ওমানফেরত প্রবাসীকে নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ফেরার পথে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। এতে একই পরিবারের সাতজন নিহত হয়েছেন। তবে ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন ওই প্রবাসীসহ ৬ জন।
বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের চন্দ্রগঞ্জের জগদীশপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—ওমান প্রবাসীর স্ত্রী কবিতা আক্তার (২৪), তার মেয়ে মীম আক্তার (২), মা মুরশিদা বেগম (৫০), নানি ফয়জুন নেছা (৭০), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯), লামিয়া আক্তার (৮) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী আক্তার (২৫)। তারা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী এলাকার কাশারি বাড়ির বাসিন্দা। ওই বাড়ির ওমান প্রবাসী বাহারকে ঢাকার এয়ারপোর্ট থেকে নিয়ে আসার সময় পথে বাড়ি থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বেঁচে ফিরে আসা যাত্রীরা হলেন—প্রবাসী বাহার উদ্দিন, তার বাবা আবদুর রহিম, শ্বশুর ইসকান্দর মির্জা, তার শ্যালক রিয়াজ ও ভাইয়ের স্ত্রী সুইটি এবং গাড়ি চালক রাজু।
এদিকে সরেজমিন বুধবার (৬ আগস্ট) সকালে নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকের মাতম। এলাকাবাসী ও স্বজনরা তাদের সান্ত্বনা দিতে আসছেন। কিন্তু একসঙ্গে সাতজনের মৃত্যুতে স্বজনরা যেন কোনো সান্তনাই খুঁজে পাচ্ছে না। বারবার বিলাপ করতে দেখা গেছে স্বজনদের।
ওমান প্রবাসীর বাবা আবদুর রহিম বলেন, আমার ছেলে আড়াই বছর পর ওমান থেকে দেশে আসে। তাকে এয়ারপোর্ট থেকে আনতে আমরা পরিবারের সদস্যরা মিলে মাইক্রোবাস ভাড়া করে ঢাকায় যাই। মঙ্গলবার রাতেই আমরা রওনা দিই। ভোরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজার চেয়ারম্যান বাড়ির সামনে এলে চালক মাইক্রোবাসটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। গাড়িটি রহমতখালী খালে পড়ে যায়৷
তিনি বলেন, গাড়ির দরজা লক করা ছিল। আমরা ৬ জন জানালা দিয়ে বের হতে পারি। বাকিরা বের হতে পারেনি। খালে পানির তীব্র স্রোত ছিল। তাই দ্রুত সেটি তলিয়ে যায়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা তারা পানির তলায় ছিল। এতে ডুবে মারা গেছে।
এ বিষয়ে চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন ভূঁইয়া কালবেলাকে বলেন, ঘটনার পর থেকে মাইক্রোবাস চালক পলাতক। দুর্ঘটনার শিকার মাইক্রোবাস জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। চালকের চোখে ঘুম থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মরদেহগুলো আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
সূত্র : কালবেলা