‘এখন ৪ টা বাচ্চা নিয়ে আমি কীভাবে বাঁচবো’

আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেয়া হয়েছে। এখন চারটা বাচ্চা নিয়ে আমি কীভাবে বাঁচবো?’- কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই বলছিলেন ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নের লামছি গ্রামের দিনমজুর ও বাক প্রতিবন্ধী কবির হোসেনের স্ত্রী সুমা বেগম।

পরিবারের অভিযোগ, জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে ৩৫ বছর বয়সী কবির হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে তার চাচাতো ভাইরা। হত্যার পর তাদের বাড়িতে একটি চিরকুট পাঠানো হয়, যাতে লেখা ছিল- ‘এবার টার্গেট সুমা বেগমের ছেলে ও পরিবারের অন্য সদস্যরা।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৯ জুলাই বিকেলে বাংলাবাজার এলাকা থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হন কবির হোসেন। তিন দিন ধরে খোঁজাখুঁজির পর ১ আগস্ট বাড়ির পাশের পুকুরে তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ ভেসে ওঠে। খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। ঘটনার ১১ দিন পার হলেও হত্যার রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে। ৮ আগস্ট বিকেলে শম্ভুপুর বাংলাবাজার এলাকায় হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে গ্রামবাসী বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

নিহতের ভাই প্রথমে তজুমদ্দিন থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। তবে পরিবারের দাবি, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

স্থানীয়দের অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সন্দেহভাজনদের প্রভাবশালী মহলের ঘনিষ্ঠতার কারণে তদন্তে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে এবং প্রমাণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহাব্বত খান বলেন, ‘ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সব প্রমাণ সংগ্রহ করে হত্যার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।’