পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নাম হবে গণহত্যাকারী : আসিফ মাহমুদ

২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস গুরুত্ব দিয়ে স্থান পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

ওই পোস্টে তিনি একটি ফটোকার্ড শেয়ার করেছেন। এতে লেখা রয়েছে আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে গুরুত্ব দিয়ে স্থান পাচ্ছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস। এতে গণহত্যাকারী হিসেবে যুক্ত হচ্ছে শেখ হাসিনার নাম

পোস্টে আসিফ মাহমুদ লেখেন, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস এবং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষের সংগ্রামের গল্প পৌঁছে দিতে পাঠ্যপুস্তকে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস এবং সাম্প্রতিক চারটি জাতীয় নির্বাচনের তথ্য।’

জানা গেছে, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পৌরনীতি ও সুশাসন বইয়ের দ্বিতীয় পত্রে ২০০৮ সালের নির্বাচন, ২০১৪ সালের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৪ প্রার্থীর বিজয়ের নির্বাচন, ২০১৮ সালের ‘রাতের ভোটের’ নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের ‘ডামি’ নির্বাচনের ইতিবৃত্ত পাণ্ডুলিপিতে যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণও সংক্ষিপ্ত আকারে পাঠ্যবইয়ে থাকছে। এ ভাষণ বাদ দেওয়ার প্রস্তাব থাকলেও তা নাকচ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসি)। তবে পূর্ণাঙ্গ নয়, সংক্ষেপে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের বইয়ে অন্তর্ভুক্ত হবে ভাষণটি।

গত সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই অনুমোদনবিষয়ক সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে প্রথমে অষ্টম ও দ্বাদশ শ্রেণির বই থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ সরানোর প্রস্তাব করা হয়। শেষ পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে সংক্ষেপে ভাষণ রাখার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।

এ ব্যাপারে এনসিটিবির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী সমকালকে বলেন, অষ্টম শ্রেণির বইয়ে আগেও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ছিল। এবারও তা থাকবে, তবে সংক্ষিপ্ত আকারে। একাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রেও একই নীতি প্রযোজ্য হবে।

একই বৈঠকে নবম-দশম শ্রেণির বাংলা বইয়ে ‘রহমানের মা’ গল্প ও ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা’ নাটক বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয় ধর্মীয় অনুভূতি ও অশ্রাব্য ভাষার কারণে। এ ছাড়া জুলাই আন্দোলন নিয়ে লেখা ‘আমাদের নতুন গৌরব গাথা’ প্রবন্ধে বিকৃতি ও শেখ হাসিনার নাম গোপন করার অভিযোগ ওঠায় প্রবন্ধটি সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভা সূত্র জানা গেছে, নতুন পাঠ্যক্রমে আওয়ামী লীগকেন্দ্রিক অতিবন্দনা বাদ দিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ ইতিহাস উপস্থাপন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকের ইতিহাস, বাংলা দ্বিতীয় পত্র ও পৌরনীতি বইয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার প্রসঙ্গসহ বিতর্কিত নির্বাচনগুলোর প্রকৃত চিত্র সংযোজনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।