গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে আকাশে উড়লো রাশিয়ার নতুন সুপারজেট!

রাশিয়া মানেই যেনো অপ্রতিরোধ্য। বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো যখন সব একজোট হয়ে রাশিয়াকে একঘরে করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে মত্ত ঠিক তখনি পুরো বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে নতুন ইতিহাস রচনা করলো ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ তাদের সকল মিত্ররা রাশিয়ায় সব ধরণের পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বিমান তৈরির যন্ত্রাংশ রপ্তানি করাও বন্ধ হয়ে যায় দেশটিতে। এরপরও সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে সুপারজেট বিমান নির্মাণ করে সফলভাবে আকাশে উড্ডয়ন করে গোটা বিশ্বকে চমকে দিলো তারা। ওরা যেনো দেখিয়ে দিলো পশ্চিমাদের ছাড়াও রাশিয়া স্বয়ং সম্পূর্ণ।

পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা আসার পর বোয়িং ও এয়ারবাসের মতো আন্তর্জাতিক বিমান নির্মাতারা রাশিয়ায় যন্ত্রাংশ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এমন পরিস্থিতিতেই নিজস্ব প্রযুক্তিতে উৎপাদিত সব যন্ত্রাংশ দিয়ে সবাইকে অবাক করে রাশিয়ার নির্মাতারা তৈরি করেন যাত্রীবাহী বিমান ‘সুখই সুপারজেট’। যা নিয়েই তোলপাড় শুরু হয় পুরো বিশ্বে, তবে এবার সবাইকে অবাক করে দিয়ে কমসমলসক অন আমুরের আকাশে সম্পূর্ণ রুশ প্রযুক্তিতে নির্মিত এই যাত্রীবাহী বিমানটি তার প্রথম সফল উড়ান সম্পন্ন করেছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এই সুপারজেটটি নির্মাণে সাতটিরও বেশি রুশ প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে। যার প্রতিটি যন্ত্রাংশ, উপাদান ও সিস্টেম নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি করেছে তারা। বিমানটিতে পিডিএ-৮ ইঞ্জিনসহ মোট ৩৮টি সিস্টেম ও উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে, যেগুলো পুরোটাই রাশিয়ায় তৈরি। এই বিমানে কোনো বিদেশি যন্ত্রাংশের অস্তিত্ব নেই।

সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরী রাশিয়ার এই সুপারজেট নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলো সমগ্র রাশিয়ার সাধারণ নাগরিকরাও। ইউনাইটেড এয়ারক্রাফট কর্পোরেশনের জেনারেল ডিরেক্টর বাদিম বাদেখা এক আবেগঘন ঘোষণায় বলেন, “আজ রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চালনার ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। একটি সম্পূর্ণ আমদানি প্রতিস্থাপিত সুখই সুপারজেট তার প্রথম ফ্লাইট সম্পন্ন করেছে।”

শুধু বিমানটি নির্মাণ করেই বিশ্বকে চমকে দেয়নি রাশিয়া বরং একটি বিমান তৈরিতে যে সময় প্রয়োজন হয় তার চেয়ে দুই থেকে তিনগুন সময় কম নিয়ে বিমানটি তৈরি করতে সক্ষম হয় রাশিয়ান নির্মাতারা। পরীক্ষামূলক উড্ডয়নে বিমানটি ৪০ মিনিট আকাশে সফলভাবে উড়ে। প্রথম ফ্লাইটে বিমানটি ৩,০০০ মিটার উচ্চতায় ঘন্টায় ৫০০ কিলোমিটার গতিতে উড়েছে, যা এর কার্যকারিতা ও সক্ষমতারই প্রমাণ দেয়।

বিমানটি চালানো প্রথম পাইলট সেরগেই জাভালকিন উড়ানোর পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে জানান, “ফ্লাইটটি ছিল অসাধারণ। সমস্ত সিস্টেম নিখুঁতভাবে কাজ করেছে। কোনো সমস্যা হয়নি। ইঞ্জিনগুলো ছিল অত্যন্ত মসৃণ।” তিনি এই ঐতিহাসিক অর্জনের পেছনে থাকা প্রকৌশলী ও রক্ষণাবেক্ষণ দলের প্রতিও বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান।

রাশিয়ার নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ‘সুখই সুপারজেট’ পশ্চিমাদের জন্য শুধু চমকই নয় বরং মুখ্যম জবাব ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষ থেকে। যেভাবে সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি করা হলো এই যাত্রীবাহী বিমান তাতে করে বিশ্বের বিমানখাতে ছড়ি ঘোরাতেও খুব বেশি দেরি নেই রাশিয়ার এমনটিই বলছেন বিশ্লেষকরা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *