ব্যাগের ভেতরে পুরুষের মা*থা’বিহীন শরীর, রোমহর্ষক দৃশ্য! যা জানাল পুলিশ

গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় ব্যস্ততম স্টেশন রোডের পাশে পড়ে থাকা একটি ট্রাভেল ব্যাগ দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। পরে তারা পুলিশে খবর দিলে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ব্যাগটি খুলতেই জন্ম হয় এক রোমহর্ষক দৃশ্যের! বেরিয়ে আসে এক পুরুষের মাথাবিহীন শরীর! আঁতকে ওঠেন সাধারণ কৌতূহল নিয়ে থাকা স্থানীয় মানুষজন।

গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনার সম্মুখীন হয় পুলিশ ও স্থানীয়রা। পুলিশ ক্রাইম সিন অ্যানালাইসিস ও পরিচয় শনাক্তে তাৎক্ষণিক অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) খবর দিলে তারা এসে তথ্য সংগ্রহসহ তাদের তৎপরতা চালান। পরে সংগ্রহ করা লাশের আঙুলের ছাপ থেকে শনাক্ত হয় তার পরিচয়।

নিহত ব্যক্তির নাম মো. ওলি (৩৫)। তার বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার করিমপুর গ্রামে। বাবার নাম সুরুজ মিয়া।

এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে র‌্যাব, পিবিআই, ডিবিসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবকটি বিশেষ শাখা।

তাদের প্রত্যেকের দাবি, এটি পেশাদার কায়দায় পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পরিচয় শনাক্তে বাধা সৃষ্টি করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আলাদা করে শরীর এখানে রাখা হয়েছে বলে ধারণা তাদের। শুধু তাই নয়, ব্যাগটি রাস্তার এক কোণে এমনভাবে ফেলে যাওয়া হয়েছিল, যাতে সাধারণত কেউ সন্দেহ না করে।

পুলিশ জানিয়েছে, মরদেহ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের মাধ্যমে জানা যাবে হত্যাকাণ্ডের ধরন, সময় এবং ব্যবহৃত অস্ত্রের বিস্তারিত। এ ছাড়াও ফরেনসিক টিম হত্যাকাণ্ডের আগে নির্যাতন বা বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা যাচাই করছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ তদন্ত শুরু

ঘটনার পর থেকে পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি এবং র্যাব যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে। এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং মরদেহ শনাক্ত করে নিহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি বর্বর হত্যাকাণ্ড। আমরা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি এবং জড়িতদের চিহ্নিত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।’

একই সঙ্গে র্যাব ও সিআইডি সূত্র জানিয়েছে, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং নিহতের সর্বশেষ অবস্থান ট্র্যাক করা হচ্ছে।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের শিকার ওলি সম্পর্কে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি ছিলেন শান্ত স্বভাবের, পরিবারকেন্দ্রিক একজন মানুষ। তার কোনো শত্রুতা বা অপরাধ সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলেই পরিবারের দাবি।

তবে তদন্তকারী সংস্থাগুলো বলছে, ব্যক্তিগত শত্রুতা, আর্থিক লেনদেন অথবা অপরাধজগতের সংশ্লিষ্টতা—সবদিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চলছে। নিহতের মোবাইল রেকর্ড, সাম্প্রতিক কল হিস্টোরি এবং চলাফেরার গতিপথ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।