জরায়ুতে নয়, লিভারের ভিতরে বেড়ে উঠছিল ভ্রূণ!

ভারতের উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে এক ৩০ বছর বয়সি মহিলার দেহে ঘটেছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে বিরল ঘটনা। পেটব্যথা ও বমির মতো সাধারণ উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে প্রাথমিক আলট্রাসাউন্ডে কিছু ধরা না পড়লেও, মীরাটের একটি বেসরকারি ইমেজিং সেন্টারে উচ্চ রেজলিউশনের এমআরআই পরীক্ষায় দেখা যায় মহিলার লিভারের ভিতরে বেড়ে উঠছে ১২ সপ্তাহের ভ্রূণ।

চিকিৎসকদের ভাষায়, এই অবস্থাকে বলা হয় ইনট্রাহেপাটিক ইক্টোপিক প্রেগন্যান্সি। যেখানে জরায়ুর বাইরে, সরাসরি লিভারের মধ্যে ভ্রূণের বিকাশ ঘটে। রেডিয়োলজিস্ট ডা. কে কে গুপ্ত জানান, বহু বছরের অভিজ্ঞতায় এমন ঘটনা আগে কখনও দেখিনি। প্রথমে যন্ত্রের ত্রুটি ভেবেছিলাম, কিন্তু একাধিক অ্যাঙ্গল থেকে পুনঃস্ক্যান করেও স্পষ্ট দেখা গেল ভ্রূণ এবং তার হৃদস্পন্দন।

রিপোর্ট অনুযায়ী, ভ্রূণটি লিভারের ডান লোবের ভিতরে ছিল এবং রক্ত সরবরাহ হচ্ছিল লিভারের শিরা-উপশিরা দিয়ে। মহিলার জরায়ু সম্পূর্ণ খালি ছিল। চিকিৎসকদের ধারণা, ভারতের ইতিহাসে এটাই সম্ভবত প্রথম নথিভুক্ত ঘটনা।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এ ধরনের গর্ভাবস্থা মা ও ভ্রূণ উভয়ের জন্যই প্রাণঘাতী হতে পারে। বর্তমানে মহিলাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং বিশেষজ্ঞ দলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পরবর্তী চিকিৎসা হবে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নব্য মুম্বইয়ে কর্নুয়াল ইক্টোপিক প্রেগন্যান্সির একটি ঘটনা সামনে আসে, যেখানে জরায়ুর শিং-আকৃতির অংশে ভ্রূণ বেড়ে ওঠে এবং অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তা সরিয়ে ফেলা হয়। বিশ্বব্যাপী ২০১৯ সালে ৬৭ লক্ষেরও বেশি ইক্টোপিক প্রেগন্যান্সির ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল, যদিও সচেতনতা ও চিকিৎসার উন্নতির ফলে এ সংখ্যা কমছে।