এক দিনে কুপিয়ে-গলা কেটে চার খুন, নিরাপত্তায় শঙ্কা

দেশে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) গাজীপুর, নাটোর, সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলায় কুপিয়ে ও গলা কেটে চারজন খুন হওয়ার ঘটনা নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অপরাধের মাত্রা কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে তা স্পষ্ট করে। দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি শঙ্কা সৃষ্টি করছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানে গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক, জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও ব্যক্তিগত শত্রুতাসহ বিভিন্ন কারণে এসব এলাকায় অপরাধ প্রবণতা বেড়ে গেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় দুষ্কৃতকারী আত্মবিশ্বাস নিয়ে বেআইনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডগুলোতে জড়িত দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থেকে যায়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সঙ্গে মোকাবেলায় যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে অপরাধ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। পুলিশি তৎপরতা জোরদার ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারসহ কঠোর আইন প্রয়োগ জরুরি। নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় সমাজকর্মী ও জনগণের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

গাজীপুর মহানগরীর ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তায় মসজিদ মার্কেটের সামনে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে মো. আসাদুজ্জামান তুহিন নামের এক সাংবাদিককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল আলম বলেন, ‘আমরা কিছু ফুটেজ ও ক্লু পেয়েছি। সেগুলো বিশ্লেষণ করে খুনিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। জড়িত কেউই ছাড় পাবে না।’

এদিকে রাত ১০টার দিকে নাটোরের গোপালপুরে এক প্রাইভেটকার চালককে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ জানায়, নাজমুল নামে একজন কুষ্টিয়া থেকে প্রাইভেটকারটি ভাড়া করে বনপাড়া যাচ্ছিল। পথে লালপুরের গোপালপুর এলাকায় হঠাৎ করে গাড়ির ভেতরেই দুর্বৃত্তরা চালক সাইদুর রহমানের গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে।

আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় সাইদুর প্রাইভেটকার থেকে নেমে জনসমাগম এলাকায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুদূর গিয়েই তিনি রাস্তার পাশে পড়ে যান। পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পেয়ে দ্রুত পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। একই সঙ্গে প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে একটি রক্তমাখা ছুরিও উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রথম যাত্রী নাজমুলকে আটক করে পুলিশ।

অন্যদিকে, সিলেট মহানগরের কিন ব্রিজ এলাকায় রাতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে ডালিম আহমেদ নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। পুলিশ জানায়, ডালিম ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বাসিন্দা। হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এছাড়াও মৌলভীবাজারের শমসেরনগর শাহ ফয়জুর রহমান রুবেল নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিজ দোকানে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।