সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেননি, বরং তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল—এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী মো. আমির হোসেন। আজ (রবিবার) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জেরার সময় তিনি এই দাবি করেন।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিচার চলছে। সেখানে ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে নাহিদ দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন।
স্টেট ডিফেন্সের বক্তব্য
আমির হোসেন বলেন, ২০২৪ সালের ৩ আগস্টের এক দফা আন্দোলন ছিল “সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ”, যার পেছনে দেশি-বিদেশি শক্তির ইন্ধন ছিল। তিনি দাবি করেন, সেই সময়ই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
আইনজীবী আরও বলেন, শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নির্দোষ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আন্দোলন দমনের জন্য কোনোদিন শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার বা মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেননি, বরং জনগণের জানমাল রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন।
প্রসিকিউশনের আপত্তি
প্রসিকিউশন এই বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বলে, মামলার প্রেক্ষাপটে এমন রাজনৈতিক মন্তব্য অপ্রাসঙ্গিক। তবে আমির হোসেন দাবি করেন, সাক্ষীর বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এসব প্রসঙ্গ তুলতে বাধ্য হয়েছেন।
সাক্ষীর পাল্টা দাবি
স্টেট ডিফেন্সের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেন সাক্ষী নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট সারা দেশে যে হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন হয়েছিল, তার তথ্য তিনি পেয়েছেন আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত-সারজিসের কাছ থেকে।
আদালতের কার্যক্রম
আজ সকাল ১১টার পর ট্রাইব্যুনালে নাহিদের দ্বিতীয় দিনের জেরা শুরু হয় এবং দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শেষ হয়। জেরা শেষে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এর আগে, ১৮ সেপ্টেম্বরও তিনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন, তবে সেদিন জেরা শেষ না হওয়ায় আজ তা সম্পন্ন হয়।
