রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত হয়ে রাজধানীর কয়েকটি হাসপাতালে কাতরাচ্ছে ছোট শিশুরা। আহতদের অধিকাংশকেই চানখারপুলের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদেরকে রক্ত দিতে ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালে ছুটে আসছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। এবার এ শিশুদের রক্ত দিতে ছুটে এলেন তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়ারাও।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বেলা সোয়া ১১টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনে ভিড় করেন শত শত হিজড়া। এসময় তারা জানান, তারাও মানবিক ও ভাল সবার সাথে সমান তালে এগিয়ে থাকতে চান।
তাদের মধ্যকার রাত্রি নামে একজন বলেন, আমাদের ছোট ছোট শিশুরা আগুনে পুড়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে শুনেছি তাদের রক্ত লাগবে। তাই আমরা আমাদের এই ছোট সন্তানদের বাঁচাতে মগবাজার থেকে ৩০০ জন হিজড়া এসেছি। আমরা রক্ত দিয়ে তাদের সাহায্য করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের সময়ও আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী অনুদান দিয়েছি। ফেনী নোয়াখালীতে বন্যার সময় ত্রাণ নিয়ে ছুটে গেছি। আমরা সমাজে পিছিয়ে থাকতে চাই না। আমরা মানুষ এটাই আমাদের বড় পরিচয় হোক। রক্তদানের পাশাপাশি আহতদের আর্থিক সহায়তা দিতেও হিজরারা প্রস্তুত আছে বলে জানান তিনি।
রাজধানীর সায়দাবাদ থেকে আসা হিজড়াদের গুরু মা রোকসানা বলেন, আমরা কোন রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করি না। আমাদের কোন মত নেই। যেখানে বিপদ আপদ হয় আমরা সেখানে ঝাপিয়ে পড়ি। আমাদের দেশের ছেলেমেয়ের অসুস্থ হয়ে রক্তের জন্য পড়ে আছে। আমরা তাদের রক্ত দিতে আমাদের সম্প্রদায়ের সবাইকে মেসেজ দিয়েছে। যাতে তারা সুস্থ হয়ে ওঠে ভবিষ্যতে এগুতে পারে।
তিনি আরো বলেন, যে মায়ের সন্তানরা দুনিয়া থেকে চলে গেছে আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।
প্রসঙ্গত, সোমবার (২১ জুলাই) বিমান বিধ্বস্তের পর থেকে মানবিক আবেদনে সাড়া দিয়ে হাসপাতালগুলোতে ছুটে এসেছেন হাজার হাজার রক্তদাতা। তবে আজ মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত ছাড়া অন্য গ্রুপের রক্তের তেমন প্রয়োজন নেই। তাই হাসপাতালে অযথা রক্তদাতাদের ভিড় না জমাতে অনুরোধ জানান তারা।