জাহাঙ্গীর কবির নানক যেখানেই যাবেন সেখানেই দুর্নীতির নিত্যনতুন পথ আবিষ্কার করবেন। এমনই হয়ে গিয়েছিল সংস্কৃতি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নানককে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয় না। তবে মনোনয়ন না পেলেও নানক অন্যভাবে পুরস্কৃত হন। তাকে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পরপরই তিনি শুরু করেন কমিটি বাণিজ্য, মনোনয়ন বাণিজ্য। একের পর এক কমিটি এবং মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনের পরই স্থানীয় সরকার নির্বাচন শুরু হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দলীয় প্রতীকে এ নির্বাচন হবে। সে অনুযায়ী দলের ভেতর শুরু হয় মনোনয়ন বাণিজ্য। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিও ১ কোটি টাকা দিতে রাজি হন।
মনোনয়ন বোর্ডের যারা সদস্য, তাদের সবাইকে অর্থ দেওয়া শুরু করেন। শেখ হাসিনা নানককে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য করেছিলেন। এ সদস্য হওয়ার কারণে নানককে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
এ সময় বিভিন্ন কমিটির নতুন সম্মেলনের আয়োজন শুরু করা হয়। সম্মেলনের পর জেলা পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। ‘টাকা যার কমিটি তার’ এ নীতি চালু করেন নানক। হাইব্রিড সব নেতারা নানকের সিন্ডিকেটের কাছে কোটি কোটি টাকা দিয়ে কমিটির অনুমোদন নেন। এদিকে নানকের বিত্তবৈভব আরও বাড়তে থাকে। এ সময় তিনি এমপি-মন্ত্রী না থাকায় কারও নজরদারির মধ্যে ছিলেন না।
গণমাধ্যম বা সরকার কেউই তার দিকে দৃষ্টি রাখেনি, ফলে নানক বেপরোয়া লুণ্ঠন এবং লুটপাট শুরু করেন। আর এসব টাকায় গড়েছেন দেশের বাইরে অঢেল সম্পত্তি। নানক এখন কলকাতার নিউটাউনে যে বিলাসবহুল বাড়িতে থাকেন, সেটি তার কেনা।
জানা যায়, নানকের বেশকিছু বিশ্বস্ত অনুসারী এবং ক্যাডার রয়েছে। জমি, টাকাপয়সা সবকিছুই তিনি তার ক্যাডারদের নামে রাখতেন। ফলে দুদকের তদন্তে দেখা যায়, তার অর্থসম্পদের পরিমাণ সামান্য। কিন্তু গত ১৫ বছরে নানক প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠন করেছেন।