ভারতের ‘র’-এর ৬ এজেন্ট গ্রেপ্তার, বড় নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ

ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)-এর হয়ে কাজ করা ছয় সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি)। সম্প্রতি অপারেশন ইয়ালঘর নামে একটি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে গুপ্তচর এজেন্টদের নেটওয়ার্কও উন্মোচন করা হয়।

তদন্তে জানা গেছে, ‘র’-এর এজেন্টদের বড় নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। ছয়জন গ্রেপ্তার হওয়ায় নেটওয়ার্কটির পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিওটিভি নিউজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) জানায়, পাঞ্জাবের কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি) সম্প্রতি অভিযান সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করে। প্রদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সমন্বিতভাবে এই অভিযান চালানো হয়েছে।

লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলনে পাঞ্জাবের অতিরিক্ত ইন্সপেক্টর জেনারেল (এআইজি) অপারেশনস শেহজাদা সুলতান বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা আসলাম এবং আকবর আলী নামে দুই সন্ত্রাসীকে বাহাওয়ালনগরে গ্রেপ্তার করে। তারা সরাসরি ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) থেকে বিস্ফোরক সংগ্রহ করছিল। সিটিডির এসএসপি অপারেশনস ওয়াকার আজিম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ আরও জানায়, সন্ত্রাসীরা ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিল। র-এর মেজর রবীন্দ্র রাঠোর এবং ইন্সপেক্টর সিং তাদের নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। সিটিডির এই পদক্ষেপ এই অঞ্চলে ভারতের ধ্বংসাত্মক কৌশল এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনা ও পৃষ্ঠপোষকতায় নয়াদিল্লির জড়িত থাকার বিষয়ে পাকিস্তানের উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করে।

গত ২০ বছর ধরে ভারত রাষ্ট্রীয় মদদে সন্ত্রাসবাদে জড়িত বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (ডিজি আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী অভিযোগ করেন। গত মাসে বেলুচিস্তানের খুজদারে স্কুল বাসে বোমা হামলার পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বেশ কয়েকজন শিশু নিহত হয়েছে। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ভারতের মদদে হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে সিটিডি কর্মকর্তারা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা বাহাওয়ালপুরের একটি মসজিদ এবং রেলস্টেশনে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে বিস্ফোরক, ডেটোনেটর, ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি), সেফটি ফিউজ এবং গোপনীয় মানচিত্র উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হামলার নির্দেশ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে।

এ ছাড়া, আরও তিন র এজেন্ট আজম ওরফে জাজি, মঞ্জুর ওরফে ক্বারী (উভয়ই বাহাওয়ালনগরের বাসিন্দা) এবং পাকপত্তনের বাসিন্দা আমজাদকে টোবা টেক সিং থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে দুবাই থেকে এই কার্যকলাপের অর্থায়নে জড়িত বলে অভিযুক্ত জুলফিকারকে বাহাওয়ালপুরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিটিডি পাঞ্জাব সন্দেহভাজনদের সঙ্গে ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে অডিও কথোপকথনও উদ্ধার করেছে। এই রেকর্ডিংগুলোতে লক্ষ্যবস্তু হত্যা এবং সংবেদনশীল স্থানে হামলার বিষয়ে আলোচনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এআইজি সুলতান জোর দিয়ে বলেন, ভারত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তবে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এ ধরনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *