এবার ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাসহ গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে ঢাকায় ঝটিকা মিছিল করেছে দলটির নেতাকর্মীরা। রবিবার বিকালে মাওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের সামনে থেকে শুরু হওয়া এ মিছিলে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জের গডফাদার পলাতক শামীম ওসমানের অনুসারীরা। মিছিল থেকে বন্দরের সন্ত্রাসী রাজু ওরফে স্ট্যান্ড রাজুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে পর্দার আড়াল থেকে ঝটিকা এ মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছেন ফতুল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী মীর হোসেন মীরু ওরফে ল্যাংড়া মীরু এবং বন্দর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি খান মাসুদ। কয়েক মাস ধরেই এই সন্ত্রাসীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রাম-এ মেসেজ গ্রুপ খুলে কর্মীদের একত্রিত করার কাজ করছিল।
‘কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ’ নামে গ্রুপ খুলে সেখানে মিছিলের জন্য নানা নির্দেশনা দেয় ল্যাংড়া মীরু। সেই গ্রুপের মিছিল নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের মেসেজের কয়েকটি স্ক্রিনশট ও একটি ভিডিও আমার দেশ-এর হাতে এসেছে। সেই স্ক্রিনশট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৭ জুলাই ঢাকায় মিছিল করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন ওসমান পরিবারের অনুসারীরা। তাদের টার্গেট জ্বালাও-পোড়াও এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আতঙ্ক তৈরি করা। টেলিগ্রামের সেই গ্রুপ মেসেজে ফতুল্লা থানা বিএনপির একাধিক নেতাকে টার্গেট করে হামলার ছক তৈরি করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা।
এদিকে টেলিগ্রাম গ্রুপে কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নামের একটি আইডি থেকে লেখা হয়- ‘ঐক্য হও লড়াই খুব নিকটে। আমরা যাতে কুতুবপুরে একসাথে নামতে পারি। মীরু চাচা যোগাযোগ বাড়ান। আমাদের খুব শীঘ্রই মাঠে নামা লাগবে।’ এস এম আহমেদ দীপু নামে একজন অ্যাডমিন লিখেন- ‘ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের সকল নেতাকর্মীকে জানানো যাচ্ছে, আজ রাত ৯টা ৩০ মিনিটে ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলী। গ্রুপে যথাসময়ে সবাইকে যুক্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন মীর হোসেন মীরু।’
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে গ্রুপে থাকা কুতুবপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, মীর হোসেন মীরু, তার ভাগ্নে শাকিল, ভাই আলমগীরসহ অনেকেই একসাথে ঢাকার জুরাইন এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকছেন। শনিবার বিকালে মীরু নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে একটি বৈঠকও করেছেন। সেই বৈঠকেই রোববারের মিছিলের সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকেই সন্ত্রাসী মীরু পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। বন্দর থানা অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী জানান, মিছিল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া স্ট্যান্ড রাজুর বিরুদ্ধে বন্দর থানায় মামলা রয়েছে। আমরা ঢাকায় যোগাযোগ করছি।