সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ! এবার বাংলাদেশকে ভাগ করতে চায় ভারত

ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা সম্প্রতি আবারও বাংলাদেশকে ঘিরে বিতর্কিত মন্তব্য করে কূটনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, যেমন ভারতের একটি ‘চিকেন নেক’ আছে, তেমন বাংলাদেশেও রয়েছে দুটি, যেগুলো ভৌগোলিকভাবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,“আমাদের একটা চিকেন নেক আছে, কিন্তু বাংলাদেশের দুটি। যদি বাংলাদেশ আমাদের আক্রমণ করে, আমরাও বসে থাকবো না।”

তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের প্রথম ‘চিকেন নেক’ হলো দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম গাড়ো পাহাড় পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি করিডর, যা রংপুর বিভাগকে দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে। দ্বিতীয় করিডরটি হলো দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগপথ, যেটি বাংলাদেশের প্রধান বন্দর চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ লিংক।

ভারতের শিলিগুড়ি করিডর, যেটিকে ‘চিকেন নেক’ বলা হয়, সেটি মাত্র ২২ কিলোমিটার চওড়া এবং এটি ভারতের মূল ভূখণ্ডকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করে। এই করিডরটি যদি কখনো সামরিকভাবে আক্রমণের শিকার হয়, তাহলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে। এজন্যই এর কৌশলগত গুরুত্ব অনেক বেশি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এই ধরনের মন্তব্য একপ্রকার রাজনৈতিক চাল। হেমন্ত বিশ্বশর্মা বিজেপির একজন ঘনিষ্ঠ এবং কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসেবে পরিচিত। জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে সামনে এনে তিনি হয়তো নিজের জনসমর্থন শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন।

বাংলাদেশে অবশ্য হেমন্তর এই মন্তব্যকে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা সৃষ্টির প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন মন্তব্য দুই দেশের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করতে পারে এবং সীমান্ত অঞ্চলে অস্থিরতা বাড়াতে পারে।

এখন প্রশ্ন উঠছে, এটি কি একজন রাজ্য নেতার ব্যক্তিগত মতামত, নাকি ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতির একটি কৌশলগত ইঙ্গিত? যদিও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি, তবুও দুই দেশের সীমান্তে এমন কথাবার্তা সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *