ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে প্রেম, অপহরণ ও ধর্ষণ; অতঃপর…

বরগুনার আমতলীতে এক হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে নিজের নাম ও ধর্ম গোপন করে এক মুসলিম তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ এবং পরে শাখা সিঁদুর পড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।

আজ রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভূক্তভোগী ওই তরুণী বাদী হয়ে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তিন জনকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।

ট্রাইবুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম লাইলাতুল ফেরদৌস মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন, আমতলী উপজেলার কড়ইতলা হাড়িপাড়া গ্রামের উত্তম পাইকের ছেলে দিপু পাইক, তার বন্ধু গৌতম পাইক ও বিমল হাওলাদার।

মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. রঞ্জুয়ারা শিপু।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আমতলীর মুসলিম পরিবারের এক তরুণীর সাথে দিপু পাইকের মুঠোফোনে পরিচয় হয়। ওই সময় দিপু পাইক নিজেকে মুসলিম পরিবারের অনিক নামে পরিচয় দেন। দু’জনের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক চলাকালে অনিক ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

তরুণী পারিবারিকভাবে বিয়েতে রাজি আছে বলে প্রেমিক অনিককে জানান। কিন্তু অনিক তরুণীর প্রস্তাব নাকচ করে নিজেরাই বিয়ে করবেন বলে জানান। ভূক্তভোগী ওই তরুণী প্রেমিক অনিকের প্রস্তাবে রাজি না হলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়।

এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারি সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে ওই তরুণী নিজ বাড়ির সামনের রাস্তায় গেলে অনিকসহ আরো দুই যুবক একটি (মাহেন্দ্রা) গাড়িতে জোরপূর্বক তাকে তুলে অপহরণ করে প্রথমে বরিশাল নিয়ে যায়।

সেখান থেকে ঢাকার হেমায়েতপুর নিয়ে যায়।
সেখানে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আসামি দিপু পাইক তার দুই বন্ধুর সহায়তায় একাধিকবার ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। পরে খুনের ভয় দেখিয়ে মাথায় সিঁদুর ও হাতে শাখা পড়িয়ে দেয়। এমনকি দিপু ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ভূক্তভোগী ওই তরুণী বলেন, আমি সুযোগ পেয়ে আমার চাচাতো বোনকে সকল ঘটনা জানালে পরে তারা এসে আমাকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে জানতে আসামি দিপুর ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত আদালতের আদেশ হাতে পাইনি। আদেশ হাতে পেলে আসামিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করব।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *