আটটি বিয়ে আগেই সেরে ফেলেছেন, এবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন নবম বিয়ের। তবে এর আগেই পুলিশের জালে ধরা পড়লেন সামিরা ফাতিমা, যিনি শুধু বিয়েই করতেন না—প্রতিটি বিয়েকে বানিয়ে তুলেছিলেন মোটা অঙ্কের টাকা হাতানোর কৌশল। ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরে গত ২৯ জুলাই চায়ের দোকান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের অভিযোগ, সামিরা বিভিন্ন পরিচয়ে ধনী পুরুষদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। এরপর বিয়ের পর সেই সম্পর্ককে মোড় নিত ব্ল্যাকমেইলের খেলায়। একে একে বিভিন্ন স্বামীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ রুপি।
সামিরার পেশাগত পরিচয় একজন শিক্ষিকা, তবে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, তিনি মূলত একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। চক্রটির সহায়তায় সামিরা তার স্বামীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের জন্য কৌশলে তাদের হেনস্তা করতেন।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এই নারী তার উচ্চশিক্ষিত পরিচয়কে ঢাল বানিয়ে পুরুষদের বিশ্বাস করাতেন, পরে সেই বিশ্বাসই ভেঙে দিতেন কৌশলী ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে।
সামিরা প্রেমের ফাঁদ পাততেন বিয়ে বিষয়ক ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে। নিজেকে দেখাতেন সন্তানের মা ও ডিভোর্সি নারী হিসেবে—তাতে অনেকেই সহানুভূতির ফাঁদে পড়তেন। তার কৌশল ছিল আবেগকে পুঁজি করে বিশ্বাস তৈরি, এরপর সেই বিশ্বাস ভাঙিয়ে টাকা আদায়।
এভাবে তিনি এক স্বামীর কাছ থেকে ৫০ লাখ রুপি, আরেকজনের কাছ থেকে ১৫ লাখ রুপি আদায় করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, গত ১৫ বছর ধরে সামিরা এই প্রতারণা চালিয়ে আসছেন, ভিন্ন ভিন্ন নামে।
সামিরার আটটি বিয়ের সব কটিই এক ধরনের ছক অনুসরণ করে হয়েছে—প্রেম, বিয়ে, বিশ্বাস ভাঙা, ব্ল্যাকমেইল ও টাকা হাতানো। এবার নবমবারের মতো একই পথ ধরতেই নাগপুরে নতুন শিকার খুঁজছিলেন। তবে তার আগেই ফাঁস হয়ে যায় পুরো ষড়যন্ত্র।
পুলিশ বলছে, সামিরার অতীত সম্পর্ক ও আর্থিক লেনদেনের রেকর্ড ঘেঁটে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি তার গ্যাংয়ের অন্য সদস্যদের শনাক্ত করতেও তদন্ত চলছে।