আবাসিক হোটেলে মরদেহের পায়ুপথে আঘাতের চিহ্ন, রহস্য উদঘাটন

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আবাসিক হোটেলে বলাৎকারের পর হত্যার শিকার হওয়া সেই কিশোরের (১২) পরিচয় মেলেনি। তবে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

শনিবার (১৯ জুলাই) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু ইউছুফ।

গ্রেপ্তারকৃতের নাম মো. আল-আমিন (৩৪)। শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন (১৯ জুলাই) তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু ইউছুফ বলেন, গত ১৪ জুলাই দুপুরে যাত্রাবাড়ীর আনোয়ারা আবাসিক হোটেলের ২৫৬ নম্বর কক্ষ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। নিহতের পরিচয় না পাওয়ায় যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল-ইমরান অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই পিবিআই ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের ক্রাইমসিন টিম ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই মো. কবির হোসেন।

আরও পড়ুনঃ চাচাকে বিয়ে করতে না পেরে স্বামীকে খুন করলেন নববধূ
তিনি বলেন, ছায়া তদন্তে মো. আল-আমিনের সম্পৃক্ততা শনাক্ত হলে প্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গত ১২ জুলাই সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে কিশোরটির সঙ্গে আল-আমিন ও তার সহযোগী সাদ্দামের পরিচয় হয়। তখন ওই কিশোর তাদের কাছে বরিশালের ট্রেন কখন ছাড়বে জানতে চায়। এ সময় আল-আমিন ও তার সহযোগী কিশোরকে জানায় বরিশাল ট্রেন যায় না। তখন ওই কিশোর তাদের জানায়, সে ক্ষুধার্ত ও একদিন কিছু খায়নি। এরপর আল-আমিন তাকে খাবার ও স্যান্ডেল কিনে দেয় এবং সারাদিন সঙ্গে রাখে। সন্ধ্যায় আল-আমিন কিশোরকে আনোয়ারা হোটেলের ২৬৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়। তখন হোটেলে বিদ্যুৎ ছিল না। কিছুক্ষণ পর সাদ্দাম সেখানে আসে। দুজন মিলে কিশোরটিকে বলৎকার করে, এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।

‘পরদিন সকালে তারা পুনরায় বলাৎকারের চেষ্টা করলে কিশোর বাধা দেয় এবং জানায় সে অসুস্থ। তখন তারা তাকে বেল্ট দিয়ে পেটায় এবং মাথা ও মুখে ঘুষি মারে। এরপরও রাজি না হওয়ায় সাদ্দাম তার বুকে লাথি মারলে কিশোর খাট থেকে পড়ে যায়। একপর্যায়ে বারবার ব্যর্থ হয়ে তারা শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে কিশোরকে হত্যা করে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, এ ঘটনায় পলাতক আরেক আসামি সাদ্দামকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি কিশোরটির পরিচয় শনাক্তে বরিশালসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।