যেসব কারনে পুরুষদের তুলনায় নারীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি

আধুনিক জীবনযাত্রা, মানসিক চাপ এবং অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে দিন দিন বাড়ছে স্ট্রোকের ঝুঁকি। তবে সম্প্রতি একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষদের তুলনায় নারীরা স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীদের দেহে হরমোনগত পরিবর্তন, মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা, মাইগ্রেন এবং উচ্চ রক্তচাপসহ নানা কারণ স্ট্রোকের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।

গবেষণা অনুযায়ী, ৮৫ বছরের আগ পর্যন্ত স্ট্রোকের ঝুঁকিতে পুরুষরা সামান্য এগিয়ে থাকলেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের ঝুঁকি দ্রুত বেড়ে যায়। ৮৫ বছরের পর নারী রোগীদের মধ্যে স্ট্রোকের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।

নারীদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ার কয়েকটি প্রধান কারণ তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে রয়েছে গর্ভধারণ ও মেনোপজজনিত হরমোন পরিবর্তন, মাইগ্রেন (বিশেষ করে অরা-যুক্ত মাইগ্রেন), মানসিক চাপ ও উদ্বেগ, অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান এবং অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ।

চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত বা অতি কম ঘুম, ঘুমে নাক ডাকা, হৃদস্পন্দনের সমস্যাও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। দৈনিক ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমালে ঝুঁকি ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন নামক হৃদরোগ যাদের রয়েছে, তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা পাঁচ গুণ বেশি।

আরও জানানো হয়, সহজেই রেগে যাওয়া বা অতিমাত্রায় উত্তেজিত হলে নারীদের ঘাড়ের ধমনি পুরু হয়ে যেতে পারে, যা স্ট্রোকের ঝুঁকির একটি বড় কারণ।

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪০ মিনিট হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সপ্তাহে দুই ঘণ্টা নিয়মিত হাঁটলে ঝুঁকি ৩০ শতাংশ এবং দ্রুত হাঁটলে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

সচেতনতা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং সময়মতো স্বাস্থ্য পরীক্ষা—এই তিনটি বিষয় মেনে চললে নারীদের মধ্যে স্ট্রোক প্রতিরোধ অনেকাংশে সম্ভব বলে মনে করছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *