ডিসেম্বরের ওপর জেদ ধরে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার মানে হয় না : ডা. তাহের

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তন অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ। নির্বাচন ডিসেম্বরে হলে জামায়াতের কোনো আপত্তি নাই। তবে তার আগে যদি মৌলিক সংস্কার শেষ হয়। কিন্তু সংস্কার শেষ হতে যদি আরও দুই মাস বেশি লাগে, তাহলে ডিসেম্বরের ওপর জেদ ধরে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার মানে হয় না। সুতরাং, নির্বাচন ডিসেম্বর, ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে হোক জামায়াতের আপত্তি থাকবে না।

শনিবার (৩১ মে) দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে ‘নির্বাচনী দায়িত্বশীল সমাবেশ’ এর প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. তাহের বলেন, সরকারের কাছে আমরা দুটি বিষয়ে রোডম্যাপ চেয়েছি। একটি নির্বাচনের, আরেকটি সংস্কারের। এটা আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) আপনার মতো করেই ঘোষণা করুন। তাতেই আমি মনে করি পরিস্থিতি প্রশমিত হবে। এক মাস বা দুই মাসের পার্থক্য এ দেশের জনগণ মেনে নেবে। তবে ডিক্লারেশনটা অত্যন্ত প্রয়োজন, কারণ আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। রোডম্যাপের ডেট বা মাস ডিক্লার করলে এ আস্থার সংকট কমে যাবে।

তিনি বলেন, আমাদের ভূমিকা এমন হওয়া উচিত হবে না, যেন এ দেশের মানুষ আবার হতাশ হয়ে যায়। আবার শহীদদের আত্মত্যাগ বৃথা হয়। সেই নারী, শিশু, সর্বসাধারণ, রিকশাওয়ালা, ঠেলাগাড়িওয়ালা নিঃস্ব মানুষেরা যে আত্মত্যাগ করে মহান বিজয় অর্জন করেছিলেন, তাদের সেই ত্যাগ এবং রক্ত যেন বৃথা না যায়। এ জাতি বার বার সংগ্রাম করলেও কতিপয় নেতৃত্ব এবং লোভী মানুষের কারণে বঞ্চিত হয়েছিল, প্রতারিত হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, মানুষ আশা করে, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এ দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভেতরে এই চেতনাবোধ হবে। এই ভূমিকায় তারা উত্তীর্ণ হবে। দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করবে। আমরা একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব। আমরা কোনো বৈশক্তির কাছে মাথা নত করব না। একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠন করব। এখানে আমাদের ধৈর্যের প্রয়োজন, ত্যাগি মনোভাবের প্রয়োজন। এখানে ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ এবং জনগণের স্বার্থ বড় হোক। এটাই রাজনীতি এবং রাজনীতিবীদদের প্রধান স্লোগান হতে হবে।

ডা. তাহের বলেন, বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। যে জাতি ৪৭-এ স্বাধীনতা এনেছে, ৫২-এর ভাষা অধিকার সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। তারা আবার ৭১ সালে এক হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জীবন, রক্ত ইজ্জত বিলিয়ে দিয়ে আরেকবার স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আবার জুলাই-আগস্টে সবার অংশগ্রহণে এক মহাগণঅভ্যুথানের মাধ্যমে স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদকে বিতাড়িত করেছে। তারা আবার একাত্ম হয়ে জাগ্রত জনতার ব্যানারে সব ষড়ন্ত্রকে ব্যর্থ করে দেবে এবং আরেকটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মু. মাহফুজর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মু. বেলাল হোসাইনের পরিচালনায় দায়িত্বশীল সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আমির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান, সাবেক উপজেলা আমির ভিপি সাহাব উদ্দিন, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. ফজলুর রহমান মজুমদার, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইব্রাহীমসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *