ফেসবুকে পরিচয় থেকে প্রেম, এরপর যেভাবে যৌনপল্লিতে কিশোরী

নোয়াখালীর দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় সাতক্ষীরার এক তরুণের। পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেম। বিয়ের উদ্দেশ্যে ওই ছাত্রী বাড়িও ছাড়ে। এরপর পরিবারের সদস্যরা ওই ছাত্রীর আর খোঁজ পাননি দীর্ঘদিন। সম্প্রতি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এক যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করে ওই কিশোরীকে। এ ঘটনায় দুই তরুণকে আসামি করে মামলা করেছেন ওই মাদ্রাসাছাত্রীর মা।

রোববার বেলা ১১টায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নোয়াখালীর সুধারাম থানায় ওই মামলা করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তাঁর মেয়ে মাদ্রাসায় দশম শ্রেণিতে পড়ালেখার পাশাপাশি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে পণ্য বিক্রি করত। এরই মধ্যে তাঁর মেয়ের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলার এক তরুণের (২০) পরিচয় হয়, যা পরবর্তী সময়ে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। গত ৬ মে তাঁর মেয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে গয়না, নগদ টাকা নিয়ে জেলা শহর মাইজদীতে যায়। সেখান থেকে অভিযুক্ত তরুণ তাঁকে বিয়ের কথা বলে বাসে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় নিয়ে যান। যাত্রাবাড়ীতে তাঁরা একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। সেখানে ওই তরুণ তাঁর মেয়ের কাছ থেকে গয়না ও টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে যান।

ছাত্রীর মা এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, আনুমানিক ২০ দিন তাঁর মেয়েকে যাত্রাবাড়ীর ওই আবাসিক হোটেলে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত তরুণ। এরপর গত ২৭ মে মেয়েকে ওই তরুণ তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তরুণের পরিবারের লোকজন তাঁর মেয়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এরপর ওই তরুণ ঢাকায় এক বন্ধুর বাড়িতে মেয়েকে রেখে চলে যান। বাদীর অভিযোগ, বাসায় রেখে যাওয়ার পর ওই তরুণের বন্ধু তাঁর মেয়েকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেন। সেখানে তাঁর মেয়েকে ১০ দিন আটকে রাখা হয়। একপর্যায়ে আরেকটি মেয়ের মুঠোফোন থেকে বাড়িতে বড় বোনের কাছে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানায় সে। পরে ১৮ ‍জুন ‘প্রটেক্ট আওয়ার সিস্টার বিডি’ নামের একটি সংগঠন তাঁর মেয়েকে উদ্ধার করে বাসযোগে নোয়াখালীর সোনাপুরে পাঠায়। সেখান থেকে তাঁরা তাঁর মেয়েকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য সাতক্ষীরার ওই তরুণের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাদীর লিখিত অভিযোগ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নিয়মিত মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। মামলায় সাতক্ষীরার তরুণ ও তাঁর বন্ধুকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষাসহ অন্যান্য আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

সূত্র: আরটিভি

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *