বাংলাদেশের জন্য খোড়া গ-র্তে নিজেই পড়লো ভারত

নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলেও ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত, বিশ্বে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক হিসেবে তুলে ধরতে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত এই ষড়যন্ত্রে নিজেরাই ফেঁসে গেছে। এবার মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক সংস্থা, যা বিস্তারিত তুলে ধরেছে আরিফ হাসান।

ভারতের বৃহত্তম ধর্মীয় সংখ্যালঘু সত্ত্বেও মুসলমানরা প্রায়ই হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের সহিংস আক্রমণ ও হামলার শিকার হয়ে থাকেন। মুসলিমদের বাড়িঘর ভেঙে ফেলা, জোর করে “জয় শ্রীরাম” বলানো, এবং মসজিদ ভেঙে ফেলার মত ঘটনা অহরহ ঘটে দেশটিতে। রাস্তা ঘাটে মুসলিম নারীদের ওপর উত্তপ্ত করার ঘটনা যেন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সাথে সামাজিক বা রাষ্ট্রীয়ভাবেও ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হন মুসলমানরা। দেশের রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সরাসরি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় জড়িত থাকার, এমনকি দেশটির সরকার প্রধানের বক্তব্যেও মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ পায়।

অপরদিকে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাংলাদেশে ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে ৯১% মুসলিম, বাকি ৮% হিন্দু সহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করেন। মুসলমানরা নামাজ আদায় করার সময় হিন্দুদের উৎসবগুলো বন্ধ থাকে, মুসলমানদের মিলাদসহ অন্যান্য উৎসবে হিন্দুরাও উপস্থিত থাকে, এবং সংকটকালে মুসলিমরা হিন্দু মন্দির পাহারা দেয়। বাংলাদেশের প্রতিটি খাত, কৃষি থেকে শুরু করে পার্লামেন্ট পর্যন্ত, সকল ধর্মের মানুষ একত্রে কাজ করে। তবে ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ভারত কূটনৈতিক চাপ তৈরি করতে থাকে এবং দেশটির রাজনৈতিক নেতারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে। ভারতের গণমাধ্যমগুলোও বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরতে নানা অপপ্রচার চালাতে থাকে।

তবে শেষ পর্যন্ত ভারত এই ষড়যন্ত্রে নিজেরাই ফেঁসে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা সংস্থা “কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম” প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে, ভারতে মুসলমানরা দিন দিন অমানবিক আচরণের শিকার হচ্ছে। ২০২৪ সালে ভারতীয় ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে, কারণ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং বৈষম্য বেড়েছে। মার্কিন সরকারও ভারতকে বিশেষ উদ্বেগের দেশ হিসেবে চিহ্নিত করার আহ্বান জানায়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় মুসলিমসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে।

এছাড়া, মার্কিন কমিশন ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “রয়” এর বিরুদ্ধে খালিস্তানপন্থী নেতাদের গুপ্ত হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে, সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *