যে চার ভাইরাসের আক্রমণে দেশজুড়ে জ্বরের প্রলয় !

ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একই সঙ্গে চারটি সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাবে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, করোনা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপে জ্বরাক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এর ফলে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় বাড়ছে তীব্র চাপ, আর ঝুঁকিতে রয়েছেন বিশেষ করে বয়স্ক ও আগেই নানা রোগে আক্রান্ত মানুষজন।

শুক্রবার (২০ মে) সকালে ঢাকার মহাখালীর ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে দেখা গেছে, ছুটির দিনেও রোগীর উপচে পড়া ভিড়। গত এক সপ্তাহে এই হাসপাতালে জ্বরাক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। অনেকেই আসছেন ঢাকার বাইরে থেকেও।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রায় প্রতিটি রোগীই এসেছেন জ্বর নিয়ে। পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, তাদের কারও দেহে ডেঙ্গু, কারও করোনা, আবার কারও শরীরে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা চিকুনগুনিয়ার সংক্রমণ মিলছে। এই মিলেমিশে থাকা উপসর্গগুলোর জন্য চিকিৎসা দেওয়া হয়ে পড়ছে আরও জটিল। কখনো কখনো এনএস-১ নেগেটিভ আসলেও ডেঙ্গু সন্দেহ থাকছে, আবার প্রচণ্ড জয়েন্ট পেইন নিয়ে আসা রোগীদের মাঝে চিকুনগুনিয়ার উপসর্গও মিলছে। সব মিলিয়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এক রোগীর স্বজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সিরিয়ালের জন্য এক ঘণ্টার বেশি অপেক্ষা করতে হচ্ছে। একজন রোগীর যদি অবস্থা গুরুতর হয়, তাহলে এই দীর্ঘ অপেক্ষায় তার জীবন হুমকিতে পড়তে পারে।”

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১২০০ জন, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত প্রায় ৭ হাজার। মৃত্যুবরণ করেছেন ৩০ জন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন গড়ে প্রতিদিন ৪০ জন, দুই মাসে মারা গেছেন ৭ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বর, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা বা সর্দি হলে অবহেলা না করে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। একই উপসর্গে একাধিক রোগের উপস্থিতির সম্ভাবনা থাকায় সঠিক রোগ নির্ণয় ছাড়া চিকিৎসা শুরু করলে হতে পারে মারাত্মক বিপদ।

স্বাস্থ্যখাতের আর্থিক সংকটের কথা উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলছেন, অনেক হাসপাতালেই পর্যাপ্ত ডেঙ্গু বা করোনা পরীক্ষার সুযোগ নেই, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *