গাড়িতে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ সিদ্দিকীকে রড দিয়ে মারতে তেড়ে আসেন ইনজামামুল হক নামের স্থানীয় এক যুবক।
ঘটনার পর মুসলেকা দিয়ে ওই শিক্ষকের পা ধরে ক্ষমা চান ইনজামামুল। ক্ষমা চাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তাকে জালালাবাদ থানার সোপর্দ করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীদের বরাতে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে ক্যাম্পাস থেকে গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছিলেন লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ সিদ্দিকী। এ সময় সিলেট-সুনামগঞ্জ রোডে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ইনজামামুল হকের গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। ধাক্কা লাগার সঙ্গে সঙ্গে ইনজামামুল গালিগালাজ করতে করতে গাড়ি থেকে রড নিয়ে বের হন। তখন অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীকে মারতে তেড়ে যান তিনি। এ সময় অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীর ড্রাইভার ইনজামামুলকে থামানোর চেষ্টা করলে ইনজামামুল চিৎকার শুরু করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মেইন গেটের সামনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছে দেখে আমরা উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করতে যাই। এক পর্যায়ে ওই ছেলে খবর দিয়ে ৪ জন মহিলাসহ ১৫-২০ জন স্থানীয়কে নিয়ে আসেন। তারা এসেই আমাদের গালিগালাজ করতে করতে উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ধাক্কাধাক্কি ও মারধর করেন বলে অভিযোগ পাই। তখন আমাদের শিক্ষার্থীরা জড়ো হলে তারা (স্থানীয়রা) নিরাপত্তা দিতে ওই ছেলেকে একটা দোকানে আটকে রাখেন।
এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে জড়ো হন। অপরদিকে এলাকাবাসীরাও লোকজন জড়ো করেন। তখন এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েক দফায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
এরপর ঘটনার সমাধান করতে প্রক্টরিয়াল বাড়ির সদস্যদের এবং পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় ইনজামামুলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়। পরে নিজের দোষ স্বীকার করে মুসলেকা দিয়ে অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীর পা ধরে ক্ষমা চান ইনজামামুল হক। এরপর তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
এ বিষয়ে শাবিপ্রবির প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘ছেলেটি তার ভুল বুঝতে পেরে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলরের সাক্ষীতে সে মুসলেকা দিয়ে অধ্যাপক আশরাফ সিদ্দিকীর পা ধরে ক্ষমা চেয়েছে। আমরা তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি, পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা নিবে।’
সিলেট জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশীদ বলেন, ‘রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককের গাড়ির সঙ্গে ইনজামামুল হক নামের এক যুবকের গাড়ির ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ঝামেল তৈরি হলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন যুবকটি পা ধরে মাফ চান এবং মুসলেকা দেন। ঘটনাটি সেখানে সমাধান করা হয়। এরপর আমাদের হাতে তাকে সোপর্দ করা হলে আমরা তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।’
উল্লেখ্য, ইনজামামুল হক সিলেট টুকেরবাজার এলাকার হায়দারপুর গ্রামের মৃত এ কে এম তারেক কালামের ছেলে।
Leave a Reply