অচিরেই একটি গর্বিত আধুনিক শক্তিশালী মুসলিম দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ

জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেছেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী পতিত সরকারের আমলে জনগণের বাকস্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। মানুষ কোনো কথা বলতে পারত না। কথা বলার সুযোগ না থাকলে মানুষের সংসারও ভেঙে যায়। বাংলাদেশকে জঙ্গি উগ্র সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করতে ভারতীয় মিডিয়া প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, প্রতি বছর শীতের মৌসুমে সারাদেশে পাঁচ লক্ষাধিক ওয়াজ মাহফিল হয়। এসব মাহফিল থেকে আলোকিত মানুষ তৈরি হবার পথ প্রদর্শন করা হয়। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে কোনো জোর জবরদস্তি নেই। বাংলাদেশ শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না ইনশা-আল্লাহ। বাংলাদেশ অচিরেই একটি গর্বিত আধুনিক শক্তিশালী মুসলিম দেশে পরিণত হবে।
দেশে জালেমের পতনে হয়েছে এটা আলেম ও মসজিদের ইমাম-খতিবগণের দোয়া, মজলুমের কান্নার ফসল এবং আল্লাহর সাহায্যে। এর শুকরিয়া আদায় ও হকের পক্ষে কাজ করতে হবে।

মুসলিম উম্মাহর ঐক্য কামনা করে বলেন, কোনো মাহফিলে আমাদের আলেম সমাজ বা ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ কেউ কারো বিরুদ্ধে কথা বলব না, কেউ কারো সমালোচনা করব না। এমনকি অন্য কোনো ধর্মের বিরুদ্ধেও বলব না। মোহাম্মদপুরস্থ আদর্শ ইসলামী মিশন মহিলা কামিল (এমএ) মাদরাসা ও জৈনপুরী খানকা (দরবার) শরিফের উদ্যোগে গত শনিবার রাতে মোহাম্মদপুর টাউন হল শহীদ পার্ক ময়দানে আল্লামা সৈয়দ আবুল হাসান মো. লুতফর রহমানের (রহ.) জৈনপুরী পীর সাহেবের ৪৮তম বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব ও ইসলামী মহাসম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে এ এম এম বাহাউদ্দীন এসব কথা বলেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মাওলানা মজিবুর রহমান, বাংলাদেশ ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা আবু হোরায়রা, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ, মাওলানা সৈয়দ মেশকাতুর রহমান জৈনপুরী, মাওলানা দেওয়ান নুরে আলম জালালী, মাওলানা আল আমিন হোসেন জিহাদী, মুফতি শেখ মনিরুজ্জান মাহমুদি, মাওলানা মো. জাহিদুল ইসলাম ও পীরজাদা সৈয়দ হোমাইয়াদ মাবরুক জৈনপুরী। উপস্থিত ছিলেন জৈনপুরী খানকা ও কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক আলহাজ সৈয়দ সিরাজ উদ-দৌলা ও পরিচালক আলহাজ এসএম জিল্লুর রহমান আজাদ।

মাহফিলের দেশ জাতির সমৃদ্ধি এবং মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ শান্তি কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন আদর্শ মহিলা কামিল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা জৈনপুরী পীর সাহেব হযরত মাওলানা মাহবুবুর রহমান।

পীর সাহেব তার বয়ানে বলেন, বৃহত্তর ঢাকায় অত্র মহিলা কামিল মাদরাসা চালু করে দেশের অর্ধেক মহিলা সমাজের ইসলামী শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তৌফিক দিয়েছেন এজন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। তিনি বলেন, আজকের এ অনুষ্ঠান ৪৮তম অনুষ্ঠান। ইনশা-আল্লাহ ভবিষ্যতেও চলবে। পীর সাহেব বলেন, দেশে আল্লাহ তায়ালা এক বিপ্লবী পরিবর্তন এনে দিয়েছেন।

এ এম এম বাহাউদ্দীন পীর সাহেবের প্রশংসা করে বলেন, তিনি ঢাকার কেন্দ্রস্থলে একটি মহিলা কামিল মাদরাসা স্থাপন করে ইসলামী শিক্ষার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি জৈনপুরী সিলসিলার একজন পীর। জৈনপুর সিলসিলা এ দেশের অনেক পুরাতন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক শিক্ষার সিলসিলা।

এ এম এম বাহাউদ্দীন জাতীয় ঐক্য কামনা করে বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশের উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না ইনশা-আল্লাহ। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ধর্মমত সবার জন্য একই কথা বলে গেছেন। তিনি নারীদের উত্তম মর্যাদা এবং নারীদের পুনঃঅধিকার প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই নারী। নারীদের বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না। নারীরা পর্দার সাথে খেলাধুলায়ও অংশ নিতে পারবে। নারীরা বিমান চালাবে, তাদেরকে দমিয়ে রাখা যাবে না। তবে নারীরা যাতে বেহায়াপনায় জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে নজর রাখতে হবে। তিনি বলেন, মহিলা মাদরাসায় নারীরা বর্তমানে জ্ঞার্নাজনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করছে। শিক্ষিত নারীরা সমাজ গঠনে বিরাট ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইসলামী মাহফিল থেকে অন্য ধর্মালম্বীদের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ ছড়ায় না। এদেশে যুগ যুগ ধরে মুসলিম হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান স্বাধীনভাবে যার যার ধর্ম পালন করছেন। ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের কোনো স্বাধীনতা নেই। সেখানে মুসলমানদের ওপর মাঝে মধ্যে নির্যাতন-নীপিড়ন এবং নানা অজুুহাতে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *