বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা চুক্তি নিয়ে নতুন করে ভাবছে ভারত, মিলল ভয়ংকর তথ্য

আগামী বছর শেষ হচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশের গঙ্গা পানিবণ্টন বিষয়ক চুক্তির মেয়াদ। তাই এখনই ভাবা হচ্ছে নতুন ‘গঙ্গা চুক্তি’ নিয়ে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনোমিক টাইমস।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবার নিজেদের ‘স্বার্থ অনুযায়ী’ নতুন চুক্তি করার ব্যাপারে ভাবছে নয়াদিল্লি। পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদ পানি চুক্তি বাতিলের পর বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান গঙ্গা চুক্তির একাধিক বিকল্প অথবা এটিতে সংযোজন-বিয়োজনের ব্যাপারে ভাবছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

মূলত, ফারাক্কায় পানি বন্টন নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল সেটি নিরসনে ৩০ বছর আগে এ চুক্তিটি হয়। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টনের একটি কাঠামো তৈরি করেছিলেন। এই চুক্তির মাধ্যমে উজানের দেশ ভারত ভাটির দেশ বাংলাদেশকে কথা দেয় যে ফারাক্কা বাঁধে পানি সরবরাহ ঠিক রাখবে তারা। এই বাঁধটি তৈরি করা হয়েছে বাঘিরথি নদীতে। যা বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

২০২৬ সালে শেষ হয়ে যাচ্ছে গঙ্গার পানি বণ্টন বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিটির মেয়াদ। তাই এখন নতুন করে চুক্তির বিষয়টি সামনে আসছে, যেখানে নতুন চুক্তির ক্ষেত্রে পারস্পরিক সমঝোতার প্রয়োজন। ভারত সম্পূর্ণ নতুন একটি চুক্তি নিয়ে ভাবছে যেখানে তাদের ‘বর্তমান উন্নয়নমূলক বিষয়াবলীর’ বিষয়টি থাকবে।

১৯৭৫ সালে ফারাক্কা বাঁধ সচল করে ভারত। এই বাঁধের মাধ্যমে গঙ্গা থেকে পানি হুগলি নদীতে নিয়ে যাওয়া হয় যেন কলকাতা বন্দর নৌ চলাচলের উপযোগী থাকে। এই বাঁধের মাধ্যমে কলকাতা বন্দর ট্রাস্টের জন্য গঙ্গার ৪০ হাজার কিউসেক পানি একটি খালের মধ্যে নিয়ে যায় ভারত।

বিদ্যমান চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি বছর ১১ মার্চ থেকে ১১ মে পর্যন্ত ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ই প্রতি ১০ দিনের জন্য ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাওয়ার কথা। কিন্তু ভারত এখন নতুন চুক্তি করে এই সময়টায় আরও অতিরিক্ত ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক বেশি পানি চায়। ভারতের দাবি, এখন যেহেতু কৃষির প্রসার ঘটেছে তাই আরও বেশি পানির প্রয়োজন তাদের।

এখন নিজেদের সেচ, বন্দর রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আগের চেয়ে বেশি পানি চেয়ে নতুন চুক্তি সাজাচ্ছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এক্ষেত্রে একমতও পোষণ করেছে বলে জানিয়েছে ইকোনোমিক টাইমস। তাদের মতে, এখন তাদের যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন সেটি বর্তমান ‘গঙ্গা চুক্তি’ মেটাতে পারছে না।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *