গাড়ির দরজার লক না খুলে জানালা দিয়ে নেমে যান চালক

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব জগদীশপুর এলাকায় বুধবার (০৬ আগস্ট) একটি মাইক্রোবাস খালে পড়ে একই পরিবারের ৭ জন নিহত হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপালী এলাকার আবদুর রহিমের ওমানপ্রবাসী ছেলে আবদুল বাহারকে নিয়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন তারা।

দুর্ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সদ্য দেশে ফেরা প্রবাসী বাহার বলেন, ‘গাড়িটা খালে পড়ার পর ড্রাইভাররে বললাম দরজার লক খুলে দিতে। সে লক খুলে দিলে সবাই সাঁতার কেটে বের হতে পারতাম। কিন্তু ড্রাইভার লক না খুলে নিজে একটা জানালা দিয়া বের হইয়া গেছে। আমরা কয়েকজন পরে জানালা ভেঙে বের হইছি। আমার মা-মেয়েসহ বাকিরা গাড়িতেই শেষ।’

গাড়ির চালক ঘুম নিয়ে মাইক্রোবাসটি চালাচ্ছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘কুমিল্লায়ও একবার গাড়িটা দুর্ঘটনায় পড়তে গিয়ে রক্ষা পাইছে। আমরা ড্রাইভাররে বললাম প্রয়োজনে একটু ঘুমিয়ে নিতে। কিন্তু তিনি ঘুম নিয়েই গাড়ি চালাতে গিয়া আবারও দুর্ঘটনায় পড়লেন।’

ভোরের এই দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- ফয়জুন নেসা (৮০), খুরশিদা বেগম (৫৫), কবিতা বেগম (৩০), লাবনী বেগম (৩০), রেশমি আক্তার (১০), মীম আক্তার (২) ও লামিয়া আক্তার (৯)। তারা লক্ষীপুর সদরের উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের পশ্চিম চৌপল্লী গ্রামের বাসিন্দা।

নোয়াখালী ফায়ার সার্ভিসের চৌমুহনী স্টেশনের কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটিতে এক প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। ওমানফেরত ওই প্রবাসীকে নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ফেরার পথে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়।

মোজাম্মেল হক আরও বলেন, মাইক্রোবাসটিতে চালকসহ ১১ জন ছিলেন। এর মধ্যে দুর্ঘটনার পর চালকসহ ৪ জন বের হয়ে যান। অন্য ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা মাইক্রোবাসের পেছনের সিটগুলোতে ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- মাইক্রোবাসের চালক ঘুমে থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের মরদেহ চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।