স্ত্রী নাকফুল, চুড়ি না পরলে কি স্বামীর আয়ু কমে যায়?

বিয়ের পর মেয়েরা চুড়ি, নাকফুল না পরলে অমঙ্গল হয়, স্বামীর ক্ষতি হয় বা আয়ু কমে যায় আমাদের সমাজে এ রকম ধারণা প্রচলিত আছে। তাই বিয়ের পরে স্ত্রীর সব সময় চুড়ি ও নাকফুল পরে থাকা বাধ্যতামূলক মনে করা হয়।

ইসলামের দৃষ্টিতে এ রকম ধারণা ভ্রান্ত, মনগড়া কুসংস্কার। কারো এ রকম বিশ্বাস থাকলে তা পরিত্যাগ করা আবশ্যক। আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেকের আয়ু নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে কারো মৃত্যু হবে না।

আল্লাহ তাআলা বলেন, কোন প্রাণী আল্লাহর অনুমতি ছাড়া মারা যায় না, তা নির্দিষ্টভাবে লিখিত আছে। আর যে দুনিয়ার প্রতিদান চায়, আমি তা থেকে তাকে দিয়ে দেই, আর যে আখিরাতের বিনিময় চায়, আমি তা থেকে তাকেও দেই এবং আমি অচিরেই কৃতজ্ঞদের প্রতিদান দেব। (সুরা আলে ইমরান: ১৪৫)

আর ইসলামে চুড়ি বা নাকফুল পরা জরুরি না এবং না পরা গুনাহের কাজও নয়। তাই চুড়ি বা নাকফুল না পরার কারণে রিজিক বা আয়ুতে বরকত কবে যাওয়ারও কোনো কারণ নেই।

ইসলামে নারীদের জন্য চুড়ি, নাকফুল, কানের দুল, গলার হার বা চেইন ইত্যাদি অলঙ্কার পরিধান করা জায়েজ। আরবে জাহেলি যুগ থেকে নারীদের এ রকম অলঙ্কার পরার প্রচলন ছিল। ইসলামও এই প্রচলন অনুমোদন করেছে। নবিজি (সা.) নারীদের অলঙ্কার পরিধান করতে নিষেধ করেননি।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক ঈদের দিন বের হলেন এবং দুই রাকাত নামাজ পড়লেন। আগে-পরে কোনো নামাজ পড়লেন না। তারপর বেলালকে (রা.) সঙ্গে নিয়ে নারীদের কাছে গেলেন। তাদেরকে উপদেশবাণী শোনালেন এবং সদকা করতে উৎসাহ দিলেন। তখন নারীরা তাদের কানের দুল এবং হাতের চুড়ি খুলে দিতে লাগলেন। (সহিহ বুখারি: ১৪৩১)

এ হাদিস থেকে বোঝা যায় নারী সাহাবিরা কানে দুল ও হাতে চুড়ি পরতেন। নবিজি (সা.) তা অনুমোদন করেছেন। তাই এসব অলঙ্কার পরিধান করা নিষিদ্ধ নয়।

তবে ইসলামে নারীদের অলঙ্কার পরিধান করাকে আবশ্যক করা হয়নি। অলঙ্কার পরিধান করতে উৎসাহও দেয়া হয়নি, এটাকে ফজিলতপূর্ণ বা মুস্তাহাবও বলা হয়নি। নারীরা তাদের ইচ্ছা ও রুচি অনুযায়ী অলঙ্কার পরিধান করতে পারেন, নাও করতে পারেন। অলঙ্কার পরিধানের জন্য নাক-কান ফোঁড়াতে পারেন, নাও ফোঁড়াতে পারেন। এ ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা নেই, নির্দেশ বা উৎসাহও নেই।