উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় একে একে নিভে গেল দুই ভাইবোনের জীবন। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী তাহিয়া তাবাচ্ছুম নাদিয়ার মৃত্যুর পর এবার না ফেরার দেশে পাড়ি জমাল তার ছোট ভাই নাফি ইসলামও। দগ্ধ হয়ে বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই শেষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে তৃতীয় শ্রেণির এই শিশুটি। দুই সন্তানের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবারে এখন শুধুই অসহায় স্মৃতি আর শূন্যতা।
একদিকে ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বাবা আশরাফুল ইসলাম নিরব (সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা)। জানা গেছে, নাদিয়া ও নাফির গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায়। বাবা-মায়ের সঙ্গে রাজধানীর উত্তরার কামারপাড়া এলাকায় বসবাস করত তারা।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নাফি ইসলাম আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিল। পরে মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সে। এর আগে, তার বোন তাহিয়া তাবাচ্ছুম নাদিয়া সোমবার মধ্যরাত ৩ টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। পরে ঢাকার কামাড়পাড়া এলাকায় দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে পরিবারসূত্র জানিয়েছে।
নিহতের মামা মো. ইমদাদুল হক তালুকদার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ। আমার বোন ও দুলাভাই দুজনই ভেঙে পড়েছেন। সবার কাছে দোয়া চাই।
এর আগে ঢাকার উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতলে ভর্তি ১৬৫ জন। আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানা যায় কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আহত ৮, নিহত নেই। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আহত ৪৬, নিহত ১০। ঢাকা মেডিকেলে আহত ৩, নিহত ১। ঢাকা সিএমএইচে আহত ২৮, নিহত ১৬। উত্তরা লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে আহত ১৩, নিহত ২। উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে আহত ৬০, নিহত ১। উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে আহত একজন, নিহত নেই।
এ ছাড়াও শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত একজন, নিহত নেই। ইউনাইটেড হাসপাতালে আহত দুজন, নিহত ১ এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আহত তিনজন এবং সেখানে কোনো নিহত নেই।