মেয়েসন্তান হওয়ায় মিষ্টির প্যাকেটে মাটি- ইটের গুঁড়া পাঠালেন স্বামী অতঃপর…

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে মেয়ে সন্তান জন্মের পর শ্বশুরবাড়িতে উপহার হিসেবে মিষ্টির বদলে একটি প্যাকেটে মাটি ও ইটের গুঁড়া পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে জামাই মোকছেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। বুধবার (১১ জুন) উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাজাইকাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শনিবার (১৪ জুন) বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের বড় ধনতোলা এলাকার সাহেব আলী ওরফে সব্দুল হকের ছেলে মোকছেদুল ইসলামের সঙ্গে একই ইউনিয়নের কাজাইকাটা এলাকার আফতার আলীর মেয়ে আছমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর তাদের ঘরে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।

আরও পড়ুনঃ বিদেশে পালানোর সময় বিমানবন্দরে গ্রেফতার আওয়ামী লীগ নেতা
সন্তান জন্মের সংবাদ পেয়ে স্বামী মোকছেদুল ইসলাম বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় শ্বশুরবাড়িতে যান। এ সময় শাশুড়ির হাতে একটি মিষ্টির কার্টন ধরিয়ে দেন। পরে মিষ্টিমুখ করার জন্য শাশুড়ি কার্টন খুলে দেখতে পান সেখানে কোনো মিষ্টি নেই, আছে মাটি ও ইটের গুঁড়া।

এ বিষয়ে স্ত্রী আছমা আক্তার বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী আমাকে নির্যাতন করতেন। মাঝেমধ্যে আমার পরিবারের কাছে টাকা চাইতেন। আমরা গরিব মানুষ, তাই টাকা দিতে পারি নাই। এদিকে আমার গর্ভে সন্তান এসেছে, এ খবর জানার পর আরও বেশি নির্যাতন করতেন। আমার স্বামী ছেলে সন্তান চেয়ে বলেছিল, ছেলে হলে সুখ পাবে, আর মেয়ে হলে দুঃখ পাবে না।

আরও পড়ুনঃ প্রতিশোধ না নেওয়ার মানে আইন হাতে তুলে নেব না: জামায়াত আমির
আছমা আরও বলেন, পরে আমার মেয়ে সন্তান জন্ম হয়। এ সংবাদ পেয়ে আমার স্বামী আমাদের বাড়িতে মিষ্টির কার্টন নিয়ে হাজির হন। বাড়ির লোকজন ও পাড়া প্রতিবেশীকে মিষ্টি দিতে গেলে কার্টনে মাটি ও ইটের গুঁড়া পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মোকছেদুল ইসলাম বলেন, আমার কন্যাসন্তান জন্ম হওয়ার কথা শুনে আনন্দে শ্বশুরবাড়িতে এক কেজি মিষ্টি ও মেয়ের পোশাক নিয়ে গিয়েছিলাম। এখন শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিষ্টির কার্টনে নাকি মাটি-ইটের গুঁড়া দেখছে। এগুলো সব সাজানো।

আরও পড়ুনঃ ছেলে-মেয়ের মোবাইল দেখা নিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করল স্বামী
তিনি আরও বলেন, আমার স্ত্রীকে কখনো কোনো নির্যাতন করিনি। যারা এসব করাচ্ছে যারা আল্লাহ তাদের বিচার করবে।

এ বিষয়ে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) আবু সাঈদ বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে জানা যাবে আসলে ঘটনাটি কী ঘটেছিল।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *