গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মেরেছেন স্বামী। স্ত্রীকে ঘরের ভেতরে রেখে বাইরে তালাবদ্ধ করে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান ঘাতক স্বামী। স্থানীয়রা বসতবাড়িতে আগুন দেখতে পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে তা নিয়ন্ত্রণ করে। ততক্ষণে পুড়ে অঙ্গার পোশাককর্মী গৃহবধূর শরীর। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইদ্রবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত পোশাককর্মী মারুফা আক্তার (৪৫) উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইদ্রবপুর গ্রামের মো. মিজানুর রহমানের স্ত্রী। অভিযুক্ত স্বামী মো. মিজানুর রহমান (৪৫) একই গ্রামের মো. সুলতান মিয়ার ছেলে। তিনি একটি ওষুধের দোকান পরিচালনা করেন।
নিহতের ছোট বোন নাজমা আক্তার বলেন, ‘রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে আশপাশের মানুষ আগুন আগুন করে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। চিৎকার শুনে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি বাসার মূল ফটক তালাবদ্ধ। স্থানীয়রা মূল ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে দেখা যায় দুটি ঘরের দরজা তালাবদ্ধ। এরপর সবাই মিলে ঘরের তালা ভেঙে আগুন নেভানো শুরু করে। ততক্ষণে বোন আমার আগুনে পুড়ে অঙ্গার।’
নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে নানান বিষয় নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগে থাকত। গত ১৫ দিন বোনকে ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছেন না। রাতে ডাকাডাকি শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দাউ দাউ আগুন জ্বলতে দেখি। পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে আমার বোনকে পুড়িয়ে মেরেছে। আশপাশের কয়েক শতাধিক মানুষ এসে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করলেও বোনের সমস্ত শরীর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।’
স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, এই দম্পতির বিয়ের পর থেকে বলতে গেলে সারা বছর ঝগড়া হতো। এটা নিয়ে সামাজিকভাবে বহু সালিস হয়েছে। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। শেষে এই পরিণতি হলো।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, আনুমানিক রাত আড়াইটার দিকে স্ত্রীর মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় ঘাতক স্বামী। আলামত সংগ্রহের জন্য অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে কাজ করছেন। ঘাতক স্বামীকে গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে পুলিশ। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।