Author: admin

  • যে ৫টি প্রমাণ থাকলেই আপনি জমির মালিক, দলিল না থাকলেও চলবে!

    যে ৫টি প্রমাণ থাকলেই আপনি জমির মালিক, দলিল না থাকলেও চলবে!

    দলিল না থাকলেও আপনি জমির মালিক হতে পারেন—শুনে অবাক হচ্ছেন? হ্যাঁ, বাংলাদেশে জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য দলিল ছাড়াও পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র বা প্রমাণ থাকলেই আইনি স্বীকৃতি পাওয়া সম্ভব। সুপ্রিম কোর্টের রায় ও বিদ্যমান ভূমি ব্যবস্থাপনার আলোকে এই সুযোগ এখন বাস্তব।

    দলিল হারিয়ে গেলেও ভয় নেই
    অনেক সময় দেখা যায় জমির দলিল হারিয়ে যায়, পুড়ে যায় বা শত্রুতাবশত নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি কখনো তা করা হয় পারিবারিক বিরোধের জের ধরে। এই অবস্থায় চিন্তার কিছু নেই—যদি আপনি নিচের ৫টি মূল প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেন, তাহলে আপনি আইনত জমির প্রকৃত মালিক বলে বিবেচিত হবেন।

    ✅ জমির মালিকানা দাবি করার জন্য ৫টি মূল প্রমাণ
    ১. খতিয়ান (CS, SA, RS, BS ইত্যাদি)
    খতিয়ান হলো সরকার কর্তৃক পরিচালিত ভূমি জরিপের একটি নথি, যেখানে মালিকের নাম, জমির পরিমাণ, দাগ নম্বর, সীমানা, অবস্থান, খাজনার পরিমাণ প্রভৃতি তথ্য থাকে। এটি আপনার জমির ঐতিহাসিক মালিকানার প্রাথমিক প্রমাণ।
    Ezoic

    ২. নামজারি/খারিজ (Mutation Record)
    আপনি যদি ক্রয়সূত্রে বা উত্তরাধিকারসূত্রে জমি পান, তবে আপনাকে অবশ্যই জমি নিজের নামে নামজারি করতে হবে। এটি সরকারী খতিয়ানে আপনার নাম অন্তর্ভুক্ত করে। খতিয়ানের একাধিক মালিক থাকলে জমা খারিজের মাধ্যমে আলাদা আলাদা খতিয়ান তৈরি করা হয়।

    ৩. ভোগদখল প্রমাণ
    আপনি কত বছর ধরে জমি ব্যবহার করছেন, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার বা আপনার পূর্বপুরুষের দখলে থাকা জমি আপনি নিয়মিত চাষ করছেন বা ঘরবাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন—এমন তথ্যই “ভোগদখল” হিসেবে গণ্য হয়। আইনে তিন ধরনের দখল বৈধ: প্রকৃত, গঠনমূলক এবং যৌথ দখল।

    জমির মালিকানা দাবি করার জন্য ৫টি মূল প্রমাণ
    ১. খতিয়ান (CS, SA, RS, BS ইত্যাদি)
    খতিয়ান হলো সরকার কর্তৃক পরিচালিত ভূমি জরিপের একটি নথি, যেখানে মালিকের নাম, জমির পরিমাণ, দাগ নম্বর, সীমানা, অবস্থান, খাজনার পরিমাণ প্রভৃতি তথ্য থাকে। এটি আপনার জমির ঐতিহাসিক মালিকানার প্রাথমিক প্রমাণ।

    ২. নামজারি/খারিজ (Mutation Record)
    আপনি যদি ক্রয়সূত্রে বা উত্তরাধিকারসূত্রে জমি পান, তবে আপনাকে অবশ্যই জমি নিজের নামে নামজারি করতে হবে। এটি সরকারী খতিয়ানে আপনার নাম অন্তর্ভুক্ত করে। খতিয়ানের একাধিক মালিক থাকলে জমা খারিজের মাধ্যমে আলাদা আলাদা খতিয়ান তৈরি করা হয়।

    ৩. ভোগদখল প্রমাণ
    আপনি কত বছর ধরে জমি ব্যবহার করছেন, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার বা আপনার পূর্বপুরুষের দখলে থাকা জমি আপনি নিয়মিত চাষ করছেন বা ঘরবাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন—এমন তথ্যই “ভোগদখল” হিসেবে গণ্য হয়। আইনে তিন ধরনের দখল বৈধ: প্রকৃত, গঠনমূলক এবং যৌথ দখল।

    ৪. খাজনা রশিদ (Tax Receipt)
    আপনি নিয়মিত জমির খাজনা পরিশোধ করছেন কি না, তা একটি বড় প্রশ্ন। বর্তমানে অনলাইনেও খাজনা পরিশোধ সম্ভব এবং সেই রশিদ জমির ব্যবহারের প্রমাণ হিসেবে কাজ করে।

    ৫. ডিসিআর (Duplicate Carbon Receipt)
    এটি হলো দলিলভিত্তিক রেকর্ড পরিবর্তনের প্রমাণপত্র, যেখানে সরকার প্রদত্ত ফি দিয়ে আপনার নাম সরকারী খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়ার সাক্ষ্যপত্র থাকে। দলিল না থাকলেও নামজারির মাধ্যমে আপনি ডিসিআর পাবেন, যা আইনি মালিকানার বড় দলিল।

  • হিরো আলমের স্ত্রী রিয়া মনি ও ম্যাক্স অভিকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিল এলাকাবাসী

    হিরো আলমের স্ত্রী রিয়া মনি ও ম্যাক্স অভিকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিল এলাকাবাসী

    আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমের তৃতীয় স্ত্রী রিয়ামনি ও বার ড্যান্সার ম্যাক্স অভি রিয়াজকে গ্রেপ্তারের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কয়েকমাস আগে, রিয়ামনি ও অভির অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ তুলেছিলেন হিরো আলম। বিষয়টি ঘিরে তুমুল আলোচনা হয়। এরইমধ্যে গতকাল রিয়ামনি ও ম্যাক্স অভিকে হাতেনাতে ধরার অভিযোগ করেন হিরো আলম।

    হিরো আলমের স্ত্রীএ সময় হিরো আলমকে মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এরপরই ভাইরাল হয় রিয়ামনির গ্রেপ্তারের ভিডিওটি।

    এরইমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে ম্যাক্স অভিকে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তুলছে পুলিশ।

    তার কপালে রক্ত দেখা যায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে রিয়ামনিকেও গাড়িতে তোলা হয়। এ সময় এলাকাবাসী বেশ হৈচৈ করছিলেন। ভুয়া ভুয়া বলে চেচাতে দেখা গেছে সবাইকে।

    জানা গেছে, ম্যাক্স অভি ও রিয়ামনিকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।

    হিরো আলমের সহকারী জানিয়েছেন, গতকাল রামপুরার উলন রোডের বাড়িতে গিয়ে দুজনকে হাতেনাতে ধরেছেন হিরো আলম। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে আসছিলেন। যেহেতু বাসাটা হিরো আলম ভাড়া নিয়েছিলেন তাই তাকে ফোন দিয়ে প্রায়ই অভিযোগ করতেন এলাকাবাসী। কিছুদিন পরপরই রিয়া মনির বাসায় অবস্থান করতেন ম্যাক্স অভি রিয়াজ।

    দুজনের এ অনৈতিক সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে হিরো আলমকে অবগত করেন এলাকাবাসী। তাই গতকাল হিরো আলম হাজির হন বাসায়। এক পর্যায়ে হিরো আলমকেই মারধর ও হেনস্তা করেন রিয়া মনি। এরপর এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে গণধোলাই দেন রিয়া মনি ও ম্যাক্স অভি রিয়াজকে।

    এর আগে গতকাল বিকালে হিরো আলমের একটি ভিডিও ভাইরাল হয় যেখানে রিয়ামনির সঙ্গে ধস্তাধস্তি করতে দেখা যায় তাকে। এ সময় ম্যাক্স অভিকেও খালি গায়ে দেখা যায়। হিরো আলম অভিযোগ করে বলেন, দুজনকে হাতেনাতে ধরেছেন তিনি। হিরো আলমের সঙ্গে এখনও ডিভোর্স সম্পন্ন হয়নি রিয়ামনির। তাই দুজনের এ অনৈতিক সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় হিরো আলমকে মারধর করে রিয়ামনি। ধারনা করা হচ্ছে, আক্রমনের শিকার হিরো আলম পুলিশের দ্বারস্থ হলে পুলিশ রাতে ম্যাক্স অভি ও রিয়ামনিকে গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

    এর আগে, হিরো আলমের বাবার মৃত্যুর সময় অভিযোগ তোলেন, তার বাবার দেখভাল করেন না স্ত্রী রিয়ামনি। এজন্য তিনি রিয়ামনিকে ডিভোর্সের ঘোষণা দেন। তখনই সামনে ম্যাক্স অভির অধ্যায়। অন্যদিকে ম্যাক্স অভির স্ত্রী ইতির অভিযোগ, তার স্বামীর সঙ্গে রিয়ামনির অবৈধ সম্পর্কের কারণেই ঘর ভেঙেছে তারও।

    সূত্র: কালের কণ্ঠ

  • দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

    দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

    দেশের ৯ জেলায় দুপুরের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়সহ বৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

    রবিবার ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

    এতে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

    এ জন্য এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

    সূত্র: আরটিভি

  • ইরানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের রহস্য উদঘাটন

    ইরানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের রহস্য উদঘাটন

    ইরানের উত্তরে শুক্রবার (২০ জুন) শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ইরান গোপনে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর কারণে ভূমিকম্প হয়েছে কি না, এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ভূকম্পবিদরা এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তারা ভূমিকম্পটির প্রাকৃতিক উৎস সম্পর্কে পরিষ্কার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ তুলে ধরেন।

    শনিবার (২১ জুন) সংবাদমাধ্যম শাফাক নিউজ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫.০-এর বেশি এবং এটি ১০ কিলোমিটার গভীরতায় আলবোর্জ পর্বতমালায় আঘাত হানে।

    সুমের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূকম্পবিদ্যার অধ্যাপক ড. আলি রামথান বলেন, এই ভূমিকম্প অঞ্চলের অতীতের ভূ-তাত্ত্বিক গতিবিধির সঙ্গে মিল রেখে ঘটেছে। এটি ছিল একটি ‘ক্লাসিক রিভার্স ফল্ট’ ভূমিকম্প; যা বিশ্বজুড়ে ১৪৯টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে রেকর্ড করা হয়েছে। এই গভীরতায় কোনো পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো সম্ভব নয়—এটা ভূ-ভৌতভাবে অসম্ভব।’

    তিনি জানান, ভূমিকম্পের তরঙ্গগুলোর প্রাথমিক ও গৌণ ঢেউয়ের ধরন স্পষ্টভাবে প্রাকৃতিক উৎসের সঙ্গে মিলে যায়, যা টেকটোনিক গতিবিধির বৈশিষ্ট্য বহন করে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থাসহ (ইউএসজিএস) আন্তর্জাতিক ভূকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলোও ভূমিকম্পটির প্রাকৃতিক চরিত্র নিশ্চিত করেছে।

    গোপন পারমাণবিক বিস্ফোরণের সম্ভাবনাও নাকচ করে দেন রামথান। সতর্ক করেন, সক্রিয় ফল্ট লাইনের কাছাকাছি এমন পরীক্ষা চালানো হলে তা বিপর্যয়কর ভূমিকম্প ঘটাতে পারে—যা সব পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রই এড়িয়ে চলে।

    তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক পরীক্ষাজনিত ভূমিকম্পগুলো সাধারণত অগভীর এবং খুব কমই ৩.০ মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এই ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫.০-এর বেশি, যার জন্য কয়েক মিলিয়ন টন টিএনটির সমপরিমাণ শক্তির প্রয়োজন—যেটা বর্তমান কোনো পারমাণবিক ক্ষমতার আওতার বাইরে।’

    তিনি এই গুজবকে ‘বৈজ্ঞানিক অজ্ঞতা বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে আখ্যা দেন এবং নিশ্চিত করেন যে ভূমিকম্পটি ছিল সম্পূর্ণরূপে প্রাকৃতিক।

    আলবোর্জ পর্বতমালা, যা কাস্পিয়ান সাগর ও ইরানের কেন্দ্রীয় মালভূমির মাঝে অবস্থিত, দেশটির সবচেয়ে ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলগুলোর একটি এবং সাম্প্রতিক দশকগুলোতে এখানে একাধিক বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটেছে।

  • দেশব্যাপী বাড়ছে ডেঙ্গু-করোনার প্রকোপ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে আসছে কঠোর সিদ্ধান্ত

    দেশব্যাপী বাড়ছে ডেঙ্গু-করোনার প্রকোপ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে আসছে কঠোর সিদ্ধান্ত

    ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন দীর্ঘ ছুটি শেষে আগামীকাল (রোববার) থেকে পুনরায় খুলছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে সাম্প্রতিক সময়ে করোনা ও ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ বাড়তে থাকায় অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার।

    শনিবার (২১ জুন) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান আরটিভিকে জানান, এখনো পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামীকাল থেকে ক্লাস শুরু হবে।

    তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ইতোমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে তাৎক্ষণিকভাবে সরকারকে জানানো হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

    স্বাস্থ্যবিধি পালনে সচেতনতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে বিভিন্ন স্থানে মতবিনিময় সভা করা হচ্ছে বলেও জানান ড. আজাদ খান। তিনি বলেন, “আজ আমি নিজেই চারটি সভায় অংশ নিয়েছি সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে।”

    বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, করোনা ও ডেঙ্গু—উভয়ের প্রাদুর্ভাব বর্তমানে সমানভাবে বাড়ছে। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে।

    ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান বলেন, “ডেঙ্গু প্রতিরোধে শুধু ওষুধ ছিটানো নয়, পাশাপাশি সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে। জনগণকেও সচেতন হতে হবে।”

    এদিকে, ১৫ জুন মাউশি থেকে জারি করা এক নির্দেশনায় ডেঙ্গু ও করোনা প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে বলা হয়েছে।

    নির্দেশনায় বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে ডেঙ্গু ও করোনা মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নির্দেশ বাস্তবায়ন ও তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

    ডেঙ্গু প্রতিরোধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবার অংশগ্রহণে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের আয়োজন করতে বলা হয়েছে। এর আওতায় আলোচনা সভা, র‍্যালি, দেয়াল পত্রিকা, পোস্টার, লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

    করোনা প্রতিরোধে কঠোরভাবে অনুসরণযোগ্য পাঁচটি স্বাস্থ্যবিধি হলো:

    সাবান ও পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে নিয়মিত হাত ধোয়া।

    জনবহুল স্থান এড়িয়ে চলা ও বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরা।

    করোনা আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা (কমপক্ষে তিন ফুট)।

    চোখ, নাক বা মুখে হাত দেওয়ার আগে ভালোভাবে হাত ধোয়া।

    হাঁচি বা কাশির সময় মুখ ঢাকতে টিস্যু, রুমাল বা কনুই ব্যবহার করা।

    পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

  • জামানত ছাড়া ৫ লক্ষ পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে কৃষি ব্যাংক

    জামানত ছাড়া ৫ লক্ষ পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে কৃষি ব্যাংক

    আপনি কি কৃষি ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ নিতে চান? কত টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে, জামানত লাগবে কিনা, কিংবা কীভাবে আবেদন করবেন—এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই আজকের এই প্রতিবেদন।

    কৃষি ব্যাংকের ঋণের ধরন
    প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, কৃষি ব্যাংক কোন কোন ধরনের ঋণ প্রদান করে। সাধারণত পাঁচ ধরনের ঋণ দিয়ে থাকে এই ব্যাংকটি। সেগুলো হলো—

    সাধারণ কৃষি ঋণ
    মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদী কৃষি ঋণ
    প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ঋণ
    নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ
    ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই ঋণ

    কত টাকা পর্যন্ত ঋণ?
    কৃষি ব্যাংক জামানত ছাড়া ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে। আর জামানত সহ ঋণের পরিমাণ এক লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ২৫ লক্ষ টাকারও বেশি।

    মাসিক কিস্তি কত?
    একটি চার্ট অনুযায়ী, ১০% সুদে এক লক্ষ টাকা ঋণের মাসিক কিস্তি হবে—

    ১ বছর মেয়াদে: ৯,১৬৭ টাকা
    ৩ বছর মেয়াদে: ৩,২২৭ টাকা
    ৫ বছর মেয়াদে: ২,১২৫ টাকা
    ১০ বছর মেয়াদে: ১,২৫২ টাকা
    কারা এই ঋণ পেতে পারেন?
    কৃষি ব্যাংকের ঋণ পেতে পারেন নিম্নোক্ত পাঁচ শ্রেণির মানুষ:

    কৃষক: সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পান।
    ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা
    প্রবাসী বাংলাদেশি: সর্বোচ্চ ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জামানতসহ ঋণ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
    নতুন ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা
    নারী উদ্যোক্তা
    আবেদন করতে যা লাগবে:

    জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট (প্রবাসীদের জন্য)
    ঠিকানার প্রমাণ (বিদ্যুৎ বিল, বাসা ভাড়ার চুক্তিপত্র ইত্যাদি)
    ব্যবসার কাগজপত্র (যদি থাকে)
    আয়ের প্রমাণ
    প্রবাসীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট বা ভিসার কপি
    আবেদন পদ্ধতি:
    নিকটস্থ কৃষি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে সরাসরি আবেদন করা যাবে। এছাড়াও অনলাইনে কৃষি ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে ফর্ম পূরণ করেও আবেদন করা সম্ভব। প্রয়োজনে নির্দিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন।

    টাকা উত্তোলনের প্রক্রিয়া:
    আবেদন অনুমোদন হলে টাকা ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করা হবে। এজন্য অবশ্যই কৃষি ব্যাংকে একটি একাউন্ট খুলতে হবে।

  • ডিসি আশরাফের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, জানা গেল নারীর পরিচয়

    ডিসি আশরাফের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, জানা গেল নারীর পরিচয়

    শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের আপত্তিকর কয়েকটি ছবি ও ভিডিও নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড়। বিষয়টি আরও নাটকীয় মোড় নেয় ভিডিওতে থাকা নারীর পরিচয় প্রকাশ পাওয়ার পর।

    জানা গেছে, ওই নারী (৩৬) টাঙ্গাইল সদরের বাসিন্দা এবং ডিসি আশরাফ উদ্দিনের শ্যালক মাজহারুল ইসলাম সংগ্রামের সাবেক স্ত্রী।

    অভিযোগে তিনি বলেন, ‘পারিবারিক সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে ডিসি আশরাফ আমার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি আমাকে স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স করান। এখন বিয়ের কথা বললে গালাগাল করছেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। তিনি আমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতনও করেছেন।

    অন্যদিকে, শনিবার রাতে এক গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন জানান, ‘সম্পর্কটি পারিবারিক ঘনিষ্ঠতার সূত্রে গড়ে উঠেছিল। কিন্তু পরে ওই নারী আমাকে ফাঁদে ফেলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। এরপর ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ দাবি করতে থাকেন। প্রতি মাসে তাকে টাকা দিতে হয়েছে, যার ব্যাংক লেনদেনের প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে।’

    তিনি আরও বলেন, ওই নারী তার স্বামীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করতে চাপ দেন।

    মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। তিনি ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের পরিচালক ছিলেন।

    এদিকে বিতর্কের প্রেক্ষিতে শনিবার (২১ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে মন্ত্রণালয়ে উপসচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

    সূত্র: আরটিভি

  • তুষারের সঙ্গে ভাইরাল ফোনকল নিজের বলে স্বীকার করে নিলেন এনসিপি নেত্রী

    তুষারের সঙ্গে ভাইরাল ফোনকল নিজের বলে স্বীকার করে নিলেন এনসিপি নেত্রী

    জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি নেতা সারোয়ার তুষারের সঙ্গে এক নারীর কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই অডিওতে নারী কণ্ঠটি এনসিপির এক নেত্রীর বলে দাবি করা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এর পর থেকে এনসিপির একাধিক নেত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ে।

    তবে তুষারের সঙ্গে ওই কথোপকথনটি নিজের বলে স্বীকার করেছেন এনসিপি নেত্রী নীলা ইস্রাফিল। তিনি বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘ এক পোস্টে এ কথা স্বীকার করেন। ওই পোস্টে তিনি জানান, ‘নেপালে যাওয়ার পর থেকে তুষার প্রায়ই ফোন করতো ও তার আলাপের ধরন পাল্টাতে থাকে। সে আমাকে বিভিন্নভাবে অ্যাপ্রোচ করতে থাকে— “তোমার ছবি দাও”, “তোমার ঠোঁট সুন্দর”, “তোমার স্লোগান, তোমার প্রতিবাদী কণ্ঠ আমাকে আকৃষ্ট করে।”

    তিনি আরও বলেন, ‘আমি তুষারকে এই ধরনের আলাপে সব সময়েই বিব্রতবোধ করেছি এবং তাকে আমাদের সম্পর্ক সাংগঠনিক ও ফর্মাল রাখতে অনুরোধ রেখেছি। যেহেতু বাংলাদেশের নতুন রাজনীতি, এনসিপি আমার জীবনের প্রধান অবলম্বন, আমি তুষারকে তার আগ্রাসী আচরণ সংযত রেখে, ফর্মালভাবে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখি। বাংলাদেশের অসংখ্য নারীকে ক্ষমতাবান পুরুষের সাথে এই ধরনের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হয়।’

    নীলা ইস্রাফিল ভাইরাল কথোপকথনের বিষয়ে বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখে এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি। রোজার সময় একদিন তুষার আমাকে অত্যন্ত আপত্তিকর একটি কথা বলে। ইতোপূর্বে সকল আলাপের সীমা ছাড়ানো এই আলাপে আমি বিব্রত বোধ করি এবং ওকে জানাই যে আমি আর কথা বলতে চাই না। কিন্তু তুষার আমাকে আলাপের জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে তুষার আমাকে জানায় ডিটেকটিভ পুলিশ বা ডিবি ওর সাথে কথা বলেছে, সেই বিষয়ে সে আমার সাথে আলাপ করতে চায়।’

    নীলা একটি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি উল্লেখ করে আরও লিখেন, ‘তুষার আমাকে ডিবির কথা বলেছে, তাই আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি নিশ্চয়ই আইনি, ডিবি ও পুলিশসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলাপ হতে পারে এবং আমার নিরাপত্তার জন্য হুমকির কোনো বিষয় থাকতে পারে—এই বিবেচনায় আমি আলাপটি রেকর্ড করি। প্রায় দেড় ঘণ্টার আলাপে ৪৭ মিনিট আমি রেকর্ড রাখি। তুষার আমাকে জানায়, ডিবি তাকে নীলা ইস্রাফিল সম্পর্কে জানতে চেয়েছে এবং সে ডিবিকে জানিয়েছে যে নীলা তার গার্লফ্রেন্ড—যা নিয়ে আমি তুষারকে প্রশ্ন করি। তাছাড়া আমরা তুষারের খারাপ প্রস্তাব নিয়েও আলাপ করি। আমি তাকে প্রশ্ন করি, আমার কোনো অ্যাটিটিউড, ব্যবহার বা আচরণে মনে হয়েছে আমাকে এই ধরনের প্রস্তাব করা যেতে পারে? তুষার আমাকে বিষয়টি ভুলে যেতে বলে।’

    সম্প্রতি বিষয়টি এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জানান উল্লেখ করে নীলা লিখেছেন, ‘কোরবানির দিন রাতে একটি অনুষ্ঠানে নাহিদের সাথে দেখা হয় এবং নাহিদকে বিষয়টি জানাই। নাহিদ আমাকে বিষয়টি দলীয় শৃঙ্খলার দিক থেকে ডিল করতে ও মহানগরে দায়িত্বে থাকা শাহরিয়ার ও নিজামকে বিষয়টি অবগত করতে বলে। যে দিন সন্ধ্যায় শাহরিয়ার ও নিজামকে আমি জানাই, তার পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জানতে পারি যে, অডিওটি কেটে সামাজিক মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়েছে এবং ভাইরাল হয়েছে। এরপর আমাকে নিয়ে যে মিডিয়া ট্রায়াল হয়, তাতে আমি দেখতে পেয়েছি, আমার নারী সহকর্মীরাও আমার পক্ষে দাঁড়ায় নাই।’

    সূত্র : বিডি২৪লাইভ

  • সারোয়ার তুষারের সঙ্গে যেভাবে পরিচয় সেই নারীর, যে কারণে অডিও ফাঁস

    সারোয়ার তুষারের সঙ্গে যেভাবে পরিচয় সেই নারীর, যে কারণে অডিও ফাঁস

    জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতা সারোয়ার তুষারের সঙ্গে এক নারীর কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই অডিওতে নারী কণ্ঠটি নিজের বলে দাবি করেছেন নীলা ইসরাফিল নামের এক তরুণী। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘ এক পোস্টে এ কথা স্বীকার করেন তিনি।

    এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন সারোয়ার তুষার।

    ওই পোস্টে তিনি ভাইরাল হওয়া অডিওর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তরুণীর নাম প্রকাশ না করে তাকে ‘ক’ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। একই সঙ্গে তরুণীর সঙ্গে পরিচয় ও অডিও ফাঁসের কারণ হিসেবে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন তিনি।
    পাঠকদের জন্য সারোয়ার তুষারের পোস্টটি হুবহু দেওয়া হলো :

    ‘যেকোনো ঘটনায় জড়িত সংশ্লিষ্ট উভয়পক্ষ যদি একই ধরনের ইন্টিগ্রিটি না দেখায়, তাহলে ঘটনার ফেয়ারনেস নষ্ট হয়। দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার এই, ঢাকার এলিট বাবলগুলোতে যারা মানবাধিকার, জাস্টিস ইত্যাদি নিয়ে প্রচণ্ড উচ্চকিত থাকেন, তারা খেয়াল করেন না কিভাবে তারা জাস্টিস অর্জন করতে গিয়ে নতুন করে ইনজাস্টিস করছেন, কিভাবে তাদের মানবাধিকার তোড়জোড়ের মধ্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।

    নিজের গোষ্ঠীকে জাস্টিফাই করতে উচিত-অনুচিত ন্যারেটিভ এস্টাবলিশ করতে যেমন তারা বদ্ধপরিকর; তদ্রুপ, নিজ গোষ্ঠীর বাইরে (যাদের ব্যাপারে তারা বৈরিভাবাপন্ন) কাউকে নাস্তানাবুদ ও ঘায়েল করতে এমনকি মিথ্যা প্রতিষ্ঠা করতেও তারা পিছপা হন না।’

    “সাম্প্রতিক সময়ে আমাকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ একটা হৈচৈ দেখা যাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমার চরিত্রের ব্যবচ্ছেদ করা এবং আমার সম্পর্কে রায় দেওয়া সংশ্লিষ্ট সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। এর আগে বছর চারেক আগে আমি একবার কাছাকাছি ধরনের ফেসবুক আদালতের তোপের মুখে পড়েছিলাম।

    তখন আমার সিদ্ধান্ত ছিল, যা-ই হোক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়ার বাজারে আমি ব্যক্তিগত কেচ্ছাকাহিনি নিয়ে চর্চা করব না৷ উপযুক্ত ফোরামে নিজের লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য জানাব। তাই করেছিলাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ সোশ্যাল মিডিয়া আক্রমণ তাতে থেমে থাকে নাই। আমি দীর্ঘ তিন বছর একটা প্রক্রিয়া মেনে প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম; অন্যদিকে আমার ব্যাপারে যা খুশি তাই মন্তব্য করা এবং আমাকে যেকোনো প্রকারে অপদস্থ করাকে অনেকেই নিজেদের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম-এর অংশ বানিয়ে ফেলেছিলেন। নীরব রক্তক্ষরণ সত্ত্বেও আমি সেসব ওভারলুক করে গেছি।

    কেউ যদি এখনো ওই ঘটনা জানতে আগ্রহী থাকেন, ফেসবুকে আদালত না বসিয়ে ‘লেইটস রিওপেন অল দ্য ডকুমেন্টস’।”
    ‘গত দুই দিন ধরে আবারও আমি মহামান্য ফেসবুক আদালতের ব্যাশিংয়ের শিকার হচ্ছি। আগের পোস্টে লিখেছি, আমি শতভাগ ত্রুটিমুক্ত মানুষ নই। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত জীবনের কোনো ঘটনাকে যখন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এবং আমার দলকে ঘায়েল করার লক্ষ্যে ব্যবহার করা হয়, তখন তা আর ন্যায্য থাকে না। পয়লা নম্বর প্রশ্ন হচ্ছে, আমার সাথে অপর এক ব্যক্তির ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করল কে বা কারা? এবং সেটা কীভাবে দেশের বাইরে থাকা অ্যাক্টিভিস্টদের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় কাঁটছাঁট করে পরিপ্রেক্ষিতহীনভাবে ভাইরাল করা হলো? এই কাজটা কার করা?’

    ‘ধরা যাক, সংশ্লিষ্ট অপর ব্যক্তির নাম “ক”। তাকে আমি চিনেছি, আপনাদের মতোই, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। শুরুতে তার পারিবারিক কোনো ঘটনা আমার নলেজে ছিল না। জাতীয় নাগরিক কমিটির অফিসে (তখনো এনসিপি আত্মপ্রকাশ করেনি) তিনি একদিন আসেন এবং আমার সাথে সামান্য কথা হয়। একদিন সন্ধ্যায় তিনি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আমাদের অফিসে আসেন। তখন শীতকাল। সম্ভবত ডিসেম্বর মাস। তার ভাষ্যমতে, প্রাক্তন স্বামী তাকে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করেছেন। শুরুতে আমি অফিসে ছিলাম না। তিনি নাকি অফিসে এসে আমাকে খুঁজেছেন। এমনকি লিফটের ১৫ তলা উঠতে উঠতে আমার কথা জিজ্ঞেস করেছেন। অফিসে যারা সে সময় উপস্থিত ছিলেন, তারা তাকে প্রাথমিক শুশ্রুষা দেন। কিছুক্ষণ পর অফিসে আমি আসি এবং যার পরামর্শ ছাড়া তিনি কোনো কাজ করেন না বলে ফেসবুকে জানিয়েছেন, সেই মানবাধিকার লেনিন ভাইও আসেন। জানাক থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসলে পুলিশি প্রটোকলে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সাথে আমাদের কমিটির আরো একজন পুরুষ ও নারী কর্মীও ছিলেন। গভীর রাত পর্যন্ত তাকে দুইটা হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে তারপর পুলিশ প্রটোকলসহই তাকে ধানমণ্ডির এক বাসায় পৌঁছে দেই। আমরা তাকে মামলা করতে পরামর্শ দেই, তিনি জানান তিনি মামলা করবেন না। যাক, সেটা তার ব্যাপার। ওই রাতেই আহত অবস্থায় এবং পরে আরেকদিন দেখা হলে তিনি আমাকে বলেন, তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে উচিত শিক্ষা দেব।’

    ‘খেয়াল করবেন, “ক” তার সর্বশেষ পোস্টে এই ঘটনাটার কথা উল্লেখ করেছেন ঠিকই; কিন্তু আমি ও জানাক যে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাকে পুলিশ প্রটোকল দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলাম, এই তথ্যটা তিনি বেমালুম চেপে গেছেন। মানবাধিকার লেনিন ভাই, শহিদুল আলম, সারা হোসেন সবার নামই আছে। কিন্তু ওই রাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী সারোয়ার তুষার ও মুশফিকুর জোহানের নাম নাই। বেশ!’

    ‘শহিদুল আলম ও সারা হোসেন তার জন্য ওই দিন কি করেছেন আমার জানা নাই। ‘তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে উচিত শিক্ষা দেব’ — তার এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলেছিলাম, আপনি শহিদুল আলম, রেহনুমা, সায়দিয়া গুলরুখ তাদেরকে ঘটনাটা জানান। তারা এসব ক্ষেত্রে বেশ হেল্পফুল। তখন “ক” আমাকে বলেছিলেন, তিনি সবার দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছেন, সবাই তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তার কোন কথা সত্য বা মিথ্যা আমার জানা নাই, কিন্তু তিনি এটাই বলেছিলেন।’

    ‘যাই হোক, সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনি অনেকগুলো মিথ্যাচার করেছেন। ভুল ও বিকৃত তথ্য দিয়েছেন। তিনি এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো নেত্রী নন। কেন্দ্রীয় বা মহানগর পর্যায়ে তিনি কোনো পদ হোল্ড করেন না। এমনকি তিনি এনসিপির সদস্যও নন। কাজেই তার সাথে আমার কোনো কথাবার্তা বা এক্সচেঞ্জের সাথে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক নাই; সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্কের কোনো হায়ারার্কিও নাই। এটা তিনিও জানেন। কিন্তু এখন গল্প সাজাতে গেলে যেভাবে বললে কাজ হবে, তিনি সেভাবে লিখেছেন বা তাকে সেভাবে লিখে দেয়া হয়েছে।’

    ‘তার কিছু বক্তব্য খেয়াল করা যাক : “মানবাধিকারকর্মী লেনিন ভাই আমাকে নেপাল পাঠিয়ে দেয়…” “ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি…” “নেপালে যাওয়ার পর থেকে তুষার প্রায়ই আমাকে ফোন করত ও তার আলাপের ধরন পাল্টাতে থাকে…” আমি তাকে প্রায়ই ফোন করতাম কি করতাম না সেটা পরের আলাপ। উল্লিখিত ৩ উদ্ধৃতি থেকে কী দেখা যাচ্ছে? তাকে মানবাধিকার ভাইজান নেপাল পাঠিয়ে দেন। কবে? এনসিপি আত্মপ্রকাশের পূর্বে। এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন তিনি দেশে এসেছেন। তার ভাষ্যমতে, তাকে আমি প্রায়ই ফোন করতাম তার নেপালে থাকা অবস্থায়। তখন তো এনসিপির আত্মপ্রকাশই ঘটে নাই। তাহলে “তাকে আমাদের সম্পর্ক সাংগঠনিক ও ফর্মাল রাখতে অনুরোধ রেখেছি….” এনসিপিই যখন গঠিত হয় নাই, তখন সম্পর্ক সাংগঠনিক ও ফর্মাল রাখতে বলার মানে কী?’

    ‘এনসিপি আত্মপ্রকাশ করে রমজানের ঠিক আগের দিন। এরপর পুরো রমজান মাসে এনসিপির কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। কে কোথায় কাজ করবে না করবে সে ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত তখনো আসেনি। ফলে আমার জানার কথা নয় “ক” এনসিপির কোথায় কাজ করতে চান। বা আদৌ চান কি না। ওই সময়ে আমি এনসিপির ২১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সবাইকেই ঠিকমতো চিনে উঠে পারি নাই। এ কথা বলার মানে হলো, রমজানের আগে, এমনকি রমজান মাসে তার সাথে আমার যতটুকুই যোগাযোগ হয়েছে, তা সাংগঠনিক দায়রা বা আওতার মধ্যে ঘটে নাই। ফলে তার সাথে আমার সাংগঠনিক সম্পর্ক দেখিয়ে ক্ষমতার যে হায়ারার্কি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা অমূলক।’

    ‘এবার আসি ফাঁসকৃত ভাইরাল অডিও সম্পর্কে। প্রথম অডিওতে, ওই বিশেষ শব্দটি আপনারা তার মুখেই শুনেছেন। আমি শুধু ব্যাখ্যা দিয়েছি মাত্র। না, না, ওই এক মুহূর্তে কথা দিয়ে আমাকে জাজ করো না, প্লিজ — এরকম ছিল আমার বক্তব্য। আসলে তিনিই খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শব্দটির কাছে আমাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কেন? সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ থাকে যে, তিনি যেহেতু কল রেকর্ড করার উদ্দেশ্যেই কলটি করেছেন, কাজেই কথাবার্তাকে একটা সুনির্দিষ্ট দিকে তিনিই নিয়ে গেছেন। এবং এটা ঘটেছে সম্পূর্ণ আমার অগোচরে। অর্থাৎ, আমি কথা বলেছি উইথ গুড ফেইথ; অন্যদিকে, তিনি কথা বলেছেন, কল রেকর্ড করে তা অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার মতলবে।’

    ‘খেয়াল করার মতো বিষয়, ওই অডিও কলটির পরিপ্রেক্ষিত আমলে না নিলে চলে না। তিনি আরো একটি চ্যাট স্ক্রিনশট অন্যদের কাছে চালান করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আমাদের মধ্যে ৩২ মিনিটের একটি ভিডিও কল হয়েছে। সেই ভিডিও কলের প্রসঙ্গ সম্পূর্ণ ইগ্নোর করে পরবর্তী ৪৭ মিনিটের অডিও কল সম্পর্কে কি কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়? নিতান্তই ব্যক্তিগত স্পেসে ধারাবাহিক আলাপচারিতায় করা একটি প্রস্তাব এখন পাবলিক স্পেসে আসায় অশোভন মনে হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ওই প্রশ্ন পর্যন্ত যাওয়ার একটি পরম্পরা আছে: ভিডিও কল>চ্যাটিং>অডিও কল। এই সিকোয়েন্স মার্ক করতে হবে। এমন কথা আমি না বললেই ভালো করতাম। আমার আরো সংযত হতে হবে। কিন্তু এখন আমার এই চরম চরিত্র হননের মুহূর্তে না বলে পারছি না, নারী-পুরুষ সম্পর্কে ক্ষমতার প্রশ্নটি এত সরল নয়। সম্মতি (কনসেন্ট; যা পুরুষ নারী কর্তৃক আদায় করে নেয় বলে অনুমান) ও বলপ্রয়োগ (কোয়ের্শন; যা নারীর অসম্মতিতে পুরুষ কর্তৃক প্রযুক্ত হয় বলে অনুমান) — এই দুই বাইনারির বাইরেও সিডাকশন তথা ফুসলানোর ক্ষমতাও যে এক ধরনের ক্ষমতা, নৃবিজ্ঞানী তালাল আসাদ সূত্রে এ কথা আমাদের অজানা নয়। অর্থাৎ, এই কনভার্সেশনের ক্ষেত্রে পরিপ্রেক্ষিত তথা উভয়পক্ষের যোগাযোগের ধারাবাহিকতা, ফুসলানো ইত্যাদিকে আমলে না নিলে ঘটনার সার্বিকতায় পৌঁছানো যায় না।’

    ‘“ক”-র সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টের কনশাস-আনকশাস মিলিয়ে যা ধরা পড়ে, যে সকল নাম তিনি নিয়েছেন, তাতেই তার নিয়ত অনেকটা খোলাসা হয়। আমার সাথে তার কথাবার্তার ব্যাপারে নাকি তিনি আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ডকে জানান। আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ড কি আমার বিচারক নাকি আদালত? তাকে কেন জানাতে হবে? কারণ কি এই যে, তিনি আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় নিয়মিতভাবে আদালত বসান? তারপর কি তার সাথে ফন্দি করেই আপনি কল রেকর্ড করেছেন এবং দেশের বাইরের অ্যাক্টিভিস্টদের কাছে পাচার করেছেন? প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক।’

    ‘রোজা ও রোজার আগের ঘটনা তিনি নাকি “সাংগঠনিক গোপনীয়তা রক্ষা করে” মীমাংসা করতে চেয়েছেন। কী কী পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন এই আড়াই মাসে? সংগঠনে কোনো লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন? কাউকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন? জানান নাই।
    রোজার প্রায় তিন মাস পর, আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রায়ালের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে, কোরবানি ঈদের রাতে এক সামাজিক দাওয়াতের প্রোগ্রামে এসে “ক” এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে মৌখিকভাবে আমার বিরুদ্ধে নালিশ করেন। সেটা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনার মতো কোনো পরিবেশ ছিল না। তবু আহ্বায়ক “ক”-কে ভালো করে না চেনা সত্ত্বেও বলেন, শৃঙ্খলা কমিটি ও মহানগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতাকে যেন জানান। ইতিমধ্যেই কয়েকদিন পর কল রেকর্ড ফাঁস করার পর তিনি সামান্তা শারমিনকে দেখা হলে একই কথা জানান। সেখানে সামান্তা তাকে “মাহরাম” জাতীয় কিছু বলেন নাই, অথচ এই মিথ্যা প্রচারণাটাই চালানো হচ্ছে।’

    ‘কয়েকটা ব্যাপার পরিস্কার থাকা জরুরি : “ক” এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো নেত্রী বা কর্মী নন। তার সাথে আমার কোনো ধরনের সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্ক বিরাজ করে না। তাকে দূরে রাখেন… মহানগর বা সেলের কাউকে আমি এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেই নাই। আসলে সেই এখতিয়ারই আমার নাই। তার এই দাবির সত্যতা কী? কে তাকে বলেছে আমি এমন নির্দেশনা দিয়েছি?’

    ‘মহানগর বা কেন্দ্রীয় সেলে কাকে নেওয়া হবে বা না হবে সেটা একান্তই ওই সকল কমিটি ও সেলের সিদ্ধান্ত। আমি এমনকি ঠিকমতো জানি না মহানগরের কোন কমিটি ও সেলের কোন দায়িত্ব কে দেখভালো করছে। পার্টিতে আমার কাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমি তা পালন করতেই এত ব্যস্ত থাকি যে, কমিটি ও সেল নিয়ে মাথা ঘামানো বা প্রভাবিত করার সময় বা সুযোগ কোনোটাই আমার নাই। কেন্দ্রের বাইরে এনসিপির কোনো সেল নাই। সেলে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় সদস্য হতে হবে। “ক” এনসিপির কেন্দ্রের সদস্য পর্যন্ত নন। তাহলে তাকে সেলে না নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি কীভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারি? সেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা তথা কেন্দ্রীয় সদস্য পদই তো তার নাই! মহানগরের কমিটি যারা দেখেছেন, তাদেরকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে কাকে অন্তর্ভুক্ত করবে না করবে। এ ব্যাপারেও আমি হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার বা ক্ষমতা রাখি না।’

    ‘দুটি ব্যাপার খেয়াল করতে হবে : এক. তিনি আমাকে কোনো বিশেষ সুবিধা দিলেও তিনি যে দলে ঢুকতে পারবেন, এর কোনো নিশ্চয়তা নাই। কারণ দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সাথে আমি জড়িত নই। কাজেই যেমনটি প্রচার করা হচ্ছে, আমাকে বিশেষ সুবিধা না দেওয়ার কারণে তিনি এনসিপিতে আসতে পারছেন না, এই দাবি ভিত্তিহীন। দুই. আমাকে বিশেষ সুবিধা না দিলেও দল যদি তাকে কোনো স্তরে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, আমি সেখানে বাধাগ্রস্ত করার অধিকার সংরক্ষণ করি না। ওই একই কারণে : কারণ দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সাথে আমি জড়িত নই। এটা সম্পূর্ণতই আমার কাজের সীমানার বাইরের ব্যাপার।’

    ‘কাজেই এনসিপিতে তিনি আসতে পারছেন কি পারছেন না এ ক্ষেত্রে আমার করণীয় বিশেষ নাই। তবে এনসিপির বিভিন্ন ঘোষিত পাবলিক কর্মসূচিতে তাকে অংশ নিতে দেখেছি। সেখানে তাকে বারণ করা বা উৎসাহিত করার কোনো সুযোগ আমার ছিল না। এ ধরনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে এসে তিনি কখনো আমার পাঞ্জাবি টেনে ধরে বা কখনো আমার পথ আগলে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, তাকে দলে নেওয়া হচ্ছে না কেন। যতবার তিনি আমাকে এই প্রশ্ন করেছেন, আমি একটাই উত্তর দিয়েছি : কমিটি দেওয়ার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। আপনি কোনো কমিটিতে আসতে চাইলে বিষয়টা যারা দেখছেন, তাদের সাথে কথা বলুন। এ ব্যাপারে আমার বিশেষ কিছু করণীয় নাই।’

    ‘এক পর্যায়ে, সম্ভবত এ বছরের মে মাসের একদম শেষের দিকে অথবা জুনের শুরুতে অফিসে একদিন তার সাথে আমার দেখা হয়ে যায়। তিনি আমার সাথে কথা বলতে চাইলে আমি তার সাথে দলীয় কার্যালয়ের মিটিং কক্ষে বসি। এটাকেই অডিও কলে তিনি বলছেন, আমি তোমাকে রুমে নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি.., তিনি আমার কাছে জানতে চান : তাকে নেওয়া হচ্ছে না কেন। আমি একই উত্তর দেই। তিনি আমাকে এক প্রকার চাপ প্রয়োগের সুরেই বলেন, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত তথা নেওয়া হবে কি হবে না এটা তাকে জানাতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে আমাকে ফোন করবেন। ম্যাসেঞ্জার চেক করে দেখলাম, তিনি ৬ জুন ম্যাসেঞ্জারে কল দিয়েছিলেন। আমি ধরিনি বা ধরতে পারিনি। বাকি ঘটনা আপনাদের চোখের সামনে।’

    ‘দুইদিন আগে প্রথম যখন অডিও রেকর্ডটি ফাঁস হলো, আমি সত্যি সত্যি ভেবেছিলাম আমাকে বিতর্কিত করতে কাজটা এজেন্সি করেছে। আমি “ক”-কে জিজ্ঞেস করি, এই কল রেকর্ড ও ফাঁস কে করল? আপনারা কিন্তু দ্বিতীয় অডিও রেকর্ডে শুনতে পেলেন, তিনি বলছেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। তিনিও আমার কাছ থেকে মাত্র দেখলেন। তিনি যেন আকাশ থেকে পড়েছেন! আমিও সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করলাম। কি বোকা আমি! সাথে সাথে তাকে অনুরোধ করলাম, যেহেতু কাজটা আপনি করেন নাই, কাজেই আপনি একটা ক্ল্যারিফিকেশন দেন প্লিজ এবং উদ্বেগ জানান এভাবে ব্যক্তিগত আলাপ কারা ফাঁস করে! আপনি যে দল করতে চান, সে দলের নেতার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার তো আপনার ভালো লাগার কথা নয়! তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমাকে লিখে দাও আমি কী বলব, তবে আমি লেনিন ভাইয়ের সাথে পরামর্শ করব।’

    ‘এরপর বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করলাম, দ্বিতীয় কলটি শেষ হতে না হতেই আধঘণ্টার মধ্যে সেটিও অনলাইনে চলে আসল এবং দাবি করা হলো আমি তাকে “চাপ” প্রয়োগ করছি আমার পক্ষে স্টেটমেন্ট দিতে। অথচ নিজের হাতে আমার কলটি আরেক মোবাইল থেকে ভিডিও ধারণ করে সেটা বিদেশে পাচার করেছেন তিনি নিজেই। তারপর আবার আমি জিজ্ঞেস করার পর আবারও তিনি আকাশ থেকে পড়েছেন। তিনি নাকি কিছুই জানেন না! তার এই ডাবল গেম এবং এর পেছনে ক্রিয়াশীল পুরো সিন্ডিকেটটা সনাক্ত করতে আমার বেশ খানিকটা সময় লেগে গেছে।’

    ‘এই সিন্ডিকেটের মোটিভ পরিস্কার। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে আমার মানহানী ও চরিত্রহনন করা। সেভাবেই তাকে স্ক্রিপ্ট লিখে দেওয়া হয়েছে। দুইজন ব্যক্তির কথোপকথনে যদি একজনের নিয়ত থাকে তিনি কল রেকর্ড করবেন এবং তা ফাঁস করবেন; দ্বিতীয় ব্যক্তি যদি এই পরিকল্পনার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকেন, তাহলে যা ঘটার কথা, আমার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।’

    ঘটনাটা সোশ্যাল মিডিয়ায় কারা পিক করেছে তা খুব পরিস্কার। আওয়ামী কালচারাল উইং, ৫ আগস্টের পর থেকে আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যে নাখোশ বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ এই ঘটনাকে লুফে নিয়েছে। তাদের টার্গেট স্রেফ আমি না; বলা ভালো, এনসিপিই তাদের প্রধান টার্গেট। ঈদের পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু হওয়ার ঠিক আগের রাতে আমার বিরুদ্ধে এই সংঘবদ্ধ অনলাইন মব সৃষ্টি, নিছক কাকতাল নয়। তারা খুব ভালোভাবেই অবগত আছেন, এনসিপির পক্ষে আমি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দলের পজিশন তুলে ধরি। গত কয়েকমাসে রাজপথের বক্তৃতায়, টকশোতে এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার প্রশ্নে আমার অনমনীয় অবস্থান সমাজে ওয়েল এস্টাবলিশড। আমি যে টার্গেট হব, এটা আশ্চর্যের নয়। রাজনৈতিক বিরোধিতা ও না-পছন্দকে ব্যক্তিগত চরিত্রহননের মতো ঘৃণ্য কাজের মাধ্যমে মোকাবেলার মতো জঘন্য কাজ আর হয় না।’

    ‘জনাবা “ক” অবশ্য তাজনূভার দুঃখে কাতর! কেন অহেতুক তাজনূভাকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই চরিত্রহনন ও যৌন আক্রমণ চলছে, তা তাকে বেশ দুঃখিত করেছে বৈকি! অথচ দুইটা দিন তিনি চুপ থাকলেন, হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে বলতে থাকলেন, তিনি কল ফাঁসের ব্যাপারে কিছু জানেন না। এদিকে তাজনূভার সাথে এটা ঘটতে দিলেন। ওই নারীর পরিচয় জানার পরও তাজনূভাসহ এনসিপির নেতাকর্মীরা তার পরিচয় ফাঁস না করে রাজনৈতিক ভদ্রতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তাজনূভা জাবীনও যে তার শক্ত রাজনৈতিক অবস্থান ও বক্তব্যের কারণে কোনো কোনো পক্ষের চক্ষুশূল, তা বলাই বাহুল্য।’

    ‘ভালো কথা, গত ১৬ মে অনুষ্ঠিত নারীদের মৈত্রীযাত্রার একটা ঘটনা শেয়ার করি। সেখানে যাওয়ার কারণে তাজনূভা বেশ আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। আমি তাজনূভার পক্ষে প্রতিবাদ করে ফেসবুকে কিছু কথা লিখেছিলাম। এরপরের দিন, গত ১৭ মে, জনাবা “ক”, আমাকে ম্যাসেঞ্জারে লেখেন, “তুমি আমার কথাটা উল্লেখ করতে পারতে।” অর্থাৎ, মৈত্রীযাত্রায় যাওয়ার কারণে তিনিও আক্রমণের শিকার হয়েছেন, সেটা আমি কেন উল্লেখ করলাম না এই নিয়ে তার অনুযোগ! অথচ তার ভাষ্যমতে আমি তাকে “কুপ্রস্তাব” দিয়েছি গত রোজায়, মার্চ বা ফেব্রুয়ারি মাসে!’

    ‘কল রেকর্ড ফাঁসের পর গত দুইদিন তিনি আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নানা কথা বলেছেন। যার সারমর্ম হচ্ছে তিনি এটা “দলের ভেতরেই মিটমাট” করতে চেয়েছেন, আমি নাকি সেই সেই সুযোগ রাখি নাই। কীভাবে? আমাকে চরমভাবে অপদস্থ করার পর কেউ কেউ যখন তাকে সনাক্ত করতে পেরেছেন, তার বিরুদ্ধেও কেউ কেউ কিছু কথা বলেছেন। এগুলো নাকি আমি করিয়েছি! তিনি আর এসব “বাড়াতে চান না”।’

    ‘বাহ! একদিকে আমাকে অনলাইন নাৎসিদের হাতে তুলে দিয়ে চরমভাবে অপদস্থ ও চরিত্রহননের পর তিনি আর “বাড়াতে চান না”। আমি তাকে বলেছি, সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের ঘটনা ব্রেক হওয়ার পর, সেসব আর কারো নিয়ন্ত্রণে থাকে না। পক্ষে-বিপক্ষে কথা ছড়ায়। এখানে আমার কোনো হাত নাই। আমার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন মব সৃষ্টি করার পর আমার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, “তুমি মব সৃষ্টি করছো”।’

    ‘গত দুইদিন আমি এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে আছি। আমার নামে বিভিন্ন ফেইক স্ক্রিনশট ভাইরাল করা হয়েছে, আমার ছবি বিভিন্ন পর্নো সাইটে তুলে দিয়ে সেসব “ডিস্টরটেড অ্যান্ড এডিটেড” ছবির স্ক্রিনশট আবার ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। আমার আর তাজনূভার ছবি জুড়ে দিয়ে জঘন্য অশ্লীল ও যৌনাত্মক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এতে করে আমার সামাজিক মর্যাদা, রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং আমার দলের ইমেজ ভূলণ্ঠিত। দেখা যাচ্ছে যে, আমার ব্যক্তিগত ও মানবিক মর্যাদা এভাবে ধূলিসাৎ করাটাও অনেকের কাছে ন্যায়ের পরাকাষ্ঠা!’

    ‘এসবের পরিবেশ তৈরি করেও নাকি ভদ্রমহিলা এই দলকে বিতর্কিত করতে চান না, তিনি এই দলের ভালো চান, তিনি সব মিটমাট করতে চান! তথাস্তু!’

    ‘যেভাবে এই ঘটনায় নাহিদ ইসলাম, সামান্তা শারমিন, তাজনূভা জাবীন ও দলের অন্যান্য নারীদের টেনে আনা হয়েছে, তাতে খুবই পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে এনসিপিই টার্গেট। এনসিপির ইমেজ ডাউন করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটাই এই পুরো ঘটনাপ্রবাহের মূলে। আমার দল যখন নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিতে চরম ব্যস্ত সময় পার করছে, ঐকমত্য কমিশনে রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে সবচেয়ে ডিসাইসিভ ও বোল্ড পজিশন নিয়েছে, তখনই এই সংঘবদ্ধ আক্রমণ ঘটানো হলো।’

    ‘নতুন দল হিসেবে এনসিপি এক মিডিয়া ক্রুসেডের মুখোমুখি। প্রতিদিনই এনসিপির বিরুদ্ধে চরম আপত্তিকর ও ভুলভাল তথ্য অনলাইনে ছাড়া হচ্ছে। সামনে এটা আরও বাড়বে। ইনশাআল্লাহ, এনসিপি এসব মোকাবেলায় প্রস্তুত আছে। আমি দলের কাছে লিখিত জবাব দেব। আমার জবাব অবশ্য আমি নিজেই লিখি, অন্য কাউকে লিখে দিতে হয় না।’

    ‘সংশ্লিষ্ট অপর নারী নিজ প্রোফাইল থেকে আমার বিরুদ্ধে পোস্ট দিলেও, এখানে আমি তার নাম নিলাম না। এজন্য চড়া মাসুল দিতে হলেও এটা আমার মডেস্টি আর ইন্টিগ্রিটির একটা স্মারক হয়ে থাক। ব্যক্তিগত যৌন-কেচ্ছার জায়গা অনলাইন পরিসর নয়। যারা সংশ্লিষ্ট নারীকে চিনেছেন, তাদের কাছে আমার আহ্বান, তার ব্যাপারে কোনো কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করবেন না। এহেন কুৎসা সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা না হওয়াই কাম্য। আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার।’

  • হাসিনার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

    হাসিনার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

    ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দেশ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা পাচারের তথ্য বেরিয়ে আসছে। এ টাকায় তারা বিদেশে বিভিন্ন কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেছে। দেশ থেকে ব্যাংক লুট ও বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা বিদেশে পাচার করে এসব সম্পদ গড়ে তোলা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।

    এর মধ্যে এখন পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার বাড়ি, শেখ রেহানার মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট শনাক্ত হয়েছে। পতিত প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অফশোর বিনিয়োগের তথ্য অনুসন্ধান চলছে।

    এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজার নামে বিলাসবহুল বাড়ি পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের নামে বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকে অর্থ জমার তথ্য পাওয়া গেছে।

    এছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও নেতাকর্মীদের নামেও যুক্তরাজ্যে সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেগুলোর বিষয়ে বিশদ তদন্ত হচ্ছে। সম্পদের মধ্যে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকে অর্থ জমার তথ্যও মিলেছে।

    আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আলোচিত বড় ধরনের দুর্নীতির ঘটনাগুলো সরকারের একাধিক সংস্থা থেকে তদন্ত চলছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বা বিএফআইইউ, দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল বা সিআইসি, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিও আছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক একাধিক তদন্ত সংস্থারও সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এদের তদন্তের ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

    জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সহযোগী সংস্থা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল বা সিআইসি দেশ থেকে টাকা পাচারের ঘটনা ব্যাপকভাবে তদন্ত করছে। সংস্থার একটি টিম সম্প্রতি বিভিন্ন দেশ ঘুরে এসেছে। তারা সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদার, ওরিয়ন গ্রুপ ও আরও একটি গ্রুপের নামে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকা সম্পত্তি ও ব্যবসায়ে বিনিয়োগ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করেছে। এছাড়া এস আলম গ্রুপ, সামিট গ্রুপ ও পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অফশোর বিনিয়োগের তথ্য অনুসন্ধান করছে। আলোচ্য গ্রুপের সম্পদের বেশকিছু আলোকচিত্রও তারা নিয়ে এসেছে।

    এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনজনের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের ৩৩৬টি বাড়ি বা ফ্ল্যাট ও ব্যাংক হিসাবে ৩৫ কোটি টাকা জমা অর্থ। এগুলোর কেনা দাম কম হলেও বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১ হাজার ২৫ কোটি টাকা। সালমান এফ রহমানের ছেলে সায়ান এফ রহমান ও তার ভাতিজা শাহরিয়ার রহমানের দুটি বিলাসবহুল বাড়ি জব্দ করা হয়েছে। এই দুটির মূল্য প্রায় ৭৭ লাখ পাউন্ড বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বেশি। আরও একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের দুজনের নামে যুক্তরাজ্যে সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলোও জব্দ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি বা এনসিএর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই রনি চৌধুরীর নামেও যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন ব্যবসার তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো জব্দের জন্যও চিঠি দেওয়া হয়েছে।

    প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, শেখ হাসিনার পরিবারের আর কারও নামে-বেনামে দেশটিতে কোনো সম্পদ আছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত কাজে তারা দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টিকরাপশন কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের (আইএসিসিসি) সহায়তা নিচ্ছে। ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি হচ্ছে যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তারা যে কোনো বিষয়ে তদন্ত করতে পারে। বিশেষ করে মানি লন্ডারিংয়ের ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে। আইএসিসিসি হচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত একটি আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংস্থা। এর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, সিঙ্গাপুর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা যুক্ত। তারা একে অপরের পরিপূরক হিসাবে তদন্ত করে। কোনো ঘটনা তদন্তের প্রয়োজন হলে ওইসব দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো একযোগে কাজ করে। বাংলাদেশে বিগত সরকারের ১১টি ঘটনার যে তদন্ত হচ্ছে, সেগুলোতে সহায়তা করছে ওই দুটি সংস্থাসহ আরও কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। যে কারণে দুর্নীতির মাধ্যমে পাচারের অর্থে বিদেশে গড়া সম্পদের তথ্য বের হয়ে আসছে।

    সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে যুক্তরাজ্যে ৩৩৬টি বাড়ি ও ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে। দলিল মূলে এগুলোর দাম ৩ লাখ ২০ হাজার ডলার বা প্রায় ৪ কোটি টাকা। বর্তমান বাজার মূল্য অনেক বেশি। এছাড়া লন্ডনের ব্যাংকে তার সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে। সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। তার ভাই রনি চৌধুরীর নামে যুক্তরাজ্যে হাউজিং ব্যবসার তথ্য পাওয়া গেছে। তার নামেও কয়েকটি বাড়ি বা ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে।

    এস আলম গ্রুপের নামে বিভিন্ন দেশে সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আরও তদন্ত হচ্ছে। বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমানের ছেলে সায়ান এফ রহমান ও তার ভাতিজার নামে লন্ডনে বিলাসবহুল ২টি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে। এগুলোর বাজার মূল্য ৭৭ লাখ পাউন্ড বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। যুক্তরাজ্যের বার্কলেস ব্যাংক পিএলসিতে ২টি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই হিসাবের লেনদেনের অর্থ সম্পর্কে তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ। সায়ান এফ রহমানের বাড়িটিতে এক সময় শেখ রেহানা থাকতেন বলে জানা গেছে। তবে তিনি এখন সে বাড়িতে থাকেন না।

    যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে লন্ডনে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিব। বর্তমানে এর মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিবের লন্ডনে আরও বাড়ি রয়েছে। তিনি সেখানে হাউজিং ব্যবসা করেন বলে জানা গেছে। লন্ডনে তার ব্যাংক হিসাবও রয়েছে।

    সিকদার গ্রুপের নামে চারটি দেশে সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে সম্পদের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত চলছে।

    যুক্তরাজ্যের একটি কোম্পানির ৬ লাখ ২৭ হাজার শেয়ার রয়েছে বাংলাদেশি একটি শিল্প গ্রুপের নামে। এগুলোর মূল্য প্রায় ৬০ লাখ পাউন্ড বা ১০২ কোটি টাকা। এগুলো জব্দ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শেয়ার কেনার অর্থ কিভাবে স্থানান্তর হয়েছে এখন সেগুলোর তদন্ত হচ্ছে।

    নাসা গ্রুপের নামে যুক্তরাজ্যে ৫টি সম্পদ পাওয়া গেছে। এছাড়া যুক্তরাজ্যশাসিত দুটি দ্বীপে জার্সি ও আইল অব ম্যানে আরও ২টি সম্পদ পাওয়া গেছে। সবগুলোর দলিল মূল্য ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৪৫ কোটি টাকা। তবে বাজার মূল্য কয়েকগুণ বেশি হবে। যুক্তরাজ্যশাসিত একটি দ্বীপ আইল অফ ম্যানের ব্রার্কলে ব্যাংকে ১টি হিসাব পাওয়া গেছে। এতে জমা ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

    যুক্তরাজ্যের সাবেক হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম ও তার স্বামী ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলামের নামে দেশটিতে সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ২০০ কোটি টাকার বেশি যারা পাচার করে যুক্তরাজ্যে সম্পদ গড়েছেন তাদের বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এছাড়া আরও অনেক পাচারকারী রয়েছেন যাদের দেশটিতে সম্পদ রয়েছে। সেগুলোর বিষয়ে পর্যায়ক্রমে তদন্ত হবে।

    সূত্র: যুগান্তর