পুলিশের জালে ফ্যাসিস্ট দোসর আফ্রিদি বেরিয়ে আসছে যে ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের ছক!

জুলাই গণহত্যার হত্যা মামলার আসামি ফ্যাসিস্ট দোসর ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদিকে বরিশাল থেকে গতকাল গ্রেফতার করেছে সিআইডির স্পেশাল টিম। এই সেই আফ্রিদি যার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। বাবার কাছে খুব ভালোই যেনো রপ্ত করেছেন বাটপারি আর প্রতারণা করা। এই যেমন ভাতের হোটেলের মালিক ডিবি হারুনকে ডাকতেন চাচা বলে। মাঝেমধ্যেই ফ্যাসিস্ট দোসর হারুনের সাথে তাকে দেখা যেতো বিভিন্ন কন্টেন্ট তৈরি করতেও।

আওয়ামী শাসনামলে বিভিন্ন সেলিব্রিটি মডেলদের তৎকালীন মন্ত্রী থেকে আমলাদের উপঢৌকন হিসেবে পাঠাতেন আফ্রিদি। তার বিনিময়ে বাগিয়ে নিতেন সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন বড় বড় সব কাজ। উঠতি সব মডেলদের তারকা বানানোর লোভ দেখিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের যেনো র‌্যাকেট তৈরি করেছিলো আফ্রিদি।

আর মানবতার ফেরিওয়ালার মুখোশের আড়ালে তো মানুষকে সাহায্যের নামে টাকা তুলে সেই টাকা নিজের পকেটেই পুড়েছে বহুবার। বন্যার্তদের সাহায্যের নাম করে বিভিন্ন সময় আফ্রিদি নিজের একাউন্টে টাকা নিয়েছেন জনসাধারণের কাছে, কিন্তু, সেই টাকা যে উদ্দেশ্যে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নিয়েছিলেন তা না করে উল্টো নিজের পকেট ভরেছেন আর সেলিব্রিটিদের নিয়ে গিয়ে পিকনিক আর তামাশায় মেতেছেন।

আরও পড়ুনঃ আমার ভিজিট আমৃত্যু ৩০০ টাকাই থাকবে: ডা. এজাজ
ক্যামেরার সামনের আফ্রিদি আর পিছনের আফ্রিদি এক নয়, ভয়ঙ্কর এক প্রতারক বাটপার এই ব্যক্তি। বন্যার সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নামে তারকাদের সাথে নিয়ে পিকনিক করার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমগুলোতে এখনো রয়েছে এই ফ্যাসিস্ট দোসরের। আর ১৫ আগস্ট মুজিববাদী মতবাদের সেই শোক পালনে বাধ্য করেছেন দেশের সব নামকরা সেলিব্রিটিদের। আফ্রিদির চাপেই তারকারা সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে মুজিববাদী পোষ্টে শোক প্রকাশ করতে থাকেন।

এমনকি আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান তার ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, আফ্রিদি নিজেই এসব তারকাদের শেখ মুজিবকে নিয়ে লেখা সব পোষ্টার তৈরি করে দেন যাতে করে একজনের সাথে আরেক জনের পোস্টের কথাগুলো না মেলে। যে কাজটি বাটপার আফ্রিদি করেছে অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে।

শুধু কি এতটুকুই ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় এই প্রতারক, ভণ্ড বাটপার ছাত্র জনতার পক্ষ না নিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষে গলা ফাটাতে সকল ইউটিউবার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের একত্রিত করেছিলেন। এরপরও সাধারণ মানুষ তাকে সহ্য করে গেছে হাসিনা পালানোর পরও প্রায় ১৩ টি মাস। এর মধ্যে নির্লজ্জ বেহায়ার মতো ধুমধাম করে বিয়ের কাজও সেরেছেন আফ্রিদি। আর বাবা স্যাটেলাইট টেলিভিশন মাইটিভি দখলকারী প্রতারক নাসির উদ্দিন সাথীর জন্মদিনও পালন করেছেন ধুমধামের সাথেই। তার যেনো কোন অনুশোচনা বা অনুতপ্ততা নেই।

আফ্রিদিকে আমজনতা দীর্ঘ একটি বছরেরও বেশি সময় সুযোগ দেওয়ার পরও কখনো ক্ষমা চাননি জাতির কাছে। উল্টো নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আর ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছেন সুকৌশলে। বারবার ফ্যাসিস্ট হাসিনার হয়ে সাফাই গেয়েছেন উলঙ্গ হয়ে, শোক পালন করেছেন ইতিহাস থেকে জানা একজন স্বৈরাচারের জন্য। এসবের মূলে তার উদ্দেশ্য ছিলো একটাই দেশকে অস্থিতিশীল করা জনমনে ভীতির সঞ্চার করা আর সেই সুযোগে ফ্যাসিস্ট হাসিনা আর আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করা।

এদিকে বাবা নাসীর উদ্দিন সাথী গ্রেফতার হবার পর আফ্রিদির গ্রেফতারের বিষয়ে যখন চারিদিকে হৈচৈ অবস্থার জন্ম নেয় ঠিক তখন শিয়ালের মত লেজ গুটিয়ে বাবার বাড়ি বরিশালে গর্তে লুকিয়ে পড়েন এই ফ্যাসিস্ট দোসর। আর পুলিশের হাতে ধরা পরার পর মঞ্চায়িত করেন এক সিনেমাটিক ড্রামার। তিনি পালাননি এসেছিলেন দাদার কবর জিয়ারত করতে, আবার কসমও করেন পবিত্র কোরআন শরীফের। ভণ্ডামী আর প্রতারণা যে কত ধরণের হতে পারে তা যেনো শেখা উচিৎ আফ্রিদি আর তার পরিবারের সদস্যদের কাছে। অভিনয়ে নিঃসন্দেহে চ্যাম্পিয়ন ওরা।

অবশেষে পুলিশের জালে কট এই মানবতার ফেরিওয়ালার আড়ালের মুখোশধারী ভয়ঙ্করও প্রতারক আফ্রিদি। দেশকে ঘিরে আরও ভয়ঙ্কর প্লানিং ছিলো তার। যার ছক বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।