Author: admin

  • ভাইরাল না হলে টনক নড়ে না প্রশাসনের! মেলে না আইনি সহায়তাও

    ভাইরাল না হলে টনক নড়ে না প্রশাসনের! মেলে না আইনি সহায়তাও

    ফেসবুক আর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল না হলে প্রশাসনের টনক নড়ে না! আইনি সহায়তাও পায় না ভুক্তভোগী। এমন কথার প্রমাণ মিলেছে আরও একবার।

    সম্প্রতি রাজধানীর মগবাজারে ছিনতাইয়ের শিকার এক যুবকের জবানিতে উঠে এসেছে ভয়াবহ এমন অভিজ্ঞতার কথা। প্রথম দিকে থানায় গিয়ে পাত্তাই পাননি তিনি। কিন্তু, ঘটনা সামাজিকমাধ্যমে ভাইরালের পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ।

    ছিনতাইকৃত ব্যাগ ফিরিয়ে দেয়ার অনুরোধ করলে বাইক থেকে নেমে পুনরায় ভুক্তভোগী যুবককে আক্রমণ করে ছিনতাইকারীরা। ছবি: সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেয়া।
    ঘটনা চলতি মাসের ১৮ তারিখের। সেদিন ভোর ৫টা ২২ মিনিটে রাজধানীর মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলি ধরে ঘাড়ে ব্যাগ নিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন এক যুবক। হঠাৎ অপরপ্রান্ত থেকে একটি মোটরসাইকেলে আসে তিনজন। বাইক থামিয়ে চকচকে চাপাতি হাতে নেমে আসে দু’জন। ঘিরে ধরে ওই যুবককে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাতারি কোপাতে শুরু করে; ছিনিয়ে নেয় যুবকের ব্যাগ, মোবাইল ও টাকা।

    ছিনতাইয়ের এই ঘটনার অনুসন্ধানে নামে যমুনা টেলিভিশন। খুঁজে বের করা হয় ভুক্তভোগী যুবক আব্দুল্লাহকে।

    রাজধানীর একটি ৪ তারকা হোটেলে চাকরি করেন সেদিনের ওই ঘটনার ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ। জানান, সেদিনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।

    আব্দুল্লাহ বলেন, দুজন চাপাতি দিয়ে আঘাত করা শুরু করলে ভয়ে-আতঙ্কে সব দিয়ে দেই। চোখের সামনে আমার সব টাকা নিয়ে যাচ্ছে ভেবে আমি বারবার ব্যাগটা ফিরিয়ে দিতে বলি। এসময় তারা আমাকে চাপাতি দিয়ে অনেকগুলো কোপ দেয়। হাত, মাথা, বুক ও বাহুতে কুপিয়ে জখম করে তারা।

    আব্দুল্লাহ জানান, ছিনতাইয়ের পর গিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী হাতিরঝিল থানায়। আইনি সহায়তা চাইলেও মেলেনি কোনো সহযোগিতা। উল্টো মেডিকেল রিপোর্ট আনার কথা বলে হয়রানি করা হয়।

    ভুক্তভোগী বলেন, থানায় গিয়ে আমি আমার জখমগুলো দেখাই এবং মামলার আবেদন করি। কিন্তু তারা আমাকে হাসপাতালে গিয়ে রিপোর্ট আনতে বলে। পরে আমি মালিবাগের একটি হাসপাতালে গেলে তারা আমাকে রিপোর্ট দেয়নি। রেফার করে ঢাকা মেডিকেলে।

    চাঞ্চল্যকর ছিনতাইয়ের বিষয়ে যমুনা টিভির এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলছেন হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাজু।
    এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে থানায় আইনি সহায়তা না পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে জানায় পুলিশ। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় সম্পৃক্ত দু’জনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

    হাতিরঝিল থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু বলেন, কেউ অভিযোগ নিয়ে আসলে আমরা যেন মামলা নেই সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী যে অভিযোগ করেছেন সেটি তার অগোচরে হয়েছে বলে দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। বলেন, খোঁজ নিয়ে এর কারণ অনুসন্ধান করবেন তিনি।

    এদিকে, ১৮ তারিখের ছিনতাইয়ের এ ঘটনাটি অনলাইনে ভাইরাল হয় ২৫ মে। এরপরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। ভুক্তভোগীকে খুঁজে বের করে মামলাও নেয়া হয়। তবে লাগেনি কোন মেডিকেল রিপোর্ট।

    আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন আচরণকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, কেউ বিপদে পড়লে তখন তারা প্রশাসনের কাছেই প্রথমে যায়। কিন্তু সেখানে নানা হয়রানির শিকার হতে হয় ভুক্তভোগীকে, যা খুবই দুঃখজনক।

    পুলিশের এমন মামলা না নেয়া ও ভুক্তভোগীদের পাশে না দাঁড়ানোর প্রবণতায় অপরাধ দিন দিন বাড়ছে বলেও ধারণা নগরবাসীর।

  • কারও দোসর ছিলাম না, ফ্যাসিবাদের শিকার হয়েছি : জিএম কাদের

    কারও দোসর ছিলাম না, ফ্যাসিবাদের শিকার হয়েছি : জিএম কাদের

    রংপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কথা বলেন জিএম কাদের। ছবি : কালবেলা

    জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, আমরা কারও দোসর ছিলাম না, আমরা নিজস্ব রাজনীতি করেছি। কিছু কিছু সময়ে আমাদের অনেক ক্ষেত্রে অনেক কিছু বাধ্য করা হয়েছে। যেটা ফ্যাসিবাদ বলা হয়, সেই ফ্যাসিবাদের শিকার সবাই যেমন হয়েছে আমরাও হয়েছি।

    বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে রংপুর নগরীর সেনপাড়ায় তার বাসভবন ‘দ্য স্কাই ভিউতে’ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান।

    এসময় জিএম কাদের বলেন, যারা আমাদের দোসর বলছেন তারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে কতটুকু ধারণা রাখেন তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমাদের দোসর খুব শত্রুরাও খুব সহজে বলতে পারবেন না, কথার কথা বলতে পারেন। কোনোভাবেই আমরা দোসর নই। যেখানে আওয়ামী লীগ খারাপ কাজ করেছে, তার সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ করেছি এবং অন্য যেকোনো দলের চেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলাম।

    তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সঙ্গে তরুণ নেতৃত্ব যাদের তিনি তার অভিভাবক এবং নিয়োগকর্তা হিসেবে পরিচয় করিয়েছিলেন তারা মিলে দেশকে সুস্পষ্টভাবে বিভক্ত করে ফেলেছেন। এই বিভক্তি দিনকে দিন আরও শক্তিশালী হচ্ছে এবং একজন আরেকজনের ওপরে সংঘাতপূর্ণ একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সামনের দিকে বড় ধরনের সংঘাতের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।

    প্রধান উপদেষ্টা জাপাকে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে তিনি আমাদেরকে বাদ দিয়ে গেছেন, মানে হিসেবে আমরা নাই। তার হিসেবে রাজনীতি করার অধিকার আমাদের নাই। আইনগতভাবে এখনো আমরা নিবন্ধনভুক্ত একটি দল। কোনো ধরনের ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও আমাদের রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চাচ্ছেন না। তারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে আমাদের রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমাদের লোকজনদের ধরে নিয়ে গিয়ে আটক করে রাখা হচ্ছে। পৃথকীকরণ নীতি গ্রহণ করে বর্তমান সরকার রাজনীতিতে কোণঠাসা করার জন্য দেশের একটি বৃহৎ অংশকে সমস্ত রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।

    এনসিপিকে সরকারি দল হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা নির্বাচনে নিজস্ব একটি দল তৈরি করেছেন এবং সেই দল এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়। এখন পর্যন্ত কোনো রেজিস্ট্রেশন পায়নি। আমি মনে করি, তারা আইনসিদ্ধভাবে রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি পায় না। কিন্তু তাদেরকে সমস্ত ক্ষেত্রে প্রায়োরিটি দেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব দল করে তৈরি করে সেই দলের মাধ্যমে এবং একই সঙ্গে নির্বাচন হলে সেই নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কখনোই সম্ভব না। একটা উপযুক্ত নির্বাচন দেওয়ার দরকার কিন্তু এই সরকার তা পারবেন না। তাদের উপযুক্ত নির্বাচন দেওয়ার ক্ষমতা এবং ইচ্ছা কোনোটাই নেই।

    জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সীমান্তে পুশ ইনের ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে, এই সরকার দুর্বল এবং ব্যর্থ। এটা সরকারের কাজ, এক্ষেত্রে আমরা তো কিছু করতে পারি না।

    এসময় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ইয়াসির, জেলা কমিটির আহ্বায়ক আজমল হোসেন লেবু, সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান নাজিমসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

    এর আগে চার দিনের সফরে বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুরে যান তিনি। দলীয় ও ব্যক্তিগত কাজ শেষে আগামী রোববার ঢাকায় ফিরবেন।

  • মুজিব করেছি, এবার জিয়ার চরিত্রেও অভিনয় করতে প্রস্তুত আরিফিন শুভ

    মুজিব করেছি, এবার জিয়ার চরিত্রেও অভিনয় করতে প্রস্তুত আরিফিন শুভ

    এবার ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ। শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’-এ অভিনয় করে ব্যাপক আলোচনায় ওঠে এসেছিলেন তিনি। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে পর্দার বাইরে শুভ। তাকে আর অভিনয়ে দেখা যায়নি। আড়ালেই চলে যান তিনি। সিনেমায় মুজিব চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বেশ বিপাকে পড়তে হয়েছে অভিনেতাকে।

    তবে শুভ জানালেন, সুযোগ হলে তিনি জিয়ার চরিত্রেও অভিনয় করবেন। কারণ তিনি একজন অভিনয়শিল্পী। সম্প্রতি আড়াল ভেঙে সামনে এসেছেন আরিফিন শুভ। কোরবানির ঈদে ‘নীলচক্র’ দিয়ে পর্দায় ফিরছেন এ নায়ক। নিজের আসন্ন সিনেমা নিয়ে শুভ কথা বললেন কালের কণ্ঠের সঙ্গে। সেখানেই উঠে আসে নানান প্রসঙ্গ।

    এদিকে সাক্ষাৎকারে শুভ কথা বলেন মুজিব সিনেমা নিয়েও। মুজিবের চরিত্র তো করেছেন, আগামীতে জিয়াউর রহমানের বায়োপিকে অভিনয় করতে বলা হলে কি করবেন তিনি, এমন প্রশ্নের জবাবে শুভ বলেন, ‘আমি একজন অভিনেতা। আমার কাজ চরিত্রে ঢুকে সেই চরিত্রকে সত্য করে তোলা। আমাকে যেকোনো চরিত্রে পরিচালক যোগ্য মনে করলে, আমি বরাবরই প্রস্তুত।’

    এদিকে নিজেকে অরাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে দাবি করে শুভ বলেন, “যখনই ‘মুজিব’ করলাম, তখন থেকেই নানা গুঞ্জন আমি নাকি এমপি হচ্ছি, এক টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছি সুবিধা পাওয়ার জন্য।

    অথচ বাস্তবে এমন কিছু ঘটেছে কি? ‘মুজিব’ করে আমি যদি কোনো বিশেষ সুবিধা নিয়ে থাকি, আপনি অনুসন্ধান করে প্রমাণসহ সবাইকে জানান। আর এই ছবি করার অনেক আগেই স্পষ্ট করে বলেছি, আমি কখনো রাজনীতিতে জড়াব না। এটি আমার সচেতন এবং ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কেউ চাইলে সেই বক্তব্যের রেকর্ডও খুঁজে পাবেন। রাজনীতি আমার পথ নয়, আমি শুধু অভিনয়টা বুঝি, আর সেটা নিয়েই থাকতে চাই।’

    এবার ঈদে মুক্তি পাবে শুভর ‘নীলচক্র’। এতে আরো অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী, ফজলুর রহমান বাবু, শিরীন আলম, খালেদা আক্তার কল্পনা, শাহেদ আলী, প্রিয়ন্তী ঊর্বী, মাসুম রেজওয়ান প্রমুখ। ‘নীলচক্র’ ছাড়াও দেশে ও দেশের বাইরে কিছু কাজের কথা চলছে শুভর। দ্রুতই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে বলেও জানান তিনি।

  • বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল ভারত

    বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল ভারত

    জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে দ্রততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছে ভারত। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেছেন।

    এদিন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘নয়াদিল্লি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে’ বলে করা অভিযোগ অস্বীকার করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, ‘‘বাংলাদেশের এসব অভিযোগ প্রকৃত সমস্যা থেকে দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা মাত্র।’’

    তার কথায়, ‘‘বাংলাদেশের সরকার যেহেতু উদ্বিগ্ন, সেক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও শাসনব্যবস্থার পূর্ণ দায়ভার তাদের সরকারের ওপরই বর্তায়। এমন পরিস্থিতিতে যদি কেউ বলেন, বাইরের কোনও শক্তি বা অন্য কেউ এই অস্থিতিশীলতার জন্য দায়ী, তখন এটা মনে হয় যে, আসল সমস্যাগুলো থেকে মনোযোগ সরিয়ে অন্যদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা চলছে। এই ধরনের বক্তব্য সমস্যার সমাধান করে না, বরং দায় এড়ানোর কৌশল বলেই মনে হয়।’’

    রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা প্রয়োজন; যাতে জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও ম্যান্ডেট নিশ্চিত হয়।’’

  • বাংলাদেশে বলিনি, জাপানে বললে ‘বড় সমস্যা হবে’, পদত্যাগ ইস্যুতে ড. ইউনূস

    বাংলাদেশে বলিনি, জাপানে বললে ‘বড় সমস্যা হবে’, পদত্যাগ ইস্যুতে ড. ইউনূস

    অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন—সম্প্রতি এমন গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও নবগঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামও এ কথা জানিয়েছিলেন। ড. ইউনূসের পদত্যাগের বিষয়ে তার কাছে জানতে চেয়েছিল জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া। জবাবে ড. ইউনূস বলেছেন, যেহেতু তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশে কোনো কথা বলেননি, তাই বিদেশে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তা ‘বড় সমস্যা হতে পারে’।

    নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদন বলছে, গত সপ্তাহে খবর ছড়িয়ে পড়েছিল যে, ড. ইউনূস এক ছাত্রনেতাকে বলেছিলেন—যদি রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার ও নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে একমত না হয়, তবে তিনি পদত্যাগ করতে পারেন। জবাবে ড. ইউনূস বলেন, যেহেতু তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশে কোনো কথা বলেননি, তাই বিদেশে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তা ‘বড় সমস্যা হতে পারে’।

    জাপান সফররত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশটির সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আরও জানান, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ভেতরেও ১১-১২ বিলিয়ন ডলারের অর্থ ইতিমধ্যে চিহ্নিত এবং সংযুক্ত (এবং) জব্দ করা হয়েছে।

    ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার একবার এ বিলিয়ন ডলারের অর্থ হাতে পেলে দুটি সার্বভৌম সম্পদ তহবিল প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা করেছে। এ তহবিলগুলো শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার জন্য ব্যয় করা হবে এবং দরিদ্রদের জীবন ‘রূপান্তর’ ও তরুণদের উদ্যোক্তা হতে সাহায্য করতে ব্যবহৃত হবে।

  • সরকার ৯ মাসে যা পারেনি, ৯০ বছরেও তা পারবে না : মির্জা আব্বাস

    সরকার ৯ মাসে যা পারেনি, ৯০ বছরেও তা পারবে না : মির্জা আব্বাস

    বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, সরকারের মাথা থেকে নিচ পর্যন্ত পচে গেছে। সরকার আরও বেশি দিন থাকলে আওয়ামী লীগ যা করেছে, তার চেয়ে খারাপ হয়ে যাবে।

    বুধবার (২৮ মে) বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

    মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

    বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ফরিদপুর বিভাগের সমন্বয়ে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

    সমাবেশে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না সভাপতিত্ব করেন এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির সঞ্চালনা করেন।

    এ সময় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

    মির্জা আব্বাস বলেন, তারুণ্যের এই মহাসমাবেশ বিরাট বার্তা দিচ্ছে। যা আমাদের আন্দোলিত করেছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণমানুষের আকাক্ষ্মিত সরকার। সরকার আস্থার প্রতীক ছিল। তাদের কাছ থেকে আস্থার কিছু পাইনি। শুধুই অবজ্ঞা পেয়েছি। সরকার ঔপনিবেশিক সরকার। তারা ৯ মাসে যা পারেনি, ৯ বছরেও পারবে না এবং ৯০ বছরেও তা পারবে না। অতএব জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে কী করবেন করেন।

    করিডোর ও বন্দর নিয়ে তিনি বলেন, করিডোর নিয়ে কথা হচ্ছে। লাভ-লোকসান দেখতে চাই না। যেমন ছিলাম তেমনই থাকতে চাই। আবার নিউম্যুরিং টার্মিনাল দিয়ে দিতে চাচ্ছেন। দেশের মানুষকে বোকা ভাববেন না। স্টারলিংক এনেছেন কার জন্য? আরাকান আর্মির জন্য। আমরা কিন্তু স্টারলিংক ছাড়াই চলেছি। করিডোর কার জন্য? আরাকান আর্মির মালমসলা পাঠানোর জন্য। আমরা জীবন থাকতে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অটুট রাখব।

    চাঁদাবাজির বিষয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেকেই চাঁদাবাজি করে বিএনপির নাম ব্যবহার করে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলব, আপনারা চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করেন না কেন?

  • ড. ইউনূস বললেন ডিসেম্বর-জুনে নির্বাচন, অতি উত্তরে তারেক রহমান যা বললেন

    ড. ইউনূস বললেন ডিসেম্বর-জুনে নির্বাচন, অতি উত্তরে তারেক রহমান যা বললেন

    জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন। নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিতে না পারায় অন্তর্বর্তী সরকারকে সংকটের মুখে দাঁড় করিয়েছে। নানা ইস্যুতে টানাপোড়েন, নির্বাচন নিয়ে অস্পষ্টতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দূরত্ব বাড়ছে অন্তর্বর্তী সরকারের। এ অবস্থায় দ্রুত নির্বাচনের তাগাদা দিয়েছে বিএনপি। তবে বিএনপির এ তাগাদা আমলে না নিয়ে নিজেদের পূর্বের কথাই অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

    বুধবার (২৮ মে) নির্বাচন ইস্যুতে আবারও পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

    আরও পড়ুনঃ আসলেই কি মেয়র নির্বাচন করবেন সাদিক কায়েম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ?
    প্রধান উপদেষ্টা এ মুহূর্তে জাপানে অবস্থান করছেন। বুধবার জাপানের টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের সভাপতি তারো আসোর সঙ্গে এক বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

    এদিকে ঢাকায় বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ ভার্চুয়ালি বক্তব্যে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, ‘আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে, ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

    আরও পড়ুনঃ সচিবালয় অভিমুখে ইশরাক সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা
    তিনি দলীয় নেতাকর্মী ও দেশবাসীকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হয় তার প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন। কারা আপনাদের প্রতিনিধি হবে সেটি আপনারাই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।’

    তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মনে হয় এরই ভেতরে টালবাহানা শুরু হয়েছে বা চলছে। কথিত অল্প সংস্কার আর বেশি সংস্কারের অভিনব শর্তের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যত। জনগণ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে সংস্কার নিয়ে সময়ক্ষেপণের আড়ালে অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে ও বাইরে কারও কারও মনে হয় ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।

  • কারও বিচার করতে হলে তা বিএনপি করবে: আমীর খসরু

    কারও বিচার করতে হলে তা বিএনপি করবে: আমীর খসরু

    অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ দেয়া। কিন্তু ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্যই নির্বাচন বিলম্ব করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমদু চৌধুরী।

    মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নোয়াখালীর মাইজদীতে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

    তিনি বলেন, যত দিন যাচ্ছে ততই নির্বাচন দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে। এতে বর্তমান সরকার নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বিষয়টি ভেবে দেখতে হবে। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনকে বিলম্বিত করার সুযোগ নেই।

    তিনি আরও বলেন, সকলের সমর্থন নিয়ে এই সরকার গঠিত হয়েছে। নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজন। এজন্যই বিএনপি সরকারকে সমর্থন দিয়েছে।

  • জাপান কে নির্বাচনের সঠিম সময় জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

    জাপান কে নির্বাচনের সঠিম সময় জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

    টোকিও’র ইম্পেরিয়াল হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তারো আসো। ছবি : প্রধান উপদেষ্টার ফেইসবুক পেইজ

    অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে যেকোনো সময় অনুষ্ঠিত হবে।

    বুধবার (২৮ মে) অধ্যাপক ড. ইউনূসের সঙ্গে টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো আসো সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

    আরও পড়ুনঃ বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত নিল উপদেষ্টা পরিষদ
    প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ব্রিফিংয়ে বলেন, অধ্যাপক ইউনূস ছয় মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন এবং সেই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

    প্রেস সচিব বলেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথেই অধ্যাপক ড. ইউনূস জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করবেন।

    জাপানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু তারো আসো বাংলাদেশকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অধ্যাপক ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান এবং একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য একটি সাধারণ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

  • পটাশিয়াম ও মিষ্টি দিয়ে বানানো হতো ‘নারী বশীকরণ’ ফাঁদ, ‘তান্ত্রিক’ গ্রেপ্তার

    পটাশিয়াম ও মিষ্টি দিয়ে বানানো হতো ‘নারী বশীকরণ’ ফাঁদ, ‘তান্ত্রিক’ গ্রেপ্তার

    ফেসবুকে তান্ত্রিক সাধনার বিজ্ঞাপণ দিয়ে প্রতারণা ও জিম্মি করার মাধ্যমে নারীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎকারী এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। বুধবার (২৮ মে) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

    বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফেসবুক পেজের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে তান্ত্রিক আসাদ আহমেদ চৌধুরী নামে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অভিনব ফাঁদ পেতে নারীদের বশীকরণ ও ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আত্মসাৎ করতেন এই প্রতারক। তার প্রকৃত নাম মো. আব্দুস সবুর (২৫)। তিনি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম গ্রামের মো. তপন মিয়ায় ছেলে।

    মো. আব্দুস সবুরের প্রতারণার পদ্ধতি জানিয়ে ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ৭টি পেজ খুলে নিজেকে ভারতীয় কামরূপ কামাখ্যার তান্ত্রিক হিসেবে পরিচয় দিতেন সবুর। এসব পেজে তিনি বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করতেন—যেমন দাম্পত্য কলহ, প্রেমের জটিলতা, কঠিন রোগ থেকে মুক্তি, বিয়ে না হওয়া ইত্যাদি। ভুক্তভোগীরা এসব পেজে দেয়া নম্বরে যোগাযোগ করলে তিনি তাদেরকে হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে সংযুক্ত করতেন।

    পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ভুক্তভোগীদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ শুরু হলে তিনি প্রথমেই আশ্বস্ত করতেন, কোনো টাকা লাগবে না—শুধু আধ্যাত্মিক নিয়ম মেনে চললেই হবে। এরপর ধাপে ধাপে শুরু হতো প্রতারণার অভিনব কৌশল। প্রথমে ‘কাফনের কাপড়’, ‘চুল’, বা কোনো ‘বিশেষ পণ্য’ কেনার জন্য টাকা দাবি করতেন। বলতেন, এসব আচার করতে হয় এবং এগুলো না হলে জিনের প্রভাব যাবে না। সবচেয়ে ভয়াবহ প্রতারণার ধাপ ছিল ‘পটাশিয়াম ও মিষ্টি’ দিয়ে বানানো এক অভিনব ফাঁদ। ভুক্তভোগীকে বলা হতো গভীর রাতে গোসল করে ধ্যান করতে এবং তার দেয়া নিয়মে হাতে পটাশিয়াম নিয়ে সেই হাতেই মিষ্টি রাখতে।

    বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈজ্ঞানিকভাবে পটাশিয়াম ও মিষ্টির সংমিশ্রণে রসায়নিক বিক্রিয়ায় হালকা বিস্ফোরণ বা আগুন সৃষ্টি হতো—ফলে হাতে ফোসকা পড়ত।
    এই ভয় ও আতঙ্ককে ব্যবহার করে সবুর বলতেন, ‘তুমি জিনের রোষে পড়েছো—এখন আরেকটা উচ্চতর সাধনা করতে হবে। এজন্য তোমার নগ্ন শরীরে বিশেষ তেল (পনি) মেখে নির্দেশনা অনুযায়ী ছবি বা ভিডিও পাঠাতে হবে।’ ভয় পেয়ে কেউ নগ্ন ছবি বা ভিডিও পাঠালে শুরু হতো ব্ল্যাকমেইল। ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতেন। ভিকটিমরা মানসম্মান ও সামাজিক বিবেচনায় অনেকেই মুখ খুলতে সাহস করতেন না, বরং একপর্যায়ে আরও অর্থ দিতে বাধ্য হতেন।

    এতে আরও বলা হয়েছে, এই ধরণের প্রতারণার শিকারদের একজন সেলিনা আক্তার (ছদ্ম নাম)। গত বছরের ২০ জানুয়ারি ফেসবুকে “তান্ত্রিক আসাদ চৌধুরী” নামক একটি পেজের মাধ্যমে সবুরের সঙ্গে পরিচিত হন। সবুর নিজেকে তান্ত্রিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে সেলিনার সঙ্গে তার স্বামীর সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে দেয়ার প্রলোভন দেখান। একপর্যায়ে সবুর মোবাইল ফোনে সেলিনার অশ্লীল ভিডিও ধারণ করেন এবং পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে ১৪ লাখ ১২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী গত ১ ফেব্রুয়ারি কুমারখালী থানায় মামলা করেন। মামলাটির তদন্তভার সিআইডি নেয়ার পর মঙ্গলবার গভীর রোতে কুমিল্লার বুড়িচং থানাধীন মোকাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

    এ ধরনের ডিজিটাল প্রতারণা অথবা সাইবার ক্রাইমের শিকার হলে সাইবার পুলিশ সেন্টার, সিআইডির ০১৩২০০১০১৪৬, ০১৩২০০১০১৪৭, ০১৩২০০১০১৪৮ হটলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।