কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় বসতঘরের দরজা ভেঙে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে মুরাদনগর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। ঘটনার পরপরই পালিয়ে যাওয়া অভিযুক্ত ফজর আলীকে (৩৮) রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (২৯ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান।
ধর্ষিতার বিবস্ত্র ভিডিওধারন করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে আরও চারজনকে জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভিডিও ধারণকারী অনিক, সুমন, রমজান, বাবু এবং মামলার প্রধান আসামি ফজর আলী সবাই মুরাদনগর এর পাঁচকিত্তা এলাকার বাসিন্দা।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্বামীর বাড়ি থেকে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত ১০টার দিকে ফজর আলী তার ঘরের দরজায় এসে ডাকেন। তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানালে ফজর আলী জোর করে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন।
ভুক্তভোগী জানান, টাকা ধার নেওয়া সংক্রান্ত পরিচয়ের সূত্র ধরে ফজর আলীর সঙ্গে তাদের পরিবারের যোগাযোগ ছিল। সেই পরিচয়কে কাজে লাগিয়েই তিনি ওই রাতে বাড়িতে ঢোকেন।
পাশের বাড়ির এক বাসিন্দা বলেন, ‘রাতে ওই ঘরে চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দ শুনে আমরা লোকজন নিয়ে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি দরজা ভাঙা। পরে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়।’
স্থানীয়দের একজন জানান, ঘটনার সময় এলাকাবাসী ফজর আলীকে আটক করে মারধর করেন। তাকে কুমিল্লা শহরের একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখান থেকে তিনি পালিয়ে যান। পরে পুলিশ তাকে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনার জন্ম নেয়। পুলিশ জানায়, ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তা ফেসবুকে ছড়ানোর অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আরও একজনকে আটক করা হয়।
কুমিল্লা জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৬ জুন রাতে বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ফজর আলীকে হাতেনাতে আটক করে স্থানীয়রা। আহত অবস্থায় পালানোর পর শেষমেশ ঢাকায় গিয়ে ধরা পড়েন তিনি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন ব্যক্তি ভুক্তভোগীর ভিডিও ধারণ করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে আরও সমালোচনা তৈরি হয়।
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনায় ভিডিও ভাইরাল করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply