সামরিক পোশাকের আড়ালে প্রতারণা ও হুমকি: মেজর নুরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, তদন্ত দাবি ইলিয়াস হোসেনের
সম্প্রতি সাংবাদিক ও বিশ্লেষক ইলিয়াস হোসেন তার ফেসবুক পেজে একটি বিস্ফোরক স্ট্যাটাস প্রকাশ করেন, যেখানে সেনাবাহিনীর মেজর পদে অধিষ্ঠিত এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক নারীর গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরেন। অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম ‘নুর’—যিনি নিজের পরিচয়ে স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও ডিভোর্সড দাবি করে এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে অভিযোগ।
ইলিয়াস হোসেনের স্ট্যাটাস অনুযায়ী, কয়েকদিন আগে এক নারী তার পরিচিত এক সাংবাদিকের অফিসে গিয়ে নুরের বিরুদ্ধে বিস্তারিত অভিযোগ করেন। ওই নারী জানান, নুর শুরুতে নিজেকে অবিবাহিত ও ডিভোর্সড দাবি করে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেন। পরে বিভিন্ন সময় ঢাকার অভিজাত হোটেলগুলোতে নিয়ে গিয়ে সময় কাটাতেন।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিয়ের বিষয়ে নারীর আগ্রহ ও চাপ বাড়লে নুর সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন এবং রাত কাটানোর ক্ষেত্রে সবসময় গড়িমসি করেন। এ থেকেই নারীর মনে সন্দেহ জন্ম নেয়—নুর আদৌ বিবাহবিচ্ছিন্ন কিনা।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন ওই নারী সম্পর্ক ছিন্ন করার চেষ্টা করেন। তখনই নুর তার উপর শারীরিক সম্পর্কের চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। বিয়ে না করলে বিষয়টি ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিলে নুর পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেন—“তাহলে তোকে মেরে ফেলব।” নারীটির ভাষ্যমতে, সম্প্রতি তার বাসার সামনে একটি গাড়ি নিয়মিত দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় এবং সন্দেহজনকভাবে নজরদারি চালানো হচ্ছিল।
নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তিনি এক সাংবাদিকের কাছে আশ্রয় নেন এবং নুরের সামরিক পোশাক পরা ছবিসহ বিষয়টি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি সাংবাদিককে দেখানোর কথা থাকলেও তিনি এরপর থেকেই নিখোঁজ।
ইলিয়াস হোসেন স্ট্যাটাসে আরও দাবি করেন, “আমার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নুর একজন মেজর পদধারী সেনা কর্মকর্তা। তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে এবং স্ত্রীর সঙ্গে তার ডিভোর্স হয়নি। এমনকি ২০২২ সালে তার চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও বর্তমান সরকার তাকে আরও দুই বছরের জন্য মেয়াদ বাড়িয়েছে।”
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইলিয়াস হোসেন সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই লম্পটকে দ্রুত গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। সেনাবাহিনীর মতো একটি গর্বিত প্রতিষ্ঠানের সদস্য যদি এমন অনৈতিক ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে, তবে এর প্রভাব পুরো বাহিনীর ভাবমূর্তিতে আঘাত হানে। সেইজন্যই প্রয়োজন অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ভুক্তভোগী নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে।
Leave a Reply