ্ধে নালিশ করেন। সেটা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনার মতো কোনো পরিবেশ ছিল না। তবু আহ্বায়ক “ক”-কে ভালো করে না চেনা সত্ত্বেও বলেন, শৃঙ্খলা কমিটি ও মহানগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতাকে যেন জানান। ইতিমধ্যেই কয়েকদিন পর কল রেকর্ড ফাঁস করার পর তিনি সামান্তা শারমিনকে দেখা হলে একই কথা জানান। সেখানে সামান্তা তাকে “মাহরাম” জাতীয় কিছু বলেন নাই, অথচ এই মিথ্যা প্রচারণাটাই চালানো হচ্ছে।’

    ‘কয়েকটা ব্যাপার পরিস্কার থাকা জরুরি : “ক” এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো নেত্রী বা কর্মী নন। তার সাথে আমার কোনো ধরনের সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্ক বিরাজ করে না। তাকে দূরে রাখেন… মহানগর বা সেলের কাউকে আমি এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেই নাই। আসলে সেই এখতিয়ারই আমার নাই। তার এই দাবির সত্যতা কী? কে তাকে বলেছে আমি এমন নির্দেশনা দিয়েছি?’

    ‘মহানগর বা কেন্দ্রীয় সেলে কাকে নেওয়া হবে বা না হবে সেটা একান্তই ওই সকল কমিটি ও সেলের সিদ্ধান্ত। আমি এমনকি ঠিকমতো জানি না মহানগরের কোন কমিটি ও সেলের কোন দায়িত্ব কে দেখভালো করছে। পার্টিতে আমার কাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমি তা পালন করতেই এত ব্যস্ত থাকি যে, কমিটি ও সেল নিয়ে মাথা ঘামানো বা প্রভাবিত করার সময় বা সুযোগ কোনোটাই আমার নাই। কেন্দ্রের বাইরে এনসিপির কোনো সেল নাই। সেলে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় সদস্য হতে হবে। “ক” এনসিপির কেন্দ্রের সদস্য পর্যন্ত নন। তাহলে তাকে সেলে না নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি কীভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারি? সেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা তথা কেন্দ্রীয় সদস্য পদই তো তার নাই! মহানগরের কমিটি যারা দেখেছেন, তাদেরকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে কাকে অন্তর্ভুক্ত করবে না করবে। এ ব্যাপারেও আমি হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার বা ক্ষমতা রাখি না।’

    ‘দুটি ব্যাপার খেয়াল করতে হবে : এক. তিনি আমাকে কোনো বিশেষ সুবিধা দিলেও তিনি যে দলে ঢুকতে পারবেন, এর কোনো নিশ্চয়তা নাই। কারণ দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সাথে আমি জড়িত নই। কাজেই যেমনটি প্রচার করা হচ্ছে, আমাকে বিশেষ সুবিধা না দেওয়ার কারণে তিনি এনসিপিতে আসতে পারছেন না, এই দাবি ভিত্তিহীন। দুই. আমাকে বিশেষ সুবিধা না দিলেও দল যদি তাকে কোনো স্তরে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, আমি সেখানে বাধাগ্রস্ত করার অধিকার সংরক্ষণ করি না। ওই একই কারণে : কারণ দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সাথে আমি জড়িত নই। এটা সম্পূর্ণতই আমার কাজের সীমানার বাইরের ব্যাপার।’

    ‘কাজেই এনসিপিতে তিনি আসতে পারছেন কি পারছেন না এ ক্ষেত্রে আমার করণীয় বিশেষ নাই। তবে এনসিপির বিভিন্ন ঘোষিত পাবলিক কর্মসূচিতে তাকে অংশ নিতে দেখেছি। সেখানে তাকে বারণ করা বা উৎসাহিত করার কোনো সুযোগ আমার ছিল না। এ ধরনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে এসে তিনি কখনো আমার পাঞ্জাবি টেনে ধরে বা কখনো আমার পথ আগলে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, তাকে দলে নেওয়া হচ্ছে না কেন। যতবার তিনি আমাকে এই প্রশ্ন করেছেন, আমি একটাই উত্তর দিয়েছি : কমিটি দেওয়ার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। আপনি কোনো কমিটিতে আসতে চাইলে বিষয়টা যারা দেখছেন, তাদের সাথে কথা বলুন। এ ব্যাপারে আমার বিশেষ কিছু করণীয় নাই।’

    ‘এক পর্যায়ে, সম্ভবত এ বছরের মে মাসের একদম শেষের দিকে অথবা জুনের শুরুতে অফিসে একদিন তার সাথে আমার দেখা হয়ে যায়। তিনি আমার সাথে কথা বলতে চাইলে আমি তার সাথে দলীয় কার্যালয়ের মিটিং কক্ষে বসি। এটাকেই অডিও কলে তিনি বলছেন, আমি তোমাকে রুমে নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি.., তিনি আমার কাছে জানতে চান : তাকে নেওয়া হচ্ছে না কেন। আমি একই উত্তর দেই। তিনি আমাকে এক প্রকার চাপ প্রয়োগের সুরেই বলেন, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত তথা নেওয়া হবে কি হবে না এটা তাকে জানাতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে আমাকে ফোন করবেন। ম্যাসেঞ্জার চেক করে দেখলাম, তিনি ৬ জুন ম্যাসেঞ্জারে কল দিয়েছিলেন। আমি ধরিনি বা ধরতে পারিনি। বাকি ঘটনা আপনাদের চোখের সামনে।’

    ‘দুইদিন আগে প্রথম যখন অডিও রেকর্ডটি ফাঁস হলো, আমি সত্যি সত্যি ভেবেছিলাম আমাকে বিতর্কিত করতে কাজটা এজেন্সি করেছে। আমি “ক”-কে জিজ্ঞেস করি, এই কল রেকর্ড ও ফাঁস কে করল? আপনারা কিন্তু দ্বিতীয় অডিও রেকর্ডে শুনতে পেলেন, তিনি বলছেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। তিনিও আমার কাছ থেকে মাত্র দেখলেন। তিনি যেন আকাশ থেকে পড়েছেন! আমিও সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করলাম। কি বোকা আমি! সাথে সাথে তাকে অনুরোধ করলাম, যেহেতু কাজটা আপনি করেন নাই, কাজেই আপনি একটা ক্ল্যারিফিকেশন দেন প্লিজ এবং উদ্বেগ জানান এভাবে ব্যক্তিগত আলাপ কারা ফাঁস করে! আপনি যে দল করতে চান, সে দলের নেতার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার তো আপনার ভালো লাগার কথা নয়! তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমাকে লিখে দাও আমি কী বলব, তবে আমি লেনিন ভাইয়ের সাথে পরামর্শ করব।’

    ‘এরপর বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করলাম, দ্বিতীয় কলটি শেষ হতে না হতেই আধঘণ্টার মধ্যে সেটিও অনলাইনে চলে আসল এবং দাবি করা হলো আমি তাকে “চাপ” প্রয়োগ করছি আমার পক্ষে স্টেটমেন্ট দিতে। অথচ নিজের হাতে আমার কলটি আরেক মোবাইল থেকে ভিডিও ধারণ করে সেটা বিদেশে পাচার করেছেন তিনি নিজেই। তারপর আবার আমি জিজ্ঞেস করার পর আবারও তিনি আকাশ থেকে পড়েছেন। তিনি নাকি কিছুই জানেন না! তার এই ডাবল গেম এবং এর পেছনে ক্রিয়াশীল পুরো সিন্ডিকেটটা সনাক্ত করতে আমার বেশ খানিকটা সময় লেগে গেছে।’

    ‘এই সিন্ডিকেটের মোটিভ পরিস্কার। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে আমার মানহানী ও চরিত্রহনন করা। সেভাবেই তাকে স্ক্রিপ্ট লিখে দেওয়া হয়েছে। দুইজন ব্যক্তির কথোপকথনে যদি একজনের নিয়ত থাকে তিনি কল রেকর্ড করবেন এবং তা ফাঁস করবেন; দ্বিতীয় ব্যক্তি যদি এই পরিকল্পনার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকেন, তাহলে যা ঘটার কথা, আমার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।’

    ঘটনাটা সোশ্যাল মিডিয়ায় কারা পিক করেছে তা খুব পরিস্কার। আওয়ামী কালচারাল উইং, ৫ আগস্টের পর থেকে আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যে নাখোশ বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ এই ঘটনাকে লুফে নিয়েছে। তাদের টার্গেট স্রেফ আমি না; বলা ভালো, এনসিপিই তাদের প্রধান টার্গেট। ঈদের পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু হওয়ার ঠিক আগের রাতে আমার বিরুদ্ধে এই সংঘবদ্ধ অনলাইন মব সৃষ্টি, নিছক কাকতাল নয়। তারা খুব ভালোভাবেই অবগত আছেন, এনসিপির পক্ষে আমি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দলের পজিশন তুলে ধরি। গত কয়েকমাসে রাজপথের বক্তৃতায়, টকশোতে এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার প্রশ্নে আমার অনমনীয় অবস্থান সমাজে ওয়েল এস্টাবলিশড। আমি যে টার্গেট হব, এটা আশ্চর্যের নয়। রাজনৈতিক বিরোধিতা ও না-পছন্দকে ব্যক্তিগত চরিত্রহননের মতো ঘৃণ্য কাজের মাধ্যমে মোকাবেলার মতো জঘন্য কাজ আর হয় না।’

    ‘জনাবা “ক” অবশ্য তাজনূভার দুঃখে কাতর! কেন অহেতুক তাজনূভাকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই চরিত্রহনন ও যৌন আক্রমণ চলছে, তা তাকে বেশ দুঃখিত করেছে বৈকি! অথচ দুইটা দিন তিনি চুপ থাকলেন, হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে বলতে থাকলেন, তিনি কল ফাঁসের ব্যাপারে কিছু জানেন না। এদিকে তাজনূভার সাথে এটা ঘটতে দিলেন। ওই নারীর পরিচয় জানার পরও তাজনূভাসহ এনসিপির নেতাকর্মীরা তার পরিচয় ফাঁস না করে রাজনৈতিক ভদ্রতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তাজনূভা জাবীনও যে তার শক্ত রাজনৈতিক অবস্থান ও বক্তব্যের কারণে কোনো কোনো পক্ষের চক্ষুশূল, তা বলাই বাহুল্য।’

    ‘ভালো কথা, গত ১৬ মে অনুষ্ঠিত নারীদের মৈত্রীযাত্রার একটা ঘটনা শেয়ার করি। সেখানে যাওয়ার কারণে তাজনূভা বেশ আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। আমি তাজনূভার পক্ষে প্রতিবাদ করে ফেসবুকে কিছু কথা লিখেছিলাম। এরপরের দিন, গত ১৭ মে, জনাবা “ক”, আমাকে ম্যাসেঞ্জারে লেখেন, “তুমি আমার কথাটা উল্লেখ করতে পারতে।” অর্থাৎ, মৈত্রীযাত্রায় যাওয়ার কারণে তিনিও আক্রমণের শিকার হয়েছেন, সেটা আমি কেন উল্লেখ করলাম না এই নিয়ে তার অনুযোগ! অথচ তার ভাষ্যমতে আমি তাকে “কুপ্রস্তাব” দিয়েছি গত রোজায়, মার্চ বা ফেব্রুয়ারি মাসে!’

    ‘কল রেকর্ড ফাঁসের পর গত দুইদিন তিনি আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নানা কথা বলেছেন। যার সারমর্ম হচ্ছে তিনি এটা “দলের ভেতরেই মিটমাট” করতে চেয়েছেন, আমি নাকি সেই সেই সুযোগ রাখি নাই। কীভাবে? আমাকে চরমভাবে অপদস্থ করার পর কেউ কেউ যখন তাকে সনাক্ত করতে পেরেছেন, তার বিরুদ্ধেও কেউ কেউ কিছু কথা বলেছেন। এগুলো নাকি আমি করিয়েছি! তিনি আর এসব “বাড়াতে চান না”।’

    ‘বাহ! একদিকে আমাকে অনলাইন নাৎসিদের হাতে তুলে দিয়ে চরমভাবে অপদস্থ ও চরিত্রহননের পর তিনি আর “বাড়াতে চান না”। আমি তাকে বলেছি, সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের ঘটনা ব্রেক হওয়ার পর, সেসব আর কারো নিয়ন্ত্রণে থাকে না। পক্ষে-বিপক্ষে কথা ছড়ায়। এখানে আমার কোনো হাত নাই। আমার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন মব সৃষ্টি করার পর আমার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, “তুমি মব সৃষ্টি করছো”।’

    ‘গত দুইদিন আমি এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে আছি। আমার নামে বিভিন্ন ফেইক স্ক্রিনশট ভাইরাল করা হয়েছে, আমার ছবি বিভিন্ন পর্নো সাইটে তুলে দিয়ে সেসব “ডিস্টরটেড অ্যান্ড এডিটেড” ছবির স্ক্রিনশট আবার ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। আমার আর তাজনূভার ছবি জুড়ে দিয়ে জঘন্য অশ্লীল ও যৌনাত্মক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এতে করে আমার সামাজিক মর্যাদা, রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং আমার দলের ইমেজ ভূলণ্ঠিত। দেখা যাচ্ছে যে, আমার ব্যক্তিগত ও মানবিক মর্যাদা এভাবে ধূলিসাৎ করাটাও অনেকের কাছে ন্যায়ের পরাকাষ্ঠা!’

    ‘এসবের পরিবেশ তৈরি করেও নাকি ভদ্রমহিলা এই দলকে বিতর্কিত করতে চান না, তিনি এই দলের ভালো চান, তিনি সব মিটমাট করতে চান! তথাস্তু!’

    ‘যেভাবে এই ঘটনায় নাহিদ ইসলাম, সামান্তা শারমিন, তাজনূভা জাবীন ও দলের অন্যান্য নারীদের টেনে আনা হয়েছে, তাতে খুবই পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে এনসিপিই টার্গেট। এনসিপির ইমেজ ডাউন করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটাই এই পুরো ঘটনাপ্রবাহের মূলে। আমার দল যখন নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিতে চরম ব্যস্ত সময় পার করছে, ঐকমত্য কমিশনে রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে সবচেয়ে ডিসাইসিভ ও বোল্ড পজিশন নিয়েছে, তখনই এই সংঘবদ্ধ আক্রমণ ঘটানো হলো।’

    ‘নতুন দল হিসেবে এনসিপি এক মিডিয়া ক্রুসেডের মুখোমুখি। প্রতিদিনই এনসিপির বিরুদ্ধে চরম আপত্তিকর ও ভুলভাল তথ্য অনলাইনে ছাড়া হচ্ছে। সামনে এটা আরও বাড়বে। ইনশাআল্লাহ, এনসিপি এসব মোকাবেলায় প্রস্তুত আছে। আমি দলের কাছে লিখিত জবাব দেব। আমার জবাব অবশ্য আমি নিজেই লিখি, অন্য কাউকে লিখে দিতে হয় না।’

    ‘সংশ্লিষ্ট অপর নারী নিজ প্রোফাইল থেকে আমার বিরুদ্ধে পোস্ট দিলেও, এখানে আমি তার নাম নিলাম না। এজন্য চড়া মাসুল দিতে হলেও এটা আমার মডেস্টি আর ইন্টিগ্রিটির একটা স্মারক হয়ে থাক। ব্যক্তিগত যৌন-কেচ্ছার জায়গা অনলাইন পরিসর নয়। যারা সংশ্লিষ্ট নারীকে চিনেছেন, তাদের কাছে আমার আহ্বান, তার ব্যাপারে কোনো কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করবেন না। এহেন কুৎসা সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা না হওয়াই কাম্য। আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার।’

  • হাসিনার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

    হাসিনার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

    ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দেশ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা পাচারের তথ্য বেরিয়ে আসছে। এ টাকায় তারা বিদেশে বিভিন্ন কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেছে। দেশ থেকে ব্যাংক লুট ও বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা বিদেশে পাচার করে এসব সম্পদ গড়ে তোলা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।

    এর মধ্যে এখন পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার বাড়ি, শেখ রেহানার মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট শনাক্ত হয়েছে। পতিত প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অফশোর বিনিয়োগের তথ্য অনুসন্ধান চলছে।

    এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজার নামে বিলাসবহুল বাড়ি পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের নামে বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকে অর্থ জমার তথ্য পাওয়া গেছে।

    এছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও নেতাকর্মীদের নামেও যুক্তরাজ্যে সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেগুলোর বিষয়ে বিশদ তদন্ত হচ্ছে। সম্পদের মধ্যে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকে অর্থ জমার তথ্যও মিলেছে।

    আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আলোচিত বড় ধরনের দুর্নীতির ঘটনাগুলো সরকারের একাধিক সংস্থা থেকে তদন্ত চলছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বা বিএফআইইউ, দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল বা সিআইসি, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিও আছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক একাধিক তদন্ত সংস্থারও সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এদের তদন্তের ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

    জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সহযোগী সংস্থা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল বা সিআইসি দেশ থেকে টাকা পাচারের ঘটনা ব্যাপকভাবে তদন্ত করছে। সংস্থার একটি টিম সম্প্রতি বিভিন্ন দেশ ঘুরে এসেছে। তারা সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদার, ওরিয়ন গ্রুপ ও আরও একটি গ্রুপের নামে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকা সম্পত্তি ও ব্যবসায়ে বিনিয়োগ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করেছে। এছাড়া এস আলম গ্রুপ, সামিট গ্রুপ ও পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অফশোর বিনিয়োগের তথ্য অনুসন্ধান করছে। আলোচ্য গ্রুপের সম্পদের বেশকিছু আলোকচিত্রও তারা নিয়ে এসেছে।

    এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনজনের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের ৩৩৬টি বাড়ি বা ফ্ল্যাট ও ব্যাংক হিসাবে ৩৫ কোটি টাকা জমা অর্থ। এগুলোর কেনা দাম কম হলেও বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১ হাজার ২৫ কোটি টাকা। সালমান এফ রহমানের ছেলে সায়ান এফ রহমান ও তার ভাতিজা শাহরিয়ার রহমানের দুটি বিলাসবহুল বাড়ি জব্দ করা হয়েছে। এই দুটির মূল্য প্রায় ৭৭ লাখ পাউন্ড বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বেশি। আরও একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের দুজনের নামে যুক্তরাজ্যে সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলোও জব্দ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি বা এনসিএর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই রনি চৌধুরীর নামেও যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন ব্যবসার তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো জব্দের জন্যও চিঠি দেওয়া হয়েছে।

    প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, শেখ হাসিনার পরিবারের আর কারও নামে-বেনামে দেশটিতে কোনো সম্পদ আছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত কাজে তারা দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টিকরাপশন কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের (আইএসিসিসি) সহায়তা নিচ্ছে। ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি হচ্ছে যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তারা যে কোনো বিষয়ে তদন্ত করতে পারে। বিশেষ করে মানি লন্ডারিংয়ের ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে। আইএসিসিসি হচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত একটি আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংস্থা। এর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, সিঙ্গাপুর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা যুক্ত। তারা একে অপরের পরিপূরক হিসাবে তদন্ত করে। কোনো ঘটনা তদন্তের প্রয়োজন হলে ওইসব দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো একযোগে কাজ করে। বাংলাদেশে বিগত সরকারের ১১টি ঘটনার যে তদন্ত হচ্ছে, সেগুলোতে সহায়তা করছে ওই দুটি সংস্থাসহ আরও কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। যে কারণে দুর্নীতির মাধ্যমে পাচারের অর্থে বিদেশে গড়া সম্পদের তথ্য বের হয়ে আসছে।

    সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে যুক্তরাজ্যে ৩৩৬টি বাড়ি ও ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে। দলিল মূলে এগুলোর দাম ৩ লাখ ২০ হাজার ডলার বা প্রায় ৪ কোটি টাকা। বর্তমান বাজার মূল্য অনেক বেশি। এছাড়া লন্ডনের ব্যাংকে তার সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে। সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। তার ভাই রনি চৌধুরীর নামে যুক্তরাজ্যে হাউজিং ব্যবসার তথ্য পাওয়া গেছে। তার নামেও কয়েকটি বাড়ি বা ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে।

    এস আলম গ্রুপের নামে বিভিন্ন দেশে সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আরও তদন্ত হচ্ছে। বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমানের ছেলে সায়ান এফ রহমান ও তার ভাতিজার নামে লন্ডনে বিলাসবহুল ২টি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে। এগুলোর বাজার মূল্য ৭৭ লাখ পাউন্ড বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। যুক্তরাজ্যের বার্কলেস ব্যাংক পিএলসিতে ২টি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই হিসাবের লেনদেনের অর্থ সম্পর্কে তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ। সায়ান এফ রহমানের বাড়িটিতে এক সময় শেখ রেহানা থাকতেন বলে জানা গেছে। তবে তিনি এখন সে বাড়িতে থাকেন না।

    যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে লন্ডনে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিব। বর্তমানে এর মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিবের লন্ডনে আরও বাড়ি রয়েছে। তিনি সেখানে হাউজিং ব্যবসা করেন বলে জানা গেছে। লন্ডনে তার ব্যাংক হিসাবও রয়েছে।

    সিকদার গ্রুপের নামে চারটি দেশে সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে সম্পদের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত চলছে।

    যুক্তরাজ্যের একটি কোম্পানির ৬ লাখ ২৭ হাজার শেয়ার রয়েছে বাংলাদেশি একটি শিল্প গ্রুপের নামে। এগুলোর মূল্য প্রায় ৬০ লাখ পাউন্ড বা ১০২ কোটি টাকা। এগুলো জব্দ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শেয়ার কেনার অর্থ কিভাবে স্থানান্তর হয়েছে এখন সেগুলোর তদন্ত হচ্ছে।

    নাসা গ্রুপের নামে যুক্তরাজ্যে ৫টি সম্পদ পাওয়া গেছে। এছাড়া যুক্তরাজ্যশাসিত দুটি দ্বীপে জার্সি ও আইল অব ম্যানে আরও ২টি সম্পদ পাওয়া গেছে। সবগুলোর দলিল মূল্য ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৪৫ কোটি টাকা। তবে বাজার মূল্য কয়েকগুণ বেশি হবে। যুক্তরাজ্যশাসিত একটি দ্বীপ আইল অফ ম্যানের ব্রার্কলে ব্যাংকে ১টি হিসাব পাওয়া গেছে। এতে জমা ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

    যুক্তরাজ্যের সাবেক হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম ও তার স্বামী ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলামের নামে দেশটিতে সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ২০০ কোটি টাকার বেশি যারা পাচার করে যুক্তরাজ্যে সম্পদ গড়েছেন তাদের বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এছাড়া আরও অনেক পাচারকারী রয়েছেন যাদের দেশটিতে সম্পদ রয়েছে। সেগুলোর বিষয়ে পর্যায়ক্রমে তদন্ত হবে।

    সূত্র: যুগান্তর

  • মহিলা দলের নেত্রী লেডি ডন লাইজুর ক্ষমতার কাছে অসহায় জনগন

    মহিলা দলের নেত্রী লেডি ডন লাইজুর ক্ষমতার কাছে অসহায় জনগন

    বিডিগ্রামের অঘোষিত লেডি ডন। কেউ কেউ তাকে হাইব্রিড নেত্রী নামেও চেনেন। কাউকে পরোয়া করেন না তিনি। রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে নানা অপরাধের সাথে যুক্ত রয়েছেন তিনি।

    বিএনপির মহিলা দলের নেত্রী লাইজুন্নাহার লুচি সাধারণ সম্পাদক, মহিলা দল,২নং পঞ্চকরণ ইউনিয়নের লেডি ডন! নিজ প্রয়োজনে কেটে ফেলেন রাস্তার সরকারি গাছ। এবার তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পেয়েছন এলাকাবাসী। অনেকে বলেন দলের প্রভাব খাটিয়ে লুচি রাস্তার সরকারি গাছ কেটে ফেলেন। এলাকাবাসী বাধা দিলে তিনি মামলার ভয় দেখান এবং বলেন আমি সরকারি গাছ কেটে ফেলেছি তাতে আপনাদের কি। পারলে আমাকে আটকে দেখান। এ বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হলে

    আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, মো. শাহীন কবির। তিনি বলেন, সরকারি গাছ কর্তনকারীরা যেই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে দেশের প্রচলিত আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করা হবে।

  • ভিডিও বার্তায় প্রেমিকাকে যা বললেন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক

    ভিডিও বার্তায় প্রেমিকাকে যা বললেন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক

    ‘লিজা, অনেক প্রত্যাশা ছিল আজকে তোমার সাথে আমার দেখা হবে। অনেক স্বপ্ন ছিল। আমি কথা কখনোই গুছিয়ে বলতে পারি না। কিন্তু অন্তর্যামী জানে, তোমাকে আমি ভালোবেসেছি।

    সেটা ভন্ডামি ছিল? নাকি ছলনা ছিল? না কোনো লোভে গিয়েছি, না তোমার শরীরের লোভে গিয়েছি। আমি জানি না তোমার কত টাকা পয়সা আছে, না তোমার টাকা পয়সার লোভে গিয়েছি; না তোমার স্বামীর টাকা পয়সার লোভে গিয়েছে। একমাত্র আল্লাহই জানেন। যাই হোক কারো জানাই আমার কাছে মুখ্য ছিল না।

    কিন্তু তোমার মতে, আমি স্বার্থবাজ, লোভী, চরম অসৎ, ভণ্ড ও প্রতারক একজন। তুমি সেরকম সার্টিফিকেট আমাকে দিয়েছ।’

    শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন তার প্রেমিকার উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেছেন।

    তিনি ভিডিওতে বলেন, ‘এগুলোর প্রতিবাদ কী করা যায়? যেখানে বিশ্বাস নেই।

    যেখানে তার প্রেমিক সম্পর্কে প্রেমিকার এই ধরনের ধারণা এই ধরনের মানসিকতা। সেখানে প্রতিবাদ করতে গেলে আরো বেশি হেনস্থার শিকার হব। আমি আরো বেশি অপমানিত হব। আমার তো আসলে কিছুই নেই। না আছে এখন টাকা, না আছে ক্ষমতা, না আছে সে তারণ্য।

    কিছুই নেই। আর তোমার অফুরন্ত যৌবন, তোমার অনেক রূপ। অনেক টাকা পয়সা তোমার যেমন আছে তোমার মা-বাবারও আছে; তোমার স্বামীর আছে; তোমার আত্মীয়-স্বজনের আছে। তোমার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী অনেক বন্ধু। যারা তোমার সকল সমস্যা দূর করতে চায়। যারা শারীরিক চাহিদাসহ সকল চাহিদা মেটানোর জন্য প্রস্তুত। চাইলে যেদিকে হাত বাড়াবে তুমি অগণিত পুরুষ পাবে। তুমি চাইলে নেশা করতে পারো, চাইলে সিগারেট খেতে পারো, চাইলে ড্রাগস নিতে পারো। যেগুলো আমরা খুবই অপছন্দের ছিল। আমার বারণ বা নিষেদ সত্ত্বেও তুমি সেগুলো করেছ সেখান থেকে বোঝা যায়। আমার ব্যাপারে কতটা ক্যায়েরিং তুমি? অ্যানিওয়ে এ সব কথা আর বলব না। তুমি যেহেতু আমাকে ছেড়ে দিয়েছ। নতুন পুরুষ পেয়েছ, আমি জানি না সে কতটা কোয়ালিফাইড। হ্যাঁ, পৃথিবীর অধিকাংশ পুরুষ আমার চেয়ে কোয়ালিফাইড। এটা মানি।’

    ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন আরো বলেন, ‘তুমি কিসের টানে আমার কাছে থাকবে? ঠিকই আছে। তুমি আমাকে ছেড়ে দিয়েছ। খুব একটা ভুল করোনি। তুমি একটা কথা মনে রেখো, ওপরওয়ালা সাক্ষী, আমি তোমার সাথে কখনোই প্রতারণা করিনি কখনোই না। সময় চাওয়াটা যদি প্রতারণা হয়। তাহলে এর চাইতে বেশি দুঃখের আর কিছু থাকে না। আমি তোমার কখনোই কোনো ক্ষতি করব না। আমি বরং আমার নিজেকে তিলে তিলে শেষ করব। এখন থেকে সেটা শুরু হবে। আমিও দেখব কতটা অধঃপতন আমার হতে পারে। পৃথিবীর আর কেউ না জানলেও তুমি জেনে রেখো, আমি যা কিছু করছি সব তোমার জন্য। এই মুহূর্তে আমার কাছে হাতের কাছে খুব বেশি কিছু নেই। আমার প্রাথমিক সম্বল হচ্ছে আমার ঘুমের ওষুধ। বাংলাদেশের সব চাইতে পাওয়ারফুল ঘুমের ওষুধ। ছয়টা আছে এই মুহূর্তে। ছয় টা দিয়ে শুরু হবে। আমি আরো অর্ডার করছি চলে আসবে। যে দুর্বিষহ যন্ত্রণার তুমি আমাকে দিচ্ছ তোমার কথা এবং কাজ দ্বারা। সেটা আমি বুঝি এবং আল্লাহ জানেন। আমি তোমাকে কোনো ধরনের দোষ দিচ্ছি না। আমি মেনে নিয়েছি আমার মতো অযোগ্য, ভণ্ড, প্রতারক ও যোগ্যতাহীন একজন মানুষ কোন যোগ্যতায় তোমার কাছে থাকবে?’

    ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘তুমি যে লাথি মেরে বের করে দাওনি সেটাই অনেক কিছু। তুমি জেনে রেখো; আমি তোমাকে যতটা ভালোবেসেছি। আমি জানি না আর কোনো মানুষের পক্ষে আর কোনো পুরুষের পক্ষে এতটা গভীরে গিয়ে ভালোবাসা সম্ভব কি না। আমার বহিঃপ্রকাশ আমি ঘটাতে পারি না। সেটা বিভিন্ন বাস্তবতার কারণে। কিন্তু তোমার কাছে তার কোনো মূল্য নেই। তোমার কাছে সেটা নিছক ভণ্ডামি, নিছক প্রতারণা, নিছক ছলনা। আমার আজকে তোমার সাথে সময় দেওয়ার কথা ছিল আমি সেরকম প্রস্তুতি নিয়ে বের হয়েছিলাম। এখন খালি বাসা। আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কখন ফিরবো আমি বলেছি দেরি হবে। বাসায় এখন কেউ নেই। অনেকটা সময় আমি পাচ্ছি। এ সময়ের মধ্যে আমার ধ্বংসের প্রক্রিয়া শুরু।’

  • আগামী মাস থেকে ৩৩ লাখ শিশু পাবে দুপুরের খাবার

    আগামী মাস থেকে ৩৩ লাখ শিশু পাবে দুপুরের খাবার

    দেশের দরিদ্র এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা আগামী জুলাই মাস থেকে সপ্তাহে পাঁচ দিন দুপুরের খাবার পাবে। খাবার হিসেবে থাকছে দুধ, ডিম, পাউরুটি, বিস্কুটসহ নানা মৌসুমি ফল। সরকারের নিজস্ব অর্থে ১৫০ উপজেলায় চালু হচ্ছে একটি প্রকল্প। আর বিশ্বব্যাংকের অর্থে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার ১৫টি উপজেলায় শুরু হচ্ছে আরেকটি প্রকল্প।

    ৩৩ লাখের বেশি শিশু দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে এই স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় আসবে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচির’ জন্য দুই হাজার ১৬৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে সরকার।

    সূত্র জানায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে বাস্তবায়ন হবে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি। কার্যক্রমের শৃঙ্খলা রক্ষায় উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে স্থানীয়দের নিয়ে একটি কমিটি কাজ করবে।

    সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ, শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি বাড়ানো, অপুষ্টির ঘাটতি কমানো এবং সফলভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ হতে সহায়তার লক্ষ্যে প্রকল্পটি নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।

    প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের টার্গেট আগামী জুলাই মাস থেকে এটি শুরু করা। সেটা যদি কোনো কারণে সম্ভব না-ও হয়, তাহলে আগস্ট থেকে শুরু করব। এরই মধ্যে সরকারের রাজস্ব ফান্ড ও বিশ্বব্যাংকের ফান্ডে পরিচালিত দুটি প্রকল্পের জন্য পিডি নিয়োগ হয়েছে।

    দুটি প্রকল্পই একসঙ্গে শুরু হবে। শিশুরা সপ্তাহের পাঁচ দিন দুপুরের খাবার পাবে। ’
    প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সরকারের রাজস্ব তহবিলে পরিচালিত কর্মসূচিটি ৬২ জেলার ১৫০ উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলবে। এসব উপজেলার মধ্যে ৯১ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩৫ উপজেলা অতি উচ্চ এবং উচ্চ দারিদ্র্যপ্রবণ। বাকি ১৪টি অর্থাৎ ৯ শতাংশ উপজেলা নিম্ন দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকা।

    গত বছর প্রকাশিত খানা আয়-ব্যয় জরিপ প্রতিবেদনের ম্যাপিংয়ের ভিত্তিতে দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে। ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিশু এ প্রকল্পের আওতায় আসবে।
    অন্যদিকে বিশ্বব্যাংকের অর্থে পরিচালিত প্রকল্পে কক্সবাজারের ৫৬৯ এবং বান্দরবানের ৪৩৬টি মোট এক হাজার ৯৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই লাখ ১১ হাজার শিক্ষার্থী সপ্তাহে পাঁচ দিন পুষ্টিকর বিস্কুট, কলা, বান, ডিম, দুধ পাবে। কক্সবাজার ও ভাসানচরে অবস্থানরত মায়ানমারের শিশুরাও সুবিধা পাবে।

    সূত্র জানায়, কোন দিন শিশুরা কী খাবার পাবে, তা এরই মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি রবিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবারে একটি ডিম এবং ১২০ গ্রামের একটি বান থাকবে। এ ছাড়া প্রতি সোমবার ২০০ এমএল ইউএইচটি দুধ ও একটি ১২০ গ্রামের বান পাবে, প্রতি বুধবার ৭৫ গ্রাম বিস্কুট ও ১০০ গ্রাম সাইজের একটি কলা অথবা মৌসুমি ফল পাবে শিশুরা। প্রস্তাবিত সাপ্তাহিক খাদ্য তালিকায় এনার্জি ২৫.৯ শতাংশ, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ৩২.২ শতাংশ, প্রোটিন ১৬.৪ শতাংশ এবং ফ্যাট ২১.৭ শতাংশ রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

    অধিদপ্তর বলছে, স্কুল ফিডিং কর্মসূচি চালু হলে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করা, ঝরে পড়া রোধ, শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতির হার বাড়ানো, পড়ালেখায় মনোযোগ ধরে রাখাসহ সার্বিকভাবে শিক্ষার মানের উন্নয়ন হবে। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পটি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

    সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামে ডিম, বান ও কলা লাগবে। এগুলো কিন্তু আমাদের প্র্যাকটিক্যালি নিড। আর্থিক কারণে অনেকে তার নিড পূরণ করতে পারে না। তাই স্কুল ফিডিং প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, ‘শিশু দীর্ঘ সময় স্কুলে থাকবে, তারা দুপুরে কিছু খাবে, তার ক্ষুধা দূর হবে। আমাদের অন্য অনেক মাত্রা রয়ে গেছে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা হলো আমাদের শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগে। এ প্রজেক্টে হেলথের কম্পোনেন্ট রয়েছে। শিশুরা যে অপুষ্টিতে ভোগে, সেটার কিছুটা রেমিডি হলো আমাদের স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম। ’

    স্কুল মিল কর্মসূচির গুরুত্ব ও ফলাফল বিবেচনায় বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ২০০১ সালে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি শুরু হয়। ২০১০ সালের জুন পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলে। ওই বছর থেকে দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং নামে আলাদা একটি কর্মসূচি চালু হয়ে ২০২২ সালের জুনে শেষ হয়। তখন শিশুদের শুধু উচ্চমানসম্পন্ন বিস্কুট দেওয়া হতো।

    সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

  • ৬০ ঘণ্টা ধরে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন ইরান, রহস্য কী

    ৬০ ঘণ্টা ধরে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন ইরান, রহস্য কী

    নেটব্লকস মনিটর অনুসারে, ইরান দীর্ঘ গত ৬০ ঘণ্টা ধরে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট অ্যাক্সেস থেকে বিচ্ছিন্ন।

    ইন্টারনেট বন্ধের ফলে জনসাধারণের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ, অবাধ যোগাযোগ এবং নিরাপত্তা সতর্কতা অনুসরণ করার ক্ষমতা মারাত্মকভাবে সীমিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে মনিটরটি।

    ইরান সরকারের আরোপিত অবরোধের ফলে এই বিভ্রাট দেখা দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরকারের মতে, ইসরায়েলি সাইবার হামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

    নেটব্লকসের গবেষণা পরিচালক ইসিক মাতের বিবিসিকে বলেন, ‘২০১৯ সালের নভেম্বরের পর ইরানে আমরা এই প্রথম এমন প্রায় পূর্ণ সংযোগ বিচ্ছিন্নতা দেখতে পাচ্ছি। এমনকি ২০২২ সালের মাহসা আমিনির প্রতিবাদের সময়েও এতটা সীমাবদ্ধতা ছিল না।’

    বিবিসি ইরানে মুক্তভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে ইন্টারনেট বন্ধ থাকা এবং সাধারণ নাগরিকদের অনলাইনে তথ্য শেয়ার করতে না পারা, পরিস্থিতি বুঝে ওঠা ও যাচাই করার ক্ষমতা সীমিত।

    তবে ইসিক মাতের আরও বলেছেন, ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ইরান সাধারণত অভ্যন্তরীণ কোনো ইস্যুতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংঘাতের সময় তারা সাধারণত আন্তর্জাতিক যোগাযোগ চালু রাখার চেষ্টা করে। এবারকার পরিস্থিতি সেই ধারার বাইরে।

    এদিকে নেটব্লকস সংস্থাটি এক্স মাধ্যমে এক পোস্টে ইরানে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

    প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন থেকে ইরানের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। জবাবে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা অব্যাহত রেখেছে তেহরান। পাল্টাপাল্টি এ হামলায় উভয় দেশের বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।

    সূত্র: আলজাজিরা

  • রাতে ভিডিও দিও শর্ট ড্রেসে, ছাত্রী-শিক্ষকের ফোনালাপ ফাঁস

    রাতে ভিডিও দিও শর্ট ড্রেসে, ছাত্রী-শিক্ষকের ফোনালাপ ফাঁস

    দিনের পর দিন ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব! এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভারতের অশোকনগরের শিক্ষকের ফোনালাপের অডিও রেকর্ডিং ফাঁস হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে সরব সব মহল। যদিও এ বিষয়ে এখনো অভিযুক্ত শিক্ষকের কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

    ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম সৌমেন মিত্র। অশোকনগরের একটি বহু পুরনো স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক তিনি। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দিতেন সৌমেন। তার চরিত্র নিয়ে গুঞ্জন বহুদিনের। এসবের মাঝেই গত বুধবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ওই শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রীর একটি কল রেকর্ডিং।

    (কল রেকডিং যাচাই করা হয়নি)। সেখানে লাগাতার ছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিতে শোনা যায় সৌমেনকে। কখনো কেমন পোশাকে ছবি পাঠাতে হবে তা বলেছেন। কল রেকর্ডিংয়ে কখনো বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘ভিডিও পছন্দ।

    যখনই বলেছি তখনই তো তোমার বোঝা উচিত যে ভিডিও পাঠাতে হবে। রাতে ভালো ভালো ভিডিও দিও, শর্ট ড্রেসে। পুরো সামুদ্রিক ভিডিও।’

    গণমাধ্যমটি আরো জানায়, এসবেই থামেননি ওই শিক্ষক। ভিডিও কলে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি স্ত্রীর সম্পর্কে তীব্র আপত্তিকর মন্তব্যও করেন তিনি।

    সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেয়ে গিয়েছে ওই শিক্ষকের অডিও। কমেন্ট বক্সে নিন্দার ঝড় বইছে। শাস্তির দাবি জানানোর পাশাপাশি অনেকেই দাবি করেছেন, ওই শিক্ষক আগেও এ ধরনের আচরণ করেছেন। প্রতিবাদ করলে নানা রকম হুমকিও দিয়েছেন।

    সূত্র: কালের কণ্ঠ

  • নারীর সঙ্গে জেলা প্রশাসকের ব্যক্তিগত ভিডিও ভাইরাল

    নারীর সঙ্গে জেলা প্রশাসকের ব্যক্তিগত ভিডিও ভাইরাল

    শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। জেলা প্রশাসকের এমন ভিডিওকে ‘আপত্তিকর’ দাবি করে তার শাস্তিও দাবি করেছেন অনেকে।

    আজ শুক্রবার সকাল থেকে ভিডিওটি টেলিগ্রাম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ দাবি করছেন, ওই নারী জেলা প্রশাসকের স্ত্রী হতে পারেন। তবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, ভাইরাল ওই নারী জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিনের স্ত্রী নন।

    প্রবাসী সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর তার ফেসবুকে প্রথমে এ বিষয়ে পোস্ট করেন। তিনি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ওই নারীর একটি ছবি দিয়ে লেখেন, ‘শরিয়তপুরের ডিসি মো. আশরাফ উদ্দিন।

    একজন জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারি ব্যক্তি। উনি এই ছবিগুলো নিজেই খুশি মনে তুলেছেন। ভিডিও করেছেন। ছবির ওনাকে (ওই নারীকে) বিয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।

    এখন বিয়ে না করে হুমকি দিচ্ছেন। ওনার কোলে তোলার গল্পের খানিকটা কমেন্টের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেয়া আছে।’
    এর পর থেকেই বিষয়টি সামনে আসে। মুহূর্তেই ভাইরাল হয় ভিডিওটি। তবে ভিডিওটি কোথায় ধারণ করা হয়েছে এবং ভিডিওতে থাকা নারীর পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

    শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মরত একজন নারী নাম প্রকাশ না করা শর্তে কালার কণ্ঠকে বলেন, ‘ভাইরাল ভিডিওটি আমরা দেখেছি। স্যারের মিসেসকে চিনি, ভিডিওতে থাকা ওই নারী স্যারের মিসেস নন।’

    এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হবে।

    জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। এর আগে তিনি প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ও নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

    গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনি ভাড়া করা একটি গাড়িতে শরীয়তপুর ত্যাগ করেন বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে। শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আসলাম হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কাজ শেষে ডিসি স্যার বাসায় ফিরেছেন। তবে এখন তিনি শরীয়তপুরে নেই। আর কোন তথ্য আমার জানা নেই।’

    এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা শুক্রবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভাইরাল ভিডিও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি। একজন জেলা প্রশাসকের এমন ছবি-ভিডিও খুবই দুঃখজনক। ঊর্ধ্বতন ও কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের মাধ্যমে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’