প্রয়োজন হলে জাবি ক্যাম্পাসে সেনাবাহিনী যাবে: স্বরাষ্ট্রসচিব

দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে এ ভোট গ্রহণ শুরু হয় চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এ দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলের সংসদ নির্বাচনও হবে। এ নির্বাচনে যদি বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর কিছু ঘটে তাহলে প্রয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান তিনি। তিনি বলেন, জাকসু নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী সতর্ক ও সজাগ রয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই ক্যান্টনমেন্ট রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে।

নাসিমুল গনি বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। এ নির্বাচনে পুলিশ, আনসারের পাশাপাশি বিজিবিসহ সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। সেনাবাহিনীও এ ব্যাপারে সজাগ রয়েছে। সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। তবে সেনাবাহিনী সজাগ ও অ্যালার্ট থাকবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে জাকসু নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। ওই লিখিত পত্রের বরাতে সেনাবাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন থাকছে। বর্তমানে সেনা যেভাবে সিভিল প্রশাসনকে সহায়তা করছে, ঠিক সেভাবে তারা জাকসু নির্বাচনে সহায়তাকারী হিসেবে থাকবে।

প্রসঙ্গত, জাকসুতে ২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ১০টি ছাত্রী হল ও ১১টি ছাত্র হল। প্রতিটি কেন্দ্রে ১ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬৭ পোলিং অফিসার ও ৬৭ সহকারী পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি ব্যালটে ভোট দেবেন ভোটাররা। বিশেষ ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা করা হবে।

নির্বাচনী সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পোশাক ও সিভিল পোশাকে প্রায় ১ হাজার ২০০ পুলিশ সদস্য ক্যাম্পাসের নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করবেন। নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী তারা দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটকেন্দ্র ও হলে দায়িত্ব পালন করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী। পাশাপাশি ২ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।

জাহাঙ্গীরনগরের ইতিহাস এটি ১০তম জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে মোট ১১ হাজার ৮৯৭ শিক্ষার্থী ভোট প্রদান করার কথা রয়েছে। এই নির্বাচনই হবে জাহাঙ্গীরনগরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক চর্চা দৃষ্টান্ত।

এবারের জাকসু নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ ও আংশিক মিলে মোট ৮ প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শিক্ষার্থীরা। এক মধ্যে ছাত্রদল সমর্থিত পূর্ণাঙ্গ প্যানেল, ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’, বাগছাসের ‘সম্মিলিত ঐক্য ফোরাম’, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের সমর্থিত ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল ও আরেক অংশের ‘সংশপ্তক পর্ষদ’। এ ছাড়াও রয়েছে তিনটির স্বতন্ত্র প্যানেল।

আপাতত শিক্ষার্থীরা এককভাবে কোনো প্যানেলকে সমর্থন করার কথা না ভাবলেও তারা ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়কে বিবেচনায় রাখছেন। সেগুলো হলো জুলাই আন্দোলনের স্প্রিট, প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ইমেজ, সামাজিক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের মনোনীত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে দলীয় কর্মকাণ্ডকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন ভোটাররা।