Author: admin

  • তিন ছাত্রকে আটক করায় এসআই ক্লোজড, ওসির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

    তিন ছাত্রকে আটক করায় এসআই ক্লোজড, ওসির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

    রাজধানীর উত্তরায় চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন ছাত্রকে আটকের ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদকে ক্লোজড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে একই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে।

    ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) আহম্মদ আলী আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

    ডিসি রওনক জাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছাত্রদের সঙ্গে আমাদের (পুলিশের) ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরবর্তীতে আমরা (ছাত্র-পুলিশ) বসে একটি সুন্দর সমাধান করেছি। ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে।’

    তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের আটকের ঘটনায় এসআই আবু সাঈদকে ক্লোজড করা হয়েছে। তারা উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান ও এসআই আবু সাঈদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমরা সেগুলো তদন্ত করে দেখছি।’

    অপরদিকে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) আহম্মদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছাত্রদের অভিযোগের ভিত্তিতে এবং তিন ছাত্রকে থানায় ধরে নিয়ে আসার কারণে এসআই আবু সাঈদকে ক্লোজড করা হয়েছে। অপরদিকে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি’র বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। সেই সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তের পর ডিএমপি কমিশনার ব্যবস্থা নেবেন।’

    এর আগে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের গাউসুল আজম অ্যাভিনিউ সড়কে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে একটি মিটিংয়ের আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। মিটিং চলাকালে উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদের নেতৃত্বে একটি টিম সেখানে থাকা আকাশ, রবিন ও বাপ্পি নামের তিন ছাত্রকে আটক করে। পরে তাঁদের উত্তরা পূর্ব থানায় নিয়ে যায়।

    আটক হওয়া ওই ছাত্ররা হলেন— আইইউবিএর ছাত্র আসিফুল হক রবিন, উত্তরা টাউন ডিগ্রি কলেজের আকাশ ও গাজীপুরের বিএএসটির ছাত্র বাপ্পি।

    এদিকে ছাত্রদের আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তরার অন্য ছাত্ররা তাদের ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। একপর্যায়ের তারা মহাসড়ক অবরোধ এবং উত্তরা পশ্চিম থানায় হামলা চালিয়ে পুলিশকে মারধর করে। এতে উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই মেহেদী ও এএসআই মহাদেব আহত হন।

    পরবর্তীতে খবর পেয়ে উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানায় এসে আলোচনায় বসেন। পরে রাত ৯টার দিকে আটক হওয়া ওই তিন ছাত্রকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ছাত্রদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় থেকে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

    যে কারণে আটক হন তিন ছাত্র
    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যোদ্ধা পরিচয়ে কাজী জুবায়ের, সৈয়দ সামিউল ইসলাম, মো. আজাদ ও মাহতাব খান বাঁধন বাদী উত্তরা পূর্ব থানা-পুলিশ বরাবর কাছে একটি অভিযোগ দেন।

    অভিযোগে তাঁরা উল্লেখ করেন, আকাশ, লাবিব মুহাম্মাদ, রাজু আহমেদ আসিফ, বাপ্পি খান, ওয়েস রহমান, নাহিদ শিকদার, আসিফুল রবিন, সাকিব অত্যন্ত খারাপ, দুষ্ট, দাঙ্গাবাজ, চাঁদাবাজ, পরধনলোভী, প্রতারক এবং সমাজের বিশৃঙ্খলাকারী। তারা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি পরিচয়ে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন এলাকায় বিভিন্ন প্রকারের বিশৃংখল এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটায়। বর্তমানেও তারা নির্দ্বিধায় এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। চাঁদাবাজি প্রতারণা এবং হুমকি দেওয়ার মতো নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তারা জড়িত।

    অভিযোগে আরও বলা হয়, তাঁদের দ্বারা সমাজের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিগণ যখন আমাদের বরাবর নালিশ জানায়, তখন আমরা উক্ত অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে কাজ শুরু করি। তবে সমাজের ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের ডাকে এবং তাদের উপকারে আমরা যখন এগিয়ে আসি তখন আমরা দুষ্কৃতকারীরা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এমতাবস্থায় আমরা খুবই ভীত ও জীবন সংকটে রয়েছি।

    আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামীম আহমেদ ও বিমানবন্দর জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম এমরানুল হক মারুফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উত্তরা পশ্চিম থানা-পুলিশই বলতে পারবে, তাঁরা কেন আটক করেছে। তারা আটকের পর কেন আমাদের থানায় দিয়ে গেছে, সেটাও আমরা জানি না। উত্তরা পশ্চিম থানার ওসিই বলতে পারবেন, কেন তিন ছাত্রকে আটক করেছেন।’

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হন নি।

    সর্বশেষ রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত উত্তরা পূর্ব থানার কম্পিউটার ল্যাব রুমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের মিটিং করতে দেখা যায়।

  • সহায়তার প্রতিদানে ইউক্রেনের ‘খনিজ সম্পদের’ ভাগ চান ট্রাম্প!

    সহায়তার প্রতিদানে ইউক্রেনের ‘খনিজ সম্পদের’ ভাগ চান ট্রাম্প!

    রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে এতদিন নানাভাবে সহায়তা দিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেই সহায়তার বিনিময়ে এবং নতুন করে সহায়তা পাওয়ার শর্ত হিসেবে এবার দেশটির ‘দুর্লভ খনিজ’ পদার্থের অংশ চেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

    ইউক্রেনকে দেয়া বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিদান চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত কয়েক বছরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে জেলেনস্কি বাহিনীকে সহায়তা হিসেবে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামরিক সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

    এবার, সেই সহায়তার পরিবর্তে এবং নতুন করে সহায়তার জন্য ইউক্রেনের বিরল ও মূল্যবান খনিজের অংশ চাইছেন ট্রাম্প।

    তিনি বলেন,
    অর্থনৈতিকভাবে তারা (ইউক্রেন) আমাদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। তাই অন্য কোনো উপায়ে আমাদের ঋণ তাদের পরিশোধ করা উচিত। ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে ভাবছি। যাতে করে আমরা তাদেরকে যে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছি, তার সমপরিমাণ বিরল খনিজ পদার্থ ও অন্যান্য সম্পদ আমরা যেন পাই।

    পানামা খাল বিষয়েও আলোচনা এগোচ্ছে বলে দাবি করেন ট্রাম্প। তার দাবি, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তার পানামা সফরে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যাতে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ অবস্থায় পানামা খালের ওপর আর চীনের আধিপত্য থাকবে না বলেও মনে করেন তিনি।

    তবে বৈশ্বিক সহায়তা আটকাতে ট্রাম্পের মার্কিন সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডি’র কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণায় মোটেও খুশি নন ডেমোক্র্যাট সিনেটররা। বিশেষ করে ইলন মাস্ক প্রকাশ্যে এ বিষয়ে ট্রাম্পকে সমর্থন দেয়ার পর আন্দোলনে নামেন মার্কিন সিনেটের ডেমোক্র্যাট-দলীয় সদস্যরা।

    যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ে ইলন মাস্কের সম্পৃক্ততা নিয়েও অসন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্যে।

    অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ভাণ্ডারে ইলন মাস্কের কর্মকর্তাদের প্রবেশাধিকার দেয়ায় মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ফেডারেল ইউনিয়ন। এমনকি মাস্ক তার প্রবেশাধিকার কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক আদান-প্রদানে বাধা সৃষ্টি করতে পারেন বলেও আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।

  • ৬ মাস অফিস না করেও চাকরিতে বহাল কুবি ছাত্রলীগের সম্পাদক

    ৬ মাস অফিস না করেও চাকরিতে বহাল কুবি ছাত্রলীগের সম্পাদক

    আওয়ামী ফ্যাসিজমের বিদায় এবং সরকারের পট পরিবর্তনের পর বিগত সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি নিরুদ্দেশ হয়েছেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও একইভাবে নিরুদ্দেশ আছেন কুবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও হত্যা মামলার আসামি রেজিস্ট্রার দপ্তরের সেকশন অফিসার রেজাউল ইসলাম মাজেদ।

    রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে সর্বশেষ গত বছরের ১৬ জুলাই তিনি অফিস করেছিলেন। এরপর ৬ মাসের বেশি অতিক্রান্ত হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে আর দেখা যায়নি তাকে। এ অবস্থায় অনুমতি ছাড়া চাকরিতে অনুপস্থিত থাকা কিংবা চাকরি থেকে পলায়নের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সরকারি বিধি মোতাবেক চাকরি থেকে অপসারিত হওয়ার কথা তার। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এখনো চাকরিতে বহাল রয়েছেন তিনি।

    অভিযোগ রয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে তাকে চাকরি দেয় তৎকালীন আওয়ামীপন্থী উপাচার্য আবদুল মঈন।

    সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-তে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারি পলায়নের দায়ে দোষী হলে তাকে তিরস্কার থেকে শুরু করে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান, চাকরি থেকে অপসারণ কিংবা বরখাস্ত করা হতে পারে।

    একই বিধিমালার ২ (চ)তে বলা হয়েছে, বিনা অনুমতিতে ৬০ দিন বা তদূর্ধ্ব সময় কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকলে ওই কর্মচারি পলায়ন বলে গণ্য হবেন। সরকারের পট পরিবর্তনের আগে মাজেদ সর্বশেষ ১৬ জুলাই অফিস করেছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়সূত্রে জানা গেছে।

    আরও পড়ুনঃ বন্ধ থাকবে প্রাক–প্রাথমিক; কাল খুলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, ক্লাস হবে যখন
    এরপর থেকে ছয় মাসেরও অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি তিনি। এমনকি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগও করেননি।

    রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। রেজাউল ইসলাম মাজেদ এখন কোথায় আছেন, সে সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সবশেষ গত ১৩ আগস্ট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেখা গেছে তাকে। তবে পুলিশি তৎপরতায় সেসময় তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে পারেননি বলেই নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।

    ২০২৩ সালের অক্টোবরে মাজেদ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২৩ সালের ১৫ মে সেকশন অফিসারের বিপরীতে রেজাউল ইসলাম মাজেদসহ কয়েকজনের মৌখিক পরীক্ষা নেয় নিয়োগ বোর্ড। সভায় একক কোনো প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় তিনজন প্রার্থীকে নিয়ে প্যানেল তৈরি করে বিষয়টি সিন্ডিকেটে নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করা হয়।

    তবে ৪ অক্টোবর নিয়োগ বোর্ডের সভা বিবরণীতে স্বাক্ষরের জন্য বোর্ড সদস্য তৎকালীন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবিরকে পাঠালে তিনি শুধু একজনের সুপারিশ দেখতে পেয়ে সেখানে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর বিষয়টি সিন্ডিকেটে নেওয়া হলে সেখানেও তিনি আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) জানান। এতকিছুর পরও তাকেই নিয়োগ দেন তৎকালীন আওয়ামীপন্থি উপাচার্য আবদুল মঈন।

    অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রনেতা থাকা অবস্থায় ভিন্নমত দমনের নামে প্রায়ই বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করতেন রেজাউল ইসলাম মাজেদ। পান থেকে চুন খসলেই পেটাতেন নিজ দলের নেতাকর্মীদেরও। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদককাণ্ডের নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি। তার নির্যাতনের কারণে অনেক শিক্ষার্থীকেই হল ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে; বাদ দিতে হয়েছে পড়াশোনা। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কাজে নিয়মিত হস্তক্ষেপ, শিক্ষকদের নিয়ে কটূক্তি, উপাচার্যের গাড়ি আটকিয়ে অনৈতিক দাবি আদায়সহ রয়েছে আরও অনেক অভিযোগ।

    সবচেয়ে বড় অভিযোগ, দলীয় অন্তঃকোন্দলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত অন্যতম আসামি মাজেদ। ২০১৬ সালের ১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মার্কেটিং বিভাগের ৭ম ব্যাচের এ শিক্ষার্থী। তিনি কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

    আওয়ামী সরকার ক্ষমতাচ্চ্যুত হওয়ার পরও এখনো মাজেদ বহাল তবিয়তে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খালেদ সাইফুল্লাহর মা ফাতেমা আক্তার। তিনি বলেন, মাজেদ আমার ছেলের খুনের মামলার চার্জশিটের ৩ নাম্বার আসামি হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে তার চাকুরি হওয়া এবং এখনো তাতে বহাল থাকা আমার মতো মায়েদের জন্য অপমান। আমি চাই এই খুনের বিচার দ্রুত হোক এবং মাজেদসহ অন্যান্য আসামিদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হোক।

    সার্বিক বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, নিয়মানুযায়ী সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে আমার বরাবর এখনো কোনো ফাইল দেওয়া হয়নি। একজন কর্মকর্তা আইনের বাইরে আছেন কিংবা আইন অনুযায়ী কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন, তখন আমাদের পক্ষ থেকে তার বেতনভাতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • মসজিদে ঢুকে শিবিরের ক্যালেন্ডার ছিঁড়লেন ছাত্রলীগ নেতা

    মসজিদে ঢুকে শিবিরের ক্যালেন্ডার ছিঁড়লেন ছাত্রলীগ নেতা

    সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে মসজিদে ঢুকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যালেন্ডার ছিঁড়লেন সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা শাহানুর আলী শানু। এ সময় মুসল্লিদের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী তাকে মসজিদ থেকে বের করে দেন।

    গত সোমবার উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাগময়না গ্রামে মসজিদের এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাগরিবের নামাজের সময় রানীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুন্দর আলীর ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাহানুর আলী শানু মসজিদে ঢুকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যালেন্ডার ছিঁড়ে ফেলেন। মুসল্লিরা তখন বাধা দিলে তাদের সঙ্গেও তিনি দুর্ব্যবহার করেন।

    একপর্যায়ে তিনি একজন মুসল্লিকে লাঞ্ছিত করেন এবং বলেন, কার এত সাহস যে শিবিরের ক্যালেন্ডার টানায়। মুসল্লিরা তখন এর প্রতিবাদ করলে তাদের ওপরও তিনি চড়াও হন। এরপর এলাকাবাসী তাকে মসজিদ থেকে বের করে দেন।

    এ ঘটনা জানাজানি হলে গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বড় ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে জগন্নাথপুর থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।

    জগন্নাথপুর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) শাকিব আহমদ একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মসজিদে ক্যালেন্ডার নিয়ে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

  • প্রজন্ম নব্বইয়ে প্রতারিত হয়েছে, আর প্রতারিত হতে চায় না: আব্দুল হান্নান মাসুদ

    প্রজন্ম নব্বইয়ে প্রতারিত হয়েছে, আর প্রতারিত হতে চায় না: আব্দুল হান্নান মাসুদ

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, “আমরা নব্বইয়ের মতো আবার প্রতারিত হতে চাই না। ৯০-এর আন্দোলন আমাদের শিক্ষা দিয়েছে এবং এই প্রজন্ম বারবার সেই ভয় পেয়ে যাচ্ছে যে, ২০২৪-এ আবার কোনো ধরনের প্রতারণা হতে পারে।”

    তিনি বলেন, “আজকের পরিস্থিতিতে বিএনপি ও জামাতের সঙ্গে সরকার আলাপ-আলোচনা করতে পারছে না, অথচ অনেক বড় রাজনৈতিক দলেরও এ ব্যাপারে ভূমিকা থাকা উচিত। ছাত্র আন্দোলনে যে ঐক্য ছিল, তা এখন টলমল।”

    তিনি আরো বলেন, “এ সরকার যখন বলে যে, রাজনৈতিক দলগুলো সংলাপে যোগ দিতে প্রস্তুত, তখন জনগণের মতামত এবং সুশীল সমাজের মূল্যায়নও প্রয়োজন। সরকার যদি এককভাবে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়, তবে তা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হবে।”

    মাসুদ একথাও উল্লেখ করেন যে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে একদলীয় শাসন কায়েম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করবে।

  • তলে তলে সবাই আওয়ামী লীগকে কাছে চায়: নুর

    তলে তলে সবাই আওয়ামী লীগকে কাছে চায়: নুর

    গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, দেশের বর্তমান সরকার গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কোনো স্বচ্ছ ধারণা নেই।

    তিনি দাবি করেন, সরকার গঠনে কারা পরামর্শ দিয়েছেন, কাদের তালিকা অনুসারে উপদেষ্টারা মনোনীত হয়েছেন—এ সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলোসহ সাধারণ জনগণের কোনো স্পষ্ট তথ্য নেই।

    নুরুল হক নুর বলেন, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তি দেশকে সংকট থেকে উত্তরণের স্বার্থে সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল, তবে ছয় মাসের পারফরম্যান্সে সরকারের দুর্বলতা ও অদূরদর্শিতা স্পষ্ট হয়েছে।

    তিনি বলেন, “বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে সরকারের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব নয়। উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠন করা প্রয়োজন এবং সরকারের যে প্রাথমিক ভুল ছিল—গণঅভ্যুত্থানের অংশীজন ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত না করা—তা সংশোধন করা জরুরি। আমরা সরকারকে অনুরোধ করব, মেজর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য।”

    নুর আরও বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠন করে আওয়ামী লীগকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রের সম্পদ লুটপাট করেছে এবং বিদেশে পাচার করেছে। এই অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

    তিনি দাবি করেন, “শুধু গণহত্যার জন্য নয়, দেশের অর্থনীতি যারা ধ্বংস করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। দেশের বাইরে পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনতে হবে।”

    তিনি ছাত্রদের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের নেতৃত্বের সমালোচনা করে বলেন, “আমরা হট্টগোল ও তদবির দেখছি, কিন্তু ধারাবাহিক কোনো কর্মসূচি দেখতে পাচ্ছি না। কারণ, ভোটের রাজনীতিতে সবাই আওয়ামী লীগকে তলে তলে কাছে চায়।”

    নুর বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে স্পষ্ট করতে হবে তারা ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চায় কি না। এখানে কোনো দায়সারা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা আওয়ামী লীগের মতো গণহত্যাকারী রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে চাই না। অথচ যারা ক্ষমতায় যেতে চায়, তারা অলিখিতভাবে প্রশাসন, গণমাধ্যম ও ব্যবসায়িক মহলে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করেছে, কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রশ্নে নীরব রয়েছে।

    তিনি বলেন, গণঅধিকার পরিষদ এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান স্পষ্ট করতে উদ্যোগ নিয়েছে এবং জনগণকে এই বাস্তবতা সম্পর্কে জানাতে কাজ করছে।

  • আ.লীগের লিফলেট বিতরণ আমার অধিকার, সেই শিক্ষা কর্মকর্তা আটক

    আ.লীগের লিফলেট বিতরণ আমার অধিকার, সেই শিক্ষা কর্মকর্তা আটক

    ‘আ.লীগের লিফলেট বিতরণ আমার অধিকার’ বলা সেই শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মুকিব মিয়াকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইলিয়াসুর রহমানের বাসা থেকে মুকিব মিয়াকে আটক করা হয়।

    লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুকিব মিয়া বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মুকিব মিয়া ছাত্রলীগের সোহাগ-নাজমুল কমিটির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

    আটক এ কর্মকর্তাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইলিয়াসুর রহমান। ডেপুটি রেজিস্ট্রারের বিচারের দাবিতে মধ্যরাতে উত্তাল হয়ে উঠে শেকৃবি ক্যাম্পাস। আশ্রয়দানকারী ইলিয়াসুর রহমানসহ অন্যান্য আওয়ামীপন্থি শিক্ষক-কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবিতে আলাদা আলাদা মিছিল করেন শেকৃবি ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

    শেকৃবি ছাত্রদলের সভাপতি তাপস কবির বলেন, ক্যাম্পাসে আওয়ামীপন্থি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিচার না হওয়াতে তারা এখনও বুক ফুলিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। শুধু তাই নয়, বাইরে থেকে আসা অন্যান্য আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে শেকৃবির শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বাসা। আমরা দ্রুত তাদের বিচার ও প্রত্যাহার চাই।

    আ.লীগের লিফলেট বিতরণ আমার অধিকার, বললেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা

    শেকৃবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. তৌহিদ আহমেদ আশিক বলেন, তদন্তের নামে বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রহসন করছে। ৬/৭ মাস পার হলেও এখনও বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি। ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগের পদচারণায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রশাসনকে আগামী তিন দিনের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের বিচার ও প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে সকল আওয়ামীপন্থিদের এলোটমেন্ট বাতিল করতে হবে।

    শেকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল লতিফ বলেন, আমরা দ্রুত সময়ে বিচার কাজ শেষ করব। আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত, সিন্ডিকেট মিটিংয়ের অপেক্ষায় আছে।

    এর আগে গত শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ দাবিতে আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ করেন লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুকিব মিয়া।

    লিফলেট বিতরণ করে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেননি জানিয়ে তখন মুকিব মিয়া বলেছিলেন, ড. ইউনূস সংবিধান লঙ্ঘন করছেন, এর প্রতিবাদ করছি। আওয়ামী লীগও প্রতিবাদ করছে। তাই আওয়ামী লীগের লিফলেট আমার নেতৃত্বে বিতরণ করেছি। এতে চাকরিবিধি লঙ্ঘন হয়নি। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিয়েছে, এ দলের লিফলেট বিতরণ করা আমার অধিকার। চাকরিতে যোগ না দেওয়ার বিষয়ে মুকিব মিয়া জানান, ছুটির আবেদন করেছি।

  • সৌদি, ওমান ও কাতার নিয়ে সুখবর দিলেন আসিফ নজরুল

    সৌদি, ওমান ও কাতার নিয়ে সুখবর দিলেন আসিফ নজরুল

    সম্প্রতি সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্লোবাল লেবার মার্কেট কনফারেন্স। এই কনফারেন্সে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করতে সৌদিতে সফর করেন প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। সফরকালে উপদেষ্টা সৌদি, ওমান ও কাতার সরকারের মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন।

    মঙ্গলবার সকালে বৈঠক ও সফরের নানা বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এ তথ্য জানান তিনি।

    ফেসবুক পোস্টে আইন উপদেষ্টা লেখেন, সৌদি আরবে আমার এবারের সফর ছিল সরকারি, সেখানে কিছু ভালো খবর পেয়েছি। রিয়াদে আমার সঙ্গে সৌদি আরবের মানবসম্পদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীদ্বয়ের বৈঠক হয়েছে। কাতার ও ওমানের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

    তিনি লেখেন, সৌদী আরব সেখানে আকামাবিহীন থাকা বাংলাদেশিদের বিষয়ে চাকরিদাতাদের দায়-দায়িত্ব আরো কঠোরভাবে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

    চাকরির চুক্তি আগেই বাংলাদেশে শ্রমিকদের কাছে পাঠানোর বিষয় বিবেচনা করবে বলেছে। পেশাজীবীদের সার্টিফিকেটের সত্যায়ন বাংলাদেশ থেকেই করবে বলেছে।

    আসিফ নজরুল আরো লেখেন, ওমান সেখানকার সকল বাংলাদেশিদের থাকার বৈধতা দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিয়েছে এবং দ্রুত বাংলাদেশ থেকে লোক নেবে বলেছে। কাতারও নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

    পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, এখন পর্যন্ত সব প্রতিশ্রুতিই। তবে সেগুলো আন্তরিক মনে হয়েছে। আমরা বিষয়গুলোর অগ্রগতি যেন হয় তা নিয়ে ফলোআপ করব। প্রবাসে কেউ কেউ আমার কাছে বিমান ভাড়া নিয়ে অভিযোগ করেছেন। এটা আমার মন্ত্রণালয়ের বিষয় না, তবু আমি বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দু-একদিনের মধ্যে বসবো।

    তিনি লেখেন, সবশেষে, আপনাদের বহু মানুষের কাছে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস সম্পর্কে ভালো মূল্যায়ন পেয়েছি। তাদের কাজের নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও দেশপ্রেম দেখে আমারো ভালো লেগেছে। দুদিনে চারজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী শুধু নয়, তারা আমার সঙ্গে সৌদি আরবের বড় বড় প্রায় ২০টি চাকরিদাতা কম্পানি ও প্রবাসে বাংলাদেশের রেমিটেন্স যোদ্ধাদের সঙ্গে দুটো মিটিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। এগুলো নিয়ে পরে লিখব।

  • নিজ বাসা থেকে ‘হিজড়া লিডারের’ গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

    নিজ বাসা থেকে ‘হিজড়া লিডারের’ গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

    রাঙামাটি কাউখালীতে তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়া শিলাকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের নিজ বাসা থেকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

    হিজড়া শিলার বাবার বাড়ি চট্টগ্রাম হাটহাজারীতে বলে জানা গেছে।

    স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিলা তৃতীয় লিঙ্গের হওয়াতে চট্টগ্রাম হাটহাজারী বাবার বাড়ি হওয়ার পরও নিজ বাড়িতে থাকতেন না। দীর্ঘ অনেক বছর ধরে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নে বসবাস করতেন। শিলা উপজেলার তৃতীয় লিঙ্গের লিডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে টাকা উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তবে গত চার বছর আগে আগে শিলা সার্জারি করে শারীরিক পরিবর্তন ঘটানোর পর থেকে তিনি আরেক হিজড়াকে টাকা উত্তোলনের দায়িত্ব দিয়ে বিভিন্ন রকম স্টেজ শো করতেন বলে জানা যায়।

    স্থানীয় সূত্র থেকে আরও জানা যায়, শিলা সার্জারি করে শারীরিক পরিবর্তন করানোর পর স্থানীয় এক ছেলেকে বিয়ে করেন। কিন্তু ছেলেটি মাদকাসক্ত হওয়াতে বনিবনা না হওয়ায় সেটি ডিভোর্সের জন্য আদালত অবধি গড়ায়। এরপর থেকে মাঝে মাঝে সেই স্বামী তার বাসায় আসতেন।

    গত রবিবার রাতে অপরিচিত ৫ লোককে বাসায় ঢুকতে দেখেন স্থানীয়রা। তবে তারা কখন বের হয়েছেন, সেটা কেউ দেখেনি। সোমবার বিকালে শিলার বাড়ির পাশে থাকা আরেক হিজড়া তার কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে সবাইকে খবর দেয়। এরপর সবাই দরজা খুলে দেখতে পায় বিছানায় শিলার গলাকাটা মরদেহ পড়ে আছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

    কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘শিলা নামে এক তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ব্যক্তির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে কাউখালী থানা পুলিশ। প্রাথমিকভাবে এটি একটি হত্যাকাণ্ড মনে হচ্ছে। আমরা বেশকিছু আলামত জব্দ করেছি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, রবিবার রাতে হিজড়া শিলার বাসাতে মাদকের আড্ডা হচ্ছিল। প্রাথমিক তদন্ত ও আইনি কাজ শেষে তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।’

  • লিবিয়ায় নিহত ২৩ জনের ১০ জনই মাদারীপুরের

    লিবিয়ায় নিহত ২৩ জনের ১০ জনই মাদারীপুরের

    অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় নৌকাডুবিতে নিহত ২৩ জনের মধ্যে ১০ জনের পরিচয় মিলেছে। তাদের বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। নিহতদের পরিচয় পাওয়ার পর থেকেই তাদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। এ ঘটনায় জড়িত দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

    পুলিশ বলছে, এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

    জানা গেছে, দালালদের খপ্পরে পড়ে গত ১ জানুয়ারি ইতালির উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন রাজৈর পৌরসভার পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের চা বিক্রেতা হাসান হাওলাদারের ছেলে টিটু হাওলাদার। তাঁর সঙ্গে মামা গোবিন্দপুরের বাসিন্দা আবুল বাশার আকনও যোগ দেন।

    ২৪ জানুয়ারি লিবিয়া থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যাত্রা করেন তাঁরা। মাঝপথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারান দুজন। গতকাল সকালে মৃত্যুর খবর এলে পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। নিহত অন্যরা হলেন রাজৈর উপজেলার গোবিন্দপুরের ইনসান শেখ, শাখারপারের সজীব মোল্লা, সাদবাড়িয়ার রাজীব, সুন্দিকুড়ির সাগর বিশ্বাস, আশিস কীর্তনিয়া, সাগর বাড়ৈ ও বৌলগ্রামের অনুপ সরদার।

    এ ঘটনায় রাজৈরের ১০ জনসহ ২৩ জনের লাশ উদ্ধার করে লিবিয়ার কোস্টগার্ড। ভিটেমাটি বিক্রির পাশাপাশি চড়া সুদে লাখ লাখ টাকা এনে দালালদের হাতে তুলে দিলেও শেষরক্ষা হয়নি। এ ঘটনার মূলহোতা রাজৈরের হরিদাসদি গ্রামের স্বপন মাতুব্বর, মজুমদারকান্দির মনির হাওলাদার ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলীপুরের রফিক দালাল। তাঁদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পাশাপাশি লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তাঁরা।

    টিটু হাওলাদারের বাবা হাসান হাওলাদার বলেন, ‘আমি সামান্য চা দোকানি। আমাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ছেলেকে ইতালি নেওয়ার জন্য টাকা নেয়। এখন শুনি ছেলে মারা গেছে। আমি দালালের বিচার চাই।’

    আবুল বাশার আকনের ভাই বাচ্চু আকন বলেন, ‘দালালরে টাকা দিয়ে আমরা সর্বস্বান্ত। এখন আমার ভাইয়ের লাশ চাই।’ রাজৈর থানার ওসি মাসুদ খান বলেন, ‘দালালদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে দূতাবাসের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেওয়া হবে।