কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী মানসুরা আক্তার। যিনি ১৩ বছরেও পেরোতে পারেননি অনার্সের গণ্ডি। ডাকসুর চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় তার নাম দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ঢাবিশিস) আবু জাফর বিন জাকারিয়া নামে এক শিক্ষার্থী মানসুরা আক্তার ও বামপন্থী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসুর ছবি পোস্ট করে লিখেন, ‘মেঘ দা, মানসুরা আপ্পিরা আমাদের দেশে ধৈর্য্যের প্রতীক হিসেবে থাকার কথা ছিল, বাট আমরা তাদের মূল্য বুঝলাম না। আমার ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা ভাবতে গেলেই মনে হয়, বন্ধুরা কেউ তো আর ক্যাম্পাসে নেই। তখনই ভেসে উঠে মেঘদা, মানসুরা আপুদের মুখ। যারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম আমাদের আস্থা ও ভরসার জায়গা হয়ে আছেন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘গ্যাপ যেতেই পারে, এমনকি শেষ নাও করতে পারে। তার জন্য বিশেষ কারণ থাকা উচিত। নষ্ট রাজনৈতিক ব্যবস্থায় এক সহসভাপতি পদের জন্য বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করা এদের প্রতি আমাদের কোনো সমবেদনা নাই, স্যরি।’
মো. রফিকুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘সজ্ঞানে সচেতনতার সাথে এরা পড়াশোনা বাদে সবই করে বেড়িয়েছে। এরাই ঢাবির দুঃখ।’
এ বিষয়ে মানসুরা আক্তার ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘২০১৯ সালের পরে আমার একটি সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা বাকি ছিল, কিন্তু আমাকে সেটি দিতে দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে আমি এ বছরের মে মাসে সেই পরীক্ষাটি দিতে পেরেছি। রেজাল্ট এখনো পেন্ডিং আছে। সেপ্টেম্বর থেকে আমার মাস্টার্স প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবাই এই বিষয় নিয়ে কথা বলছেন, একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী যারা আমাদের স্ট্রাগল দেখে নাই, তারা এসব কথা বলছে। এসব তথ্য বিভিন্ন পেইজ থেকে গুপ্তরা উসকিয়ে দিচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য আছে, সেটি হলো আমি যদি ডাকসুতে দাঁড়াই, তাহলে তাদের বিরোধী প্যানেলে দাঁড়াবো। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ডাকসু নির্বাচন করব না। আমি মনে করি, ছোটদের ইলেকশন করা উচিত।’
প্রসঙ্গত, ঢাবি প্রশাসন চূড়ান্ত ভোটার তালিকার লিঙ্ক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে। যেখানে যেকেউ চাইলে যে কারও পরিচয়পত্র দেখতে পারে। যেখান থেকে এই নেত্রীর ভোটার পরিচয়সহ অন্যদের ভোটার পরিচয়ও ফাঁস হয়।
এ নিয়ে নিন্দা জানিয়ে ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা আক্তার বলেন, ‘ঢাবি প্রশাসন অত্যন্ত গাফলতির সঙ্গে এ কাজ করেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এটার বিরুদ্ধে স্টেপ নেওয়ার কথাও ভাবছি। এখানে প্রাইভেসি লঙ্ঘন হয়েছে, যার ফলে আমাকে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। প্রয়োজন হলে আদালতে যাবো।’
এর আগে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিতর্ক হয় ঢাবির ২০১৫-১৬ সেশনের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মেঘমল্লার বসুকে নিয়ে, যিনি ১০ বছরেও অনার্স শেষ করতে পারেননি। তবে তাকে ছাপিয়ে ১৩ বছর ধরে অনার্সে পড়ছেন ছাত্রদলের মানসুরা।