দেশের অন্যতম বৃহৎ অনলাইন ট্রাভেল সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ হঠাৎ করে সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ওয়েবসাইট অচল, অফিস বন্ধ, ফোনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন—সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির পলায়নের অভিযোগ তুলছেন ভুক্তভোগীরা। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির মালিক গতরাতে গোপনে দেশ ত্যাগ করেছেন।
শনিবার সকালে রাজধানীর মতিঝিলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। অফিসের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট ও হেল্পলাইনও বর্তমানে অচল। টিকিট রিফান্ড, বুকিং কনফার্মেশন বা অন্য কোনো সহায়তা চাইলে কোনো দিক থেকেই গ্রাহকরা সাড়া পাচ্ছেন না।
ফ্লাইট এক্সপার্টের সেলস বিভাগের এক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, “গতরাতেই আমাদের মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আমরা কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। অফিস বন্ধ, কর্মীরা দিশেহারা। এখন আমরা মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে যাচ্ছি।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন ভুক্তভোগী গ্রাহক ও ট্রাভেল ব্যবসায়ীরা। জয়িতা আফরিন নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, “ফ্লাইট এক্সপার্টের মতো ট্রাস্টেড কোম্পানি যদি এভাবে পালিয়ে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষ আর কাকে বিশ্বাস করবে?”
প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজে সর্বশেষ পোস্ট ছিল হজ প্যাকেজ নিয়ে। এরপর আর কোনো আপডেট নেই। অভিযোগ উঠেছে, হজের আগাম বুকিং নিয়েও অনেক গ্রাহক এখন রিফান্ড বা যোগাযোগ না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন।
২০১৭ সালের মার্চে বড় আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফ্লাইট এক্সপার্ট তাদের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করে। শুরু থেকেই তারা দেশি-বিদেশি বিমান টিকিট, হোটেল বুকিং, ট্যুর প্যাকেজ ও ভিসা প্রসেসিংসহ নানা সেবা দিয়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়। সহজ ইন্টারফেস, মোবাইল পেমেন্ট সুবিধা ও বিভিন্ন অফার দিয়ে তারা দেশের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ট্রাভেল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল।
তবে হঠাৎ এই ধরনের গা-ঢাকা দেওয়ার ঘটনায় সাধারণ গ্রাহক এবং বিনিয়োগকারী ট্রাভেল এজেন্সিগুলো বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, কোনো সরকারি পর্যবেক্ষণ ছাড়া এ ধরনের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কীভাবে এত বড় আকারে পরিচালিত হলো?