Author: admin

  • হাসিনার রাজনীতির ক*ফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিল জাতিসংঘ

    হাসিনার রাজনীতির ক*ফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিল জাতিসংঘ

    জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালানো শেখ হাসিনা দেশের রাজনীতিতে আগেই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছেন। এবার তার রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিল জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তদন্ত প্রতিবেদন।

    বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় হাসিনার সরকার ও তার দলের নৃশংসতার চিত্র তুলে ধরেছে জাতিসংঘ। যেখানে তারা বলেছে, জুলাই-আগস্টে অভ্যুত্থান চলাকালে ১৪ শতাধিক মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ক্ষমতায় টিকে থাকতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও আওয়ামী লীগ নৃশংসতা চালিয়েছে। আর এই হত্যাযজ্ঞে সমন্বয়ের ভূমিকায় ছিলেন খোদ শেখ হাসিনাই।

    জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদন নিয়ে খবর প্রচার করেছে বিবিসি, এএফপি, সিএনএন, রয়টার্স, আল জাজিরা, টাইমস অব ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যম। এ নিয়ে দেশ ছাড়িয়ে গোটা বৈশ্বিক রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ‘হাসিনার সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটিয়েছে’- এমন তথ্য বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এমনকি শিশুসহ নিরীহ নাগরিকদের হত্যায় জড়িত অপরাধীরা যেন দায়মুক্তি না পায়, সে বিষয়টিতে জাতিসংঘ জোর দেওয়ায় খোদ আওয়ামী লীগেই নানা ধরনের হিসাব-নিকাশ তৈরি হয়েছে।

    রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ দিনের লুটপাট, গুম-খুন, বিশেষ করে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনাই তার নিজের ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির কবর রচনা করেছিলেন। গদি টেকাতে শেষ পর্যন্ত নৃশংসতার চূড়ান্ত রূপ দেখিয়েছিলেন তিনি। যদিও জনরোষে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এবার হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিল জাতিসংঘ। জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন শেখ হাসিনার ‘রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক’ ঠুকে দিয়েছে।

    জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের সময়টায় দেশি-বিদেশি সাংবাদিক এবং বহু বছর বন্দি ছিলেন এমন কয়েকজন ভুক্তভোগীকে নিয়ে হাসিনা সরকারের গোপন টর্চার সেল কুখ্যাত ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তারা হাসিনার বন্দিশালার ভয়াবহ স্মৃতিচিহ্ন প্রত্যক্ষ করেন। বন্দিরা স্মৃতিচারণ করেন তাদের লোমহর্ষক সেসব দিন।

    জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের দিন আয়নাঘরের আলামত সামনে আসায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে হাসিনার আওয়ামী লীগও। বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরে ‘সুযোগের অপেক্ষায়’ ঘাপটি মেরে থাকা তার দোসররাও পড়েছে চাপের মুখে।

    বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদন, গোপন বন্দিশালার চিত্র দেশের জনগণের মনে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে যেমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তারা পড়েছেন ইমেজ সংকটে, যার পরিণতিতে তাদের সমর্থনও কমবে মারাত্মকভাবে। তাছাড়া আগে থেকেই জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় জড়িতদের বিচার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে জোরালো দাবি উঠেছে। ফলে, এটা অনুমেয় যে আগামী দিনগুলোয় শেখ হাসিনার রাজনীতিতে ফেরা প্রায় পুরোপুরি অসম্ভব। নৃশংসতায় অভিযুক্ত ফ্যাসিস্ট দল আওয়ামী লীগেরও রাজনীতিতে ফেরা অত্যন্ত কঠিন হবে।

    হত্যাকাণ্ডের শিকার ১৪শ’ মানুষ, সমন্বয়ে ছিলেন খোদ হাসিনা

    জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতায় টিকে থাকতে ছাত্র-জনতার ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন সেসময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গ, সহযোগী সংগঠনসহ মাঠে থাকা সব বাহিনী বলপ্রয়োগ করেছে। আন্দোলনের সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি), গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) মতো গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আন্দোলনকারীদের সহিংস কায়দায় দমনে সরাসরি জড়িত থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। গোয়েন্দা বাহিনীগুলো শিশুসহ নিরীহ নাগরিকদের নির্বিচারে আটক, গুম, নির্যাতন, তথ্য বের করা বা স্বীকারোক্তি আদায়ের নামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল।

    জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টে ১ হাজার ৪০০ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো সামরিক অস্ত্র ও শটগানের গুলিতে মারা যান। হাজারো ছাত্র-জনতা গুরুতর ও চিরতরে আহত হয়েছেন। ১১ হাজার সাতশর বেশি মানুষকে র‍্যাব ও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। নিহতদের মধ্যে ১১৮ জনই শিশু।

    পুলিশসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী শিশুদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে টার্গেট কিলিং, ইচ্ছা করে পঙ্গু করা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, অমানুষিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন কায়দায় বলপ্রয়োগ করেছে। আন্দোলনের শুরুতে নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সদস্যরা নারী ও মেয়েদের ওপর হামলা করেছে– এগুলো যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ছিল। এগুলোকে প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বলছে জাতিসংঘ। নিরস্ত্র নাগরিকের ওপর এসকেএস, টাইপ-৫৬ ও বিডি-০৮ বন্দুক দিয়ে ৭.৬২ এমএম গুলি চালানোরও প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল।

    প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল উচ্চ আদালতের সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে। তবে এর মূল কারণ ছিল আরও গভীরে—ধ্বংসাত্মক, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি ও শাসন ব্যবস্থার ফলে সৃষ্টি হওয়া অর্থনৈতিক বৈষম্য।

    জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রচ্ছদে স্থান পায় হাসিনার পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারানো সেই আলোচিত গোলাম নাফিজের ছবির স্কেচ, যেটি তুলেছিলেন ফটোসাংবাদিক জীবন আহমেদ। সেই ছবিতে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ নাফিজের নিথর দেহ পড়ে আছে রিকশার পাদানিতে। তার মাথা রিকশার বাইরে ঝুলন্ত প্রায়। মুখ আকাশের দিকে। রিকশাচালক তাকে উত্তাল সড়ক থেকে নিয়ে যাচ্ছেন।

    এই স্কেচসহ প্রতিবেদনের চুম্বকাংশ জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) ফেসবুক পেজে প্রকাশ পেয়েছে, যা আরও আবেদন তৈরি করেছে বিশ্ব মহলে।

    অপরাধীদের দেশে ফেরানোর পথ বাতলে দিলেন জাতিসংঘ দূত

    জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। প্যানেল সদস্য হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান ররি মাঙ্গোভেন, মানবাধিকার কর্মকর্তা জ্যোৎস্না পৌদ্যাল ও প্রধান মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি।

    এসময় ভলকার তুর্ক বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় অভিযুক্তরা যেন দায়মুক্তি না পায়। এই অভিযুক্তদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।

    তিনি এসময় বিদেশে পলাতক অপরাধীদের দেশে ফেরানোরও উপায় বাতলে দেন। তুর্ক বলেন, যদি অপরাধী দেশের বাইরে থাকে, তখন ‘ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন’ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে যে দেশে অপরাধী অবস্থান করছে তাদের গুরুতর মানবাধিকার লঙঘনের অপরাধের বিচার করতে সম্মত হতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিসি) এ বিষয়ে তদন্তের জন্য বলতে পারে।

    বিশ্বমিডিয়ায় হাসিনা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবর

    জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর এ নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে খবর প্রকাশ হয় বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি, সিএনএন, আল জাজিরা, টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ প্রায় সব আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।

    এর মধ্যে বেশিরভাগই হাসিনার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা সামনে নিয়ে আসে। বিবিসির শিরোনাম ছিল—‘বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের দমন-পীড়ন মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটে থাকতে পারে: জাতিসংঘ’; আল জাজিরার শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশের বিগত সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী হতে পারে, এমনটি বলছে জাতিসংঘ। ’ রয়টার্সের প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়— ‘বাংলাদেশে বিক্ষোভ দমন অভিযানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবেদন দিয়েছে জাতিসংঘ। ’

    বিশ্বমিডিয়ার সুবাদে হাসিনার নৃশংসতার খবর দ্রুত এবং ব্যাপক পরিসরে বৈশ্বিক মহলে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে শিশু, নারীসহ নিরীহ লোকদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র প্রয়োগের নিন্দা জানায় মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।

    জাতিসংঘের প্রতিবেদন হাসিনার নৃশংসতার বৈশ্বিক দলিল

    বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি কোনো রাজনৈতিক দল বা সরকারের প্রচলিত প্রতিবেদন নয়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংস্থার পর্যবেক্ষণ, যা হাসিনার সরকারের নৃশংসতার বৈশ্বিক দলিল হয়ে থাকবে। গোটা বিশ্বই বাংলাদেশের সেই অভ্যুত্থানকালের ঘটনাকে এই পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে দেখবে।

    এরই মধ্যে ইউনিসেফের মতো সংস্থা জাতিসংঘের সেই প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে বিবৃতি দিয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট আজমপুরে একটি ১২ বছর বয়সী বালক অন্তত এক ডজন মরদেহের সাক্ষী। সে ‘বৃষ্টির মতো’ পুলিশের গুলি চালানোর বর্ণনা দিয়েছে। এই ঘটনাগুলো অবশ্যই আমাদের সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলবে। ইউনিসেফ বাংলাদেশ শিশুদের সঙ্গে ‘আর কখনো এমনটি যেন না ঘটে’ তা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানিয়েছে।

    হাসিনার রাজনীতির শেষ, আওয়ামী লীগের পথচলাও কঠিন

    রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের ভাষ্যে, জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন সরকারপ্রধান ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকে যেমন অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করালো, তেমনি কঠিন করে ফেললো আওয়ামী লীগেরও পথচলা। এখন আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে হলে তাদের অভ্যুত্থানকালীন ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ এবং অভিযুক্তদের পেছনে ঝেড়ে ফেলা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

    এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বাংলানিউজকে বলেন, আমার মনে হয়, এটা আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য একটা বড় রকমের ‌‘সেট ব্যাক’ হয়ে গেল। এটা বড় রকমের এভিডেন্স হয়ে গেল। এই রিপোর্টটা আন্তর্জাতিক মহলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যখন এটাকে দেখবে সরকারপ্রধান বা অন্যান্য অর্গানাইজেশনের যারা প্রধান আছেন তারা খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। অতীতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন, আরও প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। ফলে শেখ হাসিনার জন্যও এই বিষয়টি পজিটিভ কিছু আনবে না। তার জন্য বিষয়টি আইনগতভাবে বা রাজনৈতিকভাবে কোনো রকম সুবিধাজনক অবস্থান করবে না।

    সাহাব এনাম আরও বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের যে ভূমিকাটা ছিল সেটার বিষয়ে এখানে যথেষ্ট ডকুমেন্টশন, তথ্য-উপাত্ত, প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। যে কারণে আওয়ামী লীগের বর্তমান রাজনীতিতে ফিরে আসাটা কঠিন হয়ে গেছে।

    আয়নাঘরের আলামতে ঘৃণা-বিস্ময়

    এদিকে, জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের দিন হাসিনার সরকারের গোপন বন্দিশালা বা আয়নাঘরের নানা আলামত সামনে আসায় শুধু বাংলাদেশে নয়, পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতেও বিস্ময় ছড়িয়েছে, বাড়ছে দলটির বিষয়ে ঘৃণাও।

    জাতিসংঘের প্রতিবেদন এবং কুখ্যাত আয়নাঘর নামে পরিচিত শেখ হাসিনা সরকারের গোপন টর্চার সেল নিয়ে আবেগঘন একটি লম্বা ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন ভারতীয় সাংবাদিক অর্ক দেব। তার পোস্টে লেখা হয়েছে, যখন আয়নাঘরের ছবি ভিডিও সামনে আসছে আমরা কি এরকম হয়েই থাকে বলে মানবতা বিরোধী ফ্যাসিস্ট প্রকল্পকে বৈধতা দেব? আমার সন্তান প্রাণপ্রিয়, কিন্তু অন্যের সন্তানের সঙ্গে এমনটা হতেই পারে? দ্বিচারিতা নয় তো এই ভাবনা? আমার তাৎক্ষণিক ঘৃণার চোটে আসলে ইউএপিএর মতো দাসত্ব শৃঙ্খলকেও আমি মান্যতা দিয়ে ফেলছি? এভাবে কত ছিদ্র আটকানো সম্ভব হবে? জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, জুলাই আগস্টে শিশুদের টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, বাহিনীর অস্ত্রে মৃত ১৪০০, তার মধ্যে শিশু ১১৮। বলা হচ্ছে, অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ হাসিনার নির্দেশেই। ওএইচসএইচআর ১২৭ পাতার রিপোর্টে র‍্যাব, এনটিএমসিকে বিলুপ্ত করার সুপারিশও করেছে। প্রশ্ন হলো, কত মুখ ঘুরিয়ে থাকব? আমি অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ হবে? জাতিসংঘকেও এবার বলব বায়াসড?

    আয়নাঘর ঘুরে এসে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা, জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ফেসবুকে লেখেন, আমরা গুম এবং আয়নাঘরে বিনা বিচারে বন্দিদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবোই। আমরা এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্মাণ করতে চাই যেখানে আর কখনো কোনোদিন বাংলাদেশের মাটিতে এমন ঘৃণ্য রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি না হয়।

    আয়নাঘর নিয়ে সাদিকুর রহমান খান নামে একজনের একটি পোস্ট শেয়ার করে হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে লিখেছেন, হয় আওয়ামী লীগ থাকবে না-হয় আমরা থাকবো।

    আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নৃশংসতার কথা তুলে ধরে দলটিকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুকে লেখা হয়েছে, লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আর কোনো যদি-কিন্তু নয়।

  • সর্বজনীন পেনশন বন্ধ হচ্ছে না, সুবিধা নিয়ে যা জানা গেল

    সর্বজনীন পেনশন বন্ধ হচ্ছে না, সুবিধা নিয়ে যা জানা গেল

    পতিত আওয়ামী স্বৈরশাসনামলে চালু হওয়া সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি নিয়ে চিন্তায় গ্রাহকরা। এ পর্যন্ত প্রায় পৌনে ৪ লাখ মানুষ যুক্ত আছেন এই কর্মসূচিতে। দেশ ছেড়ে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে এই কর্মসূচির গ্রাহকরা সর্বজনীন পেনশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছিলেন।

    তবে বন্ধ হচ্ছে না সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি।

    বরং এই কর্মসূচির গতি বাড়াতে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
    অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, সর্বজনীন পেনশন বন্ধে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। দেশের একটি গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা।

    তিনি বলেন, ‘দেশে সামাজিক নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষার প্রশ্নে এ কর্মসূচির প্রয়োজন রয়েছে।

    এটি বন্ধ বা বাতিল করার কোনো পরিকল্পনা নেই। প্রচলিত স্কিমগুলোর বিষয়ে আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যারা নিবন্ধিত হয়েছেন বা ভবিষ্যতে যুক্ত হবেন, তাদের কী করে আরো বেশি আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয় তা দেখা হচ্ছে।’
    যদিও এর আগে বিষয়টি নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছে সংশ্লিষ্টরা।

    সেখান থেকেও গ্রাহকদের পেনশন কর্মসূচি বন্ধ না হওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। ১৪ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পরিষদের একটি সভা হয়। গ্রাহকের মনের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য পেনশন কর্তৃপক্ষ যেন কাজ করে যায় তা বলা হয় সেই সভায়। সেই সাথে গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য “প্রয়োজনীয় পরিবর্তনও” নিতে বলা হয়েছিল।
    সর্বজনীন পেনশন মেলার আয়োজন করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

    জেলা, উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা ও সেমিনারের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি পেনশন কর্মসূচি নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হবে। সরকার পরিবর্তন হোক বা পরিস্থিতি যা-ই হোক, জনস্বার্থে এই কর্মসূচি বহাল থাকবে বলেও বার্তা থাকবে গ্রাহকদের জন্য।
    ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট ‘সমতা’, ‘সুরক্ষা’, ‘প্রগতি’ ও ‘প্রবাস’—এই চারটি স্কিমের নিবন্ধনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এর কার্যক্রম শুরু হয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ও প্রবাসে থাকা নাগরিকদের মধ্যে মোট তিন লাখ ৭৩ হাজার ৩০৬ জন এই কর্মসূচিতে নিবন্ধিত হয়েছেন। তবে নতুন যুক্ত হওয়া নাগরিকের সংখ্যা খুবই কম।

    পেনশন তহবিলে তাদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৭ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ এই অর্থ সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করেছে, যার ফলে মুনাফাসহ তহবিলের মোট পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৪ কোটি টাকা।

  • শিক্ষককে রড দিয়ে মারতে আসা যুবক পা ধরে ক্ষমা চাইলেন

    শিক্ষককে রড দিয়ে মারতে আসা যুবক পা ধরে ক্ষমা চাইলেন

    গাড়িতে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ সিদ্দিকীকে রড দিয়ে মারতে তেড়ে আসেন ইনজামামুল হক নামের স্থানীয় এক যুবক।

    ঘটনার পর মুসলেকা দিয়ে ওই শিক্ষকের পা ধরে ক্ষমা চান ইনজামামুল। ক্ষমা চাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তাকে জালালাবাদ থানার সোপর্দ করা হয়।

    গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

    প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীদের বরাতে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে ক্যাম্পাস থেকে গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছিলেন লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ সিদ্দিকী। এ সময় সিলেট-সুনামগঞ্জ রোডে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ইনজামামুল হকের গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। ধাক্কা লাগার সঙ্গে সঙ্গে ইনজামামুল গালিগালাজ করতে করতে গাড়ি থেকে রড নিয়ে বের হন। তখন অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীকে মারতে তেড়ে যান তিনি। এ সময় অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীর ড্রাইভার ইনজামামুলকে থামানোর চেষ্টা করলে ইনজামামুল চিৎকার শুরু করেন।

    প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মেইন গেটের সামনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছে দেখে আমরা উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করতে যাই। এক পর্যায়ে ওই ছেলে খবর দিয়ে ৪ জন মহিলাসহ ১৫-২০ জন স্থানীয়কে নিয়ে আসেন। তারা এসেই আমাদের গালিগালাজ করতে করতে উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ধাক্কাধাক্কি ও মারধর করেন বলে অভিযোগ পাই। তখন আমাদের শিক্ষার্থীরা জড়ো হলে তারা (স্থানীয়রা) নিরাপত্তা দিতে ওই ছেলেকে একটা দোকানে আটকে রাখেন।

    এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে জড়ো হন। অপরদিকে এলাকাবাসীরাও লোকজন জড়ো করেন। তখন এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েক দফায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

    এরপর ঘটনার সমাধান করতে প্রক্টরিয়াল বাড়ির সদস্যদের এবং পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় ইনজামামুলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়। পরে নিজের দোষ স্বীকার করে মুসলেকা দিয়ে অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীর পা ধরে ক্ষমা চান ইনজামামুল হক। এরপর তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

    এ বিষয়ে শাবিপ্রবির প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘ছেলেটি তার ভুল বুঝতে পেরে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলরের সাক্ষীতে সে মুসলেকা দিয়ে অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীর পা ধরে ক্ষমা চেয়েছে। আমরা তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি, পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা নিবে।’

    সিলেট জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশীদ বলেন, ‘রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককের গাড়ির সঙ্গে ইনজামামুল হক নামের এক যুবকের গাড়ির ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ঝামেল তৈরি হলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন যুবকটি পা ধরে মাফ চান এবং মুসলেকা দেন। ঘটনাটি সেখানে সমাধান করা হয়। এরপর আমাদের হাতে তাকে সোপর্দ করা হলে আমরা তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।’

    উল্লেখ্য, ইনজামামুল হক সিলেট টুকেরবাজার এলাকার হায়দারপুর গ্রামের মৃত এ কে এম তারেক কালামের ছেলে।

  • আওয়ামী লীগ বর্তমানে বিজেপির বাংলাদেশি শাখা: অর্ক ভাদুড়ি

    আওয়ামী লীগ বর্তমানে বিজেপির বাংলাদেশি শাখা: অর্ক ভাদুড়ি

    ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির বাংলাদেশি শাখা বলে মন্তব্য করেছেন কলকাতা এবং লন্ডনভিত্তিক সাংবাদিক, গবেষক, অ্যাক্টিভিস্ট অর্ক ভাদুড়ি।

    শুক্রবার দুপুরে নিজের ফেসবুক ওয়ালে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন। তার স্ট্যাটাসটি ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। অর্কর পোস্টটি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলমও তার ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন।

    অর্ক ভাদুড়ির স্ট্যাটাসটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

    “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমেরিকায় গিয়েছেন।তাকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শাখা ‘ওয়েলকাম নরেন্দ্র মোদি’ লেখা ব্যানার নিয়ে জমায়েত করেছে। আওয়ামী ছাত্রলীগের অফিসিয়াল পেজ এই ভিডিও শেয়ার করেছে। ছাত্রলীগের পোস্টটি কমেন্ট সেকশনে শেয়ার করছি। ভিডিওর ডানদিকে ব্যানারটি দেখা যাবে।

    বিজেপি এবং আওয়ামী লীগ এখন আর আলাদা দুটি দল নয়। আওয়ামী লীগ বর্তমানে বিজেপির বাংলাদেশি শাখা। সেই কারণেই মোদিকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার হাতে আমেরিকায় জমায়েত করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতা ভারতে আছেন। আওয়ামী লীগের আইটি সেলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ভারতে এসে আরএসএস-এর শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন। করতেই পারেন। এগুলি তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।

    প্রশ্ন হলো, বিজেপির সিস্টার কনসার্ন হিসাবে ক্রিয়াশীল আওয়ামী লীগ কি আদৌ বাংলাদেশের রাজনীতিতে কামব্যাক করতে পারবে? সম্ভবত নয়। ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আছে, ক্ষোভ আরও বাড়বে। কিন্তু তার সুফল আওয়ামী লীগ ঘরে তুলবে না, তুলবে অন্য রাজনৈতিক শক্তি।

    জুলাই-আগস্টের সহিংসতা নিয়ে শেখ হাসিনাকে দায়ী করে রাষ্ট্রসংঘের (জাতিসংঘ) রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের বিপদ আরও বেড়েছে। কিংবদন্তি আওয়ামী লীগ নেতা, মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিনের পুত্র সোহেল তাজ এ বিষয়ে যে পোস্ট করেছেন, কমেন্ট সেকশনে সেটি শেয়ার করলাম। এই দুরবস্থায়, খোলাখুলি নরেন্দ্র মোদির পক্ষে ব্যানার নিয়ে মিছিল করে আদৌ বিচক্ষণতার পরিচয় দিচ্ছে আওয়ামী লীগ?”

  • শেখ রেহানার বিঘার পর বিঘা জমি, দখল করেছেন কবরস্থানও

    শেখ রেহানার বিঘার পর বিঘা জমি, দখল করেছেন কবরস্থানও

    ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ঘেষা তেলির চালা এলাকায় ৯ বিঘা জমির উপর সুবিশাল বাংলোকে হাসিনা-রেহানার বাংলো নামেই চিনেন। এই এলাকায় রয়েছে শাঁন দিয়ে বাঁধানো পুকুর ঘাট, বাগান, খেলার মাঠ, সুইমিংপুল, আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি ও হাঁটার রাস্তা।

    স্থানীয়রা জানান, এখানে প্রায়ই ঘুরতে আসতেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাদের সন্তানেরা। কাটাতেন অবসর সময়। ৫ই আগস্টের পর এই বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয়, করা হয় লুটপাট। এখন পুরো জায়গাটি উন্মুক্ত। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কানাইয়া এলাকায় আরেকটি সুবিশাল বাগানবাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। যার নামকরণ করা হয়েছে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিমের নামে ‘টিউলিপ টেরিটোরি’।

    এটির মালিক শেখ রেহানার স্বামী শফিক সিদ্দিক। এই বাগানবাড়িতে রয়েছে ডুপ্লেক্স বাড়ি, কয়েকটি টিনের ঘর বিশাল একটি পুকুর ও সুবিশাল বাগান। এতেও রয়েছে ভাঙচুরের চিহ্ন। তবে এ বাগানবাড়ির একাংশ নিজেদের বলে দাবি করছেন কেউ কেউ।

    কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের সম্পত্তি দখল করে এগুলো তৈরি হয়েছে। এমনকি বাদ যায়নি কবরস্থানও। এমন আরো দুইটি সুবিশাল বাংলোর খোঁজ পাওয়া গেছে গাজীপুরে।

    সূত্রঃ https://youtu.be/K6ARAT7ymY0?si=oz1aV5J2BElkd9oc

  • মাঠে নামলেই টাইগাররা পাচ্ছেন দেড় কোটি টাকার বেশি

    মাঠে নামলেই টাইগাররা পাচ্ছেন দেড় কোটি টাকার বেশি

    চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরের পর্দা উঠতে আর দিন কয়েকের অপেক্ষা। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠছে এই আসরের। তার আগে প্রাইজমানি ঘোষণা করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য দলগুলো পাবে ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার বা প্রায় ১ কোটি ৫১ লাখ ৩ হাজার টাকা করে।

    যেহেতু বাংলাদেশ এখানে খেলবে তো ধরেই নেয়া যায় যে তারা কোনো ম্যাচ না জিতলেও পাবে প্রায় ১ কোটি ৫১ লাখ ৩ হাজার টাকা।

    প্রায় ৭ বছর আগে মাঠে গড়িয়েছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সর্বশেষ আসর। গত আসরের চেয়ে এবার বেড়েছে চ্যাম্পিয়ন্স প্রাইজমানির পরিমাণ। সবমিলিয়ে প্রায় ৫৩ শতাংশ প্রাইজমানি বেড়েছে এবারের টুর্নামেন্টে।

    আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলের জন্য থাকছে সর্বোচ্চ অর্থ পুরস্কার। তারা পাবে ২২ লাখ ৪০ হাজার ডলার বা প্রায় ২৭ কোটি ৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। রানার্স আপ হওয়া দল প্রাইজমানি হিসেবে পাবে চ্যাম্পিয়ন দলের অর্ধেক অর্থ। অর্থাৎ তারা পাবে ১১ লাখ ২০ হাজার ডলার বা প্রায় ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

    সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া দুই দল পাবে সমান ৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার বা প্রায় ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা করে।

    পঞ্চম ও ষষ্ঠ দল প্রাইজমানি হিসেবে পাবে ৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা প্রায় ৪ কোটি ২২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা করে। সপ্তম ও অষ্টম দল প্রাইজমানি হিসেবে পাবে ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার বা প্রায় ১ কোটি ৬৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা করে।

    তাছাড়া টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্যও থাকছে আর্থিক পুস্কার। প্রতিটি দল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য পাবে ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার বা প্রায় ১ কোটি ৫১ লাখ ৩ হাজার টাকা করে। তাছাড়া গ্রুপ পর্বে প্রতি ম্যাচ জয়ের জন্য ৩৪ হাজার ডলার বা প্রায় ৪১ লাখ ৮ হাজার টাকা করে পাবে দলগুলো।

    আসরের দ্বিতীয় দিন ২০ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আসর শুরু করবে বাংলাদেশ। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ড এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে গ্রুপপর্ব শেষ করবে নাজমুল হোসেন শান্ত’র দল।

  • বাংলাদেশে ঢুকে বিএসএফের লাঠিচার্জ, আহত ৫

    বাংলাদেশে ঢুকে বিএসএফের লাঠিচার্জ, আহত ৫

    কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার গোড়কমন্ডল সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ৫ বাংলাদেশিকে মারধর করার অভিযোগ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর বিরুদ্ধে।

    শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমন্ডল সীমান্তের ৯৩০ মেইনপিলারের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

    স্থানীয়রা জানায়, বিকেলে ভারতের ১৩৮ নারায়ণগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা গোড়কমন্ডল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। এ সময় বাংলাদেশিরা তাদের বাধা দিলে বিএসএফ সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে তাদের মারধর করে। পরে গ্রামবাসী জড়ো হয়ে বিএসএফ সদস্যদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।

    বিএসএফ’র মারধরের ঘটনায় ৫ বাংলাদেশি আহত হয়েছে। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আহতরা হলেন- শামসুল, জাবেদ আলী, তাজুল ইসলাম, কাশেম আলী ও রিপন আহতরা সবাই সীমান্তবর্তী কৃঞ্চনন্দ বকসী গ্রামের বাসিন্দা।

    এ বিষয়ে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ মো. শাকিল আলম জানান, স্থানীয়দের অভিযোগ গোড়কমন্ডল সীমান্তের কৃঞ্চনন্দ গ্রামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বাংলাদেশিদের মারধর করেছে বিএসএফ। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।

  • ভারতে বিএসএফের পোশাক পরে বাংলাদেশে গরু চোরাচালানের চেষ্টা

    ভারতে বিএসএফের পোশাক পরে বাংলাদেশে গরু চোরাচালানের চেষ্টা

    ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের পোশাক পরে বাংলাদেশে গরু চোরাচালানের চেষ্টাকালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে বিএসএফ। ধরা না পড়ার কৌশল হিসেবে ওই চোরাকারবারীরা আধাসামরিক বাহিনীর পোশাক পরেছিল। যা সেখানকার বিএসএফ কর্মকর্তাদের রীতিমতো অবাক করেছে। আটকের সময় ওই চোরাকারবারীদের কাছ ধারালো ছুরি ও চাকু উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।

    সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মালদা ও মুর্শিদাবাদের সীমান্ত এলাকায় একাধিক অভিযান চালিয়ে বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার চার চোরাকারবারীকে আটক করে। ওই সময় তারা চোরাচালানের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

    অপরদিকে বিএসএফের ৮৮নং ব্যাটিালিয়ন পান্নাপুর সীমান্ত আউটপোস্ট থেকে তিনজনকে আটক করে। ওই তিনজনই বিএসএফের পোশাক পরা ছিলন। তাদের সঙ্গে ছিল ধারালো ছুরি ও চাকু। এছাড়া তাদের সঙ্গে নকল প্লাস্টিকের বন্দুকও ছিল। তারা ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু পাচারের চেষ্টা করছিল। ওই সময় ওই চোরাকারবারীদের কাছ থেকে দুটি মহিষও জব্দ করে বিএসএফের জওয়ানরা। এছাড়া আরেক চোরকারবারীকে ৮৯৭ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করা হয়। ওই সময় বেশ কয়েকজন পালিয়ে যান। ফেনসিডিলসহ যাকে আটক করা হয়েছে তিনি বাংলাদেশি বলে দাবি করেছে বিএসএফ।

    আটককৃত ও জব্দকৃত মালামাল যথাযথ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীটি। অপরদিকে ই-ট্যাগিংয়ের পর গরুগুলোকে ধ্যান ফাউন্ডেশনে পাঠানো হয়েছে।

    বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান ঠেকাতে তারা সীমান্তে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন।

  • আ. লীগ নেতা হাসান মাহমুদ গ্রে*প্তার

    আ. লীগ নেতা হাসান মাহমুদ গ্রে*প্তার

    ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান মাহমুদ জুয়েল (৪৮) এবং ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা মো. আবু হানিফকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

    শুক্রবার দুপুরে নান্দাইল পৌর সদরের নিজ বাসা থেকে হাসান মাহমুদ জুয়েলকে এবং গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ময়মনসিংহরে বাউন্ডারী রোডের নিজ বাসা থেকে আবু হানিফকে গ্রেপ্তার করা হয়।

    থানা সূত্রে জানা যায়, নান্দাইল উপজেলা মহিলা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা বেগম রিপার স্বামী মো. রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াকে কুপিয়ে জখমের মামলায় এক নম্বর অভিযুক্ত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জুয়েলকে এবং ডেভিল হান্ট অভিযানে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হানিফকে গ্রেপ্তার করা হয়।

    নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহমেদ জানান, হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি হাসান মাহমুদ জুয়েল।

    এ ছাড়া একাধিক মামলার পলাতক আসামি তিনি।
    ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি উবায়দুর রহমান বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হানিফকে ময়মনসিংহ কোতয়ালি থানা পুলিশ সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করেছে। দুই চেয়ারম্যানকে আজ শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

  • কুমিল্লা-৪ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

    কুমিল্লা-৪ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

    আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দল গঠনে কাজ করছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসন থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারেন গুঞ্জন দেখা দিয়েছে। নাগরিক কমিটির একাধিক সূত্রে বলছে, সদস্য সচিব আখতার হোসেন রংপুর-৪ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন ও নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়-১ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ কুমিল্লা-৪ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এদিকে দল গঠনে কাজ করছে জাতীয় নাগরিক কমটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে কোনো দল এখনো পূর্ণাঙ্গ দলের নাম প্রকাশ করেনি। জানা গেছে, চলতি মাসের শেষ দিকেই জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ করতে পারে। যেখানে যুক্ত থাকবে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী ও তরুণরা। এ লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা তাদের এলাকায় যাচ্ছেন এবং স্থানীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।