জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে আগামী শনিবার (২৮ জুন) থেকে কাস্টমস, ভ্যাট ও কর বিভাগের সব দপ্তরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজস্ব সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
সোমবার (২৩ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার এবং মহাসচিব সেহেলা সিদ্দিকা।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান চেয়ারম্যান সরকারের একটি নির্দিষ্ট ‘এজেন্ডা’ বাস্তবায়নে লিপ্ত থেকে রাজস্বব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করছেন। তাকে ‘আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী আমলা’ এবং ‘প্রশাসনের মধ্যে বিভাজন ও শৃঙ্খলাভঙ্গের উসকানিদাতা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ইতিমধ্যেই পাঁচজন সিনিয়র কর কর্মকর্তাকে প্রতিহিংসামূলক ও নিপীড়নমূলকভাবে বদলি করা হয়েছে। বদলির এসব আদেশ চাকরিবিধির পরিপন্থী ও অবৈধ বলে দাবি করা হয়।
আরও পড়ুনঃ চটপটির দোকান দেখিয়ে ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া কে এই নারী?
যাদের বদলি করা হয়েছে
গত রবিবার এনবিআরের একটি আদেশে আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে জরুরি ভিত্তিতে বদলি করা হয়েছে। আয়কর গোয়েন্দা থেকে ময়মনসিংহ কর অঞ্চলে বদলি করা হয়েছে উপকর কমিশনার শাহ মোহাম্মদ ফজলে এলাহীকে।
উপকর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলামকে ঢাকা কর অঞ্চল-১৬ থেকে খুলনায়, উপকর কমিশনার মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফকে এনবিআর থেকে বগুড়ায়, উপকর কমিশনার ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিলকে আয়কর গোয়েন্দা থেকে কুমিল্লায়, উপকর কমিশনার নুসরাত জাহান শমীকে কুমিল্লা কর অঞ্চল থেকে রংপুরে বদলি করা হয়েছে।
আদেশে তাদের মঙ্গলবারের (২৫ জুন) মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে এবং সোমবারই (২৪ জুন) বর্তমান কর্মস্থলে দায়িত্ব হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়।
ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে, এ আদেশগুলো সোমবারের মধ্যে বাতিল না হলে মঙ্গলবার (২৫ জুন) এবং বুধবার (২৬ জুন) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কলম বিরতি, অবস্থান কর্মসূচি এবং এনবিআর চেয়ারম্যান ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ চলবে। ২৭ জুনের মধ্যে দাবি না মানা হলে ২৮ জুন (শনিবার) থেকে কাস্টমস, ভ্যাট ও কর বিভাগের সব দপ্তরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলবে।
তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি কার্যক্রম এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
গত মে মাসে এনবিআর রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে দুই ভাগ করে ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ নামে দুটি পৃথক বিভাগ গঠনের অধ্যাদেশ জারি করে। এর প্রতিবাদে কর্মকর্তারা কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচিতে নামেন। আন্দোলনের মুখে সরকার পিছু হটলেও এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগ না হওয়ায় অসন্তোষ থেকে যায়।
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকর্তাকে স্পর্শকাতর দায়িত্বে নিয়োগ, বাইরের লোক জড়ো করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে উসকানি সৃষ্টির চেষ্টা এবং আন্দোলনকারীদের হুমকি-ধামকি দিয়ে রাজস্ব পরিবেশকে অস্থিতিশীল করছেন।
পরিষদ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, এসব কর্মকাণ্ডের ফলে রাজস্ব আহরণ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
Leave a Reply